নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুড়াদের হাসপাতাল ভাবনা

১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৫

ঘুম থিকা উইঠা ঝিমাইতেছিলাম তখন কাক্কা ফোন করে কইলেন হাসপাতাল যাইতে হইব রেডি হ। আমি জিগাইলাম অসুখ কার? তিনি জানাইলেন গ্রাম থিকা এক আত্মীয় আইছে, তারে ডাক্তার দেখাইতে হইব।

বুড়াডিরে আমার একেবারেই স্মার্ট লাগেনা। অহেতুক কুসংস্কার লালক গোয়ার লাগে। কিন্তু আমার দাদী আছিলেন পড়ালেখা না জানা সচেতন বুড়ি। তার যখন ক্যান্সার ধরা পড়ল তখন তিনি আগ্রহ নিয়া হাসপাতালে ভর্তি থাইকা চিকিৎসা নিলেন। এমনকি সুস্থ হইবার আগে পর্যন্ত হাসপাতাল ছাড়তে চাইলেন না। ক্যান্সার ধরা খাওয়ার ছয়মাসের মাঝে মারা যাইবার আগে পর্যন্ত তার ধারণা আছিল তিনি বেঁচে যাইবেন। আমরা তারে স্বান্তনা দিমু কি, তিনি নিজেই কইতেন এইটা ক্যান্সার ম্যান্সার না। গলাডাত একটু ঘাও হইছে, ডাক্তার অষুধ দিছে ভাল হইয়া যাইবো।

দাদীর পরে গ্রামের এই আত্মীয়রে দেইখা আবার অবাক হইছি। আমি ভাবছিলাম তারে বুঝাইয়া সুজাইয়া ডাক্তারের কাছে নিয়া যাইতে হইব কিন্তু তিনি নিজে থিকাই যাইতে চাইলেন। বুড়াডিও অবাক জীবনের মায়া ছাইড়া মরতে চায়না এই ভেবে তার লাইগা আমার মায়া লাগলো। ওসমানী হাসপাতালের গেইটে লাইনে দাঁড়াইয়া দশ টাকার স্লিপ কাইটা আমরা ডাক্তারের চ্যাম্বারে ঢুকলাম। বুকে বেদনা করে শুইনা ডাক্তার আমরারে ইসিজি করতে দিলেন। আশি টাকা দিয়া হাসপাতালের ভেতরে ইসিজি করলাম। তারপরে ইসিজির ফল নিয়া আবার ডাক্তারের কাছে যাইতেই ডাক্তার এক্ষুণি হাসপাতালে ভর্তি হইতে কইলেন।

সিদ্ধান্ত নিবার লাইগা তার পোলা মাইয়ারে জিগাইলাম আপনেরা কি চান? হেরা কয় ভর্তি না কইরা আব্বারে বাড়িত নিয়া যাইগা। অষুধ খাওয়াইলে ঠিক হইয়া যাইব। দিলাম এক রাম ধমক। অশিক্ষিতগুলার সব আনস্মার্ট স্ববিরোধী চিন্তা। তারপরে মাথা ঠান্ডা কইরা বুঝাই সুজাইয়া ভর্তি করাই দিলাম। রোগিরে কইলাম এইখানে আপনেরে তিন চাইর দিন থাকতে হইব, পারবেন না? হেয় কয়, পারুম। দরকার হইলে আরো বেশি দিন থাকুম। তার বাইচা থাকতে চাওয়ার আগ্রহ আমারে মুগ্ধ করলো। অষুধ পত্র কিনে তার পোলা মাইয়ারে সবকিছু বুঝাই দিয়া চলে আসলাম।

হাসপাতাল এক অদ্ভুত জায়গা। এটি আমাদের শুধু সুস্থই কইরা তুলে না, তার সাথে ধৈর্য ধরতেও শিখায়। চারপাশে এত বেদনা, এত কাতরতা, বেঁচে থাকনের এত আগ্রহ দেখে আমাদের অহংকার ভাইঙ্গা চুইরা ছারখার হইয়া যায়। সব মানুষরে এক কাতারে নিয়া আইসা হাসপাতাল বাঁচতে শিখায়। হাসপাতালের ডাক্তাররা একেকজন গড, নার্সরা গডের এঞ্জেলস, আর আমরা রোগিরা মানবগোষ্ঠী । মানব সেবা করা গডের কাজ। সেবা না কইরা ছলচাতুরী করলে আমরা এক গডরে ছাইড়া আরেক গডের কাছে চইলা যাই। বেশি টেকা থাকলে দামি গডের কাছে যাই, দামি এঞ্জেলসদের কাছ থেকে সেবা পাই, হিহিহি।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৩৪

মেইই বলেছেন: ভাল বলেছেন

২| ১৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

কাইকর বলেছেন: খুব ভালো বলেছেন। পড়ে খুব ভালো লাগলো। শব্দচয়ন গুলো বেশ গোছানো ছিল। আমিও গল্প লিখি। দাওয়াত রইলো

৩| ১৯ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হাসপাতাল শুধু ধৈর্য্য ধরতেই শেখায় না। গড-রেও বার বার মনে করাইয়া দেয়...

৪| ১৯ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:১৪

পবন সরকার বলেছেন: সুন্দর কাহিনী

৫| ২০ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.