নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিউ - The Reader

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৬

টাইটানিকের ঐ 'বিশেষ' দৃশ্যের কল্যানে কেট উইন্সলেটের প্রতি আমার মত নাইন্টিজ জেনারেশনের দুর্বলতা খুব স্বাভাবিক । আজ কি মনে করে 'দি রিডার' মুভিটি দেখতে বসায় পুরানো স্মৃতি আবার জাগ্রত হল । ২০০৮ সালের এ মুভিটা 'R' রেইটেড মুভি । মুভির প্রথমাংশে কেট উইন্সলেটের ১৮ প্লাস দৃশ্য থাকলেও তা কাহিনী বিচারে খুব গৌণ । কাহিনীর গভীরতা ভয়ংকর ধরণের । শেষ অংশটা দেখে উঠার সময় মনে হবে বুকের ভিতর 'সামথিং ইজ মিসিং' । ভূমিকা - 'দি রিডার' মুভিটির কাহিনী এডোপ করা হয়েছে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত একই নামের বই 'দি রিডার' হতে । এটিই এখন পর্যন্ত একমাত্র জার্মান উপন্যাস যেটি 'নিউ-ইয়র্ক টাইমস'র বেস্ট সেলার লিস্টের টপ পজিশনে ছিল । উপন্যাসটির লেখক জার্মান আইনের অধ্যাপক এবং বিচারক বেনহার্ড শলিঙ্ক । জার্মানিতে বইটি পাঁচ লাখ কপির চেয়ে বেশি কপি বিক্রি হয় । ১৯৯৭ তে ইংলিশে তা অনুবাদিত হয় । বিখ্যাত টিভি উপস্থাপক অপরা উইনফ্রে একদিন তার বুকস ক্লাবে বইটি নিয়ে আসেন । ব্যস বইটি বেষ্ট সেলার । ৭ লাখ কপি 'ইউ এস এ' ও 'ইউ কে' তে ২ লাখ কপি বিক্রি হয় । এ পর্যন্ত বইটি ৩৭টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং পেয়েছে বিভিন্ন পুরস্কার । কাহিনী সংক্ষেপ (স্পয়লার এলার্ট)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপটে মুভিটা আঁকা হয়েছে । ১৫ বছরের এক স্কুল বালক মাইকেল বার্গ ঘটনাক্রমে দেখা পায় 'হানা শ্মিৎজ' নামক একজন ৩৮ বৎসরের মধ্যবয়সী রমণীর । পেশায় ট্রাম কন্ডাক্টার । ঘটনা পরস্পরায় মাইকেল তার প্রেমে পড়ে । এই প্রেম শারিরীক । তবে কবে যে এই প্রেম তাদের দুজনকেই মানসিকভাবে গ্রাস করতেছে তা তারা নিজেও জানেন । হানা বই ভালোবাসে । তবে পড়তে নয় , পড়াতে । শারিরীক প্রেমের পরে বা আগে মাইকেলের প্রধান কাজ ছিল হানাকে বই পড়ে শুনানো । টিনটিন , দি ওডেসি, দি লেডি উইথ দি লিটল ডগ এর মত বিখ্যাত বইগুলো আবৃত্তি করতো । হানা হাসি কান্নার অনূভূতিতে জর্জরিত হতো । একদিন হানা সব অনুভূতিগুলো বিসর্জন দিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেলো । ৮টি বছর পার হয়ে গেলো । আইনের ছাত্র মাইকেল হানাকে হঠাৎ কোর্ট রুমে দেখতে পায় । তার বিরুদ্ধে ৩০০ ইহুদি নারী হত্যার অভিযোগ । নাৎসী ক্যাম্পে সে একজন গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিল । সে সহ আরো কয়েক জন গার্ডের বিচার চলছে । হানা প্যাঁচ বুঝে না । তার দৃষ্টিতে বয়স্কদের বাছাই করে তাদের জায়গায় নতুন তরুণীদের জায়গা দেওয়া দোষের মাঝে পড়ে না । তার বাছাই করা বয়স্কদের সাথে কি হয় তা তার বিবেচনার বিষয় না এমনকি সে জানেও না তাদের সাথে কি হয়েছে । সে কেবল গার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে । তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দাতাদের একজন জানালো সে অল্পবয়স্ক মেয়েদের সে বেছে নিত বই পড়ে শুনানোর জন্য । হানা তাদের যত্ন নিতো । আর প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে তাদের পাঠিয়ে দিয়ে নতুন কাউকে নিয়ে আসতো । আদালত তার এই কর্মকান্ড স্বাভাবিকভাবে নেয়নি । আরোপিত অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সহকর্মী গার্ডরাও সাক্ষ্য দেয় । এই ব্যপারে একটি লিখিত নোট পাওয়া যায় । যা হান্নার লেখা বলে দাবী করা হয় । আদালত হাতের লেখাটি মিলিয়ে দেখার জন্য তাকে লিখতে বলা হলে হানা কিছুক্ষণের জন্য স্থির হয়ে যায় । বহু বছর পর মাইকেল ব্যাপারটা হঠাৎই ধরতে পারে । একটি সত্য হানা সবার থেকে লুকিয়েছ । হানা হলো অক্ষর জ্ঞানহীন । যা হানা জন্য খুবই লজ্জাজনক । এই লজ্জা প্রকাশ পাওয়ার চেয়ে সে জেলে যাওয়া অধিক শ্রেয় মনে করে । লিখিত নোটটি তার নিজের লেখা বলে স্বীকার করে নিলো । বিচারে হান্নার যাবজ্জীবন জেল হয় । বহুবছর পর মাইকেল একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবি । ঘটনাক্রমে পুরানো বইগুলো আবার তার হাতে আসে । ১৫ বছর বয়সে সে হানাকে যে বইগুলো পড়ে শুনিয়েছিল তা পুণরায় রেকর্ড করে । জেলে বয়োবৃদ্ধ হানাকে পাঠাতে শুরু করলো । তাদের মাঝে নতুন করে এক মিথস্ক্রিয়া গড়ে উঠলো । শেষাংশটা আর বললাম না । তবে এতটুকু বলতে পারি মুভিটি দেখা শেষ হবার পর বুকের ভেতর কিছু একটা নেই বলে মনে হবে । সমালোচনা - মুভিটি আর তার বইটির যথেষ্ট সমালোচনা রয়েছে । এখানে ইতিহাসকে খুব সরল দৃষ্টিতে দেখানো হয়েছে । সাধারণ শিক্ষিতদের কাছে হানার ঘটনাটিকে নির্দোষভাবে তুলে ধরে হানার প্রতি সহানুভূতির আদায় করা হয়েছে । বিশেষ করে ব্রিট্রিশরা এই মুভি ও বইয়ের কঠোর সমালোচক । সর্বশেষ - আইএমডিবি'তে ৭.৬ পাওয়া এই মুভিটিতে অভিনয় করেছেন কেট উইন্সলেট, রালফ ফিয়েন্স, জেনেট হেইন, ডেভিড ক্রস । ড্রামা এন্ড রোমান্টিক জেনারের মুভিটির পরিচালক স্টিফেন ডালড্রে । মুভিটি মোট পাঁচটি ক্যাটেগরিতে অস্কার নমিনেশন পায় । মুভিটি অস্কার পায় । অস্কার পান বেস্ট এ্যাকট্রেস হিসেবে কেট উইন্সলেটও । মুভিটি অস্কার ছাড়াও সাতটি পুরস্কার এবং অন্য আরো বিশটি নমিনেশন পায় । শেষ মন্তব্য - এই মুভি দেখেননি তো কি দেখলেন ।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৯

নতুন বলেছেন: ছবিটা পুরুটা দেখে নিবাক হয়ে গিয়েছিলাম কিছুক্ষনের জন্য।

কেটের অভিনয় অসাধারন :)

ইংলিশ মুভি যারা পছন্দ করেন তাদের অবশ্যই দেখার মতন ছবি।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৪

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: সহমত ভাই

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখেছি। চমৎকার মুভি।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪০

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মুভিটি দেখবো। অসাধারণ রিভিউ।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪১

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: দেখে কেমন হয়েছে জানাবেন ।

৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৪

মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেছেন: চমৎকার মুভি. অনেকদিন আগে দেখেছি

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪১

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: বার দেখা উচিত বলে মনে হয়

৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৩৩

নীল বরফ বলেছেন: অনেক বছর আগে দেখেছি,আমার দেখা অন্যতম সেরা মুভি। ভালো লিখেছেন রিভিউ। আরো ভালো ভালো মুভি নিয়ে লিখবেন আশা করি।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪২

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: চেষ্টার কমতি থাকবে না ।

৬| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০১

রূপম রিজওয়ান বলেছেন: মুভিটা দেখতে হবে দেখছি! দারুণ লাগলো আপনার রিভিউটি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.