নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধারাবাহিক গল্প # অ- মানব # ১৪ তম পর্ব

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৮



নাজ পাগলের কাছে এসে বলল ভাইয়া ঘুম কেমন হল । নাদিয়া আপু বলল আপনি নাকি ছাদে সারা রাত হেটেছেন । ভোর বেলা এসে ঘুমিয়েছেন । দুলা ভাই লন্ডন থেকে চলে এসেছে । আপনি ঘুমে ছিলেন তাই ডাকে নাই। পাগল নাজ কে বলল- তুমি একটা কাজ কর নাজ আমার জন্য ভাল করে লাল চা নিয়ে এসো । নাদিয়া কে বলল - হাসপাতালে যাওয়ার সময় যেন আমাকে নিয়ে যায় ।
আর তোমাদের বাড়ির উত্তর পাশে পুকুরটা তে গোসল করা যাবে । নাজ বলল - বলেন কি ? ঐ পুকুরে কেউ গোসল করে না। দেখেন না কত ময়লা পরে আছে । পাগল বলল - আজ অনেক সুন্দর রোদ । তোমাদের বাড়িটা অনেক সুন্দর । আমি বিকালে মাজারে যাব । নাজ বলল - নাদিয়া আপুর সাথে যাবেন । আপু ঘুরতে পছন্দ করে । পাগল বলল- তুমি কি পছন্দ কর ? আমি যা পছন্দ করি তা আপনাকে বলা যাবে না । পাগল হেসে বলল - এর মানে খুব সুন্দর তুমি যা পছন্দ কর তা সমাজ ভাল ভাবে দেখে না। তাই তুমি গোপন করছ । নাজ বলল- হা কিছুটা হয়েছে ।
পাগল বলল তুমি যা পছন্দ কর । তা অনেকই করে না । নাজ যার যা পছন্দ তা কিন্তু তার চরিত্রের সাথে আস্তে আস্তে মিশে যায় । তুমি যা গোপনে পছন্দ কর তা কিন্তু তোমার মনের স্বভাবের একটা অংশ । নাজ বলল - বলেন কি ভাইয়া । হ্যা নাজ তুমি পছন্দ বিশ্বাসে জন্ম নিলে তখন খারাপ কিছুও ভাল মনে হয় । নাজ বলল আমি যা পছন্দ করি আপনি বলতে পারবেন ।
পাগল বলল- মানুষ যা গোপন করতে চায় তা দ্রত প্রকাশ পায় । ঠিক আছে আমি বলব তুমি চা নিয়ে এসো ।।
নাজ চা বানাতে চুলায় আগুন দিতেই । নাজ এর ছোট মামা রইস মিয়া এসে বলে নাজ ঐ লোকটা নাকি বাসায় । তা বাড়ী কোথায় কিছু জানা গেল । দেখতে তো রাজপুত্রের মত । মনে হয় অনেক শিক্ষিত । মানুষ বেশী শিক্ষিত হলে কিন্তু পাগল হয় । মামা ঐ ভাইয়া বাংলা ঘরে আছে । তোমার যা জানার তার কাছে যাও । নাদিয়া ঘুম থেকে উঠে রান্না ঘরে এসে বলল - মামা খুব ভাল হবে তুমি তো দুই দুই বার মেম্বারি ফেল করেছ । দেখ লোকটা তোমার কাজে লাগবে । আর মামা সন্ধ্যা চলে আসবে শাহ পরান যেতে হবে । একটা বিয়ের দাওয়াত আছে , তুমি না আসলে হবে না। দুলা ভাই শিলা কে নিয়ে রাতে বাসায় আসবে । রইস মিয়া বলল - আচ্চা আমি তাহালে মেহমান তার সাথে দেখা করে আসি ।
রইস মিয়া বাংলা ঘরে এসে দেখে পাগল একটা বই পড়ছে । রইস মিয়া সালাম দিয়ে বলল - কিতা রে বা ভাল আছ নি ।
--- হ্যা আমি ভাল আছি । আপনি ?
--- আমারে আপনে চিনতা না। আমি নাজু নাদিয়া আর নাজ এর ছোট মামা ।
--- ও ! তাই ! মামা বসেন ।
--- তুমি আমাদের যা উপকার করেছ । তা আমাদের পক্ষে তোমার ঋণ শোধ
কারর মত না।
--- মামা জগতে প্রতিটা প্রাণীই প্রতিটা প্রাণীর কাছে ঋণী ।
--- ভাইগ্না বেটা তোমার কথা ঠিক বুঝলাম । আমরা কি ভাবে অন্য প্রাণীর কাছে
ঋণী । আল্লাহ্‌ সব কিছু মানুষের জন্য সৃষ্টি করেছে ।
---- মামা গাছ আমাদের অক্সিজেন ফল ফুল বীজ দেয় । আমরা গাছ কে
কার্বনডাই অক সাইড দেই । ঠিক তেমন করে দুনিয়ার সব প্রাণী কোন
না কোন ভাবে অন্য প্রাণীর উপর নির্ভরশীল ।
---- আচ্চা ভাইগ্না মশা আমাদের কি উপকারে আসে বল তো দেখি ।
---- মা মসার কামুরে অনেক অসুক হয় , অসুক হলে ডাক্তার , তার পর চিন্তা করুন
একমাত্র মাসার জন্য মশারী । কত মানুষ সেই মশারী বানিয়ে জীবিকা করছে ।
--- আসলেই তো আমি এভাবে চিন্তা করি নাই । আপনার সাথে পরিচয় হয়ে ভাল
হয়েছে । তা আপনার নাম নাম জানা হল না।
নাদিয়া চা নিয়ে এসে বলল মামা যার নাম তার নাকি মুখে বলা ভাল না। আমরা দুই বোন মিলে চিন্তা করেছি । ভাইয়া গত কাল থেকে সে তার নাম বলছে না। তাই একটা
নাম আমরাই দিয়ে দিব । শিলা আমাকে বলছে খালা মনি মামার জন্য একটা নাম ঠিক কর । পাগল বলল মন্দ হয় না। এই দুনিয়ায় মানুষ নামের জন্য কত কি করে ।
রইস মিয়া বলল - আপনি ঠিক বলছেন আমি নাম কামাবার জন্য দুই বার মেম্বারি তেদাঁড়াইলাম । যদি ফেল করেছি । আর মানুষ কে বুঝতে পারি না। পাগল বলে
মামা আসলেই পাশ করতে চান ।
--- হ্যা । পাশ না করলে তো সমস্যা । মানুষ যখন বলে মেম্বার । একটু লজ্জা লাগে ।
--- মামা আজ থেকেই আপনি পাশ ।
--- আজ থেকে মানে বুঝলাম না। নির্বাচন তো মেলা দেরি আরও এক বছর ।
--- পাগল বলল -পাশ করার কাজ এখন থেকে শুরু ।
--- নাদিয়া বলল ভাইয়া নির্বাচন অনেক কঠিন কাজ ।
--- নাদিয়া মামা যদি কথা শুনে । তাহালেই পাশ ।
--- এটা কিভাবে ভাইগনা !!
--- মামা দেশের মানুষ ধর্ম বিশ্বাস করে কিন্তু ধর্ম পালন করে কম । ঠিক কিনা ।
--- হ্যা ।
আপনি যদি ধর্ম বেশী পালন করেন তাহালে আপনাকে কিছু ভাল মানুষ ভোট দিবে।
আর ধর্ম কম মানলে । যারা কম মনে তারা ভোট দিব । আপনি আজ থেকে কত জন ভোটার আছে এবং কারা ভোটার হবে আপনার এলাকার তাদের একটা তালিকা
বানান । তার পর দেখবেন আমি এমন ম্যাজিক দেখাব । যে ভোট আসার আগেই মানুষ বলবে। এবার রইস মিয়া কে মেম্বার বানাব । আপনি বলবেন তখন । না আমি দাঁড়াব না। তখন তারাই আপনাকে জোর করে দারাবে । আপনি টাকা ও সম্মান দুইটাই পাইবেন ।।
নাদিয়া বলল ভাইয়া বিকালে হাসপাতাল যাবার কথা ছিল । ডাক্তার বলল আজ রিলিজ দিবে । সন্ধ্যায় একটা বিয়ের দাওয়াত আছে । আপনি যাবেন ।
--- আমি পাগল মানুষ বিয়েতে গেলে না জানি কে কি বলে । আমি বরং হাসপাতালে
যাই । রইস মিয়া বলল না হাসপাতাল আজ বাসায় আসবে । শিলা বাসায় আসলে
বুঝবে । সে যে কত জ্ঞানী মেয়ে ।। নাদিয়া বলল আচ্ছা ভাইয়া একটা কথা আমি দেখলাম আপনি সারা রাত রুম থেকে বের হয়ে এই শীতে ছাদে । আকাশের দিকে চেয়ে আছেন । রহস্য টা কি ? পাগল বলল- একটা কথা বলি নাদিয়া তুমি কেন রাত জেগে ।
--- ভাইয়া আমার ঘুম আসে না।
--- ঠিক আছে আজ ঘুম আসবে ।
রইস মিয়া বলল ভাগিনা আমি এখন চলি । রাতে বিয়ে তে দেখা হবে।
---------------------------------------------------------------------------
নাজু স্বামীর পাশে বসে শিলার দিকে তাকিয়ে বলে । ও নেগেটিভ রক্ত না হলে আজ কি হত আল্লাহ্‌ জানে । নাজুর স্বামীর নাম খালেক মজুমদার । মুজমদারিতে তাদের বিশাল বাড়ী । পিতার বাড়ী রেখে তার পাশেই তিনি আলাদা বাড়ী করে থাকে । নাজু তার স্বামীকে বলল - মানুষটা অনেক ভাল । খুব সুন্দর করে কথা বলে । কিন্তু কেন জানি মনে হয় ওর মধ্য কিছু পাগলামি আছে। ও তার নাম বলে না। কোথায় থেকে
আসছে তাও বলে না। শিলা ওর মাকে বলল - মা ঐ মামা মনে হয় অন্য গ্রহ থেকে
আসছে । এর মধ্য ডাক্তার এসে বলল আপু ঐ মানুষটা কি আজ আসবে ।
--- কে ! ঐ পাগল টা । কেন
--- না আসলে ঐ মানুষ টার সাথে আমার কথা আছে ।
--- খালেক সাহেব বলল - যে কোন সময় বাসায় আসবেন । আমাদের বাসায় আছে ও
। ওকে আমার ও দেখার খুব ইচ্ছা । আসার পর থেকে সবার মুখে ওর প্রশংসা
শুনছি ।
--- ডাক্তার বলল - আমি ওর কথার কাছে হেরে গেছি । শিলা বলে আব্বু তুমি কি
জান । আমি ঘুমিয়ে দেখলাম ঐ পাগল মামা আমার জন্য ফুল এনেছে । ঘুম থেকে
উঠে দেখি সত্যি ফুল এনেছে ।
---- ডাক্তার বলল শিলার অবস্তা ভাল বড় স্যার দেখলে রাতেই বাসায় নিতে পারবেন
। তবে আমি আপনাদের বাসায় আসব ।।
-----------------------------------------------------------------------------
নাজ নাদিয়া রইস মিয়া এর আগত পাগল মিলে শাহ পরান একটা বিয়ে বাড়িতে এসেছে । সবাই খাবার আর বউ দেখা নিয়ে ব্যস্ত । বর চলে এসেছে কিছুক্ষণ আগে ।
খাবার টেবিল থেকে পাগল না খেয়ে উঠে যায় বিয়ের বরের সামনে । কাজী তখন
বরের সই নেয়ার অপেক্ষা করছে । সবাই ছবি তুলছে । নাদিয়া পাগলের পিছনে পিছনে আসে । নাদিয়া বলে ভাইয়া তুমি কোথায় যাও । পাগল বরের সামনে চোখ লাল করে তাকিয়ে চাইল । পাগল কে দেখে বর চিৎকার করে উঠে পাগলের পায়ে যেয়ে পরল । বিয়ে বাড়ির সবাই হতবাক হয়ে চেয়ে আছে । কে এই মানুষ বর কেন
তার পা ধরে আছে ।।
চলমান------

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন সাসপেন্সে শেষ করলেন!

+++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.