নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I'll Sleep When I'm Dead

আমি একদিন মারা যাবো, এই সত্য মেনে নিতে আমার কোন আক্ষেপ নেই!আক্ষেপ শুধু একটি বিষয়তেই, আমি মারা যাওয়ার পর অনেক অসাধারণ চলচ্চিত্র,বই,গান এর সৃষ্টি হবে- যার স্বাদ আমি নিতে পারব না...

শাহরুখ সাকিব

জীবন খাতার শেষের পাতায়, এঁকে দিলাম আলপনা, আমার স্মৃতি পড়বে মনে, যখন আমি থাকব না...! মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ নিজে ; অথচ বাকি সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছি! তাদেরকে হাসি খুশি রাখার মাধ্যমে! বুঝেন অবস্থা! একবারেই বদ্ধ উন্মাদ, আবেগপ্রবন,ভীতু এক মানুষ...!চিন্তাভাবনা করে সাধারণত কিছু বলা বা করা হয় না, এজন্য ঝামেলাতেও বেশি পড়তে হয়! তারপরও - always try to listen to my heart !Simplicity জিনিসটা খুব ভাল্লাগে, নিজেও তাই!'হাসিমুখ','দেশ','দেশের মানুষ','বৃষ্টি','জোছনা','প্রিয় মানুষগুলোকে বিরক্ত করা','শিশির ভেজা ঘাসের উপরে হাঁটা','জীবন','নিঃশ্বাস নেয়া','বইপড়া'(অবশ্যই পাঠ্যবই নয়!),'বন্ধু','বন্ধুত্ব','আড্ডা দেয়া','পাহাড়','সমুদ্র','সিনেমা দেখা','শাহরুখ খান' প্রভৃতির প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! আমি নিম্নোক্ত জীবন দর্শনে বিশ্বাসী - "Live, Laugh and Love!" (বাঁচো , হাসও আর ভালোবাসো! ) :-D আর হ্যাঁ, নিজের প্রথম ও সবচেয়ে বড় পরিচয় "মানুষ" বলতে পছন্দ করি, আগে মানুষ, তারপর বাকি সব... :-) আমার রক্তের গ্রুপ- B (Be Positive!) আমার রাশি- কুম্ভ (কিন্তু আমি মোটেই কুম্ভকর্ণ নই!) নিজেকে একটি শব্দে প্রকাশ করতে বললে আমি সেই পুরনো অসাধারণ শব্দটি বলব--- "পাগল" :-P :-P আমার ফেসবুক ঠিকানা- fb.com/syed.n.sakib.3

শাহরুখ সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ জন্মদিন কমল হাসান

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৮

actor, screenwriter, director, producer, playback singer, choreographer, lyricist, and dancer - ভাবছেন সবসময় একজন মানুষকে নিয়ে লিখি, আজকে হয়ত আটজনকে নিয়ে লিখব? যেহেতু আমি আটটি "পদ" এর কথা উল্লেখ করেছি তাতে এরকম মনে করা স্বাভাবিক।
Tamil, English, Telugu, Hindi, Malayalam, Bengali, Kannada and French- এবারও ভাবা স্বাভাবিক আমি হয়ত আটজন মানুষকে নিয়ে কথা বলব যেহেতু আটটি ভাষার কথা বলেছি।

উপরের আপনার বা আপনাদের দুটো ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে আমি একজন মানুষকে নিয়েই কথা বলব। জি হ্যাঁ, উপরের আটটি পদের কাজ করা এবং আটটি ভাষা জানা মানুষ- একজনই, এতটাই গুণে গুণান্বিত মানুষ তিনি।

বাবা ছিলেন পেশায় একজন উকিল- ভাইরাও বাবার মতই আইনের মারপ্যাঁচে বন্দি। কিন্তু পরিবারের ছোট ছেলে আইনের ধারে কাছেও গেলেন না। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি যখন best actor এর President's Gold Medal পেলেন- তখন পরিবার থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশীর কারো বুঝা বাকি থাকল না যে এই ছেলে বড় হয়ে কোনদিকে যাবে। সবার সেই "বুঝ"কে আরেকটু শক্ত করতে তিনি এই বাচ্চা বয়সেই পাঁচ পাঁচটি সিনেমাতে অভিনয় করে ফেলেন।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে সিনেমার জন্য স্ক্রিপ্ট লেখেন। সেখান থেকে আস্তে আস্তে শুরু, এক্সট্রার কাজ থেকে শুরু করে সাইড রোল, মেইন রোল, ভিলেন- এমন কিছু নাই যা তিনি করেন নি। প্রায় ২০০ এর মত সিনেমা করে ফেলেছেন, আর এত শত শত ক্যারেকটার করেছেন যে তার মনে হয়না আর কিছু করা বাকি আছে।
জন্ম যেহেতু তামিল পরিবারে, সেহেতু এতদিন দক্ষিণের সিনেমা নিয়েই মেতে ছিলেন। তেলগু, কান্নারা, মালায়ালাম- সব ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছিলেন। বাকি ছিল একটা জায়গা- বলিউড। ১৯৮১ সালে "এক দুজে কে লিয়ে" সিনেমা দিয়ে বলিউড এ যাত্রা শুরু এবং শুরু থেকেই বাজিমাত। হিন্দি বলা একজন নায়িকার সাথে তামিল বলা একজন নায়কের অদ্ভুত প্রেমের কাহিনীকে দর্শক লুফে নিয়েছিল আর তিনি পেয়েছিলেন প্রথমবারের মত ফিল্মফেয়ার নমিনেশন (হিন্দি সিনেমার জন্য)। সিনেমার সামনে শুধু থেকে তার মন ভাল হয়নি, সিনেমার পেছনেও থেকেছেন- Raja Paarvai সিনেমাতে টাকা ঢালেন, কিন্তু ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি এই সিনেমা। অথচ অন্ধ বেহালা বাদকের ক্যারেকটারে অভিনয় করে তিনি ঠিকই সেরা অভিনেতার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড বগলদাবা করে নেন। Moondram Pirai নামক তামিল সিনেমার জন্য ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পান, এই সিনেমাটা আমরা বেশিরভাগ মানুষ না দেখলেও এটার হিন্দি ভার্শন আমরা অনেকেই দেখেছি এবং সেটাও কম অসাধারণ নয়- সিনেমার নাম Sadma.
Punnagai Mannan নামক সিনেমাতে চার্লি চ্যাপলিন এর ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং যেই লেভেলের অভিনয় করেন, স্বয়ং চার্লি চ্যাপলিন বেঁচে থাকলে তার অভিনয় দেখলে খুশি হতেন।
১৯৮৭ সালে Nayakan সিনেমাতে দুর্দান্ত অভিনয় করেন এতটাই যে Time ম্যাগাজিনের লিস্টে সিনেমা ইতিহাসের বেস্ট ১০০ সিনেমার মাঝে এই সিনেমাকে স্থান দেয়া হয়।
তামিল বা অন্য ইন্ডাস্ট্রির চেয়ে সংখ্যায় বলিউড এ কম কাজ করলেও তার সাফল্য সেখানে কম নয়। hey ram বা chachi 420 সিনেমাতে তার অভিনয় যারা দেখেছেন তারা আশা করি কখনও তার অভিনয় ভুলবেন না। শুধুমাত্র তার সাথে কাজ করার জন্য হে রাম সিনেমায় শাহরুখ খান কোন পারিশ্রমিক নেন নাই।
তার একটি সিনেমার কথা না বললেই নয়, সিনেমার নাম Pushpak. পুরো দুই ঘণ্টার সিনেমাতে একটি সংলাপও নেই, অথচ পুরো দুইটি ঘণ্টা আপনে একবার হাসবেন আরেকবার কাঁদবেন! এরকম নির্বাক অসাধারণ সিনেমা হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে বিরল।

এতক্ষণে মানুষটার নাম বুঝে যাওয়ার কথা, কারণ আমরা বেশিরভাগ তাকে চিনেছি এই chachi 420 সিনেমার মাধ্যমে। মানুষটার নাম কমল হাসান। তাকে শুধু একজন শক্তিশালী অভিনেতা বললে ভুল হবে, তিনি একজন চলমান অভিনয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তার একেবারেই ভিন্ন ধরনের অভিনয় তাকে এই "ইউনিভার্সাল হিরো" বা "the first, and perhaps the last, complete hero in Indian Cinema" এর খেতাব এনে দিয়েছে। চারবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড আর ১৯ বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার তার যেই রেকর্ড আছে সেটা আজ পর্যন্ত আর কেও ছুঁতে পারেনি, পারার কোন সম্ভাবনাও নিকট ভবিষ্যতে নেই। তিনিই প্রথম ও একমাত্র অভিনেতা যিনি ১৯৯৪ সালে প্রতি সিনেমা থেকে পারিশ্রমিক হিসেবে এক কোটি রুপি নিতেন। শুধু পাননি, দিয়েও গিয়েছেন নিজের সাধ্যমত। অস্কারে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে তিনি আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার ছবি পাঠিয়েছেন- সাতবার! ২০, ৩০ বছর নয়, ৫২ বছর ধরে তিনি জড়িত আছেন ফিল্মইন্ডাস্ট্রির সাথে। "ফিল্মইন্ডাস্ট্রিতে তার যা অবদান, সেরকম অবদান আর কারো নেই"- এই মন্তব্য শ্রীদেবী, অমিতাভ, মোহনলাল থেকে শুরু করে, আমির, শাহরুখ- সবার।

তার হবি বা শখ জাদুশেখা আর প্র্যাকটিস করা হলেও, ব্যক্তিজীবনে তিনি খুব একটা জাদু দেখাতে পারেননি। দুইবার বিয়ে হয়েছে, দুইবারই ডিভোর্সড। এক ঘরে দুটি সন্তান আছে তার, অন্য ঘরে কোন সন্তান নেই। দুইজনই মেয়ে- Shruti K. Haasan ও Akshara। বলা বাহুল্য, দুইজনই রূপবতী আর গুণবতী হলেও, কমল হাসানের ১০০ মাইলের মাঝে একজনও যেতে পারেননি।

নায়ক, ভিলেন, সাইড রোল, অটিস্টিক, অন্ধ, মদ্যপ, নর্তক, একই সিনেমাতে দশটা রোল( Dasavathaaram), কবি, সিরিয়াল কিলার, ভেন্ট্রিলোকুইজম - এমন কোন রোল আর সম্ভবত বাকি নাই যেটা তিনি করেন নাই। জ্যাকি চেনের বড় ফ্যান তিনি, জ্যাকি চেনের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার সময় বলেছিলেন- আমি একবার আপনার মত মারামারি করার চেষ্টা করেছিলাম- ফলাফল হল আমার শরীরের ৩২ জায়গায় ফ্রাকচার হয়ে গেছিল।
Aalavandhan সিনেমাতে বাঞ্জি জাম্পিং করার সময় তিনি পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা পান, তবে এই সিনেমার একটা স্পেশালিটি আছে, শুনতে খুব অবাক লাগলেও এটাই সত্য যে তারান্তিনোর কিল বিল সিনেমার থ্রিডি এনিমেশন সিকুয়েন্স এই সিনেমার 2D সিকুয়েন্স থেকে ইন্সপায়ারড।

এবার খুবই স্পর্শকাতর একটা জায়গা নিয়ে কথা বলব। কমল হাসানের নাম শুনলে অনেকেই মনে করেন যে তিনি মুসলিম- কিন্তু আসলে এটা সত্য না। সত্য হল তিনি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী এবং এটা তিনি খোলাখুলি ভাবেই বলেন। শুধু তাই না, ঈশ্বরের ধারণা নিয়ে তিনি তার বেশ কিছু সিনেমাতে অনেক ধরনের প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন যেমন Anbe Sivam এবং Dasavathaaram নামক সিনেমা। নামের হাসান অংশটা সংস্কৃত শব্দ hasya থেকে আসা, এটার সাথে মুসলমান নামের কোন সম্পর্ক নেই।

তবে সবকিছু মিলিয়ে কমল হাসান অনন্য ও অদ্বিতীয়। ক্যারেক্টারকে অনেক বেশি পারফেকশন দিতে গিয়ে তিনি মাঝেই মাঝেই বাজেটের বেশি খরচ করে ফেলেন- এটা তার বিরুদ্ধে কমন অভিযোগ। এছাড়া তিনি যেকোনো ব্যাপারে সেটা সামাজিক, রাজনৈতিক আর ধর্মীয় হোক- নিজের মন্তব্য খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করেন, কাউকে পরোয়া না করেই। Barrie M. Osburne, যিনি হলিউড এর লর্ড অফ দ্যা রিংস সিনেমার সাথে জড়িত ছিলেন, তিনি বলেছেন- কমল হাসানের সিনেমা আর সাহিত্য নিয়ে যেই পরিমাণ জ্ঞান আছে, সেটার জন্য তাকে একটি চলমান এনসাইক্লোপিডিয়া বলা চলে। পরিচালক মনি রত্নম তার সম্পর্কে বলেছেন- তিনি সম্ভবত একমাত্র অভিনেতা যিনি এমন অনেক অভিনয়ের কাজ পারেন যেটা আর কোন অভিনেতা পারেন না।

আজ ৭ নভেম্বর তার ৬০ তম জন্মবার্ষিকী। এখনও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন, ক্যামেরার সামনে পিছনে- সমান তালে। actor, screenwriter, director, producer, playback singer, choreographer, lyricist, and dancer - ভাবছেন সবসময় একজন মানুষকে নিয়ে লিখি, আজকে হয়ত আটজনকে নিয়ে লিখব? যেহেতু আমি আটটি "পদ" এর কথা উল্লেখ করেছি তাতে এরকম মনে করা স্বাভাবিক।
Tamil, English, Telugu, Hindi, Malayalam, Bengali, Kannada and French- এবারও ভাবা স্বাভাবিক আমি হয়ত আটজন মানুষকে নিয়ে কথা বলব যেহেতু আটটি ভাষার কথা বলেছি।

উপরের আপনার বা আপনাদের দুটো ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে আমি একজন মানুষকে নিয়েই কথা বলব। জি হ্যাঁ, উপরের আটটি পদের কাজ করা এবং আটটি ভাষা জানা মানুষ- একজনই, এতটাই গুণে গুণান্বিত মানুষ তিনি।

বাবা ছিলেন পেশায় একজন উকিল- ভাইরাও বাবার মতই আইনের মারপ্যাঁচে বন্দি। কিন্তু পরিবারের ছোট ছেলে আইনের ধারে কাছেও গেলেন না। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি যখন best actor এর President's Gold Medal পেলেন- তখন পরিবার থেকে শুরু করে পাড়া প্রতিবেশীর কারো বুঝা বাকি থাকল না যে এই ছেলে বড় হয়ে কোনদিকে যাবে। সবার সেই "বুঝ"কে আরেকটু শক্ত করতে তিনি এই বাচ্চা বয়সেই পাঁচ পাঁচটি সিনেমাতে অভিনয় করে ফেলেন।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে সিনেমার জন্য স্ক্রিপ্ট লেখেন। সেখান থেকে আস্তে আস্তে শুরু, এক্সট্রার কাজ থেকে শুরু করে সাইড রোল, মেইন রোল, ভিলেন- এমন কিছু নাই যা তিনি করেন নি। প্রায় ২০০ এর মত সিনেমা করে ফেলেছেন, আর এত শত শত ক্যারেকটার করেছেন যে তার মনে হয়না আর কিছু করা বাকি আছে।
জন্ম যেহেতু তামিল পরিবারে, সেহেতু এতদিন দক্ষিণের সিনেমা নিয়েই মেতে ছিলেন। তেলগু, কান্নারা, মালায়ালাম- সব ধরনের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছিলেন। বাকি ছিল একটা জায়গা- বলিউড। ১৯৮১ সালে "এক দুজে কে লিয়ে" সিনেমা দিয়ে বলিউড এ যাত্রা শুরু এবং শুরু থেকেই বাজিমাত। হিন্দি বলা একজন নায়িকার সাথে তামিল বলা একজন নায়কের অদ্ভুত প্রেমের কাহিনীকে দর্শক লুফে নিয়েছিল আর তিনি পেয়েছিলেন প্রথমবারের মত ফিল্মফেয়ার নমিনেশন (হিন্দি সিনেমার জন্য)। সিনেমার সামনে শুধু থেকে তার মন ভাল হয়নি, সিনেমার পেছনেও থেকেছেন- Raja Paarvai সিনেমাতে টাকা ঢালেন, কিন্তু ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি এই সিনেমা। অথচ অন্ধ বেহালা বাদকের ক্যারেকটারে অভিনয় করে তিনি ঠিকই সেরা অভিনেতার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড বগলদাবা করে নেন। Moondram Pirai নামক তামিল সিনেমার জন্য ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পান, এই সিনেমাটা আমরা বেশিরভাগ মানুষ না দেখলেও এটার হিন্দি ভার্শন আমরা অনেকেই দেখেছি এবং সেটাও কম অসাধারণ নয়- সিনেমার নাম Sadma.
Punnagai Mannan নামক সিনেমাতে চার্লি চ্যাপলিন এর ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং যেই লেভেলের অভিনয় করেন, স্বয়ং চার্লি চ্যাপলিন বেঁচে থাকলে তার অভিনয় দেখলে খুশি হতেন।
১৯৮৭ সালে Nayakan সিনেমাতে দুর্দান্ত অভিনয় করেন এতটাই যে Time ম্যাগাজিনের লিস্টে সিনেমা ইতিহাসের বেস্ট ১০০ সিনেমার মাঝে এই সিনেমাকে স্থান দেয়া হয়।
তামিল বা অন্য ইন্ডাস্ট্রির চেয়ে সংখ্যায় বলিউড এ কম কাজ করলেও তার সাফল্য সেখানে কম নয়। hey ram বা chachi 420 সিনেমাতে তার অভিনয় যারা দেখেছেন তারা আশা করি কখনও তার অভিনয় ভুলবেন না। শুধুমাত্র তার সাথে কাজ করার জন্য হে রাম সিনেমায় শাহরুখ খান কোন পারিশ্রমিক নেন নাই।
তার একটি সিনেমার কথা না বললেই নয়, সিনেমার নাম Pushpak. পুরো দুই ঘণ্টার সিনেমাতে একটি সংলাপও নেই, অথচ পুরো দুইটি ঘণ্টা আপনে একবার হাসবেন আরেকবার কাঁদবেন! এরকম নির্বাক অসাধারণ সিনেমা হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে বিরল।

এতক্ষণে মানুষটার নাম বুঝে যাওয়ার কথা, কারণ আমরা বেশিরভাগ তাকে চিনেছি এই chachi 420 সিনেমার মাধ্যমে। মানুষটার নাম কমল হাসান। তাকে শুধু একজন শক্তিশালী অভিনেতা বললে ভুল হবে, তিনি একজন চলমান অভিনয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তার একেবারেই ভিন্ন ধরনের অভিনয় তাকে এই "ইউনিভার্সাল হিরো" বা "the first, and perhaps the last, complete hero in Indian Cinema" এর খেতাব এনে দিয়েছে। চারবার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড আর ১৯ বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার তার যেই রেকর্ড আছে সেটা আজ পর্যন্ত আর কেও ছুঁতে পারেনি, পারার কোন সম্ভাবনাও নিকট ভবিষ্যতে নেই। তিনিই প্রথম ও একমাত্র অভিনেতা যিনি ১৯৯৪ সালে প্রতি সিনেমা থেকে পারিশ্রমিক হিসেবে এক কোটি রুপি নিতেন। শুধু পাননি, দিয়েও গিয়েছেন নিজের সাধ্যমত। অস্কারে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে তিনি আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার ছবি পাঠিয়েছেন- সাতবার! ২০, ৩০ বছর নয়, ৫২ বছর ধরে তিনি জড়িত আছেন ফিল্মইন্ডাস্ট্রির সাথে। "ফিল্মইন্ডাস্ট্রিতে তার যা অবদান, সেরকম অবদান আর কারো নেই"- এই মন্তব্য শ্রীদেবী, অমিতাভ, মোহনলাল থেকে শুরু করে, আমির, শাহরুখ- সবার।

তার হবি বা শখ জাদুশেখা আর প্র্যাকটিস করা হলেও, ব্যক্তিজীবনে তিনি খুব একটা জাদু দেখাতে পারেননি। দুইবার বিয়ে হয়েছে, দুইবারই ডিভোর্সড। এক ঘরে দুটি সন্তান আছে তার, অন্য ঘরে কোন সন্তান নেই। দুইজনই মেয়ে- Shruti K. Haasan ও Akshara। বলা বাহুল্য, দুইজনই রূপবতী আর গুণবতী হলেও, কমল হাসানের ১০০ মাইলের মাঝে একজনও যেতে পারেননি।

নায়ক, ভিলেন, সাইড রোল, অটিস্টিক, অন্ধ, মদ্যপ, নর্তক, একই সিনেমাতে দশটা রোল( Dasavathaaram), কবি, সিরিয়াল কিলার, ভেন্ট্রিলোকুইজম - এমন কোন রোল আর সম্ভবত বাকি নাই যেটা তিনি করেন নাই। জ্যাকি চেনের বড় ফ্যান তিনি, জ্যাকি চেনের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার সময় বলেছিলেন- আমি একবার আপনার মত মারামারি করার চেষ্টা করেছিলাম- ফলাফল হল আমার শরীরের ৩২ জায়গায় ফ্রাকচার হয়ে গেছিল।
Aalavandhan সিনেমাতে বাঞ্জি জাম্পিং করার সময় তিনি পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা পান, তবে এই সিনেমার একটা স্পেশালিটি আছে, শুনতে খুব অবাক লাগলেও এটাই সত্য যে তারান্তিনোর কিল বিল সিনেমার থ্রিডি এনিমেশন সিকুয়েন্স এই সিনেমার 2D সিকুয়েন্স থেকে ইন্সপায়ারড।

এবার খুবই স্পর্শকাতর একটা জায়গা নিয়ে কথা বলব। কমল হাসানের নাম শুনলে অনেকেই মনে করেন যে তিনি মুসলিম- কিন্তু আসলে এটা সত্য না। সত্য হল তিনি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী এবং এটা তিনি খোলাখুলি ভাবেই বলেন। শুধু তাই না, ঈশ্বরের ধারণা নিয়ে তিনি তার বেশ কিছু সিনেমাতে অনেক ধরনের প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন যেমন Anbe Sivam এবং Dasavathaaram নামক সিনেমা। নামের হাসান অংশটা সংস্কৃত শব্দ hasya থেকে আসা, এটার সাথে মুসলমান নামের কোন সম্পর্ক নেই।

তবে সবকিছু মিলিয়ে কমল হাসান অনন্য ও অদ্বিতীয়। ক্যারেক্টারকে অনেক বেশি পারফেকশন দিতে গিয়ে তিনি মাঝেই মাঝেই বাজেটের বেশি খরচ করে ফেলেন- এটা তার বিরুদ্ধে কমন অভিযোগ। এছাড়া তিনি যেকোনো ব্যাপারে সেটা সামাজিক, রাজনৈতিক আর ধর্মীয় হোক- নিজের মন্তব্য খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করেন, কাউকে পরোয়া না করেই। Barrie M. Osburne, যিনি হলিউড এর লর্ড অফ দ্যা রিংস সিনেমার সাথে জড়িত ছিলেন, তিনি বলেছেন- কমল হাসানের সিনেমা আর সাহিত্য নিয়ে যেই পরিমাণ জ্ঞান আছে, সেটার জন্য তাকে একটি চলমান এনসাইক্লোপিডিয়া বলা চলে। পরিচালক মনি রত্নম তার সম্পর্কে বলেছেন- তিনি সম্ভবত একমাত্র অভিনেতা যিনি এমন অনেক অভিনয়ের কাজ পারেন যেটা আর কোন অভিনেতা পারেন না।

আজ ৭ নভেম্বর তার ৬০ তম জন্মবার্ষিকী। এখনও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন, ক্যামেরার সামনে পিছনে- সমান তালে। শুভ জন্মদিন কমল হাসান। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আপনার কাছে যেই পরিমাণে ঋণী, সেই ঋণ কোনোকিছুর বিনিময়ে শোধ হবে না ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৯

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: লিখাটা বেশ । অনেক কিছু জানতে পারলাম । তবে লিখাটা এখানে বেশ কয়েকবার কপি পেস্ট হয়ে গেছে । আর কথার মাঝে মাঝে কিছু মুভির ছবি দিলে বোধ হয় ভালো ছিলো ।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: থ্যাংকস বলার জন্য :)

২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: খুব প্রিয় একজন অভিনেতা। শুভ জন্মদিন।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৯

শাহরুখ সাকিব বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.