নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

শান্তু\'স মুভি রিভিউ- "বাজিরাও মাস্তানী" কেবল একটি মুভি নয় এটি একটি সত্যকারের ইতিহাসের কাহিনী

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৭



বুঝে উঠতে পারছিনা একে ঠিক মুভি রিভিউ বলা যায় কিনা । কারণ মুভি সম্পর্কে কম , এর ইতিহাস নিয়েই বেশি লিখেছি । তাই একে মুভি না বলে ইতিহাসের গল্প বললে বোধ হয় ভালো হয় ।
.
ইতিহাস এবং মুভি দুটোই আমার প্রিয় সাবজেষ্ট । আর যখন দুটোই এক হয়ে যায় তখন সে মুভিগুলো মাত্রই আমার দৃষ্টি আর্কষণ করে । "বাজিরাও মাস্তানী" তাদের মাঝে একটি । প্রথমেই বলে নিই আমি চিরকালই সঞ্জয়লীলা বানশালীর ফ্যান । আর এই মুভিটি তার ১০ বছরের পুরানো এক ড্রিম প্রজেক্ট ।
.
ইতিহাস - প্রথমেই বলে নিই মুভির সাথে একে মিলাবেন না । মুভিতে মাত্রই ইতিহাস কিছুটা হলেও বদলে যায় ।
.
"বাজিরাও মাস্তানী" কোন একজনের নাম নয় দুজনের নাম । সে প্রসঙ্গে পড়ে আসছি । ইতিহাস অনুসারে, বাজিরাও বল্লাল ভাট ছিলেন একজন মারাঠা যোদ্ধা মারাঠা সাম্রাজ্যকে পুরো দক্ষিন ভারত থেকে ভারর্তবর্ষের উত্তর ও পূর্ব থেকে ছড়িয়ে দিতে উনার অন্যতম ভূমিকা আছে । বাজিরাও বল্লাল ভাটকে পেশোয়া প্রথম বাজিরাও বলেও ডাকা হয় আর তিনি এই নামেই প্রসিদ্ধ । মারাঠা বাজিরাও ছিলেন ব্রাহ্মণ । ছোটবেলা থেকেই হিন্দুধর্ম ও তার নিয়মকানুন অন্ধভাবে মেনেই বড় হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাজিরাও বড় হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গেই ক্রমশ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন। বাজিরাও-এর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল অসাধারণ। বাজিরাও-এর বাবা মারা যাওয়ার পর মরাঠা সাম্রাজ্যর শাসনভার এসে পড়ে শত্রুপক্ষ সম্পর্কে সব খবরাখবর তিনি রাখতেন। রাতে যখন সকলে ঘুমোত, তখনও তিনি তাঁর সাম্রাজ্য নিরাপদ রাখার কাজে নিযুক্ত থাকতেন। বাজিরাও একবার তাঁর সেনাপতি বন্ধুকে বলেছিলেন যে, রাত ঘুমোনোর জন্য নয়, বরং রাত হচ্ছে আমাদের বর্ম। এইসময়ই শত্রুপক্ষকে বোঝার সবচেয়ে বড় সময় ।
.




১৭০০ সালের ১৮ আগস্টে এই বীর জন্মগ্রহণ করেন । ১৭২০ থেকে ১৭৪০ পর্যন্ত শাসন করেন তিনি। এই বিশ বছরে ৪৩টি যুদ্ধ করেন এবং প্রতিবারই জয়ী হয় তথা অপরাজিত থাকেন । সর্বশেষ ১৭৪০-এর ২৮ এপ্রিল তার ৪৪ তম যুদ্ধে তিনি নিহত হন। মাস্তানি হলো তার ২য় স্ত্রী । এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে বাজিরাও মাস্তানিকে অনেক ভালবাসতেন । বাজিরাও এর সাথে তার আত্মার সম্পর্ক ছিল। বাজিরাও এর যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যু হলে মাস্তানিও আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মহত্যা করেন ।
.




এখন আসি মাস্তানীকে নিয়ে - এক হিন্দু পেশোয়া/মারাঠা বিয়ে করছে এক মুসলিম কন্যাকে ! ইতিহাসে এটা একটা দুলর্ভ ঘটনা । এর নজির তেমন একটা দেখা যায় না। বরং উল্টোটাই আছে । মাস্তানী কে ? এই প্রশ্নে কয়েকটি মত আছে । জানা যায়, তিনি বুন্দেলখন্ডের রাজা ছত্রশলের কন্যা। বাবা হিন্দু হলেও তার মা ছিলেন একজন মুসলিম । তাই ছত্রশলের কন্যা হলেও তাকে আধা-মুসলিম বলা যায় । হিন্দু-মুসলিম ধর্মের সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে ‘প্রণামী’র প্রচারক ছিলেন রাজা ছত্রশাল। মেয়েও বড় হয়েছিল বাবার আদর্শে। তাই মস্তানি একইসঙ্গে ব্রত পালন করতেন ও রোজা করতেন, অন্যদিকে কৃষ্ণের ভজনও গাইতেন আবার নামাজ ও পড়তেন। মাস্তানি রূপে-গুণে ছিলেন অসাধারণ। একদিকে মার্শাল আর্ট মূলক আত্মরক্ষা , ধনুর্বিদ্যায় ছিলেন পারদর্শী, অন্যদিকে নাচে-গানেও অতুলনীয়া।
.
কোনও কোনও ইতিহাসবিদ এইও বলেন যে, বাজিরাওয়ের সাহায্যে রাজা ছত্রসল যুদ্ধ জিতলে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ রাজ্যের একাংশ ও মেয়ে মাস্তানিকে বাজিরাওয়ের হাতে তুলে দেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে বাজিরাওয়ের যুদ্ধ হলেও, মাস্তানির রূপলাবণ্যে মুগ্ধ হন হয়ে তাকে বিয়ে করেন ৷ কিন্তু এ বিয়ে সুখের হয়নি।



বাজিরাওয়ের ১ম স্ত্রী কাশীবাই খুব অল্প বয়সেই আর্থারাইটিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন । জীবনের বেশিরভাগই তাকে বিছানায় থাকতে হতো তবে তিনি অকমর্ণ্য ছিলেন না । তিনি ছিলেন খুবই বিদূষী । তাঁর একটি বিশাল নিজস্ব গ্রন্থাগার ছিল। তবে তিনি হাঁটুর ব্যাথায় তিনি খুবই কাবু থাকতেন। কাশীবাঈ এবং বাজিরাওয়ের পরিবার ঈর্ষা ও সংস্কারের বশে মাস্তানিকে মেনে নিতে পারেননি। কিন্তু বাজিরাও তাকে পাগলের মতো ভালবাসতেন৷ ইতিহাস বলে মাস্তানী যুদ্ধে পারদর্শী হওয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে বাজিরাও তাকে সবসময় নিজের পাশে রাখতেন।




মাস্তানির গর্ভে বাজিরাওয়ের এক ছেলে হয়। বাজিরাও তার নাম রাখেন শামসের বাহাদুর৷ কিন্তু তাতে তার উত্তারাধিকার করতে পারেনি । আনুষ্ঠানিক রীতি পালন করতে অস্বীকার করেন তার পরিবার ও পুরোহিতরা ৷



.
কোন কোন ঐতিহাসিকদের মতে । বাজিরাও এর মৃত্যুর পর মাস্তানি সতীদাহ প্রথা পালন করে সতী হয়েছিলেন !
.
.
অফ টপিক বলে রাখি এই মারাঠারা আমরা বাংলার মানুষদের কাছে চিরকালই বিভীষিকাময় দস্যু ছাড়া আর কিছু নয় । তাদের অত্যাচারে আমরা এতটাই অতিষ্ট ছিলাম যে ছেলেভুলানো ছড়াতেও তাদের অস্তিত্ব মিলে । "ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো
বর্গী এল দেশে" । "বর্গী" মারাঠাদের আরেক নাম

.
এখন আসি মুভিতে - প্রায় ১৩০ কোটি রুপীতে নির্মিত এই মুভি । প্রতিবারের মত এই মুভিতেও বানশালী খরচে কার্পন্য করেনি । ঘরের সাজসজ্জা থেকে শুরু নায়িকাদের কাপড়ে পিছে প্রচুর টাকা ঢেলেছেন । সঞ্জয় এই মুভি নিয়ে এতটাই সিরিয়াস ছিলেন যে তার মনমত না হলে উনি দীপিকা প্রিয়াংকা কাউকে ছাড়েনি । মুখ দিয়ে যা এসেছ তাই বলেছেন । আরো বকা খেতে হবে দেখে প্রিয়াংকা মুভিটা ছেড়েই দিতে চেয়ে ছিলো। এছাড়াও মুভিটিতে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আছে ।


.
মুভিটি আজ ১৮ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে । মুভিটি রেকর্ড ভেঙ্গে দিবে এটা আমি আশা করি না । কারণ এই একই দিনে মুক্তি পেয়েছে শাহরুখের "দিলওয়ালে" । একটি ঐতিহাসিক মুভি মাত্রই একটি মালমশলা সমৃদ্ধ মুভির কাছে মার খায় । এটাই নিয়ম বলা চলে । এরই মাঝে শাহরুখ বাজিরাও মাস্তানী মুভিটিকে শোপিস বলাতে বলিউডে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে ।
দেখি এখন কোথাকার পানি কোথায়



.
.
তথ্যসুত্র - নেট জগৎ

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৩

আলম 1 বলেছেন:
https://www.youtube.com/watch?v=ckEqVxP6A3k

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১১

সুমন কর বলেছেন: ইতিহাসটা দেয়াতে ভালো হয়েছে। জানা ছিল না।
পোস্টে +।


২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৫

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: ধন্যবাদ কাজে আসতে পেরে ।

৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১১

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: এইটা ভালো প্রিন্ট আসলে দেখব। মুভিটার বেশ প্রশংসা শুনছি। এই হল প্রিন্টে দেখে মুভিটাকে নষ্ট করতে চাই না।

বাজিরাও - মাস্তানী - দুইজনের নাম এইটা জানতাম না।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: এই মুভিটি বানসালির মুভি । দেখলেই এইচডি তে দেখা উচিত

৪| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: দিলওয়ালে দেখেছি| এটাও দেখবো|
রামলীলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম| এবারও হবো আশা করি

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৬

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: এই মুভি এইচডি তে না দেখলেই লস

৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৩

বনজ্যোৎস্নার কাব্য বলেছেন: গত কিছুদিন ধরেই দিলওয়ালে আর বাজিরাও মাস্তানির কয়েকটা রিভিউ পড়লাম। রিভিউ পড়ে বাজিরাও মাস্তানি দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভালো প্রিন্ট আসুক আগে তারপর দেখবো।
আপনার রিভিউ ভালো হয়েছে। ইতিহাসটুকু জানাটা দরকার ছিল মুভিটা দেখার আগে।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: এই মুভি এইচডি তেই দেখলেই উত্তম ।

৬| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪২

তাওহিদ হিমু বলেছেন: দিলওয়ালেরর চেয়ে বাজিরাও মাস্তানি বেশি ভাল লাগল। তবু কিং তো কিং-ই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.