নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

মালাউনের গল্প

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৩


জন্মের পর থেকেই মালাউনের সাথে খেলাধুলা, একটু বড় হয়ে মালাউনের বাড়িতে গিয়ে পড়ালেখা করা, মালাউনের বাসায় খাওয়া, মালাউনকে নিজের বাসায় দাওয়াত করে খাওয়ান, মালাউনের বাড়িতে লুকিয়ে লুকিয়ে সিনেমা দেখা, মালাউন মেয়ের প্রেমে পড়া..........
আমার যে কয়টা প্রিইইইইইইইয় বন্ধু আছে তার বিশাল একটা অংশ জুড়ে আছে মালাউন বন্ধু। প্রাইমারী স্কুল থেকে সেই যে একসাথে পথচলা আজ অবধি থামতি নেই। কলেজে যে চারজন জুটি বেঁধে ঘুরতাম তার আধাআধি মালাউন আর শেখ। ওহ, আমি যখন তাদেরকে মালাউন বলি তারা তখন আমাকে শেখ ডাকে। জবাবের পালটা জবাব আরকি। ব্যাপারটা ভালই উপভোগ করি। এবং এই ডাকার ব্যাপারে আমাদের কখনোই কোন অভিযোগ ছিলনা। আজ অবধি নেই। আমার কাছে কভু মনে হয়নি মালাউন নিচু জাত! মালাউন ঘেন্নার বস্তু! মালাউন বন্ধু হতে পারেনা! বরং আমরা তো এক থালায় ভাত খাই, এক বিছানায় ঘুমাই, একটা খাবারও আধা আধি করেই খাই।

একটা স্মরণীয় কাহিনী মনে পড়ে গেল, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং করার জন্য সেখানে অনেক দিন ছিলাম। সেই সুবাদে এক রোজার দিনে ইফতার করতে সেখানের এক মসজিদে গিয়েছিলাম। আমার প্রিয় বন্ধুটি তাই হঠাৎ ইচ্ছা প্রকাশ করলো যে সে আমাদের সাথে মসজিদে ইফতার করবে। আমরা তো সেই পরিমানে উত্তেজিত, মালাউন হয়ে শেখের প্রার্থনাস্থানে ইফতার! তাই বলে মসজিদে! কি আর করা, হাসি চেপে রেখে গেলাম একসাথে মসজিদে। যথাসময়ে ইফতারের সময় হল এবং আমরা মসজিদে সারিবদ্ধ হয়ে ইফতার করা শুরু করলাম। এতক্ষণ পর্যন্ত ব্যাপারটা স্বাভাবিক ছিল কিন্তু হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হয়ে গেল যখন নামাযের সময় হয়ে যাওয়ায় ভেতর থেকে মসজিদের গেইট বন্ধ করে দেওয়া হল আর সবাই একে একে নামাজে দাঁড়াতে শুরু করলো। আমি বারেবারে তার দিকে তাকাই আর হাসি। মনে মনে বকি, শ্লা এইবার খাইলি ধরা। সে চোখে ইশারা দিয়ে বলল, যা হবার হবেনে। নামাজটা পড়েই নিই! এবং আমরা এক লগে মালাউন-শেখ মিলে সেই রোজার মাসে মাগরিবের নামাজ সম্পন্ন করি। (কই আর নামাজ পড়েছিলাম, তার অন্যের দিকে চেয়ে নামাজ পড়ার স্টাইল দেখে হাসতে হাসতে অবস্থা শেষ)
তার এই মনোভাবে আমি এমন অবাক হয়েছিলাম যে সেদিনের পর থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

আমরা শেখ-মালাউন বন্ধুরা মিলে একলগে গো-মাংস ভক্ষণ করি। না না, শুধু তাদের দিকটাই তুলে ধরলাম তা না, আমি নিজেও তাদের পূজাতে প্রসাদ খেতে যাই। এইতো কয়েকদিন আগে সরস্বতী পূজাতে যত্তগুলা পিঠা খেয়ে এসেছি। একাই দুই তিনজনের খাবার মেরে দিয়েছি। পূজাতে তারা দাওয়াত না দিলেও দলবেঁধে তাদের বসায় চলে যাই। দল বেঁধে মন্ডপে ঘুরি আর কোন মূর্তিটা বেশ সুন্দর হয়েছে তা নির্বাচন করি।

আমার মালাউনে সমস্যা নাই, আপনার আছে? মালাউনে সমস্যা........

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪

জয় মহিন বলেছেন: ধর্ম যার যার মানবতা সবার। যে যার ধর্ম পালন করবে। বুঝিনা মানুষ ধর্ম নিয়া এত বারাবারি করে কেনো?

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: যারা বাড়াবাড়ি করে তারা জানেনা কেন বাড়াবাড়ি করে!

২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৪১

যোগী বলেছেন:
মালাউন শব্দের অর্থ কী?

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: পাক রা এই শব্দ ব্যবহার করত। এর অর্থ সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত অভিশপ্ত রা।

৩| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৫২

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম !! গানটা মনে পড়ে গেল ৷

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:১৩

প্রামানিক বলেছেন: ভাই বন্ধুত্ব যখন ঘনিষ্ঠ হয় তখন এসব কোন ব্যাপার নয়। এরকম অভিজ্ঞতা আমারও আছে।

৫| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:১৭

সুমন কর বলেছেন: সবাই তো আমরা মানুষ- তাই নয় কি !!!

৬| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:২৬

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ''মোরা এক বৃন্তে দুটি ফুল , হিন্দু মুসলমান' এর ্সুন্দর উপস্থাপন ।
তবে বারবার মালাউন শব্দটা দৃষ্টিকটু ঠেকেছে ।
@যোগী , মালাউন শব্দের অর্থ অভিশপ্ত ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: ইচ্ছে করেই লিখেছি। বুঝতে পেরেছিলাম বেশি লিখে ফেলছি কিন্তু তারপরেও লিখেছি। মালাউন বলে যারা মজা পায় তাদেরকে মজা দিয়েছি। পৈশাচিক মজা!

৭| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

নষ্টছেলে তানিম বলেছেন: সমস্যা শব্দটা নিয়ে সমস্যা আমরাই করি ... আপনার ঘটনা আর আমার ঘটনা প্রায় একই ... কিন্তু যে জায়গা থেকে আপনার এই পোষ্টের উৎপত্তি ওই ছোটলোকের কথায় এতো উচ্চবাচ্চ করার কিছু আছে বলে মনে হয় নাই তাই জবাবও দেই নাই । রাগ হচ্ছে সে মানুষ গুলোর উপর যারা ওই ছোটলোকটারে হাইলাইট করছে ... দেশটাকে অস্থির করে তুলছে ...

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: মালাউন শব্দ, মালাউন ধারণা এসব আজকের উৎপত্তি না। হিন্দু-মুসলিম ভাগ হবার সাথে সাথেই এই শব্দ বিপথগামী সঙ্খ্যাগরিষ্ঠদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছে।

৮| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ++++

৯| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৫

এন এফ এস বলেছেন: বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করতে আপনার সনাতন বন্ধুটিকে কেন গোমাংস খেতে হবে? তার ধর্মে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও? খাবার ভাগাভাগি মানে কি তার ধর্মীয় আদেশ বিসর্জন দিয়ে ভাগাভাগি!

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: ধর্মে নিষেধ বলতে কিছু নেই। যদি আপনি তা মানতে যান তবে ষোল আনাই বৃথা!

১০| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬

কথাকাহন বলেছেন: মালাউন একটি জাতিবিদ্বেষমূলক গালি যা বাংলাদেশে মূলত: বাঙালি হিন্দুদের উদ্দেশ্য ব্যবহৃত হয়।
মালাউন শব্দটি আরবী শব্দ "ملعون" থেকে উদ্ভূত যার অর্থ অভিশপ্ত বা আল্লার অভিশাপপ্রাপ্ত।

১৯৪৬ সালে নির্মলকুমার বসু মোহনদাস গান্ধীর সঙ্গে নোয়াখালিতে সেবা কাজ করতে আসেন। তিনি লক্ষ করেন হিন্দুদের মালাউন বলে গালি দেওয়ার রীতি।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ গণহত্যা চলাকালীন পাকিস্তানি সেনারা বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু অধ্যাপক ড: গোবিন্দচন্দ্র দেবকে হত্যা করে। হত্যা করার পূর্বে তাঁকে মালাউন বলে সম্বোধন করে সেনারা।
সূত্র- উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

১১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: বন্ধুত্বের সমানে ধর্ম কখনই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না

১২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩

নাহিদ রুদ্রনীল বলেছেন: ধর্ম যার যার ...উৎসব সবার। বন্ধুত্বে ধর্ম আবার কি জিনিস। আগে বন্ধুত্ব..তারপর বাকি সব।

১৩| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯

তাপস কুমার দে বলেছেন: বন্ধুর কোন ধর্ম নাই। ধর্মটা আসলে রাজনীতির দ্বারা কলুসিত হচ্ছে। ফয়দা লোটার জন্য,চেয়ারে যাওয়ার জন্য,ক্ষমতার জন্য।ব্রিটিশরা এই বীজ বিনামূল্যে আমাদের দান করেছেন আর আমরা ফাও পাইয়ে লুটে নিয়েছি।যার বিষবাষ্প আজও পীড়া দিচ্ছে ।ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: আপনিও ভাল বলেছেন :)

১৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:০৮

মীর সজিব বলেছেন: আমরা মানুষ এটাই বড় পরিচয়।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: জি এটাই

১৫| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:০৯

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৬

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: জ্বি

১৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:১৭

দ্বীপ ১৭৯২ বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.