নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বনির্ভর সরল পাঠ - গরিব মানুষ, মানুষ হতে চাই

বিক্ষিপ্ত ভাবনা

সরলপাঠ

সবার উপরে দেশ - আমার স্বদেশ। ভাল লাগে সততা, সরলতা। খারাপ লাগে নোংরামি, মিথ্যা, অহমিকা, কুটিলতা।

সরলপাঠ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হামাস- ইসরায়েল যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ

১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৮:২৫

ইসরায়েলে হামাসের আক্রমন মধ্যপ্রাচ্যের চলমান কূটনীতিকে পাল্টে দিয়েছে। আজকের এ লিখায় ২টি বিষয় তুলে ধরব। ১) চলমান যুদ্ধে গাজা তথা ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ ২) মধ্যপ্রাচ্যের চলমান কূটনীতির ভবিষ্যৎ। ফিলিস্তিন হচ্ছে মুসলমানদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। ফিলিস্তিনের বিশেষ গুরুত্ব ২টি কারণে ক) মসজিদুল আল আকসা খ) হাদিসে বর্ণিত ফিলিস্তিনে মুসলিম এবং ইহুদিদের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে রাসুল (সঃ) ভবিষ্যৎ বানী।

বর্তমান চলমান যুদ্ধে ইজরায়েল-আমেরিকা এবং তাঁর মিত্রদের উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে গাজা থেকে হামাস কে উচ্ছেদ করে সেখানে ইজরায়েল সমর্থিত একটি ডামি প্রশাসন স্থাপন করা। পশ্চিমাদের উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে, গাজায় ফিলিস্তিনিরা থাকতে পারবে, কিন্তু পরিকল্পিত ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কোন ধরণের হুমকি হবেনা। যেহেতু এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, সেহেতু আমেরিকা এবং ইজরায়েল এই যুদ্ধকে কয়েক সপ্তাহ ব্যাপী চালিয়ে যেতে পারে।

আপনারা অনেকেই মনে করতে পারেন, এখানে মশাদ এবং সিআইএর কূটনৈতিক ব্যর্থতা আছে। আমি তা সম্পূর্ণ মনে করিনা। আমি মনে করি আমেরিকা এবং ইজরায়েল তাদের যুদ্ধের কৌশল হিসাবেই এই ঘটনাটি ঘটতে দিয়েছে। আমার এই অনুমানের কারণ তিনটি ক) মিশর জানিয়েছে তাঁরা ইজরায়েলকে যুদ্ধ শুরুর কয়েকদিন আগেই জানিয়েছে বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তাঁর মানে সি আই এ এবং মোশাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। খ) যুদ্ধের শুরুর প্রথম দিনেই আমেরিকা তাঁর যুদ্ধ জাহাজ ইজরায়েলে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। এটি প্রমাণ করে, আমেরিকা এবং ইজরায়েল জানে তাদের কি পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন একটি স্বল্পমেয়াদী যুদ্ধ করার জন্যে। প্রশ্ন হচ্ছে, কয়েক হাজার অনিয়মিত আর্মির হামাসের মোকাবিলায় আমেরিকাকে কেন জড়াতে হল, ইসরায়েলই তো যথেষ্ঠ ছিল। আমি মনে করি, আমারিকা এবং ইজরায়েল মনে করছে, এ যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্ন দেশ ও জড়িয়ে যেতে পারে। তাই তাদেরকে ভয় দেখানোর জন্যই এই ব্যবস্থা। গ) ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব অস্বিকারকারী অতি ডানপন্থি নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যত খুবই অনিশ্চিত ছিল। এর মাধ্যমে নেতানিয়াহু তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে নিশ্চিত করার চেষ্টা করল।

মধ্যপাচ্যে বর্তমানে হামাসই ইজরায়েল এবং তাঁর মিত্রদের জন্য মূল সমস্যা। ইজরায়েল ২০২০ সালে আমিরাতের সাথে এবং ২০২২ সালে সুদান, মরক্কো, এবং ওমানের সাথে নরমালাইজেশন চুক্তি সম্পাদন করে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সৌদি আরবের সাথে ইজরায়েলের নরমালাইজেশন চুক্তি সম্পাদনের কথা ছিল। হামাস এবং পিএলও এই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছিল। ইজরায়েল এবং তাঁর মিত্ররা জানে দুর্নীতিগ্রস্থ পিএলওকে ম্যানেজ করা সহজ কিছু ডলার দিয়ে। কিন্ত হামাসকে নিয়েই তাদের ভয়। তাই গত এক বছর ধরে আল আকসা মসজিদে প্রভোকেশনের মাধ্যমে, এবং অনিয়মিত ভাবে গাজায় হামলার মাধ্যমে হামাসকে উত্তেজিত করে আসছিল ইজরায়েল এবং তাঁর মিত্ররা।

ফিলিস্তিন সমস্যার সূত্রপাত হয় মূলত ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ফিলিস্তিন ত্যাগের সময় ফিলিস্তিন ভুখন্ডের মধ্যে ইসরায়েল নামক রাষ্ট্র স্থাপনের মাধ্যমে। জাতিসংঘে ব্রিটিশদের প্রস্তাব ছিল একটি স্বাধীন ইজরায়েল, স্বাধীন ফিলিস্তিন, এবং জাতিসংঘের অধীনে কমন জেরুজালেম প্রতিষ্ঠা করা। আরবরা এই ভাগাভাগি মেনে নেয়নি। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের দখলীকৃত ভুমিতে ইজরায়েল স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়। ১৯৬৭ সালে আরব ইসরায়েল যুদ্ধের পর, ১৯৭৮ সালে মিশর ইজরায়েলের সাথে ক্যাম্প ডেভিড শান্তি চুক্তি করে সব আরব দেশকে এড়িয়ে। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে ইস্ররায়েল এবং পিএলও অসলো শান্তি চুক্তি এবং ১৯৯৫ সালে অসলো শান্তি চুক্তি ২ স্বাক্ষরিত হয়। কিন্ত ১৯৯৬ সালে ইসরায়েলের পিএম রবিন অতি ডানপন্থীদের হাতে নিহত হওয়ার পর এ চুক্তি হোচট খায়।

বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে ইজরায়েলের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেও ফিলিস্তিনিদেরকে পর্যায়ক্রমে দুর্বল করা হয়েছে। তাদের স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠন অধরা স্বপ্ন মাত্র। ফিলিস্তিনের দুরদশার মূল কারণ, অকার্যকর আরবলীগ, ওআইসি, এবং জিসিসি; এবং আরব দেশ গুলোর অতি জাতিয়তাবাদী চরিত্র। আরব দেশ গুলো নিজেদের স্বার্থে ফিলিস্তিনের স্বার্থকে জ্বলাঞ্জলি দিচ্ছে।

বর্তমান এই যুদ্ধে হামাসের একার পক্ষে ইসরায়েল তথা বিশ্ব শক্তিকে মোকাবিলা করা অসম্ভব। একমাত্র আল্লাহর গায়েবী শক্তিই পারে তাদেরকে এই যুদ্ধে জয়লাভের। তবে, ইজরায়েলের উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে হামাসকে পুরোপুরি নিঃশেষ করে দেয়া। কিন্তু যুদ্ধ যদি দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধে রুপ নেয় তাহলে অন্যান্ন দেশ থেকেও মুজাহিদরা এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। ইজরায়েল-আমেরিকার উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে হামাসকে দুর্বল করে নিঃশেষ করা এবং সৌদি আরব এবং অন্যান্ন মুসলিম দেশের সাথে চুক্তি করা। এ যুদ্ধ যদি দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধে রুপ নেয়, তাহলে হামাসকে নির্মূল করা বা সোদি আরব সহ আরব দেশ গুলোর সাথে শান্তি চুক্তি করা, ইসরায়েলের এ দুই উদ্দ্যেশের কোনটিই অর্জিত হবেনা। আর তাহলেই হামাসের মূল উদ্দ্যেশ্য অর্জিত হবে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৩৩

বাউন্ডেলে বলেছেন:

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৪৬

অধীতি বলেছেন: হামাসকে আমার একটা চাল মনে হয়। হামাস যে ইজরাইলের তৈরি তাও পড়েছি অনেক জায়গায়। সবমিলিয়ে ভবিষৎ-ই বলে দিবে কে কাদের।

৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১০:৫৫

কামাল১৮ বলেছেন: যুদ্ধ একটা মিমাংসা ডেকে আনবে।তবে ক্ষতি হবে অনেক।যেটা কাম্য নয়।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:১৩

সোনাগাজী বলেছেন:



হাদিস ইত্যাদি নিয়ে এসব ব্যাপারে কথা বলে পাগলামী করার সময় চলে গেছে অনেক আগে।

৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: হামাসকে এখনই থামাতে হবে আমেরিকার। নইলে ভবিষ্যতে হামাস অনেক মন্দ কাজ করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.