নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অরিজিন অব ইটারনালস

২৭ শে মে, ২০২১ রাত ১২:১৪

দ্য ইটারনালস কমিক নভেল প্রথম আসেন ১৯৭৬ এ । প্রথমে এর রচয়িতা জ্যাক কার্বে (Jack Kirby)- কে পরিচয় করিয়ে দেওয়া একান্ত আবশ্যক । যাকে কমিক জগতের গডও বলা হয় । ষ্ট্যান লী’কে ফাদার অব মার্ভেল ইউনিভার্স বলা হলেও জ্যাক কার্বে স্ট্যান লী'র চেয়ে কোন অংশে কম নয় । জ্যাক কার্বে আমাদের অতি পরিচিত বহু মার্ভেল ক্যারেক্টারের কো-ক্রিয়েটর । যেমন ক্যাপ্টেন আমেরিকা, থর, আয়রন ম্যান, ব্ল্যাক প্যান্থার, ফ্যান্টাসটিক ফোর, হাল্ক, এক্স-ম্যান ইত্যাদি । অথচ অদ্ভুত কারণে কেন যেন সবগুলোর ক্রেডিট স্ট্যান লী’র কাছে যায় । প্রোপার ক্রেডিট না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ক্ষোভ পুষে রেখে ৭০ এর দশকে জ্যাক কার্বি মার্ভেল কমিক ইউনিভার্স ছেড়ে ডিসি কমিক ইউনিভার্সে চলে আসেন । ডিসি ইউনিভার্সে এসে জ্যাক কার্বি ফোর্থ ওয়ার্ল্ড নামে একটি কমিক নভেল লিখেন । যা কমিক ইতিহাসে অত্যন্ত বিখ্যাত একটি নভেল । যেখানে প্রথম নিউ গড কনসেপ্টকে রিভিল করা হয় । এছাড়াও এই কমিক নভেলে প্রথম পাওয়া যায় মিঃ মিরাক্যাল ও আমাদের অতি পরিচিত ডার্কসাইড- স্ট্যাফেনওলফের মত চরিত্রগুলোকে । পরে জ্যাক কার্বি পুনরায় মার্ভেল কমিকে ফেরত আসেন । সাথে নিয়ে আসেন ফোর্থ ওয়ার্ল্ড ও নিউ গডের কনসেপ্ট । যা থেকের আজকের ইটারনালস তৈরী । ইটারনালস এর অরিজিন বুঝাতে হলে আমাকে পুরো মার্ভেলস কমিক ইউনিভার্সের অরিজিন বুঝাতে হবে । তাই বুঝবার সুবিধার্থে সংক্ষপে দিচ্ছি -

অরিজিন -

– ফাস ফার্মামেন্ট ছিল একদম প্রথম দিকের গড । যে কিনা ছিল স্বয়ং একটি ইউনিভার্স বা যে কিনা নিজের মধ্যে পুরো ইউনিভার্স ধারণ করতে পারতো । ফাস ফার্মামেন্ট নিজের একাকিত্ব দূর করার জন্য বা নিজের সেবার জন্য তৈরি করে সেলেস্টিয়ালস (Celestials) দের । সেলেস্টিয়ালস’দের মূল পাওয়ার ছিল নতুন নতুন লাইফ ফর্ম ক্রিয়েট, মোডিফাই ও ডিস্ট্রয় করা ।
তবে সবই ছিল ফাস ফার্মামেন্ট এর অনুমতিতে । পরবর্তীতে কিছু কিছু সেলেস্টিয়ালস বিদ্রোহী হয়ে উঠতে শুরু করে ফাস ফার্মামেন্ট এর নিকট জবাবদিহিতার জন্য । শুরু হয় সেলেস্টিয়ালস ওয়্যার । ফাস ফার্মামেন্ট এর সমর্থকদেরকে স্পাইরেন্ট বলা হত । যুদ্ধে স্পাইরেন্টের হার হলো । সেলেস্টিয়াল’রা হয়ে গেল ফাস ফার্মামেন্ট- এর হাত থেকে মুক্ত । পরিণত হলো কসমিক গডে ।

এই কসমিক গডরা বিভিন্ন গ্রহের প্রাণ সৃষ্টি সহ বিদ্যমান প্রাণকে মোডিফাই করা শুরু করলো । মার্ভেল কমিক ইউনিভার্সে অ্যাসগার্ডিয়ান সহ যতগুলো প্রাণের দেখা পাওয়া যায় সবই মূলত সেলেস্টিয়ালস’দের গবেষণা ফসল । সমস্যা হচ্ছে সেলেস্টিয়ালস’রা প্রতিবার ফিরে আসে তাদের এক্সপেরিমেন্টের সাফল্য দেখতে । যদি তারা মনে করে তাদের এক্সপেরিমেন্ট ফেইল করেছে তাহলে তারা রাতারাতি পুরো সভ্যতা ধ্বংস করে ফেলত । এই রকম একটি দৃশ্য ‘গার্ডিয়ান অব দ্যা গ্যালাক্সি’তে দেখতে পারবেন । যাইহোক গ্রহ থেকে গ্রহ ঘুরতে ঘুরতে সেলেস্টিয়ালস’রা ১০ লক্ষ বছর আগে এসে পড়লো পৃথিবীতে। তারা পৃথিবীতে বসবাসরত প্রাইমেট প্রজাতির উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে । যেখান থেকে তৈরি হয় ডেভিয়েন্টস, হোমো সেপিয়ান্স ও হোমো মোর্টালাস । ডেভিয়েন্টস হল সিলেসসিয়েলদের একটি ফেইল এক্সপেরিমেন্ট । তারা ভীষণ শক্তিশালী তথা সুপার পাওয়ারের অধিকারী হলেও বীভৎস রূপের কারণে তারা সেলেস্টিয়ালস হতে পরিত্যক্ত হয় । আর হোমো মোর্টালাস হলো আমাদের ইটারনালস । মানুষের মত তবে সুপার পাওয়ার সমৃদ্ধ। ইটারনালস তাদের নামের মত অমরণশীল প্রকৃতির। ইটারনালস ও ডেভিয়েন্টস’রা হল জন্ম শত্রু । এখানে বলে রাখা ভালো ইটারনালস বলতে ট্রাইলারে দেখানো হাতে গোনা কয়েকজন সুপার হিরোকে বুঝায় না । কমিকে ইটারনালস বলতে পুরো একটি রেসকে বুঝানোয় হয় । যাইহোক সেলেস্টিয়ালস’রা চলে যাওয়ার পর বহু বছর পর ইটারনালস এর দুই দলের মধ্যে সিভিল ওয়্যার শুরু হয়ে যায় । ইটারনালস ক্রোনোস পরাজিত করে ইটারনালস ইউরেনাসকে । পরাজিত দলকে পৃথিবী ছাড়তে হয় । পরাজিত ইটারনালস’রা বিভিন্ন গ্রহে বসতি স্থাপন করতে হয় । তারা পরিচিত হতে তাদের বসবাসের গ্রহের নামানুসারে। যেমন ইউরেনাস ইটার্নালস, টাইটেনিয়াস ইটার্নালস ইত্যাদি নামে । এদিকে পৃথিবীর ইটারনালস নেতা ক্রোনোস এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে মারা যায় বা ইমেটেরিয়াল স্টেজে চলে যাওয়ায় পৃথিবীর ইটারনালস’দের নেতৃত্বের ভার চলে আসে ক্রোনোসের দুই ছেল ‘জিউরাস’ ও ‘আলারাস’ এর উপর । জিউরাসকে ইটারনালস’দের নেতা মেনে নেওয়া হলে আলারাস ভাইয়ের সাথে সিভিল ওয়্যার এড়াতে পৃথিবী ছেড়ে টাইটানে চলে আসে । দেখা হয় টাইটেনিয়াস ইটারনালস 'সুইসান' নামের রমনীর সাথে । তাদের ঘরে জন্ম হয় দুই ছেলে । স্টার বাক ও স্বয়ং থেনোস । বলে রাখা ভালো ইটারনালস’দের জিনে সুপ্ত অবস্থায় ডেভিয়েন্ট জিনও ছিল । যা খুব কম ক্ষেত্রে প্রকাশ পায় । থ্যানোসের ভিতরে ইটার্নালস ও ডেভিয়েন্ট দুইটি রেসের পাওয়ার ছিল । ইটারনালস-এর ভিতর ডেভিয়েন্ট জিনের দেখা পাওয়া ছিল প্রতিটা ইটারনালস-এর নিকট অত্যন্ত লজ্জাজনক । যার জন্য থেনোস ছিল নিজ মায়ের নিকট নিগৃহীত ও নির্যাতিত ।

এভাবেই ইটারনালস’রা বিভিন্ন গ্রহে উপগ্রহে ছড়িয়ে আছে এবং একে অন্যের সাথে বা অন্য প্রজাতির সাথে নিরন্তর এক যুদ্ধে লিপ্ত।

সংক্ষেপে এতটুকু ।

সমস্যা হচ্ছে এই অরিজিন প্রতি টা নতুন প্রজন্মের হাতে এসে আস্তে আস্তে বদলাতে শুরু করে । তাই সবচেয়ে জনপ্রিয় কমিক অরিজিনটাই দিলাম ।

দিন শেষে কমিক দুনিয়া এখন কাগুজে পাতা ছেড়ে পর্দায় এসেছে । নতুন প্রজন্মের হাতে পড়ে স্বাভাবিকভাবে মার্ভেল কমিক ইউনিভার্স এর জায়গা নিয়েছে মার্ভেল সিনেমেটিক ইউনিভার্স । ফলে ইটারনালস- এর অরিজিনও বদলে গেছে । লিখা হচ্ছে নতুন রোমাঞ্চকর অরিজিন ।

ইটারনালস মুভির সংক্ষিপ্ত প্লট হচ্ছে - ‘পৃথিবীতে হাজার বছর থেকে এই সুপারহিরোরা মানবজাতিকে গোপনে নানাভাবে ইনফ্লুয়েন্স করে চলেছিল । এন্ডগেমের ঘটনার পর তাদের জন্ম শ্ত্রু ডেভিয়েন্টসরা ক্রমে তাদের অস্তিত্ব প্রকাশ করতে শুরু করে । তাদের রুখতে ইটার্নালস’দেরও অবশেষে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করতে হচ্ছে ।


মার্ভেল সিনেমেটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ) থেকে ইটারনালস মুভির চরিত্রগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হল -

মাকারি (Makkari)- মাকারি’র পাওয়ার হল স্পীড । তাকে এমসিইউ’র ফ্ল্যাশ বলতে পারি । একজন বধির সুপারহিরো । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘লরেন রিডলফ’ ।

গিলগামেশ (Gilgamesh) - মানব সভ্যতার প্রথম উপন্যাসের নায়ক ‘গিলগামেশ’ যেন এমসিইউ’তে উঠে এসেছে । শারীরিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী গিলগামেশ তার কসমিক পাওয়ারের মাধ্যমে নিজের শরীরকে ঘিরে এক্সোস্কেলিটন তৈরী করতে পারে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘ডন লি’ ।

ড্রুইগ (Druig) - মাইন্ড কন্ট্রোল পাওয়ার আছে । ইন্ট্রোভার্ট প্রকৃতির ব্যক্তি । বিভিন্ন বিষয়ে অন্য ইটারনালস’দের সাথে তার যায় না । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘ব্যারি কিওঘান’ ।

ফাসটোস (Phastos)- ইঞ্জিনিয়ার ইটারনালস । কসমিক এনার্জির ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন টেকনোলজি তৈরি করে । এমসিইউ’র প্রথম ‘হোমোসেক্সুয়াল’ চরিত্র । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘ব্রায়ান টায়রি হেনরি’ ।

স্প্রাইট (Sprite)- ছোটখাট মানুষ হলে তার পাওয়ার চমকপ্রদ । ইলিউশন তৈরির ক্ষমতা আছে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘লিয়া ম্যাকহিউ’ । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘Lia McHugh’ ।

কিংগো (Kingo)- একজন বলিউড স্টার । জনপ্রিয়তা পছন্দ করে । এনার্জি প্রজেক্টাইল ছুড়ে মারার ক্ষমতা আছে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘কুমাইল নানজিয়ানি’ ।

সার্সি (Sersi) - সার্সি লেনিষ্টার থুক্কু সার্সি’র পাওয়ার হল- কসমিক পাওয়ারের সাথে মলিকিউল ও এটমিক লেভেল মেনুপুলেশন ও ইলেক্ট্রোম্যাংগনিজম - এর ক্ষমতা । মনুষ্য জাতি প্রতি খুবই দুর্বল । ইটারনালস ইকারাস - এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক । মুভিকে মুলত তার দৃষ্টি থেকে দেখানো হবে বলে মনে হয় । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন ‘গেমা চ্যান’ ।

এজাক (Ajak) - ইটারনালস’দের স্পিরিচুয়াল লিডার । হিলিং ও এনার্জি ব্লাস্ট এর ক্ষমতা আছে । এজাক হলে একমাত্র ইটারনালস যে কিনা সেলেস্টিয়ালদের দেখেছে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন আমার প্রিয় ‘সালমা হায়েক’ ।

থেনা (Thena) - ইটারনালস’দের মধ্যে প্রকৃত যোদ্ধা । রিজারেশন এনার্জি, এনার্জি ব্লাষ্ট, ম্যাটার ট্রান্সমুটেশন, টেলোপ্যাথী পাওয়ার আছে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন অতি পরিচিত ‘এঞ্জেলিনা জোলি’ ।
ইকারিস (Ikaris) - ইটার্নালসদের ট্যাক্টিক্যাল লিডার । সুপারম্যানের যে পাওয়ারগুলো আছে তার সবগুলো ইকারিস কপি করেছে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন গেইম অব থ্রোনসের ‘রিচার্ড ম্যাডেন’ ।

ব্ল্যাক নাইট (Black Knight) - মিস্টিক্যাল সোর্ডের অধিকারী একজন হিউম্যান ওয়ারিয়র । সার্সি’র সাথে প্রেমের সম্পর্ক আছে বা থাকতে পারে । চরিত্রটি রুপদায়ন করেছেন গেইম অব থ্রোনসের ‘জন স্নো’ থুক্কু ‘কিট হ্যারিংটন ’ ।

এখন শুধু অপেক্ষার পালা । আমি ও আমরা অপেক্ষা করছি শিহরিত হতে । সবার জন্য শুভ কামনা।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০২১ রাত ১২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: খুবই চমৎকার একটি পোষ্ট দিয়েছেন।
খুব উপভোগ করলাম।

২৭ শে মে, ২০২১ রাত ১২:৫১

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য

২| ২৭ শে মে, ২০২১ রাত ১:৫২

অপু তানভীর বলেছেন: মার্ভেল ইটারনালসের ট্রেইলার দেখে ইউটিবে কদিন থেকে বেশ কিছু ভিডিও দেখে অনেক তথ্য জানার চেষ্টা করছিলাম । এর থেকে আপনার পোস্টটা আরও বেশ চমৎকার । এখন কেবল এই মুভির অপেক্ষায় ।

পোস্টে প্লাস !

৩| ২৭ শে মে, ২০২১ রাত ২:৪৫

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৪| ২৭ শে মে, ২০২১ বিকাল ৪:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: চাচা চৌধুরী ছাড়া জীবনে কিছুই পড়ি নাই।

২৮ শে মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩২

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: সবার শুরু তো এখন থেকেই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.