নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিয়াল মামা

শিয়াল মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা বিকেন্দ্রীকরণ বনাম টাকা বিকেন্দ্রিকরন

০২ রা জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:০১

ঢাকা বিকেন্দ্রীকরণ বনাম টাকা বিকেন্দ্রিকরনঃ
-------------------------
“ঢাকাতে মানুষ গিজগিজ করে”- “ফুটপাথ দখল করে আছে বহিরাগত অন্য জেলার বিক্রেতা” - “প্রতিদিন ৬০-৮০ লাখ মানুষ ঢাকাতে আসে নানান কাজে, আবার রাতে ফিরে যায়” - “রাজধানীকে সরিয়ে নেয়া হোক” - “বিকেন্দ্রীকরণ করা হোক যাতে ঢাকার উপরে চাপ কমে”

ইত্যাদি নানা সমস্যার কথা আমরা মাঝে মাঝেই বলি, হা-হুতাশ করি। আমাদের ধারনা এই সমস্যার সমাধান শুধুমাত্র সরকার-ই করতে পারবে। কারণ সমস্যার মাপ আর গভীরতা যে অনেক বড়! আমি একা কি করব?
আমার ধারনা আমরা সেইসকল ঢাকাবাসীরা, যারা ঢাকার উপরে চাপ কমাতে চাই, তাঁরা ব্যাক্তিগতভাবে ঢাকায় থেকেও ঢাকার উপরে চাপ কমাতে পারি।

আমার ব্যাক্তিগত অভ্যাস ও অভিজ্ঞতা থেকে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরব।

ই কমার্স এবং এফ কমার্স (ফেসবুক কমার্স) এর মাধ্যমে অন্য জেলার উদ্যোক্তার কাছ থেকে সরাসরি প্রডাক্ট কিনুন। এর মাধ্যমে পরোক্ষভাবে আপনি তাদের উক্ত জেলায় থাকতে উৎসাহিত করছেন, ব্যাবসায় করার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
আপনি যখন-ই সরাসরি তাদের কাছ থেকে জিনিস কিললেন, আপনি আসলে তাদের, ঢাকার বাইরে থেকেও ঢাকার মার্কেটে সেল করতে সাহায্য করলেন।

আপনি ভাবতে পারেন যে, কিভাবে নিশ্চিত হবেন যে উক্ত সেলার ভাল প্রডাক্ট আপনাকে পৌঁছে দেবে?

এটা নিশ্চিত হতে, আপনি উক্ত সেলরারের পেজ/গ্রুপ বা মারকেটপ্লেস গ্রুপে তাঁর সম্পর্কে রিভিউ দেখে নিতে পারেন। রিভিউ এনালাইসিস করলে, কখনই আপনি খুব খারাপ সিদ্ধান্ত নেবেন না বা ঠকবেন না।

এই যুগে, পাবলিক প্লাটফরমে রিভিউ-এর কার্যকারিতা এমন একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে তা আপনাকে ব্রান্ডেড প্রডাক্ট কেনার মত নিশ্চয়তা ও মানসিক প্রশান্তি দেবে।

শুধু দেখে নিতে হবে যেন উক্ত সেলারের পেজে বা গ্রুপে প্রচুর মানুষের পজিটিভ রিভিউ বিদ্যমান।

ফেসবুকে WE Group, Go Deshi Group এর মত গ্রুপে আপনি পেয়ে যাবেন প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের যারা কাজ করছেন বিভিন্ন জেলায়, ইউনিয়নে বসে।

আপনার খরচের প্যাটার্নকে বিকেন্দ্রিকরন করুন। তবেই ঢাকাকে বিকেন্দ্রিকরনে আপনি দারুণভাবে সাহায্য করবেন।

সিদ্ধান্ত নিন আপনি কি কি ঢাকার বাইরে থেকে কিনবেন? সরাসরি প্রান্তিক উদ্যোক্তার কাছ থেকে।

আমার ক্ষেত্রে আমি গুড় কিনি যশোরের এক নারী উদ্যোক্তার কাছ থেকে।
আচার – ফরিদপুরের এক নারী উদ্যোক্তা।
কুমড়ো বড়ি - যশোরের এক নারী উদ্যোক্তা
পিঠার জন্য চালের গুড়ো - যশোরের এক নারী উদ্যোক্তা
মুড়ি, চিড়া, মোয়া - যশোরের এক নারী উদ্যোক্তা
শুটকি – কুয়াকাটার এক উদ্যোক্তা।
মিষ্টি – নানান জেলার মিষ্টি নানান সময়ে। (২৪ঘণ্টায় পেয়ে যাই)
বাগান করার সরঞ্জাম – (সার, কোকো পিট, চারা ইত্যাদি) নানান জেলার সেলারের কাছ থেকে।

আবার ব্রান্ডেড প্রডাক্ট যদি কোন দূরবর্তী জেলার সেলার হোম ডেলিভারি দেয়, তবে আমি তাকে প্রেফার করি। যেমনঃ কয়েকমাস আগে আমি ৪টা BRB কোম্পানির সিলিং ফ্যান কিনেছি দারাজের মাধ্যমে রাজশাহীর এক মার্চেন্টের কাছ থেকে।

অনেকেই আম, মধু আর ঘি কিনেন প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে। যদিও আমি তা শুরু করি নাই।

কোরবানির পশুটি যদি আপনি কিনতে পারেন দূরবর্তী জেলার উদ্যোক্তার কাছ থেকে তবে আপনি ঢাকাকে যথেষ্ট উপকার করবেন। কারণ একটা বড় বাজেট আপনি দুরের জেলাকে সরবরাহ করলেন। সরাসরি।

মনে রাখবেন, আপনি যখন অন্য জেলা থেকে প্রডাক্ট কিনছেন হোম ডেলিভারির শর্তে, তখন আপনার প্রডাক্টটি কুরিয়ার কোম্পানির ট্রাকে করে ঢাকাতে প্রবেশ করছে মাঝরাতে (যখন ঢাকাবাসী ঘুমে)। এবং পরেরদিন সকাল/দুপুরে তা সরারসি আপনার বাসায় পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থাৎ তা ঢাকার উপরে চাপ ফেলছে অনেক কম।

অনেকটা জাপানিজ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম Just in Time (JIT) এর আদলে। যেখানে অয়্যারহাউজিং এর প্রয়োজন নুন্যতম।
ধরুন আপনি যদি উক্ত প্রডাক্ট কোন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে কিনতেন, তবে তা ঢাকায় এসে আড়ৎ-এ থাকত কয়েকদিন, অতঃপর তা আপনার বাসার নিকটবর্তী কোন দোকানি সেই পাইকারি আড়ৎ-এ সশরীরে গিয়ে তা কিনে দোকানে নিয়ে আসত বিক্রয়ের জন্য।

বেশ কয়েকদিন তা দোকানের শেলফে থাকার পরে, আপনার আবার সশরীরে সেই দোকানে গিয়ে পণ্যটি কিনে আবার বাসায় নিয়ে যেতে হত। অর্থাৎ ঢাকার সড়ক ও স্থান উভয়ের উপরেই আরেকটু বেশি চাপ ফেলা হত। অর্থাৎ ঢাকার রাস্তার উপরেও বেশ কয়েকবার অর্থহীন কিছু চাপ পড়ত।

প্রযুক্তির সাহায্যে যদি আমরা ঢাকাবাসীরা দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয়ের মাত্রা বাড়িয়ে দেই, তবে দেখবেন ফুটপাথের দোকানিরা ক্রমান্বয়ে তার গ্রামে প্রত্যাবর্তন করে সেখানে বসে আপনাকে পণ্য সরবরাহ করছে।

আমার মতে আমাদের বাৎসরিক ভোগ্যপণ্যের ২%-৬% পণ্য ঢাকার বাইরের প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে এফ-কমার্স/ ই-কমার্সের মাধ্যমে কিনলেই ঢাকা শহরের দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.