নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I'll Sleep When I'm Dead

আমি একদিন মারা যাবো, এই সত্য মেনে নিতে আমার কোন আক্ষেপ নেই!আক্ষেপ শুধু একটি বিষয়তেই, আমি মারা যাওয়ার পর অনেক অসাধারণ চলচ্চিত্র,বই,গান এর সৃষ্টি হবে- যার স্বাদ আমি নিতে পারব না...

শাহরুখ সাকিব

জীবন খাতার শেষের পাতায়, এঁকে দিলাম আলপনা, আমার স্মৃতি পড়বে মনে, যখন আমি থাকব না...! মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ নিজে ; অথচ বাকি সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছি! তাদেরকে হাসি খুশি রাখার মাধ্যমে! বুঝেন অবস্থা! একবারেই বদ্ধ উন্মাদ, আবেগপ্রবন,ভীতু এক মানুষ...!চিন্তাভাবনা করে সাধারণত কিছু বলা বা করা হয় না, এজন্য ঝামেলাতেও বেশি পড়তে হয়! তারপরও - always try to listen to my heart !Simplicity জিনিসটা খুব ভাল্লাগে, নিজেও তাই!'হাসিমুখ','দেশ','দেশের মানুষ','বৃষ্টি','জোছনা','প্রিয় মানুষগুলোকে বিরক্ত করা','শিশির ভেজা ঘাসের উপরে হাঁটা','জীবন','নিঃশ্বাস নেয়া','বইপড়া'(অবশ্যই পাঠ্যবই নয়!),'বন্ধু','বন্ধুত্ব','আড্ডা দেয়া','পাহাড়','সমুদ্র','সিনেমা দেখা','শাহরুখ খান' প্রভৃতির প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! আমি নিম্নোক্ত জীবন দর্শনে বিশ্বাসী - "Live, Laugh and Love!" (বাঁচো , হাসও আর ভালোবাসো! ) :-D আর হ্যাঁ, নিজের প্রথম ও সবচেয়ে বড় পরিচয় "মানুষ" বলতে পছন্দ করি, আগে মানুষ, তারপর বাকি সব... :-) আমার রক্তের গ্রুপ- B (Be Positive!) আমার রাশি- কুম্ভ (কিন্তু আমি মোটেই কুম্ভকর্ণ নই!) নিজেকে একটি শব্দে প্রকাশ করতে বললে আমি সেই পুরনো অসাধারণ শব্দটি বলব--- "পাগল" :-P :-P আমার ফেসবুক ঠিকানা- fb.com/syed.n.sakib.3

শাহরুখ সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ জন্মদিন ড্যানিয়েল ডে লুইস :)

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৩০

পরিচালক স্টিভেন স্পিলবারগ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছেন।
স্পিলবারগ এর বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। মাথায় আকাশের সাদা মেঘ ভর করেছে অনেক আগেই। চোখের চশমার পাওয়ারটা বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, তার সাথে বাড়ছে কাজের পরিমাণ। জীবনে অনেক কিছু দেখেছেন তিনি- সাফল্য আর ব্যর্থতা সবই। এক জীবনে খুব কমই ভ্রু কুঁচকেছে তার- তার সহকর্মীরা এটা বলে। তারা আরেকটা কথাও বলে- স্যার এর ভ্রু যখন কুঁচকায়, তখন বুঝতে হবে কোন ভালো রকমের ঝামেলা হইসে।
এই মুহূর্তে স্পিলবারগের ভ্রু কুঁচকানোর কারণ হল তার সামনে থাকা নীল মলাটের বেশ ভালো সাইজের একটা খাতা। নিজের পরের সিনেমার স্ক্রিপ্ট তার এই খাতা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এর উপরে সিনেমা বানাবেন তিনি, এটা অনেক আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন। দশ বছর আগেও একবার প্রায় সব ঠিক করে ফেলেছিলেন, কিন্তু তখন কেন যে ব্যাটে আর বলে মিলেনি। দশ বছর পর আবার সব ঠিকঠাক, কিন্তু সমস্যা কে জায়গায়- এরকম "ভারি" একটা রোলে তিনি কাকে দিয়ে অভিনয় করাবেন? অভিনেতার অভাব নাই তার ইন্ডাস্ট্রিতে, অভাব নাই সুপারস্টারেরও যাদের নিলে সিনেমার ব্যবসাটা ভালো হবে। কিন্তু আব্রাহাম লিঙ্কনের সিনেমা তো আর ব্যবসা দিয়ে মাপা যাবে না। নিজের প্রিয় অভিনেতা ডি কেপ্রিওকে ভাবলেন কিচ্ছুক্ষণের জন্য, অমনি "ধুর! উচ্চতায় এই ছেলে মার খেয়ে যাবে!" বলে ভ্রু আরও কুঁচকে ফেললেন। লিয়াম নেসনের কাছে গিয়েছিলেন, উচ্চতা আর অভিনয়- সব দিক থেকেই এই অভিনেতা ঠিক ছিলেন, কিন্তু তিনি না করে দিলেন। স্পিলবারগ যেন অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন তখন।
এই অথৈ সাগর থেকে তাকে কে বাঁচাবে- এটা ভাবতে ভাবতে তিনি বাইরে তাকালেন। মিষ্টি রোদ উঠেছে বাইরে, তিনি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলেন। কাজের চাপে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখাই হয় না, দেখলেও চারচোখ দিয়ে (চশমাসহ) দেখতে হয়। তার মুখ দিয়ে অটোম্যাটিক বেরিয়ে আসল- "What a nice day!"
এই লাইনটা বলার পরে মুহূর্তেই তার মনে বিদ্যুতের চমক খেলে গেল! পেয়েছেন- তিনি তার কাঙ্ক্ষিত অভিনেতাকে পেয়েছেন! নীল খাতাটা নিয়ে যত দ্রুত পারলেন সেই অভিনেতার বাসায় গেলেন, গিয়ে তাকে দিয়ে আসলেন খাতাটা আর বললেন- এই ক্যারেক্টার আপনার চেয়ে ভালো আর কেও করতে পারবে না। ছয় ফুট দুই ইঞ্চির সেই অভিনেতা মুচকি হেসে বললেন- আমি আপনাকে জানাব।
সপ্তাহখানেক পরে স্পিলবারগ সেই অভিনেতার কাছ থেকে এক চিঠি পেলেন। এর আগে তিনি অথৈ সাগরে সাঁতার কাটছিলেন, এই চিঠি পেয়ে তিনি যেন সাগরে চিরতরে ডুবে গেলেন! যাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশা ছিল তার, সেই মানুষটা চিঠিতে তাকে অতি বিনয়ের সাথে "না" করে দিয়েছেন "আমি এত বড় মাপের চরিত্রে অভিনয় করতে পারব না, আমার সেই ক্ষমতা নেই, আমাকে মাফ করবেন, আমি দুঃখিত" বলে! নিজের দুঃখের কথা প্রিয় অভিনেতা ডি কেপ্রিও এর কাছে তিনি বললেন। ডি কেপ্রিও তাকে অভয় দিয়ে বললেন- আপনি প্রি প্রোডাকশনের কাজ শুরু করেন, আপনি যাকে চেয়েছেন, তিনিই এই সিনেমাতে অভিনয় করবেন। স্পিলবারগ এই কথা আমলে নিলেন না। কিন্তু তার ভুল ভাঙল এক সপ্তাহ পরেই- যাকে চেয়েছিলেন সেই অভিনেতা অভিনয়ে রাজি হয়ে গেলেন! আনন্দের আতিশয্যে স্পিলবারগ কি করবেন বুঝতে পারছিলেন না! সবার আগে কেপ্রিও কে ফোন দিলেন থ্যাংকস বলার জন্য, থ্যাংকস বলেই জিজ্ঞাসা করলেন- এই লোককে তুমি রাজি করালে কীভাবে? ওপাশ থেকে ডি কেপ্রিও বললেন- আপনি আম খান, আঁটি গুনতে চান কেন? ডি কেপ্রিও কীভাবে সেই লোককে রাজি করিয়েছিলেন- সেটা আজ পর্যন্ত কেও জানেন না। ফোন রেখেই স্পিলবারগ সেই অভিনেতার কাছে চলে গেলেন, অভিনেতাকে কিছু বলার আগেই তিনি বললেন- আমি আপনার সিনেমাতে কাজ করব, তবে এক শর্তে। " কি শর্ত? আপনে যা বলবেন তাতেই আমি রাজি!" আনন্দে বললেন স্পিলবারগ। "আপনি প্রোডিউসারকে বলেন এক বছর পরে এই সিনেমার কাজ শুরু করতে।" "এক বছর? কি করবেন আপনি এই এক বছর, এত দেরি ক্যান? কোন সমস্যা আপনার?" ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন স্পিলবারগ। "আমি ১০০ টি বই সংগ্রহ করেছি প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনের উপরে, এই এক বছরে আমি সেগুলো পড়ে শেষ করব, ক্যারেকটারে ঢোকার জন্য। এক বছরের আগে আমার সাথে আর যোগাযোগ করবেন না। আজকে আসুন আপনি, রাত অনেক হয়েছে।" বিস্ময়ে আর মুগ্ধতায় হা হয়ে গেল স্পিলবারগের চোয়াল- সাথে এই বুঝতে পারলেন, এই ক্যারেক্টারের জন্য তিনি সবচেয়ে বেস্ট অভিনেতাকে সিলেক্ট করেছেন।

কে এই অভিনেতা? পাঠক, চলুন জেনে আসি এক "পাগলাটে আর উন্মাদ" অভিনেতার কাহিনী ;)

জন্ম ইংল্যান্ডের লন্ডনে। তার বাবা ছিলেন বিখ্যাত কবি, তাই কবিতার বা সাহিত্যের রস তার রক্তে জন্ম থেকেই ছিল। আরেকটা জিনিস ছিল তার রক্তে লুকায়িত- অভিনয়, কারণ তার নানা ছিলেন Michael Balcon- ব্রিটিশ অভিনয় জগতের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। নিজের এই লুকায়িত জিনিসকে আবিষ্কার করতে বেশি সময় লাগেনি তার, ছোটবেলার থেকেই আশেপাশের মানুষকে অনুকরণ করতে পারতেন। অনুকরণে ভালো হলেও, "অনুসরণে" তিনি ছিলেন ব্যর্থ- কারো কথা শুনতেন না। ছোটবেলায়ই "বেয়াড়া" ছেলের খেতাব পেয়ে গিয়েছিলেন। বেয়াড়া ছেলেকে "ঠিক" করতে তার বাবা তাকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠান। এতে অনেক রেগে যান তিনি। স্কুলে ইচ্ছে করে ঝামেলা করতেন যাতে তাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়, তাতেও কাজ না হলে একটা সময় স্কুল পালানো শুরু করলেন। স্কুলে কারো সাথে মিশতেন না বলতে গেলে, অন্তর্মুখী স্বভাবের ছিলেন, কথা প্রায় বলতেন না কারো সাথেই। নিজের মত থাকতেন, নিজের এক দুনিয়া তৈরি করেছিলেন, "মায়ার" দুনিয়া, যেই মায়া তাকে পরে দারুণ এক অভিনেতা বানায়, যেই দুনিয়া তাকে যেকোনো ক্যারেকটারে সহজে ঢুকে যেতে সাহায্য করত।

ব্রিটেনের এক স্কুলে অভিনয় শেখা শুরু করেন এই ব্রিটিশ অভিনেতা, কিন্তু কয়েকদিনেই হাঁপিয়ে গেলেন। থিয়েটারের অভিনয়ের স্টাইল তার পছন্দ হত না, তিনি চাইতেন একটি ক্যারেকটারে ঢোকার জন্য একটি রুমে নিজেকে আটকে রাখতে, বাকি সবার থেকে আলাদা হয়ে থাকতে। "মানুষ এত কথা বলে কেন থিয়েটারে কথা বলার সময়? একজন আরেকজনের সাথে বসে চা খায়, গল্প করে। গল্প করা মানে তো আমি ক্যারেক্টার সম্পর্কে মানুষকে আগেই বলছেন,আর ক্যারেক্টার সম্পর্কে আপনি যখন বলছেন- এর মানে হল আপনি সেই ক্যারেকটারকে মেরে ফেলছেন জন্ম হওয়ার আগেই"- এমন ছিল তার মতামত।

১৪ বছর বয়সে অবশেষে তিনি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন, ছোট্ট একটা ক্যামিও রোলে। সিনেমার নাম Sunday Bloody Sunday। সবসময় একা থাকা মানুষটার জীবনে এবার "দুই" সংখ্যাটার প্রাধান্য আসলো। কারণ সিনেমা করে তার প্রথম উপার্জন ছিল মাত্র দুই পাউন্ড। এই দুই পাউন্ড পেয়ে যেন ২০০ পাউন্ড পাওয়ার মত খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু সুখ বেশিদিন থাকল না, তার বয়স যখন মাত্র ১৫, তখন তার বাবা ক্যান্সারে মারা গেলেন। বাবার উপর অভিমানের যেই বরফ জমেছিল, সেটা গলে পানি হয়ে গেল, কিন্তু সেই পানি তিনি বাবাকে দেখাতে পারলেন না, এই ঘটনায় একেবারে অন্যরকম হয়ে গেলেন তিনি, আগের সেই "বেয়াড়া" ভাবটা একদম থাকল না, আগের চেয়েও আরও শান্ত হয়ে গেলেন। এরপরে অনেকদিন টিভি সিরিজে কাজ করলেন, বড় হয়ে তার প্রথম রোল ছিল বিখ্যাত Gandhi সিনেমাতে করা ছোট্ট একটি রোল। পাশাপাশি মঞ্চ আর টিভি তো চলছিলই। The Bounty সিনেমায় মেজর একটি রোল দিয়ে বলতে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় তার সিনেমা জগতে।

শুরুর দিকেই এই লোককে পাগলাটে অভিনেতা বলেছি, এর কিছু উদাহরণ দেই এবার। আপনি বিশ্বাস নাও করতে পারেন, তবে নিচে যা লেখা হচ্ছে তার সবটুকু সত্যি।

The Unbearable Lightness of Being সিনেমার জন্য তিনি চেক ভাষা শিখেছিলেন- এতটাই ভালো করে যে পরিচালক বলেছিলেন- চেক প্রজাতন্ত্রের অনেক মানুষও এত ভালো চেক ভাষা পারে না! এরপরে তিনি অভিনয় করলেন My Left Foot নামক সিনেমাতে। এই সিনেমায় তিনি হুইল চেয়ারে আটকে থাকা এক প্রতিবন্ধীর চরিত্রে অভিনয় করেন, অবাক করা বিষয় হল, যতদিন সিনেমার শুটিং হয়েছে- ততদিন শুধু ঘুমানোর সময়টা ছাড়া তিনি এই হুইল চেয়ার থেকে উঠেন নি। এমনকি নিজের হাতে খাবারও খেতেন না, ইউনিটের লোকদের বলতেন চামচ দিয়ে তাকে খাইয়ে দিতে আর বলতেন " আমি তো প্রতিবন্ধী, আমি কীভাবে খাব নিজের হাত দিয়ে?!" পরিচালক থেকে শুরু করে প্রযোজক সবাই তার এই আচরণে একই সাথে বিস্মিত ও একই সাথে বিরক্ত হতেন, কিন্তু তিনি নির্বিকার- হুইল চেয়ার ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না। এভাবে কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজের পাঁজরের দুটি হাড় ভেঙ্গে ফেলেন, সুস্থ হয়ে আবার তিনি ব্যাক টু দ্যা হুইলচেয়ার। দুইটা পাঁজরের হাড্ডি ভাঙ্গার ফল পেয়েছিলেন তিনি একটি দামি পুরস্কার পেয়ে, সেই পুরস্কারের নাম- অস্কার। নিজের জীবনের প্রথম অস্কার ছিল সেটি।

অস্কার পেয়ে তিনি আবার মঞ্চে ফেরত আসলেন, শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট দিয়ে। কিন্তু নাটক চলার মাঝখানে তিনি থিয়েটার ছেড়ে দৌড়ে পালিয়ে যান, তাকে কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন- আমি অভিনয় করার সময় আমার মৃত বাবার আত্মাকে দেখতে পাচ্ছিলাম। যদিও অনেক পরে এই ঘটনা তিনি অস্বীকার করেছেন আর বলেছেন- এটা তার মনের ভুল ছিল। ঐ ঘটনার পর আজ পর্যন্ত তিনি আর মঞ্চে যান নি, এই বিষয়ে কথা বলাও পছন্দ করে না, কোন ইন্টার্ভিউতে জিজ্ঞেস করা হলে এড়িয়ে যান।

এরপরে তিনি যেই সিনেমা করলেন তার নাম The Last of the Mohicans। এই সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য তিনি সত্যি সত্যি বন্য প্রাণী শিকার করা শিখলেন। আরও অবাক করা ব্যাপার হল, শুটিং ইউনিটের সবাই যখন মজার মজার খাবার খেত, তখন তিনি সেগুলোকে ছুঁয়েও দেখতেন না, তিনি নিজের হাতে শিকার করা বন্যপ্রাণীগুলোকেই খেতেন। এই সিনেমাতে তাকে হাতে সবসময় একটি লম্বা বন্দুক বহন করতে দেখা যায়। সিনেমা শুটিং চলাকালের পুরোটা সময় তিনি এই বন্দুক নিয়ে চলাফেরা করতেন, এমনকি রাতে ঘুমানোর সময় এই বন্দুক তার পাশে থাকতো। এমনকি ১২ পাউন্ড অজনের এই বন্দুক নিয়ে তিনি একবার এক ক্রিসমাস পার্টিতে যান, সেখানে উপস্থিত সবাই মুখে "মেরি ক্রিসমাস" বললেও, তাদের আতঙ্কিত চোখজোড়া ছিল তার ঐ বন্দুকে দিকে।

এরপরে In the Name of the Father নামের এক সিনেমাতে অভিনয় করেন তিনি, জেলের কয়েদি চরিত্রে। এই চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তিনি এক মাস জেলে থাকেন একটি সেলে একা। সিনেমাতে একটি সিন আছে যেখানে তাকে পুলিশ টর্চার করছে, এই মাত্র একটা সিন করার জন্য তিনি তিন রাত না ঘুমিয়ে কাটান। শুটিং ইউনিটের সব লোককে তিনি বলতেন তাকে যেন প্রতিটা মুহূর্তে গালাগালি করা হয় যাতে তার মেজাজ বিক্ষিপ্ত থাকে, এতে করে তিনি নাকি ক্যারেকটারে সহজে প্রবেশ করতে পারবেন। টর্চারের দৃশ্যে তার মুখে পানি ছিটান হয়, তার আদেশ অনুযায়ী সেই পানিতে বরফ মিশিয়ে সেই ঠাণ্ডা পানি তার দিকে ছুঁড়ে মারা হয়- যাতে সেই টর্চারের দৃশ্য একদম আসল মনে হয়। এত কিছু করেও সেই বছরের অস্কার থেকে তিনি বঞ্চিত হন, ফিলাডেলফিয়া সিনেমার জন্য টম হেঙ্কস অস্কার নিয়ে যান, মজার ব্যাপার হল টম হেঙ্কস এর চরিত্র প্রথমে তার করার কথা ছিল, কিন্তু In the Name of the Father এর জন্য তিনি না করে দেন।

এরপরে তিনি করেন The Crucible নামের এক সিনেমা। এই সিনেমাতে যেই ক্যারেক্টার তিনি প্লে করেন, সেই ক্যারেক্টার ১৭ শতকের, সেই সময়ে মানুষ যেই ধরনের বাড়িতে বাস করত, তিনিও সেই ধরনের বাড়িতে বাস করার শুরু করলেন এবং অবাক করা ব্যাপার হল সেই বাড়ি তিনি নিজ হাতে বানিয়েছিলেন! শুধু তাই না, এই সিনেমার শুটিং এর পুরোটা সময় তিনি গোসল করেন নি। ইউনিটের লোকেরা এই জিনিসে বিরক্ত কিন্তু তিনি নির্বিকার। শুধু সিনেমাতে ঘর বানান নি তিনি, এই সিনেমাতে শুটিং করার সময় নিজের স্ত্রী Rebecca Miller এর সাথে পরিচয় হয় তার, বাস্তব জীবনের এরপরে ঘর বাঁধেন তিনি। বাই দ্যা ওয়ে, এই মহিলা আমেরিকার বিখ্যাত সাহিত্যিক আর্থার মিলারের মেয়ে। বাবা আর শ্বশুর- দুইজনকেই সাহিত্যিক হিসেবে পেয়েছিলন এই অভিনেতা।

এরপরে তিনি অভিনয় করেন The Boxer নামক সিনেমাতে। একজন বক্সারের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তিনি ১৮ মাস বিখ্যাত বক্সিং চ্যাম্পিয়ন Barry McGuigan এর কাছে প্রশিক্ষণ নেন। তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া শেষে Barry McGuigan বলেন- এই লোকের কাছ থেকে আপনারা এখন থেকে একটু সাবধানে থাকবেন, ইনি এই ১৮ মাসে একজন প্রফেশনাল বক্সারে পরিণত হয়েছেন! তিনি চাইলে এখন রিং এ নামতে পারেন।

Gangs of New York তার পরের সিনেমা। এই সিনেমাতে একজন খুনি কসাই চরিত্রে অভিনয় করার জন্য এক মাসের মত একজন কসাই এর কাছে প্রশিক্ষণ নেন মাংস কীভাবে কাটতে হয় তার উপরে। এই সিনেমাতে অভিনয় করার সময় তার প্রচণ্ড নিউমোনিয়া হয়, কিন্তু তিনি এত অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও গরম সোয়েটার পড়তে অস্বীকৃতি জানান, তার ভাষ্যমতে- আমি যেই ক্যারেক্টারে অভিনয় করছি, সেই ক্যারেক্টার যেই সময়ে বাস করত- তখন এই ধরনের গরম সোয়েটার পড়া হত না, তাই আমি এটা পড়ব না মরে গেলেও না। এমনকি ওষুধ ও খেতে চাইতেন না তিনি "ঐ সময়ে এইসব ওষুধ পাওয়া যেত না" এই কথা বলে। অবশেষে অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হলে ডাক্তারদের জোরাজোরির এক পর্যায়ে তিনি ওষুধ খেতে বাধ্য হন। সিনেমা চলার সময়ে সবাই যখন একে অপরের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত, ইভেন ডি কেপ্রিও আর পরিচালক স্করসিস সহ, সেখানে তিনি পুরোটা সময় পার করতেন নিজের ছুরিতে ধার দিয়ে- কসাই চরিত্রের আরও গভীরে তিনি যেন প্রবেশ করতেন প্রতিটা ধার দেয়ার সময়। পুরোটা সময় তিনি এমিনেম এর গান শুনতেন যাতে তার মেজাজ সবসময় বিক্ষিপ্ত থাকে। পরিচালক স্করসিসকে অনেক বেশি পছন্দ করেন তিনি, তার মতে "জীবনে একবার হলেও আপনার স্করসিসের সাথে কাজ করা উচিত, তাহলে আপনার অভিনয় জীবন ধন্য হবে। আমি লাকি যে আমি এই মানুষটার সাথে দুইবার কাজ করতে পেরেছি।"

নিজের পরের দুটো সিনেমার জন্য তিনি আরও দুইটা অস্কার পান, সিনেমার নাম যথাক্রমে- There will be blood আর Lincoln. তিনি ইতিহাসের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি যিনি লিড রোলে তিনটি অস্কার পেয়েছেন, আর কারো এই রেকর্ড নেই। মানুষটার নাম এতক্ষণে বুঝে যাওয়া উচিত- ড্যানিয়েল ডে লুইস। দুই ধরনের অভিনয় আছে মোটা দাগে বলতে গেলে- মেথড এক্টিং আর ক্যারিজমেটিক এক্টিং। এই মানুষটা মেথড ক্যাটাগরিতে পড়েন। ভুল কথা, তার অভিনয় দেখলে আপনি বলতে বাধ্য হবেন- এই মানুষটা মেথড অভিনয়কে জন্ম দিসেন, তিনি এর বাবা, পিতা, ডেডি, আব্বা- সব। ক্যারেক্টারে এত অসাধারণভাবে আর সুনিপুনভাবে ঢুকে যাওয়া, ক্যারেক্টারের জন্য নিজের উপরে পাগলের মত অত্যাচার করা, পাগলামির এক্সট্রিম লেভেলে চলে যাওয়া- এটা এই পৃথিবীতে তার মত আর কেও করে না। একটা সিনেমার পরে আরেকটা সিনেমাতে গেলে তিনি নিজের হাঁটা, তাকানো, গলার স্বর, নিজের লুক- সব এমনভাবে চেঞ্জ করে ফেলেন যে আপনি কিছুতেই ধরতে পারবেন না যে এটা একই ব্যক্তি! তিনি ব্রিটিশ আর আমেরিকান ইংরেজিতে এত বেশি পারদর্শী যে আপনি কনফিউজড হতে বাধ্য যে তার জন্ম আসলে কোথায়। যেই ক্যারেক্টারে অভিনয় করছেন, শুটিং চলাকালে সবাই যেন তাকে সেই নামে ডাকে- এটা তার আদেশ থাকে, এই নামে না ডাকলে তিনি কারো ডাকে সাড়া দেন না। এমনকি যদি কোন বাবা চরিত্রে তিনি অভিনয় না করেন তখন অভিনয়ের পুরোটা সময় তিনি নিজের আপন তিন সন্তানকে তাকে "বাবা" বলে ডাকতে নিষেধ করেন- পাগলামি, madness at its best!

অনেক চলচ্চিত্রসমালোচকেরা মনে করেন- তিনি মেথড অভিনেতাও নন, তিনি আসলে এমন এক অভিনেতা যেই অভিনেতা পৃথিবীতে মাত্র একজন আর সেটা হলেন তিনি নিজে। আর তার অভিনয়ের স্টাইল একেবারেই আলাদা যা শুধু এই পৃথিবীতে তিনিই পারেন। হি ইজ দ্যা বেস্ট, হি ইজ ওয়ান অ্যান্ড অনলি- তার মত আর কেও নাই, হওয়ার সম্ভাবনাও নাই। নিজের নামে day শব্দটা থাকার কারণেই তিনি হয় প্রতিটা সিনেমাতে নতুন একটা দিনের মতই আগমন করেন।

অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে ক্যারেক্টারে ঢোকার জন্য তিনি মাদকের আশ্রয় নিতেন- সেটা স্বীকারও করেছেন, তবে এখন আর নেন না। ক্লিন্ট ইষ্টউডের অনেক বড় ফ্যান তিনি, টানা তার সিনেমা দেখতেন আর কষ্টের সাথে বলতেন- আফসোস! এই মানুষটার মত ক্যারিজমেটিক অভিনয় করতে পারতাম! এই মানুষটার কিছু করা লাগেনা, ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে চুরুটে টান দিলেই মানুষ তালি দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যায়- আর আমাকে কত কিছু করতে হয় তারপরেও মনে হয় ঠিকমতো অনেক কিছু করতে পারলাম না। আরেকজন মানুষের বড় ফ্যান তিনি- প্রয়াত হিথ লেজার। এত বড় অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি অনেক লো প্রোফাইল মেইনটেইন করেন। ইন্টার্ভিউ দিতে চান না, কোন সিনেমার শুটিং চলাকালে তো একদম না। সাক্ষাৎকার সম্পর্কে তিনি বলেন- Interviews are God's great joke on me. আমি জানি আমি দেখতে বেশ সুন্দর, বিশেষ করে আমার খাড়া নাক নাকি বেশ আকর্ষণীয়, কিন্তু বিশ্বাস করুন, ইন্টার্ভিউ দিতে হবে বলে আমি লন্ডনে থাকিনা, আমি আয়ারল্যান্ড এক গ্রামে থাকি। আমি আসলে এগুলা ডিল করতে পারি না, আমার দ্বারা এগুলা হয়না। ডি কেপ্রিও আর ক্রিশ্চিয়ান বেলের কাছে যান, ওরা এগুলা খুব ভালো পারে, ওদের দেখলে হিংসা লাগে। ওদের মত ডিল করতে পারলে আমার মেয়ে ফ্যানের সংখ্যা হয়ত একটু হলেও বাড়ত! :P

হ্যাঁ, এই মানুষটা নিজের ফ্যামিলিকে নিয়ে আয়ারল্যান্ড এর এক গ্রামে থাকেন, শহরের চাকচিক্য, হলিউড এর বিলিয়ন ডলার তাকে টানে না। নিজের বাসায় বসে তিনি নিজের জন্য জুতা বানান- জি হ্যাঁ, এই কাজটাও তিনি দারুনভাবে পারেন। অভিনয়ে কোনোদিন অবসর নিলে হয়ত মুচি হয়ে ভালো জীবন কাটিয়ে দিতে পারবেন :P এখনও গ্রামের কৃষক আর মধ্যবিত্তদের মাঝে তিনি থাকতে পছন্দ করেন, মধ্যবিত্তের জীবন নাকি পাঠশালার মত- তার মতে। একটা সিনেমার পরে এত লম্বা গ্যাপ নেন কেন এর উত্তরে তিনি বলেন- আমার কাছে একটা সিনেমা মানে একটা পৃথিবী, সেই পৃথিবী সৃষ্টি করা যত আনন্দের, ধ্বংস করা ততটাই কষ্টের, এই কষ্টের কথা আমি বুঝি কোন সিনেমার শুটিং এর শেষ দিনে। এই কষ্ট বুকে নিয়ে আরেকটা সিনেমাতে এত জলদি ঝাঁপায় পড়া সম্ভব না, অন্তত আমার ক্ষেত্রে না, আমার সেই ক্ষমতা নাই।

শুভ জন্মদিন প্রিয় ড্যানিয়েল ডে লুইস। আমার সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতা আপনি, কিন্তু কেও জিজ্ঞেস করলে আমি আপনার নাম বলি না, কারণ আপনি যেই লেভেলের অভিনেতা- আপনার নাম বলতে হলেও একটা ন্যূনতম যোগ্যতা লাগে যেটা আমি মনে করি আমার নাই। বেঁচে থাকুন আরও শত বছর, আরও বিচিত্র সব রোল করুন, পাগলামির সীমা আরও ছাড়িয়ে যান, বাঁধ ভেঙ্গে দিন পাগলামির। আরেকটা অস্কার জিতে রেকর্ড স্থাপন করুন। অস্কারের সময় আমরা সবাই জল্পনা কল্পনা করি যে এইবার অস্কার কে জিতবে তা নিয়ে- কিন্তু যেইবছর আপনার সিনেমা আসে- সেই বছর কোন জল্পনা কল্পনা কাজে লাগে না, সেই বছরের পুরস্কার আপনার জন্য নির্ধারিত হয়ে যায় অনেক আগেই, আপনার অমানুষিক পরিশ্রমের জন্য।

নিচের ছবিটা দেখে আশা করি বুঝতে পারছেন একটা ক্যারেক্টারের জন্য এই মানুষটা কি করেন,তাকে আলাদা করে চেনাটা মোটেও সহজ নয়। জন্মদিনে আপনার ক্ষুদ্র একজন ফ্যানের একটাই আর্জি- অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে "ডেডিকেশন" শব্দটার প্রতিশব্দ বা সিনোনিম হিসেবে যেন ড্যানিয়েল ডে লুইস এর নামটা আসে :)



মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৫৮

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: ড্যানিয়েল ডে লুইস আমারও একজন প্রিয় অভিনেতা। তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতাম না আপনার লেখা পড়ে প্রিয় অভিনেতা সম্পর্কে অনেক জানলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে লেখার জন্য।

শুভ জন্মদিন ড্যানিয়েল ডে লুইস।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৮

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: আমার সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতা আপনি, কিন্তু কেও জিজ্ঞেস করলে আমি আপনার নাম বলি না, কারণ আপনি যেই লেভেলের অভিনেতা- আপনার নাম বলতে হলেও একটা ন্যূনতম যোগ্যতা লাগে যেটা আমি মনে করি আমার নাই : সুন্দর বলেছেন ।

আর উপরে আব্রাহাম লিন্কনের ছবি দেখে মনে হচ্ছে আসল আব্রাহাম, কবর থেকে উঠে এসেছেন !

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৩

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: আবার জিগায়! :)

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: ভাই , স্পিল বার্গের উপর একটা লেখা চাই ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৩

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: চেষ্টা করব :)

৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট। শুভ জন্মদিন প্রিয় অভিনেতা।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: থ্যাংকস হামা ভাই :)

৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:২৭

***মহারাজ*** বলেছেন: শুভ জন্মদিন
প্রিয় অভিনেতা।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬

আমি সামুর ভ্ক্তু বলেছেন: শুভ জন্মদিন

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪

সুমন কর বলেছেন: আপনার লেখাগুলো বেশ তথ্যসমৃদ্ধ হয়। অনেক কিছু জানা যায়।

৮ম ভালো লাগা।

উনি আমার অন্যতম প্রিয় অভিনেতা। In the Name of the Father এবং My Left Foot দেখার পর উনার আভিনয়ে অনেক দিন নেশার মতো ছিলাম।

শুভ জন্মদিন, প্রিয় অভিনেতা।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: থ্যাংকস অ্যা লট :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.