নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক রাজাকার আর এক রুমি\'র কথা

১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৬

সত্য কথা বলতে কি আমার বন্ধু সার্কেলে রাজাকার ম্যান্টালির ছেলের অভাব নেই । কাল এইরকম একজনের সাথে ভাত খেতে বসেছি । মুক্তিযোদ্ধা দের নিয়ে কথার পিটে কথা আসতে আসতে সে সব কথার সারর্মম দিলো ।
.
-- ভারতের ছত্রছায়ায় ভালো করে খেয়ে দেয়ে পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধে জিতে যাওয়ার ক্রেডিট কিন্তু আমাদের না , ভারতীয়দের ।
.
একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম । চোখ থেকেও কেন যেন তারা চোখটা বন্ধ করে রাখে । তাকে আমার নিজস্ব ঢংএ একটা কাহিনী শোনালাম । সেটা পরবর্তীতে এডিট করে গল্প আকারে প্রকাশ করা ইচ্ছে আছে
.
.
ছেলেটা একশনে যেতে পারছে না বলে বিরক্ত । ট্রেইনারের মতে তাদের ট্রেনিং এখনো বাকি । এই ট্রেনিং কখন শেষ হবে ? দেশ ধ্বংস হয়ে গেলে ? তার সহযোদ্ধারা যুদ্ধের জন্য নিসপিস করছে
.
ছেলেটা এখনো মনে আছে মার থেকে বিদায় নিবার পর ও বর্ডার ক্রস করে এপ্রিলের মাঝামাঝি । মেলাঘর তাদের হেডকোয়ার্টার । প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হয়েছে । সঙ্গে কিছুই ছিল না । কতরাত খোলা আকাশের নিচের ঘাসের উপর সে শুয়েছে । গায়ের উপর কেঁচো , বিছে কত কি চলে গেছে তার ইয়াত্তা নেই । বহুদিন পর তাঁবু এসেছে । যেখানে রয়েছে শুধু একটা জিনিস , "চাটাই" , বাসন কোসন বালিশ এগুলো তো দুরের কথা । গ্রেনেডের বাক্স কেটে তাতে শুধু ডাল ভাত খেত । কপাল ভালো থাকলে একদিন লবণ ছাড়া শুকনো মাছ
.
তারা গ্রেনেডের বাক্স করে খাচ্ছিল দেখে একদিন ক্যাম্প পরিদর্শনে আসা বিগ্রেডিয়ার পান্ডে তাদের বাসন প্লেট দেবার হুকুম দিলেন । ছেলেরা তীব্র প্রতিবাদ করলো । - "বাসন প্লেট চাই না , তার বদলে বুলেট দেন" তাদের চোখে এই রনহুঙ্কার দেখে বিগ্রেডিয়ার পান্ডে কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন।
.
.
বন্ধুটিকে বললাম - "খাবার কে দিয়েছে বা কি দিয়েছে সেটা ফ্যাক্ট না , ফ্যাক্ট হচ্ছে আমরা কি চেয়েছি "বাসন" নাকি "বুলেট" । ক্রেডিট বাসন যে দিতে চেয়েছে তার নাকি যে বাসনের বদলে বুলেট দিয়েছে তার ? সেবারের মত তার মুখটা বন্ধ করে দিয়ে ভাত খেতে মন দিলাম । খেতে মন দিলেও আমার গল্প বলা শেষ হয়নি । মাথার ভিতর কাহিনীটা তখনো ঘুরপাক খাচ্ছে ।
.
.
ট্রেনিং সেশনে তীব্র পরিশ্রমের পর যে সময়টুকু যে থাকে তা ছেলেটার খুব প্রিয় আর সেটা হল "রাত্রি" কারণ তা গভীর চিন্তা করার যথার্থ সময় । তখন সবাই এতটা টায়ার্ড থাকে যে আটটা নটার মাঝেই বেশী ভাগ ছেলে ঘুমিয়ে যায় । কিন্তু তার ঘুম আসে না । দু একটা তাবুতে কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে গানটান গায় কিংবা আড্ডা দেয়। তার মাঝে একটা গান সে প্রায় শুনে
.
-"হিমালয় থেকে সুন্দরবন , হঠাৎ বাংলাদেশ "
.
গানটা আজম খান নামের এক মুক্তিযোদ্ধার । যে গানটা শুনতে শুনতে সে একসময়ে ঘুমিয়ে পড়ে । কিন্তু কানের পাশে গানটা যেন ট্যাপরেকর্ডার মত অনাবরত বেজে চলে ।
.
হিমালয় থেকে সুন্দরবন , হঠাৎ বাংলাদেশ
কেঁপে কেঁপে ওঠে পদ্মার উচ্ছ্বাসে ,
সে কোলাহলের রুদ্ধস্বরের আমি পাই উদ্দেশ্য ।
জলে মাটিতে ভাঙনের বেগ আসে ।
হঠাৎ নিরীহ মাটিতে কখন
জন্ম নিয়েছে সচেতনতার ধান
গত আকালের মৃত্যুকে মুছে
আবার এসেছে বাংলাদেশের প্রাণ ।
.
.
সে ঘুমন্ত ছেলেটার নাম "রুমি"

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৯

জাতি_ধর্ম_বর্ণ বলেছেন: আপনার ওই রাজাকার মেন্টালির বন্ধুকে বলবেন................... আল্লাহর ইচ্ছা। তার হুকুম ছাড়া দুনিয়াতে কিছুই হয়না।

১৭ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: সে এই কথা বিশ্বাস করে না দেখেই তো এমনটা বলে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.