নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I'll Sleep When I'm Dead

আমি একদিন মারা যাবো, এই সত্য মেনে নিতে আমার কোন আক্ষেপ নেই!আক্ষেপ শুধু একটি বিষয়তেই, আমি মারা যাওয়ার পর অনেক অসাধারণ চলচ্চিত্র,বই,গান এর সৃষ্টি হবে- যার স্বাদ আমি নিতে পারব না...

শাহরুখ সাকিব

জীবন খাতার শেষের পাতায়, এঁকে দিলাম আলপনা, আমার স্মৃতি পড়বে মনে, যখন আমি থাকব না...! মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ নিজে ; অথচ বাকি সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছি! তাদেরকে হাসি খুশি রাখার মাধ্যমে! বুঝেন অবস্থা! একবারেই বদ্ধ উন্মাদ, আবেগপ্রবন,ভীতু এক মানুষ...!চিন্তাভাবনা করে সাধারণত কিছু বলা বা করা হয় না, এজন্য ঝামেলাতেও বেশি পড়তে হয়! তারপরও - always try to listen to my heart !Simplicity জিনিসটা খুব ভাল্লাগে, নিজেও তাই!'হাসিমুখ','দেশ','দেশের মানুষ','বৃষ্টি','জোছনা','প্রিয় মানুষগুলোকে বিরক্ত করা','শিশির ভেজা ঘাসের উপরে হাঁটা','জীবন','নিঃশ্বাস নেয়া','বইপড়া'(অবশ্যই পাঠ্যবই নয়!),'বন্ধু','বন্ধুত্ব','আড্ডা দেয়া','পাহাড়','সমুদ্র','সিনেমা দেখা','শাহরুখ খান' প্রভৃতির প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! আমি নিম্নোক্ত জীবন দর্শনে বিশ্বাসী - "Live, Laugh and Love!" (বাঁচো , হাসও আর ভালোবাসো! ) :-D আর হ্যাঁ, নিজের প্রথম ও সবচেয়ে বড় পরিচয় "মানুষ" বলতে পছন্দ করি, আগে মানুষ, তারপর বাকি সব... :-) আমার রক্তের গ্রুপ- B (Be Positive!) আমার রাশি- কুম্ভ (কিন্তু আমি মোটেই কুম্ভকর্ণ নই!) নিজেকে একটি শব্দে প্রকাশ করতে বললে আমি সেই পুরনো অসাধারণ শব্দটি বলব--- "পাগল" :-P :-P আমার ফেসবুক ঠিকানা- fb.com/syed.n.sakib.3

শাহরুখ সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ জন্মদিন ডাস্টিন হফম্যান :)

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

"অভিনয়ে কেন অথবা কীভাবে এসেছিলেন?" এর উত্তরে একজন অভিনেতার উত্তর কি হতে পারে যদি সেই অভিনেতা দুইবার অস্কারজয়ী একজন অভিনেতা হন?

"মেয়েদের জন্য অভিনয়ে এসেছিলাম। সুন্দরী মেয়েরা থিয়েটারে আসত, তাদেরকে দেখতে যেতাম। তারা আমার সাথে সুন্দর করে কথা বলবে, আমার প্রতি নম্র আচরণ করবে- এই কারণেই আমার অভিনয়ে আসা, প্রথমে যখন আসি তখন মাথায় খালি এই চিন্তাই ঘুরত।" এটা যদি সেই দুইবার অস্কারজয়ী অভিনেতার উত্তর হয় তখন আপনার অনুভূতি কি হবে? (কারণ আপনি নিশ্চয় আরও "ভারি" কোন উত্তর আশা করেছিলেন! :P) চলুন ঘুরে আসি এরকম একজন "ঠোঁটকাটা" অভিনেতার জীবন থেকে ;)

বাবা মা তার জন্মের সময়ে তার নাম রেখেছিলেন তখনকার সময়ের একজন বিখ্যাত অভিনেতা Dustin Farnum​ এর নামে। বাবা মা নাম রেখেই "খালাস", তারা কি আর জানতেন যে এই পুঁচকে ছেলে একদিন বড় হয়ে অভিনেতাই হবে? জানলে হয়ত আরেকবার ভাবতেন নামকরণের সময়। এইসব "ছোটোখাটো" বিষয়ে বাবা মা না ভাবলে আর কে ভাববেন?
পড়াশুনা ভালো লাগত না তার (সব গ্রেট অভিনেতার এই এক জায়গায় কেন এত মিল!?)। হাই স্কুলের "আবর্জনা" (তার ভাষায়) অনেক কষ্টে "হজম" করে, কলেজে এসে "হজমশক্তির" পরীক্ষায় ফেল মেরে বসলেন- তাঁকে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হল অতি কম grades এর কারণে। কিন্তু একটা কাজের কাজ করেছিলেন এই "দুর্ঘটনার" আগে, কলেজের একটা acting course এ ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন, কারণ তার বন্ধুরা তাঁকে বলেছিল- এই কোর্সে গ্রেড সহজে আসে, নিয়ে নে! এটা জিম করার মত, সবাই যার যার মত শরীর গঠন করছে, এটাতে কেও ফেল করে না, পরীক্ষার খাতায় বড় লাল কালির অক্ষরে F (fail) পায় না। বন্ধুর কথাতে নিজের কথার চেয়েও বেশি বিশ্বাস ছিল তার, চোখ বড় বড় করে শুনলেন বন্ধুর কথা আর কোর্স নিয়ে নিলেন অভিনয়ের। আরেকটা কারণ তো ছিলই কোর্স নেয়ার- ঐ যে, সুন্দরী ললনাদের হাতছানি- যা আদমসন্তানের উপেক্ষা করতে বড় কষ্ট হয় ;)
ফার্নিচারের সেলসম্যান বাবা কিছুতেই বুঝতে পারলেন না তার এই ছেলেটা অভিনয়ের কোর্স নিয়েছে কেন? এই জিনিসটা আসলে কি? এটা পড়লে কি হবে? মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলবে আর নেমে যাবে? পয়সাটা আসবে কোথা থেকে? সংলাপ খেলে কি পেট ভরে? মমতাময়ী মা ও আর মমতা দেখাতে পারলেন না, তারও একই প্রশ্ন। কিন্তু ছেলে নাছোড়বান্দা- এটা আমি করবই। যখন একটা ক্যারেক্টারের জন্য প্রস্তুতি নেই, সংলাপ মুখস্ত করি- তখন কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে যায় সেটা কিছুতেই আমার মাথায় আসে না! এই একটা জিনিসে আমি আনন্দ পাই, আমি জীবনে সব কিছুতে ব্যর্থ, কিন্তু এই জিনিসে মনে হয়না আমাকে কেও ব্যর্থ ঘোষণা করতে পারবে। অবশেষে বাবা মা আর কিছু বললেন না, গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে যার যার কাজে চলে গেলেন। বাবা মাকে এটাও রাজি করিয়ে ফেললেন যে অভিনয়ের জন্য তিনি তাঁদের ছেড়ে আরও ভালো কোন অভিনয়ের স্কুলে চলে যাবেন, দরকার পড়লে একদম রাজধানীতে। বাবা মা "তোমাকে সৃষ্টিকর্তার নামে ছেড়ে দিলাম" টাইপ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে যার যার কাজে আবারো মনোযোগ দিলেন। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় তার এক অ্যান্টি তাঁকে বললেন- তুমি পারবে না বাবা এইসব অভিনয় ! "কেন?"- যৌবন বয়সের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অপর পাশ থেকে। "আরে তোমার চেহারা দেখস আয়নাতে? এই চেহারা দিয়ে অভিনেতা হওয়া যায় না! মাথা ঠাণ্ডা করো, ঘরে বস"। মাথা যতটা ঠাণ্ডা হওয়ার দরকার ছিল, তার দ্বিগুণ গরম করে ছেলেটা বেরিয়ে গেলো নিজের স্বপ্নের খোঁজে, অনেকটা রাগের বশেই।

চলতে লাগলো অভিনয় শেখা, আরও ভালো করে। পাশপাশি বন্ধুদের সাথে আড্ডা। থাকা খাওয়ার কথা আর নাই বা বলি, রান্নঘরে কতদিন থেকেছেন তা হিসেব করেন নি- ঐটাকেই নিজের দুনিয়া বানিয়ে ফেলেছিলেন। অভিনয়ের একটা নির্দিষ্ট দিকের প্রতি তার ভালোলাগা বেড়ে গেল এবং সেটাই জান, প্রাণ আর আত্মা দিয়ে শিখতে লাগলেন- নাম তার "মেথড একটিং"। সারাদিন সেই মেথড অভিনয়ের প্রেমে সাঁতার কাটা, আর রাতে বাসস্থানে এসে বন্ধুদের সাথে ড্রাম বাজানো। অভিনয়ের আগে সংগীতের দিকে তার আসার বেশ ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সেখানেও খুব একটা সফল হননি, তবে চর্চাটা করতেন টুকটাক। ড্রাম বাজানোর পেছনে আরেকটা কারণ ছিল, মেথড একটিং এর গুরু যাকে মানা হয়, সেই মারলান ব্র্যান্ডো নাকি একসময় কোন এক ক্লাবে ড্রাম বাজাতেন- এটা তিনি যেদিন শুনেছেন, সেদিন থেকে তিনি ড্রাম বাজাতেন। আলাদা করে আশা করি আর বলার দরকার নেই যে মারলান ব্র্যান্ডো তার কতটা প্রিয় অভিনেতা ছিলেন ;)

কাজ শেখা যত দ্রুত চলতে লাগলো, কাজ ততই দূরে সরে যেতে লাগলো। কেও তাকে চিনে না, জানে না। তার উপরে অনেকবার অডিশন থেকে বাদ পড়েছেন তার শারীরিক উচ্চতা কম বলে। অনেকে আবার সেই তার অ্যান্টির কথা বলতেন- এই চেহারা নিয়ে টিভি আর সিনেমা? মাথা ঠিক আছে তো বাছা? মাথা চাইলেও ঠিক করে রাখতে পারতেন না, হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে যেত, মুখে গালি চলে আসতো, ইচ্ছামত চেঁচামেচিও করতেন তিনি। এই জিনিসটা এখনও তাকে ছেড়ে যায় নি, হলিউড এ এখনও যেই মানুষটার সাথে কাজ করতে বড় বড় পরিচালকদের ঘাম দিয়ে জ্বর চলে আসে, তাঁদের লিস্টে এই মানুষটার নাম সম্ভবত উপরের দিকেই থাকব। সোজা বাংলায় বললে - তার সাথে কাজ করা যেই "প্যাড়া" রে ভাই! কখন তার মুড কেমন কিছুই বুঝি না।

নিজের জীবনের প্রথম ৩১ বছর কে দুঃখের সাথে মজা করে তিনি আনঅফিশিয়ালি "গরীবের জীবন" বলে আখ্যায়িত করেন। কারণ ৩১ বছর বয়সে তার যেই সিনেমাটা মুক্তি পায়, সেটা তাকে আজীবন মনে করিয়ে রাখার জন্য "মোর দেন এনাফ" এবং সেটাই তাকে রাতারাতি বিখ্যাত বানিয়ে দেয়। সিনেমার নাম দ্যা গ্র্যাজুয়েট( ব্যক্তিগতভাবে আমার ভয়াবহ লেভেলের পছন্দের সিনেমা, জাস্ট outstanding!)। গ্র্যাজুয়েট পাশ না করা একটা মানুষ গ্র্যাজুয়েট নামের সিনেমাতে অভিনয় করে সবার মন জিতে নিল- এর চেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার আর কি হতে পারে? সাফল্যের স্বাদ অনেকদিন পর পেলেন এবং পেয়ে পরিশ্রমের পরিমাণ চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে বাড়িয়ে দিলেন- যা প্রমাণ তার গ্র্যাজুয়েটের তিন বছর পরের সিনেমা, ১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া Little Big Man​. এই ছবিতে তিনি ১৭ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১২১ বছর পর্যন্ত ব্যক্তির ক্যারেক্টার প্লে করেন। এই অদ্ভুত কীর্তির জন্য গিনেস বুকে তার নাম উঠে। মানবজীবনের এত লম্বা সময় স্ক্রিনে ফুটিয়ে তোলার সাহসের জন্য গিনেস তাকে এই সম্মানে ভূষিত করে। যেহেতু মেথড একটর, সেহেতু পাগলামি তার মাঝে থাকতে হবে। তার একটা নমুনা পাওয়া গিয়েছিল এই সিনেমার শুটিং এর সময়। ১২১ বছরের একজন বৃদ্ধের গলার আওয়াজ স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল থাকবে, ফ্যাসফ্যাসে থাকবে। এটা করার জন্য তিনি প্রতিদিন নিজের মেকাপ রুমে নিজের শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করতেন- সময়টা ছিল এক ঘণ্টার মত। এক ঘণ্টা তারস্বরে চিৎকারের পরে তার ফুসফুস অটোম্যাটিক ক্লান্ত হয়ে যেত, আর কথাই বলতে পারতেন না প্রায়। জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সবার নিষেধ উপেক্ষা করে এই কাজটা তিনি করতেন। এই দুই সিনেমার মাঝে Midnight Cowboy​ নামেও সিনেমাতে অদ্ভুত লেভেলের অভিনয় করেছিলেন তিনি।

নিজের ইচ্ছামত কাজ করতেন, নিজের পছন্দমত। কঠিন চরিত্রের জন্য ক্ষুধা থাকত তার সবসময়, একসময় খাবারের ক্ষুধার জন্য জন্য কষ্ট পেয়েছিলেন বলেই হয়ত! তবে শুধু টাকার জন্যও নাকি অভিনয় করেছেন violent জিনিসপত্র পছন্দ না করা সত্ত্বেও, এরকম একটা সিনেমার নাম Straw Dogs (1971 film)​.

Papillon (film)​ এর জন্য নিজের লুক একদম চেঞ্জ করে ফেলেছিলেন, চুল ফেলে দিয়ে চোখে হাই পাওারের চশমা, সেই চশমা যাতে তার চোখের কোন ক্ষতি না করে এই কারণে চোখের উপরে বিশেষ লেন্স পড়ে নিতেন। আর অভিনয়- সেটার কথা আর নাই বা বলি। এই দারুণ অভিনয়ের ধারা চলতেই লাগলো, All The President's Men​ নামক সিনেমাটি এখনও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে দেখানো হয়। Marathon Man​ সিনেমার একটি দৃশ্যে তাকে বাথট্যাবে পানিতে ডুবিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয় এবং অদ্ভুত ব্যাপার এই যে, এটা তিনি সত্যিকারে করতে চান! তিনি বলতেন- দেখি, কতক্ষণ শ্বাস না নিয়ে থাকতে পারি পানির নিচে। পরিচালক আতঙ্কের দিকে তার দিকে তাকাতেন- কিন্তু তিনি নির্বিকার। একবার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে অক্সিজেনের সিলিন্ডার আনতে হয়েছিল, প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি। প্রতিদিন চার মাইলের মত দৌড়িয়ে এই সিনেমার জন্য তিনি নিজের ওজন ১৭ কেজি কমিয়েছিলেন। সিনেমাতে কিছু দৃশ্য ছিল যে তিনি দৌড়ানোর পর হাঁপিয়ে গেছেন- এমন একটা দৃশ্য করার জন্য তিনি আধা মাইল দৌড়িয়ে এসে এরপরে "সত্যিকারে" হাঁপাতেন আর সেটাকে ধারণ করতে বলতেন। ন্যাচারেলি তার নাকি "হাঁপানো" আসতো না,তাই এই কার্যকলাপ!

পর্দায় যিনি এতটা কাঁপাচ্ছিলেন, বাস্তবে তিনি ততটাই পিছনে পড়ে যাচ্ছিলেন। প্রথম স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যায় তার এবং অদ্ভুত ব্যাপার হল এই সময় তিনি এমন একটা সিনেমাতে কাজ করছিলেন যেই সিনেমাতে তার স্ত্রীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় এবং একমাত্র ছেলে সন্তানকে তার মানুষ করতে হয়। নিজের বাস্তব জীবনের ডিভোর্স এর কষ্ট কোনভাবেই তিনি পর্দায় আলাদা করে প্রকাশ করেন নি, এতটাই কন্ট্রোল ছিল তার নিজের অনুভূতির উপরে। এই রোলের জন্য প্রথমে চয়েস ছিলেন আল পাচিনো, কিন্তু তিনি না করে দেন। উল্টাটাও হয়েছিল, পাচিনোর বিখ্যাত মাইকেল করলিয়নি ক্যারেক্টারের জন্য তাকে ভাবা হয়েছিল, কিন্তু পরে আর তার এই কাজ করা হয়নি- হিসাব সমানে সমান :P এই সিনেমার জন্য অস্কার পেলেন তিনি, ১৯৭৯ সালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমা হল এটি । তাছাড়া কয়েকবছর পরে সেম কাহিনীর উপর ভিত্তি করে তৈরি হল আমির খানের Akele Hum Akele Tum​.

এরপরে করলেন ক্যারিয়ারের অন্যতম কঠিন পারফর্মেন্স- Tootsie​ যেখানে পুরুষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এতটাই ভালো করেছিলেন যে শুটিং ইউনিটের ক্রুরা বলত- আপনি নারী হয়েই জন্ম নিলে ভালো করতেন। 'এই রোল করে আপনি সন্তুষ্ট কেমন?' এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন- এই মহিলার রোলটা প্রেগন্যান্ট হলে আরেকটু বেশি সন্তুষ্ট হতাম, তাহলে আমি সেই জিনিসটা অনুভব করতে পারতাম, যেটা আমার দ্বারা জীবনেও করা সম্ভব না।

নিজের নামে "ম্যান" থাকা সত্ত্বেও "উমেন" বা নারীর চরিত্রে অভিনয় করা এই অসাধারণ অভিনেতার নাম ডাস্টিন হফম্যান। একটা অস্কারে পেট ভরছিল না দেখে এরপরে নিজের অন্যতম সেরা পারফর্মেন্স দেখালেন Rain Man​ নামক সিনেমাতে। অস্কার বাধ্য হল তার হাতে আসতে। অটিস্টিক এই ক্যারেক্টারে অভিনয় করার জন্য তিনি এক বছর এক অটিস্টিক রোগীর সেবা করেছিলেন, নিজের সেই অভিজ্ঞতাকেই তিনি এই সিনেমার সময়ে কাজে লাগান। তিনি হচ্ছেন সেই তরলের মত যাকে যেই পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রে তিনি মানিয়ে যান। শন কনরি এর চেয়ে মাত্র ৭ বছরের ছোট হয়েও তার ছেলের চরিত্রে সুন্দর অভিনয় করতে পারেন তিনি Family Business (film)​ নামক সিনেমাতে।

এরকম আরও অসাধারণ পারফর্মেন্স করা এমন অসাধারণ একজন অভিনেতা আজ অনেকটাই হলিউড থেকে দূরে- হয়ত কোন চাপা অভিমানের কারণে। "আগে এমন একটা সময় ছিল যখন কোন কঠিন ক্যারেক্টার যেটা কেও পারবে না বা কেও আগে করেনি- সেটা করার দরকার পড়লে আপনাকেই ডাকা হত। এখন আপনি আর কাজ করেন না কেন সেভাবে?" এমন প্রশ্নের উত্তরে খুব আলতো করে তিনি বলেন- "হয়ত হলিউড এ এখন আর সেই মানের কঠিন ক্যারেক্টারের কাজ হয়না ,তাই!"

জীবন মানেই যেখানে আমাদের কাছে যুদ্ধ, প্রতিমুহূর্তে আমরা যেখানে জীবনের বিরুদ্ধে লড়াই করি, সেখানে এই মানুষটা জীবনের বিপক্ষে না, ব্যর্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে বলেন। জীবনের অনেক অনুভূতির মাঝে দিয়ে তিনি গিয়েছেন, কিন্তু কেও বোর হচ্ছে এটা শুনলেই তিনি অবাক আর বিরক্ত হন। "একটা মানুষ বোর হয় কীভাবে? আপনি তো জানেন না এক মিনিট পরে আপনার জীবনে কি ঘটতে যাচ্ছে- এটা চিন্তা করলেই তো একটা মানুষ বোর থাকতে পারে না। জীবনে অনেক কিছু হয়েছি, কখনো বোর ফিল করিনি"

নিজের জীবন নিয়ে তিনি বলেন- মৃত্যুকে ভয় পাইনা বা সেটার কথা চিন্তা করিনা তেমন, কারণ যেদিন থেকে আপনি স্টার বা সেলেব্রিটি এক অর্থে আসলে আপনি সেদিন থেকেই মৃত। আর আমাদের অভিনেতাদের জীবন সাধারণের জীবন থেকে আলাদা, যতই আমরা সাধারণ মানুষের মতই দেখতে হই না কেন- আমরা আসলে সাধারন না দিন শেষে। আমি সাধারণ না।

সাধারণ না বলেও নিজেকে তার কাজের মাধ্যমে অসাধারণ প্রমাণ করা মনে হয় তার মত অভিনেতাদের পক্ষেই সম্ভব। হলিউড রিপোর্টারকে কয়েক মাস আগে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে একটি বিষয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি- আমি এখন আর এই ইন্ডাস্ট্রির সিনেমার তেমন খোঁজ রাখি না। এখানে এখন সত্যিকার অর্থে আর সিনেমা হয় না, এখানে এখন প্রতিনিয়ত পুঁজির কাছে শিল্প হেরে যায়। ফর্মুলা সিনেমা বানানোতে একেজনের সে কি মোহ এখন এই ইন্ডাস্ট্রিতে! সেই তুলনায় এখন অনেক ভালো কাজ হচ্ছে টিভি তে, টিভি সিরিজে এখন যেন প্রাণ খুঁজে পাই, কাজ করলে সেখানে অথবা এনিমেশন সিনেমাতে কাজ করব। ঠিকমতো সিনেমা না হলে কয়েকবছর পর টিভি সিরিজ রাজত্ব করবে, ইতিমধ্যেই কম রাজত্ব করছে না তারা।

ডাস্টিন হফম্যান কে সবসময় আমার কেন জানি অনেক আন্ডাররেটেড মনে হয়েছে। নিজেদের একাধিক সন্তান থাকলে বাবা মা যেমন বাকিদের যত্ন করতে গিয়ে একটি সন্তানকে কম স্নেহ করেন, তেমনি ডি নিরো আর আল পাচিনোকে নিয়ে অনেক বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা যেন ডাস্টিন হফম্যানের দিকে মনোযোগ দিতে পারি নাই অথচ তিনি আরও বেশি মনোযোগ প্রাপ্য। সাগরের কাছে গেলে আমরা শুধু সাগর দেখি, খুব বেশি হলে সমুদ্রের তীরে ছোট শামুক ঝিনুক দেখি, কিন্তু সেই সাগর দেখতে গিয়ে সেই ছোট্ট ঝিনুকের ভেতরের মুক্তা আমাদের সাধারণত দেখা হয়না ।

শুভ জন্মদিন প্রিয় অভিনেতা! শুভ জন্মদিন 5' 5¾ ইঞ্চি আকৃতির ছোট শরীরের আর 'অ'নায়কচিত চেহারার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মহামূল্যবান "মুক্তা" :)


মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:২৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমার প্রিয় অভিনেতা । ফরীদি ছিলেন বাংলাদেশের ডাস্টিন হফম্যান । সত্যি তার অভিনয় প্রতিভা অসাধারণ। মেয়ের গেটআপ নিয়ে তিনি যে অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন সেটি অতুলনীয়। অসাধারণ ট্রাজেডি । প্রিয় অভিনেতার জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলী থাকলো । আর আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।দারুন একটি পোস্টের জন্য ।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১১

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: এত বড় পোস্ট পড়ার জন্য আমাকেও ধন্যবাদ :)

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৩

জে আর শুভ বলেছেন: োনেক ভাল লাগল। শিখতেও পারলাম ওনেক কিছু :-B :-B

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

হামিদ আহসান বলেছেন: শুভ জন্মদিন .......

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:১৮

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: শুভ জন্মদিন ডাস্টিন হফম্যান

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২

হাসান মাহবুব বলেছেন: অসম্ভব প্রিয় একজন অভিনেতা। আপনার পোস্টে অনেক না জানা তথ্য জানলাম। ভালো লাগলো।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই :)

৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৭

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: দারুন পোস্ট। অনেক কিছু জানলাম। আমার প্রিয় একজন অভিনেতা

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৭| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:৪৯

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
হাসান মাহবুব বলেছেন: অসম্ভব প্রিয় একজন অভিনেতা। আপনার পোস্টে অনেক না জানা তথ্য জানলাম। ভালো লাগলো।

১০ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

৮| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১৩

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার অভিনেতা এবং রিভিউ। অনেক কিছু জানতে পারলাম।

১০ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.