নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I'll Sleep When I'm Dead

আমি একদিন মারা যাবো, এই সত্য মেনে নিতে আমার কোন আক্ষেপ নেই!আক্ষেপ শুধু একটি বিষয়তেই, আমি মারা যাওয়ার পর অনেক অসাধারণ চলচ্চিত্র,বই,গান এর সৃষ্টি হবে- যার স্বাদ আমি নিতে পারব না...

শাহরুখ সাকিব

জীবন খাতার শেষের পাতায়, এঁকে দিলাম আলপনা, আমার স্মৃতি পড়বে মনে, যখন আমি থাকব না...! মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ নিজে ; অথচ বাকি সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছি! তাদেরকে হাসি খুশি রাখার মাধ্যমে! বুঝেন অবস্থা! একবারেই বদ্ধ উন্মাদ, আবেগপ্রবন,ভীতু এক মানুষ...!চিন্তাভাবনা করে সাধারণত কিছু বলা বা করা হয় না, এজন্য ঝামেলাতেও বেশি পড়তে হয়! তারপরও - always try to listen to my heart !Simplicity জিনিসটা খুব ভাল্লাগে, নিজেও তাই!'হাসিমুখ','দেশ','দেশের মানুষ','বৃষ্টি','জোছনা','প্রিয় মানুষগুলোকে বিরক্ত করা','শিশির ভেজা ঘাসের উপরে হাঁটা','জীবন','নিঃশ্বাস নেয়া','বইপড়া'(অবশ্যই পাঠ্যবই নয়!),'বন্ধু','বন্ধুত্ব','আড্ডা দেয়া','পাহাড়','সমুদ্র','সিনেমা দেখা','শাহরুখ খান' প্রভৃতির প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! আমি নিম্নোক্ত জীবন দর্শনে বিশ্বাসী - "Live, Laugh and Love!" (বাঁচো , হাসও আর ভালোবাসো! ) :-D আর হ্যাঁ, নিজের প্রথম ও সবচেয়ে বড় পরিচয় "মানুষ" বলতে পছন্দ করি, আগে মানুষ, তারপর বাকি সব... :-) আমার রক্তের গ্রুপ- B (Be Positive!) আমার রাশি- কুম্ভ (কিন্তু আমি মোটেই কুম্ভকর্ণ নই!) নিজেকে একটি শব্দে প্রকাশ করতে বললে আমি সেই পুরনো অসাধারণ শব্দটি বলব--- "পাগল" :-P :-P আমার ফেসবুক ঠিকানা- fb.com/syed.n.sakib.3

শাহরুখ সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন হুমায়ুন ফরিদি :)

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪




(নিজের লেখা শুরু করার আগেই সেই লেখাটি পড়ার জন্য বেশি করে অনুরোধ করা বেশিরভাগ সময়ই আহাম্মকি এবং ছেলেমানুষিকতার পরিচয় দেয়। সেই আহাম্মকি এবং ছেলেমানুষিকতা জীবনে প্রথম এবং সম্ভবত শেষবারের মত করছি, কারণ এই লেখাটি আমার সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতা, যাকে আমি অভিনয়ের "ভাণ্ডার" মানি, যাকে আমি অভিনয়ের "গুরু" মানি, সেই প্রিয় হুমায়ুন ফরিদিকে নিয়ে লেখা। আশা করি সবাই কষ্ট করে পড়বেন এই দীর্ঘ লেখাটি)

লেখাটি মূলত ফরিদির জীবনের কিছু ঘটনা নিয়ে যা বেশিরভাগ মানুষের কাছেই অজানা, আবার অনেকে জেনেও থাকতে পারেন।

১- স্থান আল বিরুনি হল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে স্থাপিত হওয়া একটি হল। সবকিছুই ঠিকমতই চলছিল, কিন্তু প্রকৃতি ঠিকমতো হতে দিল না সম্ভবত। হলের উপরে যেই অংশে হলের নাম লেখা থাকে, সেই অংশ থেকে হলের নামটি রোদ- বৃষ্টির কারণে মুছে গেল, "আল বিরুনি" উধাও হয়ে গেল, রয়ে গেল শুধু "হল"! ছাত্ররা অনেক অভিযোগ করল, হলের নামটা নতুন করে লেখেন বা ঠিক করেন- যাদের কাছে অভিযোগ করা হল তারা তেমন কানে নিলেন না। "আরে! সবাই তো জানেই যে এটা আল বিরুনি হল! এত ঠিক করার কি আছে? করব নে পরে!" এমন একটা ভাব। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল যে বাঁকা করতে হয়- এই বুদ্ধি আসলো এই হলের একজন ছাত্রের মাথায়। গভীর রাতে গিয়ে তিনি একটি অদ্ভুত কাজ করলেন। পরের দিন সকালে সবাই দেখল, হলের নাম পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে "হুমায়ুন ফরিদি হল"। উপরের মহল তো রেগেই আগুন! কে করেছে এই কাজ? ফরিদিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি নির্লিপ্ত গলায় বললেন- আপনারা তো ঠিক করলেন না, তাই আমিই ঠিক করে দিলাম! ফলাফল- এরপরেই হলের নাম ঠিক করে আবার "আল বিরুনি হল" রাখা হল :)

২- কুরবানি ঈদের সময়। হলের বেশিরভাগ ছাত্ররা বাড়িতে চলে গেছে। অল্পকয়েকজন হলে থেকে গেছে, কারণ ঈদের পরেই পরীক্ষা নামক 'যন্ত্রণা' শুরু হবে। এই ছাত্ররা দলবল মিলে গেল মরহুম প্রফেসর কলিমুল্লাহর বাসায়। হুমায়ুন ফরিদি বললেন- স্যার! আমরা কয়েকজন ছাত্র হলে আছি, কুরবানির ঈদ স্যার, আমাদের একটা গরুর ব্যবস্থা করে দেন কুরবানি উপলক্ষে। স্যার বললেন- তোমরা কয়জন? আমরা ২০- ২২ জনের মত আছি স্যার- উত্তর এল। তাহলে তোমাদের গরু লাগবে না, এক কাজ কর, আমি খাসির ব্যবস্থা করছি তোমাদের জন্য। ভগ্ন হৃদয়ে ছাত্ররা স্যার এর বাসা ত্যাগ করল, তখনই স্যার এর বাসার বাইরে কুরবানির জন্য কিনে এনে রাখা কাল গরুটা নজরে পড়ল। চোখে চোখে ইশারা হয়ে গেল ফরিদির সাথে বাকি সবার। সেদিন রাতেই স্যার এর গরু চুরি করে নিয়ে আসলেন, সকালে সাভার থেকে কসাই নিয়ে আসলেন। দেড় মণের মত মাংস হল, ফরিদি কসাইকে বললেন ১৫ কেজির মত রান্না করেন আর বাকিটা রেখে দেন। এদিকে কলিমুল্লাহ স্যার এর চক্ষু চড়কগাছ সকাল বেলায় নিজের গরুকে না পেয়ে! উপায় না দেখে সকালেই নয়ারহাট (সাভারের একটি বিখ্যাত বাজার এলাকা) থেকে গরু কিনের আনলেন আর হলের ছেলেদের কাছে খবর পাঠালেন "তোমরা আমার বাসায় এসে সেমাই খেয়ে যেয়ো"। সেমাই খেতে যাওয়া বালকেরা খালি হাতে গেল না, বেঁচে যাওয়া গরুর মাংস সব নিয়ে গেল স্যার এর বাসায়। স্যার বললেন- এগুলা কি?! ফরিদি মুচকি হেসে বললেন- আমরা স্যার একটা গরু কিনেছিলাম, আমাদের খাওয়া শেষ, তাই ভাবলাম বাকিটা আপনার জন্য নিয়ে আসি। স্যার সব বুঝে গম্ভীর মুখে বললেন- হ্যাঁ হ্যাঁ! বুঝলাম! রাখ এই মাংস, আর খেতে বস!

৩- নাটক আর থিয়েটার নিয়ে যেই মানুষ বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকবেন, তার পড়ালেখার নমুনা যে খুব একটা ভাল হবে সেটা আশা করা একটু বেশিই হয়ে যায়, ফরিদির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। তার সহপাঠীরা যেখানে পাশ করে বেরিয়ে যাচ্ছে, তিনি তখন থার্ড ইয়ার বা ফোরথ ইয়ারে। তার এক সহপাঠী, অর্থনীতি বিভাগের নূরুল ইসলাম স্যার পাশ করে বেরিয়ে গিয়ে সেই বিভাগেই শিক্ষক হিসেবে জয়েন করলেন। একদিন নূরুল স্যার ক্লাস নিতে আসলেন, বোর্ডে বেশ কিছু লিখে ছাত্রদের বোঝার সময় দেয়ার জন্য থামলেন। হঠাৎ কে জানি একজন বলে উঠল- এই নুরুল! তিন নাম্বার লাইনের একদম বাম দিকে ঐটা কি লিখছিস একটু বুঝিয়ে বল তো! পুরা ক্লাস চুপ, স্যার অবাক! স্যার ভাবছেন- আমাকে 'নুরুল' বলে ডাকার 'দুঃসাহস' কার এই ক্লাসে? ক্লাসের একজন বাদে বাকি সব ছাত্ররাও একই কথা ভাবছে! হঠাৎ সেই দুঃসাহসী ব্যক্তিকে দেখা গেল, "এই যে নুরুল, আমি এইদিকে, আরে এইদিকে! কিরে? চিনতে পারছিস না আমাকে? আরে আমি ফরিদি! তোর সাথে না পড়তাম? ভুলে গেলি পাশ করেই? হা করে তাকিয়ে না থেকে তিন নাম্বার লাইনের একদম বামে কি লিখেছিস আমাকে দয়া করা বুঝিয়ে দে! পাশ তো করতে হবে নাকি?"

৪- শীতের সময়। হুমায়ুন ফরিদি অনেক রাতে নিজের গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছেন। বিজয় সারণি মোড় পার হবেন, তখনই একটি দৃশ্য দেখে গাড়ি থামালেন। দেখলেন, একজন বৃদ্ধ মানুষ শীতে ঠকঠক করে কাঁপছে, তার পড়নে লুঙ্গি ছাড়া আর কিছুই নাই। হুমায়ুন ফরিদি নিজের কোট আর শার্ট খুলে ঐ বৃদ্ধকে পড়িয়ে দিয়ে আসলেন, বৃদ্ধ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল। ফরিদি বাসায় ফিরলেন খালি গায়ে। এটা তো শুধু একটা উদাহরণ, সাভারে দুইটি এতিম খানা আছে যার যাবতীয় খরচ ফরিদি বহন করতেন, কেও জানত না যে ফরিদি দুইটি এতিমখানা চালাচ্ছেন। নিজের দানের কথা জানাতে বিরক্ত বোধ করতেন তিনি।

৫- ফোন রিসিভ করার পরে আমরা সবাই সাধারণত প্রথমে "হ্যালো" বলি, কিন্তু ফরিদি হ্যালো বলতেন না । তিনি "কেমন আছ?" বলে কথা শুরু করতেন। অপরিচিত নাম্বারের বেলায় তিনি কি করতেন, তা আমার জানা নাই :P

৬- একুশে টেলিভিশান এ প্রচারিত জনপ্রিয় নাটক ভোলার ডায়রি খ্যাত অভিনেতা সাজু খাদেম হুমায়ুন ফরিদিকে এতটাই নিখুঁতভাবে নকল করতে পারতেন যে, একটা সময় বিরক্ত হয়ে ফরিদি সব জায়গায় ফোন করে বলতেন- হ্যাঁ, আমি সাজু খাদেম না, আমি আসলেই হুমায়ুন ফরিদি, আমি সত্যি বলছি!

৭- সুবর্ণা মুস্তফার সাথে একবার তার প্রচণ্ড ঝগড়া হল, রাগ করে সুবর্ণা অন্য রুমে গিয়ে দরজা আটকে শুয়ে পড়লেন। সকালে উঠে দরজা খুলে দেখেন, যেই রুমে ঝগড়া হয়েছিল, সেই রুমের মেঝে থেকে ছাদের দেয়াল পর্যন্ত একটি কথাই লিখে পুরো রুমকে ভরে ফেলা হয়েছে, কথাটি হল- সুবর্ণা, আমি তোমাকে ভালোবাসি। এত ভালোবাসাও তাদের বিচ্ছেদ ঠেকাতে পারেনি, ২০০৮ সালে ডিভোর্স হয় তাদের। এক ইন্টার্ভিউতে ফরিদিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- আপনারা আলাদা হয়ে গেলেন কেন ? উত্তরে বলেছিলেন- "এটা তোমার সুবর্ণাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে। আমি তো সুবর্ণাকে ছাড়িনি। ও আমাকে ছেড়েছে"।

একজন প্রকৃত অভিনেতা মনে হয় তিনিই যিনি মঞ্চ , নাটক, সিনেমা- সব জায়গাতেই দক্ষতার সাথে অভিনয় করতে পারেন আর মানুষের মন জয় করতে পারেন। কানকাটা রমজান থেকে নব্বই দশকের একের পর এক ব্যবসাসফল বাণিজ্যিক সিনেমা- সব জায়গাতেই ফরিদি সফল। দহন, একাত্তরের যীশুর মত ভিন্ন ধরনের সিনেমাতেও তিনি নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। ছোটপর্দাতেও তিনি সমান জনপ্রিয়। নব্বই দশকে এমন অবস্থা ছিল যে, দর্শক নায়ক নায়িকা না দেখে শুধু তাকে দেখার জন্যই হলে আসতো। পরিচালক শহিদুল ইসলাম খোকন সম্ভবত এই কারণেই নিজের পরিচালিত ২৮ টি সিনেমার মাঝে ২৫ টি তেই ফরিদিকে রেখেছেন। নিজে কখনই হিরো হতে চাননি, "হিরো হওয়া তো সমস্যার! হিরোর কিছু নির্দিষ্ট কাজকর্ম করতে হয়, আমি সবসময়ই অভিনেতা হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মানুষ ভালোবেসে মনে হয় আমার মত মানুষকে হিরো বানিয়ে দিয়েছে। যেখানেই যাই, অসংখ্য লোক চলে আসে। প্রিয় জায়গায় যেতে পারিনা, কিছুটা বিরক্ত লাগে। তবে এই ভালোবাসা ভাল লাগে অনেক, একদিন সকালে উঠে যদি আমি দেখি মানুষ আমাকে চিনতে পারছে না, তাহলে এর চেয়ে বড় দুঃখ আমি আর কোন কিছুতে পাব না। আমি চাই যে মানুষ আমাকে চিনবে।" নব্বই দশকে তার একের পর এক দারুণ সিনেমা দেখে যতটা আনন্দ পেয়েছি আর মুগ্ধ হয়েছি, ততটাই আহত হয়েছি একসময় তার মানের চেয়ে অনেক অনেক নিচু সিনেমাতে তাকে অভিনয় করতে দেখে। "রাঙ্গা বউ" নামক সিনেমাতে ঋতুপর্ণার নাভি লেহনের দৃশ্যে তাকে অভিনয় করতে দেখে আহত হয়েছি। সিনেমাটা হিন্দি সিনেমা "অগ্নিসাক্ষী" এর কপি, নানা পাটেকর এর চরিত্রে অভিনয় করেন ফরিদি, নাভি লেহনের মত কিছু আপত্তিকর দৃশ্য থাকলেও আই মাস্ট সে, অভিনয়ের কথা বললে নানার চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে ছিলেন না ফরিদি এই সিনেমাতে। সাথে তো ছিলই তার সেই বিখ্যাত কলিজা কাঁপিয়ে দেয়া অট্টহাসি। একটা কথা সবসময় বলতেন, "বাঁচ আর বাঁচতে দাও"। আরও বলতেন "জীবনটা অনেক দামি, এটার যত্ন কর। পৃথিবী নামক গ্রহে তোমার কোন অবদান থাকবে না, এটা কীভাবে হয়? হ্যাঁ, এই গ্রহে অনেক সমস্যা, কিন্তু সেটাই সব না। এই গ্রহে সবাই বুশ না, এই গ্রহে রবীন্দ্রনাথ ও আছেন" সবসময়ে জীবন সম্পর্কে কথা বলা, বেঁচে থাকার উৎসাহ দেয়া লোকটা, নিজেই একসময় বেশ নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন, কেও তার খোঁজ নেননি। নিয়মিত মদ্য পান করতেন, সেটা আবার স্বীকারও করতেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি, তিন বছর আগের আজকের এই দিনে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান।

সবার কাছে তিনি স্টার বা দারুণ অভিনেতা হলেও, আমার কাছে সবার আগে তিনি ক্যাম্পাসের বড় ভাই। ভাবলেই গর্বে বুক ফুলে যায় যে তিনি আর আমি একই জাহাঙ্গীরনগর ভার্সিটির। তিনি ৫ম ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র, আর আমি ৪০ ব্যাচের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের। মাঝের গ্যাপটা অনেক বড় হলেও, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা মানেই জানেন, জাবির সিনিয়র জুনির সম্পর্ক অন্যরকম। জাবির সিনিয়র জুনিয়র একসাথে আড্ডা দিতে বসলে- সময়, দেশ, জাতি- কোনদিকে আর কারো খেয়াল থাকে না। চায়ের কাপের অর্ডার চলতেই থাকে অনবরত। চায়ের কাপ থেকে মনে আসলো- জাহাঙ্গীরনগরের এক চায়ের দোকানদারের কাছ থেকে ফরিদি একবার চা খেয়েছিলেন, কিন্তু বিল দেন নাই, হেসে বলেছিলেন- তোমার বিল আমি এই জীবনে দিব না! প্রতিবার এসে চা খেয়ে যাব, কিন্তু টাকা তুমি পাবা না। সে চা দোকানদার এখনও আছেন, তিনি কাঁদতে কাঁদতে এখন বলেন- আমার টেকা লাগব না গো স্যার! আপনে একবার চা খাইতে হইলেও আমার দোকানে আসেন, আপনে নাই এইটা হইতে পারে না। বিশ্বাস করেন আমি টেকার কথা বলব না।

বিশ্বাস আমারও হয়না যে এই মানুষটা নেই, ফাগুনের সময় তিনি চলে গিয়েছিলেন, ফাগুন আবারও এসেছে, আরও আসবে, ফাগুন আসলে কান পাতলেই আমি ফরিদির সেই হাসি শুনতে পাই। আমি বিশ্বাস করি তিনি এখনও আছেন, শুধু আমার চোখের সমস্যার কারণে আমি তাকে দেখতে পাই না। নিজের বাবার মৃত্যু ছাড়া এই জীবনে হাতেগোনা যেই কিছু মানুষের মৃত্যুতে চোখে আপনাআপনি পানি চলে এসেছে, তার মাঝে একজন হলেন ফরিদি। তবে খুব একটা চোখে পানি আনিনা এখন, কারণ তিনি নিজেই বলে গেছেন "তেল গেলে ফুরাইয়া, বাত্তি যায় নিভিয়া, কি হবে আর কান্দিয়া?" (নিচে গানের লিঙ্ক) আমি বিশ্বাস করি, ক্রিস্টোফার নোলান যদি বাংলাদেশে জোকার চরিত্র নিয়ে সিনেমা বানাতেন, তাহলে ফরিদির চেয়ে সেই চরিত্র অসাধারণভাবে আর কেও ফুটিয়ে তুলতে পারতেন না।

(উপরের তথ্যগুলো যোগাড় করতে আমার কি পরিমাণ কষ্ট হয়েছে, সেটা শুধু আমি জানি। বাংলাদেশ বলে কথা, এখানে শিল্পীর মূল্য দেয়াটা দুঃস্বপ্নের মত। ইউটিউব এ সার্চ করলে পাচিনো, কেপ্রিও, অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, শাহরুখ খান এর এক সপ্তাহে দেয়া যেই পরিমাণ সাক্ষাৎকার এর ভিডিও পাই, ফরিদির সারা জীবনের দেয়া সাক্ষাৎকার এর ভিডিওর পরিমাণ তাদের এক সপ্তাহের সমান হয় না! আফসোস! অথচ মানের দিক থেকে তাদের তুলনায় ফরিদি কোন অংশেই কম নয়, শুধু আমরা তাকে ব্যবহার করতে পারলাম না!)

https://www.youtube.com/watch?v=JStJBJYTp-4

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৭

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: প্রিয় মানুষটার কিঞ্চিৎ জীবন কাহিনী প্রিয়তেই রাখলাম।
জনাব হুমাহুন ফরিদির রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।


জনাব "শাহরুখ সাকিব" ভাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং সেই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি উপরের তথ্যগুলো বিরামহীন কষ্ট করে যোগাড় করে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪৫

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: কি পরিমাণ কষ্ট যে হইসে, এটা আর না বলি :) তবে প্রিয় অভিনেতার জন্য এতটুকু কষ্ট না করলে আর কীসের ফ্যান হলাম? :) অনেক ধন্যবাদ :)

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৪

ঢাকাইয়া০০৭ বলেছেন: হুমায়ুন ফরিদীর অজানা কিছু তথ্য শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪৫

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ :)

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৮

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: এই শক্তিমান অভিনেতার উপর লেখা পড়ে ভাল লাগল।


লেখাটা সম্ভবত FB-তে সিনেমাখোর পেজ-এ শেয়ার করা হয়েছে।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৯

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ :) জি হ্যাঁ, পেজে শেয়ার করা হয়েছে :)

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫২

বিদগ্ধ বলেছেন: পরিশ্রম করে অনেক মজার এবং কৌতূহলউদ্দীপক বিষয় তুলে ধরেছেন। ভালো লেগেছে লেখাটি।

হুমায়ূন ফরীদীর তুলনা তিনি নিজেই.... বাংলা তিন হুমায়ুনই ছিলেন বিভিন্নভাবে প্রতিভাবান!

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩০

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ঠিক বলেছেন :)

৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট + । শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি হুমায়ূন ফরীদিকে ।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩০

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫০

বৃতি বলেছেন: প্রিয় অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ- ভাল লাগলো।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩১

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোস্ট| ফরিদি আমার এমনিতেই অনেক প্রিয় অভিনেতা| এই পোস্ট পড়ে শ্রদ্ধা আরো বাড়ল| ধন্যবাদ

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩১

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ :)

৮| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেক খাটসেন পোস্টটার জন্যে। ধন্যবাদ রইলো।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ হামা ভাই, খাটনির কথা আর নাইবা বললাম ;)

৯| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০

জনাব মাহাবুব বলেছেন: যুগে যুগে কিছু অসাধারণ প্রতিভা এই পৃথিবীতে আসে। তারা তাদের কর্ম ধারা মানুষের মনের কোঠায় জায়গা করে নেন। সেই ধরনের মানুষ আমাদের প্রিয় অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী।

হুমায়ুন ফরিদীর অনেজ অজানা কাহিনী জানলাম, যা আগে জানতাম না। :)

অনেক কষ্টসাধ্য পোষ্টে ++++++++++++

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৬

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

১০| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৪

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: আপনার খাটুনীর প্রতি শ্রদ্ধা ।

আপনার আগ্রহ একটা জগতে আমার আগ্রহ অন্যটাতে । তবে একটা দু:খ আছে, আপনার সাথে মিল পেয়েছি ।

গুগুলে সার্চ দিলে এভারেষ্ট অণ্ণপূর্ণার ছবি পাই, বানলাদেশের সবচেয় উচু পাহাড়টার ছবি (প্রায়)পাওয়া যায় না। মৌলিক কোন তথ্য সংগ্রহের জন্য অনেক অনেক কাহটতে হয়, কি আর করা ! আগ্রহ বলে কথা !!

১১ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ঠিক বলসেন ভাই :)

১১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

দূরের পথযাত্রী বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোস্ট। প্রিয় অভিনেতার সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। ভালো লাগলো। আপনার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।আর ভাই, তথ্যের জন্যে সামুই বেস্ট।মোটামুটি সব বিষয়েই আমাদের ব্লগাররা গবেষনামূলক লেখা পোস্ট করে বসে আছেন।বাংলায় এতো ভালো তথ্যভান্ডার আমি আর কোথাও পাইনি। ধন্যবাদ।

১০ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.