নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

গনপিটুনি মারাত্মক অপরাধ, একে না বলুন!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১

১)
তারপর কথা আসে গনপিটুনি নিয়ে। এইদেশে উৎসবে আনন্দ করার মত হইহুল্লোর করে লোকে গনপিটুনি দেয়। এবং হইহুল্লোর সহকারেই তারা পিটাতে পিটাতে ধৃত অপরাধীর দেহ থেকে হাত ছিঁড়ে ফেলে, পা ভেঙ্গে দেয়, চোখ উপড়ে ফেলে নাহয় একেবারে মেরেই ফেলে।

একজনকে মেরে ফেলার অধিকার এদেশের আপামর জনতাকে কে দিয়েছে? আচ্ছা আবার বলি, একজন অপরাধীকেই পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার এদেশের আপামর জনতাকে কে দিয়েছে? কোন অপরাধীকে হাতেনাতে ধরে ফেলতে পারলে কি তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে? তবে আইন কেন? আর মনুষত্ব??

২)
নিজের একটা অভিজ্ঞতা বলি, আমি তখন কিশোর ছিলাম। এক রোজার দিনে ইফতার করে পরিবারের সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম এমন সময় আপামর জনতার হইহুল্লোর শুনতে পাই। বুঝতে পারছিলাম জনতা শিকার ধরেছে। বাসার সবাই তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বাইরে আসি। এসে দেখি এখন আমার বয়েসী একটা ছেলেকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে ক্ষুধার্ত জনতা পিপাসা মেটাচ্ছে। ছেলেটাকে জনতা এমন ভাবে পেটাচ্ছে যে ছেলেটি আর কাঁদতেও পারছেনা। ছেলেটাকে পেটাতে পেটাতে তার পায়ের গোড়ালি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছিল আর জনতা হাসছিল। কি ভয়ংকর সে হাসি! এই দৃশ্য আমার কিশোর মনে খুব আঘাত করেছিল। আমার মারাত্মক ভয় এবং কষ্ট হচ্ছিল।
তার পরদিন ক্লাসে এক বন্ধুকে সে ঘটনার কথা বলতে গিয়ে আমি বলেছিলাম, "চোর কিংবা আর কাউকে যখন লোকে গনপিটুনি দেয় তখন সেই চোরটির জন্য আমার মায়া হয়। ইচ্ছে করে সবার থেকে জোর করে ছাড়িয়ে তাকে মুক্ত করে দিই......। "

৩)
এমনকি কাউকে যদি বলিও যে গনপিটুনি কখনোই বৈধ পন্থা নয় বরং এটি পুরোপুরি অবৈধ এবং অপরাধ কর্ম, তাহলে সে অবাক হয়ে যায়। রাগে গরগর করে আমায় অপরাধীর পক্ষের লোক বলে তাচ্ছ্বিল্য করে। কি আশ্চর্য ভাবে একটা মারাত্মক অপরাধ কর্মে ধীরে ধীরে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। একটা বিবেকহীন পশু সদৃশ্য কাজ করে আমরা আনন্দ পাই। আমরা পিটায়ে মেরে ফেলার পক্ষে সমর্থন দিতে দিতে পশু হয়ে যাই!

কেউ অপরাধ করলে তার শাস্তির ব্যবস্থা আপামর জনতা করবেনা এতে সঠিক বিচারটি না হবার সম্ভাবনা বেশি। বাংলাদেশের মত পক্ষপাতদুষ্টু দেশে অল্প অপরাধে অধিক সাজা এবং অধিক অপরাধে অল্প সাজাই বেশি হয়। তাছাড়া দেশের আইন ব্যবস্থা তৈরিই করা হয়েছে সঠিক বিচার করার জন্য। সামান্য মোবাইল চুরি, মানিব্যাগ চুরির অপরাধ থেকে শুরু করে যেকোন বড় অপরাধ করলেও একেবারে মেরে ফেলার জন্য নয়।

আরবীয় দেশের শাসন ব্যবস্থা বর্বর হতে পারে। আমরা সংস্কৃতি আর মানবতাতে উন্নত দেশের মানুষ হয়ে বর্বর হতে পারিনা।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.