নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I'll Sleep When I'm Dead

আমি একদিন মারা যাবো, এই সত্য মেনে নিতে আমার কোন আক্ষেপ নেই!আক্ষেপ শুধু একটি বিষয়তেই, আমি মারা যাওয়ার পর অনেক অসাধারণ চলচ্চিত্র,বই,গান এর সৃষ্টি হবে- যার স্বাদ আমি নিতে পারব না...

শাহরুখ সাকিব

জীবন খাতার শেষের পাতায়, এঁকে দিলাম আলপনা, আমার স্মৃতি পড়বে মনে, যখন আমি থাকব না...! মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ নিজে ; অথচ বাকি সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছি! তাদেরকে হাসি খুশি রাখার মাধ্যমে! বুঝেন অবস্থা! একবারেই বদ্ধ উন্মাদ, আবেগপ্রবন,ভীতু এক মানুষ...!চিন্তাভাবনা করে সাধারণত কিছু বলা বা করা হয় না, এজন্য ঝামেলাতেও বেশি পড়তে হয়! তারপরও - always try to listen to my heart !Simplicity জিনিসটা খুব ভাল্লাগে, নিজেও তাই!'হাসিমুখ','দেশ','দেশের মানুষ','বৃষ্টি','জোছনা','প্রিয় মানুষগুলোকে বিরক্ত করা','শিশির ভেজা ঘাসের উপরে হাঁটা','জীবন','নিঃশ্বাস নেয়া','বইপড়া'(অবশ্যই পাঠ্যবই নয়!),'বন্ধু','বন্ধুত্ব','আড্ডা দেয়া','পাহাড়','সমুদ্র','সিনেমা দেখা','শাহরুখ খান' প্রভৃতির প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! আমি নিম্নোক্ত জীবন দর্শনে বিশ্বাসী - "Live, Laugh and Love!" (বাঁচো , হাসও আর ভালোবাসো! ) :-D আর হ্যাঁ, নিজের প্রথম ও সবচেয়ে বড় পরিচয় "মানুষ" বলতে পছন্দ করি, আগে মানুষ, তারপর বাকি সব... :-) আমার রক্তের গ্রুপ- B (Be Positive!) আমার রাশি- কুম্ভ (কিন্তু আমি মোটেই কুম্ভকর্ণ নই!) নিজেকে একটি শব্দে প্রকাশ করতে বললে আমি সেই পুরনো অসাধারণ শব্দটি বলব--- "পাগল" :-P :-P আমার ফেসবুক ঠিকানা- fb.com/syed.n.sakib.3

শাহরুখ সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজয় দিবসের কথা :)

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

৪৩ বছর আগের কথা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়য়ে গণিতের একজন অধ্যাপক ছিলেন, নাম মুজিবর রহমান। বেশ সহজ সরল একজন মানুষ, কারো সাতেও নেই, কারো পাঁচেও নেই, কারো সাত যোগ পাঁচ= বারোতেও তিনি নেই। রাজনীতির কোন ধার ধারতেন না তিনি। কিন্তু ভুল যা হওয়ার তা তার নামেই ছিল, শেখ মুজিবরের সাথে নামে মিল থাকার কারণেই হয়ত পাকিস্তানীরা তাকে ধরে নিয়ে এত বেশি অত্যাচার করেছিল যে যুদ্ধের শেষ দিকে ছাড়া পেয়ে নিজের মুসলমানি নাম ত্যাগ করে "দেবদাস" নাম গ্রহণ করলেন তিনি। ইসলাম ধর্মের উপরেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেললেন তিনি। তাঁর মানসিক ভারসাম্য আর কোনদিন স্বাভাবিক হয় নি।

কি এমন অত্যাচার? নমুনা দেয়া যাক- ছাদের সঙ্গে পা বেঁধে ঝুলিয়ে মারা, হাতের নখ তুলে ফেলা, এক একটা অঙ্গ কেটে নিয়ে নির্যাতন করা, ইলেকট্রিক শক দেয়া- যত রকমের নিষ্ঠুর অত্যাচার কল্পনা করা যায়। (১)

যুদ্ধের ফলে ব্যাপকহারে এবং দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আর একটা শ্রেণী হলেন নারীরা। কারণ নারীরা তো শুধু মানুষ নন, তাঁদের প্রতি বাড়তি একটা আকর্ষণ আছে- "যৌন আকর্ষণ"। "ধর্মপ্রাণ" পাকিস্তানীরা তাঁদের ধর্ষণ ও গণধর্ষণ করত, বালিকা, যুবতী, কিশোরী, মহিলা- কাউকেই তারা রেহাই দেয় নি। পরিবারের সদস্যদের সামনে ধর্ষণ করা, কিশোরী মেয়েদের যোনিপথ ছোট থাকায় বেয়নেট দিয়ে কেটে বড় করে নিয়ে ধর্ষণ করার কথাও জানা যায়।(২) যুদ্ধের গোড়ার দিকে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক হোটেল ইন্টারকনে ছিলেন। তিনি ধর্ষণের বর্ণনা দিয়েছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে এক হলে এক একটি মেয়েকে ১০/১২ জন মিলে ধর্ষণ করেও পাকিস্তানীদের খায়েশ মিটেনি, এরপরে তারা তাঁদের সাথে করত পায়ু-সঙ্গম। (৩)

আরও অবিশ্বাস্য কিছু ঘটনা ছিল। কোন কোন স্বামী স্ত্রীকে ধর্ষণের জন্য এগিয়ে দিয়ে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন- আপনি বাঁচলে বাপের নাম বলে কথা! বউ তো অনেক পাওয়া যাবে বেঁচে থাকলে! এ রকমের একজন পত্রিকার সম্পাদকের কথা জানা যায়, যদিও সম্পাদক যে পাকসেনাকে নিজের বউ উপহারস্বরূপ প্রেরণ করছিলেন- সেই পাকসেনা তাঁর বউকে গ্রহণ করেননি। (৪)
মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিতার সংখ্যা দুই বা তিন লাখ বলা হলেও, আসল সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হওয়ার কথা বলে মত বিশ্লেষকদের। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই ধর্ষণের কথা গোপন করেছে পরিবার, বিশেষ করে "ভদ্রলোকেরা"। যারা আবার সাহস করে নিজেদের উপরে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের কথা প্রকাশ করেছেন, যুদ্ধের পরে তাঁদের আর বিয়ে হয়নি- কেও তাঁদের গ্রহণ করেনি- না সমাজ, না পরিবার। সবাই "পবিত্র" মানুষের সাথে থাকতে চায়, "নষ্ট মেয়েমানুষের" সাথে থেকে নিজেদের পবিত্রতা(!) কেও নষ্ট করতে চায়না।

আরও কিছু নমুনা শোনা যাক অত্যাচারের- গণধর্ষণের পর বেয়নেট দিয়ে যোনিপথ কেটে হত্যা করা ( এই অত্যাচারের বর্ণনা লিখতে আমার যে কি পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে এটা শুধু আমি জানি!), স্তন কেটে ফেলা, ধর্ষণ করতে করতে মেরে ফেলা, অর্ধমৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখা, শরীরের জামা কাপড় খুলে কোন রুমে আটকে রাখা যাতে পালাতে না পারে- সবই করা হয়েছিল উল্লাসের সাথে। (৫)

এতসব কথা কেন বলছি? কারণ স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও শুনতে হয়- যা হওয়ার হইসে, এগুলো এত মনে রেখে কি হবে? এখন সামনে আগানোর দিন- কথা সত্য, কিন্তু অতীতকে অস্বীকার করে সামনে আগানো যায়না। ডিয়ার ফেসবুক আর সেলফি প্রজন্ম- তোমাদের কাছে এইসব হলিউড বা বলিউড এর কোন কাহিনী মনে হইতে পারে বা কোন হিট সিনেমার স্ক্রিপ্ট মনে হইতে পারে- কিন্তু দুঃখের কথা হল- এসব সত্যি- যেমন সত্যি চাঁদ আর সূর্য। রাজাকারদের বয়স হইসে, এখন বিচার করে কি হবে, ওরা তো এমনেই মারা যাবে, শাস্তি দিলে সৃষ্টিকর্তা শাস্তি দিবেন, আমরা কে শাস্তি দেয়ার- এগুলো বলা অনেক সহজ, কিন্তু নিজের স্বজন হারাও নাই তো ডিয়ার নতুন প্রজন্ম- তাই বুঝবা না স্বজন হারানোর কষ্ট! নিজের সদ্য জন্ম নেয়া শিশুকে দেয়ালে আছড়ে মারা হয়েছে যেই মায়ের চোখের সামনে- পারলে সেই মায়ের সামনে যেয়ে এই কথা বইল! যেই ভাইয়ের চোখের সামনে তাঁর বোনের স্তন কেটে ফেলা হইসে, তাঁর সামনে যেয়ে এই কথা বইল পারলে। মুক্তিযুদ্ধকে বুঝতে না পার, স্বজন হারানোর ব্যথা হয়ত বুঝতে না পার, তাতে সমস্যা নাই তেমন- কিন্তু এই ধরনের ক্ষমার কথা বইল না দয়া করে, ক্ষমা মানুষকে করা যায়, মানুষরূপী পশুকে না।

মুক্তিযুদ্ধ এত সহজ না, আমার দেশের পতাকা এত সস্তা না, সিনেপ্লেক্সে সিনেমার শুরুতে পতাকা দেখানো হইলে আয়েশ করে বসে থাকা কোন "কুলনেস" না, যারা পতাকার সামনে দাঁড়ায় সম্মান প্রদর্শনের জন্য- তাঁদেরকে টিজ করা কোন "মডার্ননেস" এর অংশ না। পারলে কোনদিন লাল সবুজ পতাকার দিকে একটু মনোযোগ দিয়ে তাকানোর চেষ্টা কইর- মানুষের আত্মত্যাগ দেখার চেষ্টা কইর এই কাপড়ে, পারলে শোনার চেষ্টা কইর লাখ লাখ মা বোনের ধর্ষণের চিৎকার।

সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। বাংলাদেশ আগাবেই- দাবায় রাখতে পারবা না!

পুনশ্চঃ ১- মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর- একটি নির্দলীয় ইতিহাস- গোলাম মুরশিদ- প্রথমা প্রকাশনী
২- যুদ্ধ ও নারী- ডঃ এম এ হাসান- তাম্রলিপি প্রকাশনী
৩-The Black Book of Genocide in Bangladesh - Jagmohan- New delhi : Geeta book centre
৪- Witness to Surrender - Siddiq Salik- Oxford University press, 1978
৫- একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ রক্তাক্ত মধ্য আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর- শাফায়াত জামিল- সাহিত্য প্রকাশ

বাই দ্যা ওয়ে, শুধু সিনেমা সম্পর্কেই টুকটাক জানি-তা না, নিজের দেশ আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও কিছু জানি, অন্তত জানার চেষ্টা করি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: দুঃখজনক ।

বিজয়ের শুভেচ্ছা.....

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:১৫

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা :)

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: পোষ্টটা পড়ে ভীষন ঘৃনা হচ্ছে আর কষ্টও হচ্ছে। আমাদের মা বোনদের উপর কি নির্মম অত্যাচারটাই না তারা করেছিল। তারপরও আমি অবাক! ঐ জানোয়ারগুলোর দোসর যারা ধর্মের নামে এই কাজ জায়েজ করেছিল, তাদেরকে কিছু মানুষ এখনও সমর্থন করে, দোষী মনে করে না, প্রমান চায়।

অবশ্য যারা মা আর বোন নেই, তারা আর কি মা আর বোনের উপর অত্যাচারের মূল্য বুঝবে!

যাইহোক, অনেকদিন পর আপনার পোষ্ট পড়লাম। আশা করি ভালো আছেন।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪১

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ভাল আছি ভাইয়া :) আপনিও আশা করি ভাল আছেন :)

৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: অসুস্থ লাগছে পড়ে। ঘৃণার চর্চা অব্যাহত থাকুক পাকিদের জন্যে সবসময়।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ওদেরকে ঘৃণা করতেও ঘৃণা হয় এখন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.