নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তায় মুক্ত - ভাষায় প্রকাশে ভীত , কল্পনার সীমানা মহাকাশ ছাড়িয়ে - বাস্তবতায় পা বাড়াই না সীমানার বাহিরে

শান্তনু চৌধুরী শান্তু

কবিতা লিখি , গল্প লিখি , মুভি রিভিউ লিখি , বুক রিভিউ লিখি , ফিচার লিখি । এই তো আমার লিখিময় জীবন ।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রফেশনভিত্তিক ট্রাইবালিজম- মোশাররফ করিমের বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা প্রসঙ্গে

২১ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫২

প্রফেশনভিত্তিক ট্রাইবালিজম খুব ভয়ংকর জিনিস। যার চক্করে পড়ে অপার বাংলায় ডাক্তারদের নিয়ে নচিকেতা যে গানটা গেয়েছিলেন তার জন্য তাকে ৪০ দিন জেল খাটতে হয়েছিল বলে শুনেছিলাম। সম্প্রতি মোশাররফ করিমের হাই প্রেসার ০২ নামক একটি নাটকের জন্য তার বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকার একটা মানহানীর মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারণ তিনি উকিল চরিত্র (কাল্পনিক) কে নেতিবাচকভাবে দেখিয়েছেন। যা নিয়ে উকিল সম্প্রদায়ের ভিতর তুলকালাম কান্ড ঘটে গেছে । গ্রুপে গ্রুপে পক্ষে বিপক্ষে তুমুল আলোচনা সমালোচনা চলছে। আমি বৃহত্তর উকিল সম্প্রদায়ের তুচ্ছ এক সদস্য হিসেবে এবং বিনোদন জগতের একজন নিয়মিত ভোক্তা হিসেবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। আসলে উকিলকে নেতিবাচক চরিত্রে দেখানো যেন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। পশ্চিমা বিশ্বে উকিলকে কম পচানো হয় না। ডেভিলস অ্যাডভোকেট বা স্যুটের মত টিভি সিরিজগুলো দেখলেই বুঝবেন। ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্টে জনি এলএল.বি. আমরা সবাই দেখেছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষ জন্ম থেকেই উকিল সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা নিয়ে বড় হয়েছি। যার জন্য প্রতি শুক্রবার বিটিভিতে নায়ককে বিচারের কাঠগড়ায় নাস্তানাবুদ করা উকিল চরিত্রের ব্যক্তিটিকে দোষ দেওয়াটা অস্বাভাবিক নিশ্চয় নয়। এইভাবে পুরো একটা জেনারেশন গড়ে উঠেছে উকিল সম্পর্কে বাজে একটা ধারণা নিয়ে। এখন আসি মোশাররফ করিমের নাটকটা নিয়ে। এই নাটকের মুল বিষয় হলো দুইজন টাউট যার উকালতি সনদ না থাকা সত্ত্বেও গাউন গায়ে উকিল পরিচয় দিয়ে মামলা নিচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে নেতিবাচক চরিত্রে উকিলকে দেখানো হয়েছে৷ নাটকে কিছু কিছু বিষয় এমন যে যা খুবই দৃষ্টি কটু ও যেকোন উকিলের বিরক্তির উদ্রেক ঘটাবে৷ ব্যস এতটুকুতে ঠুকে দেওয়া হল মানহানীর ধারা। শুরু হয়ে গেল সাধারণ মানুষের ভিতর উকিলের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার। এমনিতেই উকিলদের উপর জনসাধারণ ক্ষ্যাপা। আগুনে যেন অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেলা হলো! বলে রাখা ভালো 'আইন জানা' কোন সুপার পাওয়ারের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এখন এই পাওয়ারের মিস ইউজ হলে জনগণ ক্ষেপে উঠা বিচিত্র কিছু নয়। এমনিতেই উকিলদের বাড়িওয়ালারা ভাড়া দিতে চায় না। এর আগে জনগণ পড়েছিল ডাক্তারদের নিয়ে । এরপর পুলিশ। এবার লিস্টে এলো উকিলরা। কমেন্টগুলো পড়া যায় না। গা জ্বালা করে। এত কমেন্টের মতো মধ্যে একটা কমন কমেন্ট হলো- কেন তারা (উকিল) বিবেক জলাঞ্জলি দিয়ে আসামীর পক্ষে লড়ে?' মূল বিষয়ের বাহিরে হলেও এটা নিয়ে কিছু কথা না বলে পারছি না। সাধারণ মানুষ যেটা জানে না সেটা হল প্রতিটা মানুষ নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকারী। যার জন্য উকিল লাগে। আসামী যদি কোন উকিল দিতে না পারে তাহলে স্বয়ং সংবিধান উকিল নিয়োগ দিবে। এছাড়া অপরাধ প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত আইনের চোখে প্রতিটা মানুষ নিরাপরাধ৷ যাইহোক পয়েন্ট থেকে সরে এসেছি। এই মানহানীর মামলাটি প্রফেশনভিত্তিক ট্রাইবালিজমের বহিঃপ্রকাশ মাত্র৷ সমস্যা হলো এইভাবে সব যদি প্রফেশনভিত্তিক ট্রাইবালিজমের শিকার হয় একটা দেশের শিল্প চর্চা রুদ্ধ হয়ে যাবে। পুলিশ, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার কারো বিরুদ্ধে কোন কিছু যেন বলা যাবে না। কারণ সব প্রফেশনের ভালো খারাপ আছে। এইজন্য ভবিষ্যৎ ঝামেলা এড়াতে প্রতিটা নাটক/সিনেমায় শুরুতে Disclaimer দিয়ে বলা হয় 'এই সিনেমা/ নাটকের সকল চরিত্র কাল্পনিক । বাস্তব কোন চরিত্রের সাথে অভিনীত চরিত্রসমূহের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই।'

যাইহোক এই মানহানীর মামলার জন্য প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ স্যারের একটি ঘটনা শেয়ার করে লিখাটা শেষ করছি। হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কোথাও কেউ নেই নাটকের কথা আমরা সবাই জানি। জানি তার বাসার উপর জনগণের হামলা, মিছিল, মিটিং ইত্যাদি। যেটা কেউ জানে না সেটা হলো এই নাটকের জন্য হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে আদালতে আসতে হয়েছিল। কারণ ২০ জন উকিল তার নামে মানহানীর মামলা করেছিলেন বাকের ভাইয়ের উকিলকে খারাপ দেখিয়েছিলেন বলে। ঐ মামলাটি খারিজ হয়। কারণ হিসেবে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের অকাট্য যুক্তি। তিনি বলেছিলেন ঐ নাটকে একজন অত্যন্ত সৎ একজন আইনজীবী ছিলেন মুনার উকিল। ঐ ২০ জন উকিল তার সাথে নিজেদের তুলনা না করে খারাপ জনের সাথে তুলনা করল কেন?
এখানেও একই যুক্তি চলে আসে। আজকে হয়তো মোশাররফ করিম এর বিপক্ষে কোন একজন উকিল হয়তো দাড়ালো কিন্তু তার পক্ষে দাড়ানোর মত উকিলেরও অভাব হবে না। বাকিটা বিজ্ঞ আদালতের বিবেচনার বিষয়।

শান্তনু চৌধুরী শান্তু
তথ্যসূত্র - ইন্টারনেট জগত
মুনার ছবিটি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য :)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৬

গফুর ভাই বলেছেন: কন্ঠরোধ করা বাংলা চির চেনা ঐতিহ্য যা সরকারের গা বেয়ে বেয়ে নিচে নামছে ,আজকাল কণ্ঠের ধারক আইনজিবি কন্ঠ রোধের আপিল করল।

২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০০

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: সহমত ।

২| ২১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৩২

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

যে উকিল মামলা করেছেন সে আসলে শিক্ষিত না। গড়পড়তা।

আবালে ভরে আছে দেশ।

২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: এক ধরনের স্ট্যান্ডবাজী হতে পারে

৩| ২২ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:৩২

সাসুম বলেছেন: আমি বার বার করে সু শিক্ষার দিকে নজর দিতে বলি দেশে।

এই উকিল এর মত হাজারো মানুষ আছে চারপাশে। যাদের নুনুভূতি মারাত্মক। এক্টূ থেকে কিছু হলেই খসে পড়ে।

এরা সমাজের আবর্জনা। এরা যতদিন সংখ্যা গুরু থাকবে দেশ ততদিন সোগা মারা খাবে এখন কার মত।

সু শিক্ষা র বিকল্প নাই

২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: এইসব ধারণা পোষণ করা খুব পেশার মাঝেই কম বেশি আছে । কাকে ছেড়ে কাকে বলবেন !

৪| ২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৮:১৯

বিজন রয় বলেছেন: আপাতত বাংলাদেশে সুশিক্ষা সম্ভব না. তবে ধর্ম শিক্ষা সম্ভব।

২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৩

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: কুধর্ম শিক্ষা বলতে পারেন

৫| ২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৩৪

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আমার মনে হয় মোশাররফ করিম সঠিক জায়গাতেই ঘা দিয়েছেন। বটতলার পেশাজীবীদের অনেকেরই এথিক্সের সমস্যা আছে। এদের সমস্যা আছে বলেই এরা খুব স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। মুশকিল হলো বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সব পেশাজীবীদের মধ্যেই নৈতিকতার সমস্যা অনেক প্রকট এবং এ থেকে জাতির বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই কম।

২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৬

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: সহমত । অশিক্ষার কুফল ,

৬| ২২ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:৪৮

পুলক ঢালী বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। নিজের পেশার প্রতি সৎ থেকে নিরপেক্ষতা দেখিয়েছেন।
মানব সেবার ব্রত নিয়ে যে সব উকিলরা কাজ করেন তাদের স্যালুট এবং যারা ওকালতিকে শুধু ব্যবসা হিসাবে বিবেচনা করে নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে রক্তচোঁষায় পরিনত হন তাদেরকে ধিক!
জনাব শান্তনু চৌধুরী শান্তু, মানুুষ, পুলিশ এবং উকিলকে ঘৃনা করে, এটা মানুষের দোষ নয়, ঐ পেশার লোকজন তাদের কর্মকান্ড দিয়ে তা অর্জন করেছেন।
আপনারা একটা ভ্রান্ত ধারনায় আক্রান্ত হয়ে আছেন। এই বিরূপ মনোভাবের জন্য সিনেমা বা নাটক দায়ী নয় মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতাই এই বিরূপতা এনে দিয়েছে।

নাটক, উপন্যাস, সিনেমা সমাজের চোখ হয়ে এগুলো তুলে আনলে নাটক সিনেমাকে কি দায়ী করা যাবে? বরঞ্চ মানুষের বিরূপতা আরো বাড়বে।

নিজেদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হলে নিজেদের সংশোধনের পথে যেতে হবে, তা না করে উল্টো পথে চললে সমাজ যেভাবে এই পেশার মানুষদের বয়কট করছে ভবিষ্যতে তা আরো তীব্র হবে।
মেয়েরা উকিলদের বিয়ে করতে চাইবেনা, মেয়ের বাপেরা বলবে কাক কাকের মাংস খায়না কিন্তু উকিলরা আরো খারাপ এরা নিজেরা নিজেদের মাংস খায়। :D

[আমার নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা (আমি ভুক্তভোগী নই আমার কাছের মানুষের সাথে থেকে অর্জিত) বলতে চাইনা, আমার সৎ, নীতিবান উকিল বন্ধুর কথাও বলতে চাইনা, এরা উকিল সমাাজে ভীষন সংখ্যা লঘু।]
আপনার প্রতি শুভ কামনা রইলো। ভাল থাকুন।

২২ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৮

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: আপনার পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে নিলাম । ধন্যবাদ

৭| ২২ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:২৭

শাহ আজিজ বলেছেন: স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সব পেশাজীবীদের মধ্যেই নৈতিকতার সমস্যা অনেক প্রকট এবং এ থেকে জাতির বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই কম

এটাই চরম ও পরম সত্য এবং তা বাড়ছে অতি দ্রুত । রাষ্ট্রকে প্রায় ড্রাগ কার্টেল বানিয়ে ফেলেছে এই এরা । মোশাররফের এখন উচিত উকিলের আয় ব্যায় আর ইনকামট্যাক্সের টার্গেটে আঘাত করা ।

৮| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:৪৭

সোহানী বলেছেন: সমস্যা হলো আমরা চুরি করবো কিন্তু চোর বললেই মানহানীর মামলা করবো.......হাহাহাহা

৯| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:০০

আমারে স্যার ডাকবা বলেছেন: নাটকটি তো তিন বছর আগের (২০১৮)। তাহলে তখন মামলা না করে এখন করলো কেন?
আসলে এটা মামলা দায়েরকারী উকিলের পাবলিসিটি স্ট্যান্ট। তাকে নিয়ে যত সমালোচনা হোক, তাকে গালি দেয়া হোক তার উদ্দেশ্য সফল। সে দেশজুড়ে পরিচিতি পেতে চাইছে, এবং সেটা পেয়েছে। :-<
"The only thing worse than being talked about is not being talked about." - Oscar Wilde

-------

এ প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পরলো,
২০১৪ সালে প্রথম আলোর একটা নিউজে এসেছিলো, এক লোক প্রধানমন্ত্রীর আনুকুল্য পেতে খালি বিরোধী দলের রাজনীতিবিদদের উপর মানহানি মামলা করেন। তার ভাষ্য ছিলোঃ
"আমি সব সময় পত্রপত্রিকায় দেখি বিরোধী দলের কে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জয়কে নিয়ে কিছু বলেছে কি না। বললেই মামলা করে দিই। সারা দিনই আমি মামলার কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকি।" B-))

মামলা করার টাকা পান কোথায় জানতে চাইলে উত্তরঃ "টাকা লাগে না তো। আমি মামলা করতে চাইলেই আইনজীবীরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা আগ্রহ দেখিয়ে আমার মামলা নেন, শুনানি করেন। পরে মিডিয়াতে বক্তৃতা দেন। এতে তাঁরাও হাইলাইটস হন।" :#)

এই লোকের উকিল খলিলুর রহমান বলেন, "মামলা পরিচালনা করতে তিনি কোনো অর্থ নেন না। এখানে কোথাও থেকে তিনি কোনো সুবিধাও পাননি। শুধু গণমাধ্যমে তাঁর নাম আসে—এতেই তিনি সন্তুষ্ট।" :``>>

১০| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:২৬

আমারে স্যার ডাকবা বলেছেন: উপরের নিউজ লিংকটি কাজ করছে না। তাই আবার দিচ্ছিঃ মামলা করাই তাঁর নেশা ও পেশা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.