নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার ভুল সাজা -------------------------- ঈদের অণু গল্প

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০০

অনিক আর রুমানা দু জন বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার সময় পরিচিত হয় । অনিক খুব শান্ত এবং খুব একা একা থাকা ছেলে আর তাঁর বন্ধু প্রায় নাই বললেই চলে । রুমানার অনিক কে এই শান্ত আর সততা আর মেধা দেখে ভাল লেগে যায় । যদিও অনিক তার মাস্টার্স ফাইলানাল ইয়ারে পড়ে আর রুমানা তিন বছর হল একেই বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ছে । রুমানা খুব অবাক হয় অনিকের ব্যবহারে । অন্য দশজন থেকে আলাদা অনিক । নারীর প্রতি তার একটা অন্য রকম সম্মান সব সময় কাজ করে । রুমানার পরিবারের লোক জন দিন দিন অনিক কে পছন্দ করে আসছে । সময়ের সাথে দুজন কে ভালই মানিয়েছে আর সময় গড়িয়ে তাদের সম্পর্ক তিন বছরে পা দিল । অনিক চাকুরী না করে ব্যবসা শুরু করলো । রুমানার ও ইতি মধ্য অনার্স শেষ করে মাস্টার্স এ পড়ছে । রুমান পরিবার চায় খুব তারা তারি যেন অনিকের সাথে বিয়ে টা হয়ে যায় । রুমানা অনিকের বাসায় যায় । আগেও দু একবার গিয়েছে । কিন্তু আজ রুমানা খুব অবাক হল কারন অনিক যাকে মা ডাকে সে অনিকের ছোট চাচার স্ত্রী । রুমানা তাঁর কাছে জানতে পারলো যে অনিকের বাবার ফাঁসি হয়েছে । অনিকের মাকে অনিকের বাবা তার নিজের রিভাল বার দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে । আর এই হত্যার জন্য তাঁর বাবার ফাঁসী হয় ।রুমানা এ কথা শুনার পর খুব ভয় পেয়ে গেল । অনিক তাহালে এক খুনি বাবার পুত্র । তাঁর বাবা মা আর পরিবার জানতে পারলে কি হবে ? যে লোক তার স্ত্রী কে হত্যা করতে পারে তার ছেলে তাহালে কেমন হবে ? রুমানা বাসায় এসে তার মা বাবা কে বিষয় টা খুলে বলে । রুমানা বলে বাবা অনিক খুব ভাল কিন্তু খুব রাগি আর বেশি সময় চুপ চাপ থাকে সব সময় । এত দিন হল সে একদিন ও আমাকে তার বাবা মায়ের ব্যাপারে কিছু বলে নাই । আমার কাছে বিষয় টা বলা উচিৎ ছিল । রুমানা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল সে অনিক কে বিয়ে করবে না ।
তাছারা মানুষ যদি জানতে পারে ! সে একটা এমন অপরাধীর ছেলে কে বিয়ে করেছে ! মানুষ তাকে কি বলবে ? আর যদি তার সন্তান হয় তাহালে তার সন্তান কে তার দায় বার বহন করতে হবে । সমাজে এমন স্বামী নিয়ে চলা যায় না। বন্ধু হলে আজ আছে কাল নাই ।
অনিকের কোন কথা না জেনেই রুমানা অনিকের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় । অনিক জানতে চেষ্টা করে কেন এমন হল । শেষ পর্যন্ত অনিকের চাচি বিষয় টা বুঝিয়ে বলে কেন রুমানা তার সাথে আর সম্পর্ক রাখছে না । অনিক মানসিক ভাবে খুব কষ্ট পায় । জিবনে অনিক কাউকে কষ্ট দেয় নাই কিন্তু সে আজ কষ্ট পেল । এক মা নেই বাবা নেই । জীবনে কাউকে ভালবাসতে চাই নাই । শেষ পর্যন্ত সেই প্রেম তাকে এত কষ্ট দিল । অনেক ব্যবসা ছেরে পারি জমায় দেশের বাহিরে ।
সময় গড়িয়ে অনেক দূর একুশ বছর । অনিক এখন জার্মানির বার্লিনে থাকে এক রাশিয়ান মুসলিম মেয়ে কে বিয়ে করে খুব ভালই আছে । জার্মান একটা প্রকল্প বাংলাদেশে করছে অনিক সেই প্রকল্পের একজন বড় কর্মকর্তা । অনিক সেই কাজেই বাংলাদেশে আসা । প্রায় একুশ বছর মাঝ খানে চলে গেছে । বারিধারা জার্মানদের প্রকল্প অফিস । আজ অফিসে সবাই ভয়ে আছে কারন প্রকল্পের নির্বাহী অফিসার তাও জার্মানির বাঙালি । বাংলা ইংলিশ ও জার্মান সবেই খুব ভাল করে বুঝে । অনিক বাংলাদের বারিধারা অফিসে জয়েন্ট করার পর থেকে সবাই খুব চিন্তায় পড়ে গেল । মিঃ অনিক খুব সৎ সাহসী ও সব কাজ অল্পতেই বুঝে যায় । ইতি মধ্য ৭ জন চাকুরী হারিয়েছে । বিভিন্ন অসৎ কাজের জন্য ।অনিক সাহেব খুব ব্যস্ত তার কাজে। এমন সময় একজন অফিসার বলল স্যার আপনার সব কাজেই ঠিক আছে । তবে একটা মেয়ে খুব অসহায় । তার চাকুরী চলে গেছে আপনার সাথে একটু দেখা করতে চায় ।
অনিক বলল ঠিক আছে দেখা করতে চায় কে তাঁর ফাইল টা আমাকে দিন লাস্ট আপগ্রেট সহ । আমি তো কারো চাকুরী খাই নাই । আমি একটা তদন্ত দিয়েছে যে যাদের সমস্যা আছে তাদের বাদ দিতে । ঠিক আছে পাঠিয়ে দিন কথা বলি ।
অনিক আজ সত্যি নিজেই কেন জানি অবাক হল । কারন তার সামনে যে মেয়েটি দারিয়ে সে অন্য কেউ না । তার জিবনের প্রথম ভাল লাগা আর ভালবাসার সেই রুমানা ।
অনিক বলল- বসুন ! কেমন আছেন আপনি ।
ঃ- আমি ভাল নাই । কত বছর পর দেখা আপনার সাথে অনিক ।
ঃ- জীবন এত হিসাব করে চলে না । তা আপনি এই প্রকল্পে ?
ঃ- রুমানা বলল হ্যা তিন বছর হল ।
ঃ- রুমানা আমি আপনার ফাইল দেখেছি । আবার এখনো দেখলাম । যে তিন জন মিলে আপনারা প্রক্লের টাকা টা মেরে দিয়েছেন তারা সবাই অপরাধী । যদি আপনি বলছেন যে আপনি জড়িত না । বিষয় টা আমি দেখব ন্যায় পাবেন আপনি । কারন আমি জানি আপনি আমার সাথে মিথ্যা বলছেন না। এই বিশ্বাস টা আপনার প্রতি আমার আছে । কি মনে হয় মিসেস রুমানা ?
ঃ অনিক আমাকে ক্ষমা করবেন । জীবনে যে ভয়ে আমি তোমাকে বিয়ে করি নাই কিন্তু সে ভয় আমার পিছু ছারে নাই ।
ঃ- রুমানা মানুষ বড়ই বিচিত্র ময় । জীবন নামক স্বার্থের কাছে সে বড়ই স্বার্থ পর । তুমি সে দিন যা ভাল মনে করেছ তা নিয়ে আমার কোন দুঃখ নেই । কারন ভাগ্যের উপরে মানুষের কোন হাত থাকে না। তবে কিছু মানুষ তাঁর ভাগ্য সেই নষ্ট করে ।
ঃ- হ্যা আজ ভাগ্য আমাকে তোমার সামনে এক চোর হিসাবে দার করিয়ে দিয়েছে । ভাগ্য বদলাতে পারলাম কই !!!
ঃ- রুমানা তুমি ঐ দিন চাচীর মুখে যা শুনেছে তা মানুষ বাহির থেকে যা জানে তাই শুনেছ ।
কিন্তু আজ আসল ঘটনা টা তোমার জানা দরকার । আসলে আমার বাবা আমার মা কে হত্যা করে নাই । আমার বাবার ব্যবসার টাকা আমার মা না জানিয়ে আমার ছোট মামা কে দেয় । ছোট মামা এক মাসের মধ্য টাকা ফেরত দিবে বলে মা কে ভুলিয়ে ভালিয়ে টাকা নেয় । একটা জমি কিনবে আর বেচবে তাতে অনেক লাভ হবে অল্প সময়ে এই বলে মায়ের কাছ তজেকে ছলনা করে মামা টাকা নেয় । কিন্ত সেই টাকা আর মামা দিচ্ছিল না । ছোট মামা কিন্তু আমার মা পিস্তল ধরে বলে সব টাকা ফেরত দিতে না হলে মা পুলিশ আনবে । কিন্তু অসাবধানতায় মামার সাথে মায়ের দস্তা দস্তিতে মায়ের হাতের পিস্তলের গুলি মায়ের মাথায় লাগে । মামা পিস্তল টয়লেট এ ফেলে দেয় । মামাই পরে বাদি হয়ে আব্বুর নামে মামলা করে । শেষ পর্যন্ত পুলিস সেপটি ট্যাঁক থেকে সেই পিস্তল উদ্ধার করে । যে হে তু আম্মুর সাথে সেই টাকা নিয়ে আব্বুর ঝগড়া চলছিল প্রায় । পুলিশ ধরে নীল আব্বুই মাকে টাকার জন্য গুলি করে মেরেছে । আমার নানা নানু খালা মামা মামি সবাই আব্বুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয় । তাতেই সেই মামলায় আমার আব্বুর ফাঁসি হয় । আমার মা অ বাবা দু জনেই খুব ভাল ছিল । আজ আমার সেই মামা অন্য একটা মিথ্যা খুনের মামলায় জেলে আছে ।
রুমানা আমি তোমার ফাইল পরে যা জানলাম সেটা বললে তুমি আর অবাক হবে কারন অপরাধ তুমি কর নাই তোমার স্বামী করেছে প্রকল্পের চেক বই চুরি করে তোমার সাইন আর একাউণ্ট অফিসারের সাক্ষর জাল করে কোটি টাকা নিয়ে গেছে । চেক বই তোমার জিম্মা দারিতে ছিল । ফাইল পত্র তাই বলে আর তুমি সেটা জেনেও ও অফিস কে জানাও নাই । তুমি আবার কিছু টাকা জমা দিয়েছ । তাহালে তোমার স্বামী কে তুমি সাহায্য করেছ ।
রুমানা বলল ও চোর কিন্তু আমি তো না । অনিক বলল রুমানা আমরা এমন সমাজে বাস করি যে এক জনের অপরাধে না জানি কত নিরাপরাধ মানুষ সাজা খাটে । যাই হউক তুমি এক বছরে অফিস কে কোন রকম বিষয়টা জানাও নাই । তোমার হয়ত কোন অপরাধ নাই । কিন্তু আইন তো তাঁর নিজের নিয়মে চলবে ।
রুমানা জানে অনিক তাঁর কথা আর কাজে এক । আর অনিক কেন তাকে বাঁচাবে । কারন সে তো তাঁর স্বামীকে এই ভাবে আসলেই সাহায্য করেছে । এটাই জীবন মানুষ সুখের জন্য দুঃখ কিনে নেয় ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২

মহান অতন্দ্র বলেছেন: হুম সামাজিক সমস্যা উঠে এসেছে। ভাল গল্প।

২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩০

সুমন কর বলেছেন: গল্প দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেছে। শেষটা ভালো লাগল।

ঈদের শুভেচ্ছা রইলো...

৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৮

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: গল্পের ভিতর দিয়ে নিদারুণ সত্যের বর্ণনা।খুব খুব ভালো লাগল

৪| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর +

৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

Blogger Zubair বলেছেন: প্রায় ১৫ টা বানানভুল আছে, এভাবে চলতে থাকলে বাংলাভাষার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বেন ! ভাষা চর্চা করুন, ধন্যবাদ

৬| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার !!

৭| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭

এস কাজী বলেছেন: গল্প সুন্দর হয়েছে।

বানানের কথা লিখব ভাবছিলাম। দেখি উপরে একজন লিখে ফেলেছে।
বুঝতে পারলাম আমি যখন বানান ভুল করি পাঠকের কেমন লাগে :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.