নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প -সন্দেহ বউ ,শাশুড়ি, মা

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:১২


----------------- সেলিনা জাহান প্রিয়া----------

সকাল থেকে সুমন মিয়ার বউয়ের মেজাজ বিগড়ে আছে । কয়েকদিন ধরে সর্দি-কাশিতে ভুগছে, আজ আলমারি থেকে ১২ ভরি স্বর্ণ উধাও। আলমারি খুলে তাঁর স্বর্ণ রাখার বিশেষ জায়গাটা হাত দিয়ে দেখে স্বর্ণ নাই । এক চিৎকার মেরে ও আমার আল্লাহ্‌রে আমার এমন ডাকাতি কে করলো । কে নিয়েছে আমার স্বর্ণের জিনিস । তাঁর চিৎকারে বাড়ির আশ পাশের সবাই চলে এসেছে ।।
কে নিয়েছে? কেউ স্বীকার করছে না।
কাজের মেয়ে হিমু কে উত্তম-মধ্যম দিয়ে বলল বল আমার জিনিস নিয়া কোথায় কারে দিয়েছিস ।।কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এত মারার পড় বলে খালা
আমারে মাইরা ফালাও কিন্তু আমি নেই নাই ।। সাত আসমান, আল্লাহ রাসুলের নামে, মৃত বাবার নামে শপথ খেয়ে বার বার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগল।
সুমনের বউ হিংস্র বাঘের মত এ-দিক ও-দিক ছুটছে। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজতে থাকে। আলমারির কাপড় নামিয়ে খুঁজতে থাকে, বিছানার তোষক উলটিয়ে
কাপড়ের ব্যাগ, ঘরের সব কিছু তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে।
এক সময় রান্না ঘর থেকে বটি নিয়ে এসে হিমু কে চুল টেনে ধরে বলে, বল হারামজাদি বল, আমার স্বর্ণ কোথায় রেখেছিস ?
--- বিশ্বাস করেন খালাম্মা আঁই চুরি করি’ নাই । ১৫ বছরের মেয়ে মেয়েটা খুব ভয় পাইছে । মার খেয়ে কাদতে থাকে ।

সুমন মিয়া খবর পেয়ে ফার্মেসি বন্ধ করে বাড়িতে এসেই বলল
-- কী শুরু করে দিয়েছ তুমি। পাগল হয়ে নাকি। চোখে গরম বউয়ের দিকে
তাকালেন।
-- হুঁ আমি পাগল হয়ে গেছি। আমি নিশ্চিত এই হারামজাদিই আমার স্বর্ণ চুরি
করেছে। ঘরে আমি শাশুড়ি তুমি আর আমার পাঁচ বছরের ছেলে ছারা কে আছে
আসমান থেকে জিন আইসা আমার স্বর্ণ নিয়ে গেছে বলতে চাও । হারাম জাতিকে
পুলিশে দিলে সব বের হয়ে আসবে ।।
-- ভাল করে সব দেখেছ ।

--- আর কোথায় দেখার বাকি আছে । বল । যদি হিমু না নিয়ে থাকে । তাহালে কি
তুমি নিয়েছ । আর তুমি নিলে তো আমার দুঃখ নাই । তুমি দিয়েছ তুমি তো
নিতেই পার । আর আমার শাশুড়ির কি চুরি করবে? কার জন্য? তার কি
আর সে-ই বয়স আছে! আমি কেন আমার স্বর্ণ চুরি করব? তুমি বল।
শ্বাশুড়ি সুমন মিয়ার মা বলতে লাগলো তোমার জিনিস তুমি কই রাখো তা আমি ত জানি না । চাবি গুছা তো তোমার কাছেই থাকে ।প্রতিবেশী কয়েকজন কে শ্বাশুড়ী স্বাক্ষী রেখে তিনিও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা যতই বুঝাতে চেষ্টা করছেন আপনার বউ আপনাকে সন্দেহ করছে না। তিনি ততই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁেদ বুঝাতে চেষ্টা করছেন। আকার ইঙ্গিতে তার ছেলের বউ তাকে সন্দেহ করছে। শুধু মুখ ফোটে খই ফোটার অপেক্ষা। সুমনের বউ বলল দেখ হিমু না নিলে আমার জিনিস আম্মা আপনি-ই চুরি করেছেন। আমানার মেয়েদের জন্য ।
সুমন মিয়া বলল থাম মাথা নষ্ট হয়ে গেছে । আমার মাকে নিয়া বাজে কথা বলবা না। দরকার পড়লে কালকেই জমি বিক্রি করে তোমার জিনিস কনে দেব ।। ছেলের কথায় বলল বাবা তোমার জমি না। বউ যদি প্রমান করে আমি আমার জমি বেঁচে তোমার বউ কে স্বর্ণ কিনে দেব ।। বউ বলল এখন বাজারে স্বর্ণের চড়া দাম। এতগুলো স্বর্ণ চুরি । প্রতিবেশী প্রবোধ দিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করে স্বর্ণ কোথাও যায়নি।
স্বর্ণ ঘরে-ই আছে। দেখবেন ভাল করে খোঁজ করলে পাবেন।
--- না-রে ভাবী, এক ভরি, দুই ভরি না বার ভরি স্বর্ণ উধাও। আমি পুলিশে দেব ঐ হিমু কে । কয় দিন আগে মা আর হিমু কল পারে কানা কানি কথা কইছে । মা আর মাইয়া রে পুলিশে দিলেই বের হবে। সুমন মিয়া বলল ঠিক আছে চল থানায় ।
বোরকা পড়ে রিক্সা নিয়ে সুজা করিম গঞ্জ থানা । দারোগা কে সুমন মিয়া বলল ঘটনা বলল । দারগা বলল কাকে আপনাদের সন্দেহ হয় । সুমন মিয়া বউ বলল
কাদতে কাদতে এই কাজ টা আমার ঘরের কাজের মেয়ে আর ওর মায়েই করছে ।
পুলিশ কাজের মেয়ে হিমু আর ওর মা কে ধরে নিয়ে যায় ।
সুমন মিয়ার বউ কয়েক দিন ঘুমাতে পারে না। মনে মনে শাশুড়ি কে সন্দেহ করে ।
মনে হয় শাশুড়ি নিয়ে তাঁর মেয়েদের দিয়ে দিছে ।এখন আর শাশুড়ির সাথে ভাল করে কথা বলে না। জামাইকে বলে আমার জিনিস কবে দিবা । সুমন মিয়া বলে
জমির দাম কমে গেছে । আর স্বর্ণের বদলে তোমার নামে কিছু জমি মায়ের কাছ
থেকে বুঝিয়ে নিয়ে দিব নে । কিছু দিন পড়ে সুমন মিয়া তাঁর মাকে বউয়ের সামনে বলে - মা চোর তো সিকার করলো না যে তোমার বউয়ের জিনিস নিচে । মা আর মেয়ের দু জন মিলে তিন বছরের জেল হয়েছে । কিন্তু তোমাদের বউ স্বর্ণের চিন্তায়
চিন্তায় দেখ পাগল হয়ে যাচ্ছে । একটা কাজ করলে মা আমরা সবাই ভাল থাকতে পারি কই বল । কই কাজ বাবা সুমন বল ।
-- মা পুবের তিন বিঘা জমি টা তো তোমার নামে । তুমি মরলে ঐ জমি আমার দু বোন আর আমি পাব । তুমি ঐ খান থেকে দুই বিঘা আমার বউ কে দিয়া দাও । তাহলে আমার বউয়ের সন্দেহ দূর হবে । আর তুমি মরে গেলে এক বিঘা বোন দের আমি দিয়ে দিব ।। সুমনের মা বলল আচ্চা ঠিক আছে ঘরে যদি শান্তি আসে তাহালে তাই কর । মুখ কালা করে থাকলে কেউ ভাল বলে না। সুমনের মা তাঁর জমি বউয়ের নামে লিখে দেয় । সুমনের বউ রাতে সুমন কে বলে দেখ আমার সন্দেহ ঠিক । তোমার মা যে সহজে জমি দিল তাঁর মানে তোমার মায়েই আমার স্বর্ণ নিছে ।
--- আসলেই তোমার সন্দেহ টা এখন বাদ দাও । মায়ের জমি তোমার স্বর্ণের চেয়ে বেশী । মা মারা
গেলে ঐ এক বিঘা আর বন রা পাইব না । আধা বিঘা আমার । বাকি আধা বিঘা একটা লাম
সাম দাম দিয়ে কিনে নিমু ।
--- শুন আমার তো কাজের মানুষ লাগব ।
--- কাজের মানুষের কথা বলবা না । হিমু মেয়েটা কই সুন্দর কাজ করত দিলা তো মা আর মেয়েকে
জেলে । গ্রামের মানুষ কিন্তু ভাল বলে নাই । কিন্তু তোমার জিনিস কে নীল । আমার মা তো
আর ছয় বছরের মধ্য বোনের বাড়ি যায় নাই । বোনরাও আসে নাই ।
--- তোমার জী কথা । তোমার মা যত সুজা মনে কর এত সুজা না।
বাজারে সুমন মিয়া ফার্মেসিতে বসে আছে । শ্বশুর বাড়ির এলাকার মেম্বর ছানা মিয়া । এই এলাকায় আসছে তাঁর ভাগনের বউ দেখতে । সুমন মিয়া শ্বশুর বাড়ি নীল গঞ্জ । মেম্বার আসতেই সালাম সালাম দিল সুমন মিয়া ।
--- কি জামাই ভাল আছেন ।
--- হা চাচা ভাল । বাড়ি চলেন ।
--- না বাবা মেলা কাম । অন্য দিন যাব ।
--- তাহালে একটু চা খান।
--- হা তা খেতে পারি । একটা কথা বাবাজি । মেম্বর মানুষ তো কিছু মনে নিও না।
--- না মনে কিছু নিমু না। বলেন ।
--- চা খেতে খেতে বলল তোমার ছোট শ্যালীর জামাই কে সুনলাম তোমার শাশুড়ি অনেক টাকা
দিল । ঢাকায় নাকি চাকুরি নিয়া কই সমস্যা হয়েছিল ।
--- হা সমস্যার কথা শুনছি । টাকা আমার কাছে চাইছিল । শাশুড়ি এসে বলে ছিল টাকার কথা ।
কিন্তু আমার কাছে ছিল না । তাই দেই নাই । একবার কিছু টাকা দিছিলাম তাই তো ফিরত দেয়
নাই ।
-- বাবা আমি মেম্বার মানুষ । সুনলাম তোমার তোমার শাশুড়ি সব টাকা দিয়েছে । আমার জানা মতে তোমার শাশুড়ির কাছে এত টাকা থাকার কথা না। তোমার শাশুড়ি কিশোর গঞ্জের রথ খলা বাজারে বেশ কয় দিন লক্ষ্মী জুয়েলারস এ গেছে । যাই হোক এমন শাশুড়ি পাওয়া আসলেই ভাগ্য ।
ছানা মেম্বার বিদায় নিয়ে চলে গেলে । সুমন মিয়া ফামেসি বন্ধ করে । কিছু টাকা সহ বিকালে সাইকেল নিয়ে করিম করিম গঞ্জ মুড়ি কান্দি থেকে কিশোর গঞ্জ লক্ষ্মী জুয়েলারস । থানার কেইস নাম্বার সহ তাঁর এক পুলিশ বন্ধু কে নিয়ে যখন জিজ্ঞাসা করল । দেখল তো ঠিক তাঁর শাশুড়ি ১২ ভরি স্বর্ণ এই দোকানে বিক্রি করেছে । সুমন মিয়া স্বর্ণ কারের কাজ থেকে বিদায় নিয়ে ।
সাইকেল করে শ্বশুরের বাড়ি গিয়ে শাশুড়িকে বলল - মা কাল সকালে আপনি চল যাইয়েন । দুপুরে
এক সাথে খাব । সুমন মিয়া আজ সুন্দর করে বড় মাছ । ধই মিষ্টি । মুরগি । আর পোলাও রান্না করতে দিচ্ছে । বউ বলে ঘটনা কি? সুমন বলে অনেক টাকার ব্যবসা হইছে । তাই তোমার । তোমার বড় বোন ছোট বোন । আমার দুই বোন মা সবার সাথে সবারে মিলিয়ে দিবো । সবাই মিলে মিশে থাকলে ভাল । আমাদের আশপাশের দু একজন কে বলেছি । হুজুর আসবে একটা দোয়া পড়াতে । দুপুরে সব মেহেমান চলে আসছে । দোয়া শেষ করে সবাই খেতে বসলো । সুমন দুই বার শাশুড়িকে
আদর করে পাতে মাছ মাংস দিল । সবাই খেয়ে খুব খুশি ।
এবার সুমন মিয়া ঘর থেকে একটা দা নিয়ে শাশুড়ির গলার কাছে যেয়ে ধরল । সবাই বোকার মত আরে কি কর কি কর । কি হইছে । শাশুড়িকে বলল
--- আমার বউয়ের গয়না কই ?
-- সুমনের বউ বলে গয়না কই আমার মায়ে নিছে । তোমার কই মাথা নষ্ট । কোন মা কই তাঁর
মেয়ের ঘরে চুরি করে । আমার গয়না চুরির সময় তো আমার ছিল না ।
--- আই চুপ । তোর মারে কুব দেয়ার আগে কইতে ক । লক্ষ্মী স্বর্ণ কারের ঘরে কে স্বর্ণ বিক্রি করছে
সুমনের শাশুড়ি স্বীকার করে যে সে এই কাজ করেছে । সুমনের বউ মায়ের দিকে চেয়ে বলে ছিঃ ছিঃ মা । আমি তোমার পেটে থেকে হইছি । কেন শাশুড়ির পেটে থেকে হই নাই ।।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:২৫

আজমান আন্দালিব বলেছেন: জটিল সাংসারিক গল্প। মাঝে মাঝে এমনই হয় সংসারের গল্পগুলো।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১২

স্বপ্নীল পরান বলেছেন: খটকা তো থেকেই গেল !!!
চুরিটা হইল কেমনে ???
তারপরেও ভাল লাগল। শুভ কামনা।

৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন:
প্রাঞ্জলতা লেখার একটি বড় গুন। এটা আপনার লেখায় আছে। তবে আজকের লেখাটা হয়ত আরো একটু ভালো হতে পারত।

পাশাপাশি, আমি মনে করি ব্লগ পোস্টের শুরুতে আপনার নাম লেখার প্রয়োজন নেই, কেননা , আপনার নাম তো প্রথমেই দেখাচ্ছে। পাঠক হিসেবে আমার কাছে বিষয়টা কিছুটা ডিসটার্বিং লেগেছে।

৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:১২

স্বস্তি২০১৩ বলেছেন: প্রচুর বানান ভুল। আর কিসের যেন অভাব। তবে চালিয়ে যান....

৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩২

মিথুন আহমেদ বলেছেন: শেষের দিকে মনে হয় খুব তাড়া হুড়ো করলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.