নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভুলে ভরা ইতিহাস ~২

২২ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৪৭


১৪১১ সালে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে তার মাজার রয়েছে। এটি বাংলাদেশের সুলতানি আমলের অন্যতম দৃশ্যমান নিদর্শন, যা সোনারগাঁও উপজেলার শাহচিলাপুরে অবস্থিত।( বাংলা উইকি)

এবার আসি ইতিহাসেঃ
বাংলার অন্যমত সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ কর্তৃক প্রকাশিত ৮১৩ হিজরি (১৪১০খ্রিঃ ) পর্যন্ত মুদ্রা পাওয়া যায়।
সুতরাং মুদ্রা প্রমাণে বলা যায় যে, তিনি ৭৯৫ হতে ৮১৩ হিজরি (১৩৯৩ -১৪১১ খ্রিঃ) পর্যন্ত প্রায় ১৮ বছরকাল রাজত্ব করেন। রিয়াজ-উস-সালাতীনে বলা হয়েছে যে, রাজা কানস্ (সম্ভবত রাজা গণেশ) নামক জমিদারের ষড়যন্ত্রে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।

গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্‌ এর পুত্র সাইফুদ্দিন হামজা শাহ্‌ এর মৃত্যুঃ
রাজা গণেশ কর্তৃক প্ররোচিত দেশব্যাপী গৃহযুদ্ধের কারণে হামজার রাজত্ব ব্যাহত হয়। মিশরীয় পণ্ডিত ইবনে হাজার আল-আসকালানি এবং আল-সাখাভির মতে, ৮১৪ হিজরি বা ইংরেজী ১৪১২ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন, সুলতান হামজা শাহ ১৪১২ সালে তার দাস মামলুক শিহাবের হাতে খুন হন।
বিংশ শতাব্দীর ভারতীয় ইতিহাসবিদ আর.সি. মজুমদার অবশ্য বিশ্বাস করেন যে শিহাব ছিলেন হামজার পুত্র এবং হামজাকে হত্যা করেননি বরং তার হত্যার পর তার উত্তরাধিকারী হন। (৬৮ বছর বয়সে মারা যান- ইংরেজী উইকি)

লক্ষ্য করুন; সুলতান গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ্‌ নিহত হত ১৪১১ সালে ৫৩ বছর বয়সে আর তাঁর পুত্র হামজা শাহ্‌ মাত্র এক বছর পরে নিহত হন যখন তাঁর বয়স লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ৬৮ বছর!!!

সাইফুদ্দিন হামজা শাহ্‌ এর পুত্র কিংবা ক্রীতদাস শিহাবউদ্দিন বায়েজিদ শাহ (শাসনকাল ১৪১৩-১৪১৪) ছিলেন ইলিয়াস শাহি রাজবংশের সুলতান। তিনি এক বছরের মত সংক্ষিপ্ত সময় সুলতান ছিলেন। তিনি তার পিতা সাইফউদ্দিন হামজা শাহর উত্তরাধিকারী হন।
শিহাবউদ্দিন বায়েজিদ শাহ তার পূর্বসূরিদের মত চীনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন। তিনি চীনের সম্রাটের কাছে একটি জিরাফ ও সোনালি পাতার উপর লেখা চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ৮১৬ ও ৮১৭ হিজরিতে তিনি মুদ্রা চালু করেন। মুদ্রা সংক্রান্ত কিছু সূত্র মতে তার উত্তরসুরি পুত্র আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ ৮১৭ হিজরিতে মুদ্রা চালু করেন। ঐতিহাসিক মুহাম্মদ কাসিম হিন্দু শাহর মতে রাজা গণেশ শিহাবউদ্দিন বায়েজিদ শাহর মৃত্যুর পর ক্ষমতা দখল করেন।( ২৫ বছর বয়সে মারা যান)
অন্য এক ইতিহাসভিত্তিক ওয়েবসাইটের ভাষ্যমতেঃ রাজা গণেশের চক্রান্তে সুলতানের ক্রীতদাস শিহাবউদ্দিন তাঁকে হত্যা করেন এবং নিজেই সিংহাসনে আরোহণ করেন।

সুলতান শিহাবউদ্দিন বায়েজিদ শাহ্‌
তৎকালীন মুদ্রায় প্রমাণ পাওয়া যায় যে, শিহাবউদ্দিন সুলতান হয়ে শিহাবউদ্দিন বায়েজিদ শাহ নামে ৮১৪ হিজরি (১৪১১-১২ খ্রি:) বাংলার সিংহাসনে আসীন হয়েছিলেন। কিছু সুত্রমতে তিনি সুলতান সাইফউদ্দিন হামজা শাহের ক্রীতদাস ছিলেন এবং বিশ্বাসঘাতকতা করে স্বীয় প্রভুকে হত্যা করে সিংহাসন অধিকার করেন। শিহাবউদ্দিনের রাজত্বকাল সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা যায় না। সম্ভবত, রাজা গণেশের চক্রান্তে তাঁকে হত্যা করা হয়।
• ফের ১৪১১ থেকে ১৪১২ সাল। এই সময়টা আসলে কে প্রকৃত সুলতান ছিলেন এই নিয়ে ইতিহাসবিদেরা কখনোই একমত হতে পারেন নি। শুধু তাই নয় পর পর তিনজন সুলতান হত্যার দায় তৎকালীন প্রভাবশালী জমিদার গনেশের উপর চাপানো হচ্ছে।

প্রথম আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ ছিলেন সুলতান শিহাবউদ্দিন বায়েজিদ শাহর পুত্র ও উত্তরসুরি। সুলতান হলেও তার ক্ষমতা নামেমাত্র ছিল। দিনাজপুরের জমিদার রাজা গণেশ এসময় মূল ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। কয়েকমাস শাসন করার পর গণেশ তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। ৮১৭ হিজরিতে (১৪১৪ সাল) মুয়াজজামাবাদ (পূর্ব বাংলা) ও সাতগাও (দক্ষিণ বাংলা) থেকে জারি করা প্রথম আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহর মুদ্রা পাওয়া গেলেও রাজধানী ফিরোজাবাদ (পান্ডুয়া) থেকে জারি করা মুদ্রা পাওয়া যায়নি। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি রাজধানী ত্যাগ করে দক্ষিণ ও পূর্ব বাংলার উপর কর্তৃত্ব স্থাপনের প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু গণেশ তাকে পরাজিত ও হত্যা করে।

• এই নিয়ে জমিদার গনেশের উপরে চতুর্থ সুলতান হত্যার দায় চাপানো হল। আসলে মুসলিম সূলতানী আমলে একজন হিন্দু জমিদার কি শক্তিবলে চার চার জন সুলতানকে হত্যা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সক্ষম হলেন এ বিষয়টা ইতিহাসবিদদের কাছে একতা বড় ধাঁধা।
তবে আমি একটু অন্যভাবে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।

***
মার কেন যেন মনে হচ্ছে একটা বিষয়ের দিকে সবার নজর এড়িয়ে গেছে; বাংলা ইতিহাস জানাচ্ছে যে, রাজা গনেশের দুজন পত্নী ছিল; একজনের নাম ত্রিপুরা সুন্দরী আরেকজন উপপত্নী –এই নামটা একটা সারপ্রাইজ।
কিন্তু ইংরেজী সহ সব উইকির ইতিহাসে তাঁর পত্নী ওই একজনকেই দেখাচ্ছে। ত্রিপুরা সুন্দরীর নাম কোথাও নেই।
কে ছিল রাজা গনেশের সেই পত্নী? শুনলে অবাক হয়ে যাবেন। তিনি ছিলেন, গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ্ এর বিধবা স্ত্রী ফুলজানী বেগম!!!!
শুধু কি তাই, আরো অবাক করার মত বিষয়; তাঁর বড় ছেলে যদু যিনি জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহ্ নামে মুসলিম শাসক হিসেবে সুদীর্ঘ সময় ধরে বাংলা শাসন করেছেন তিনি বিয়ে করেছিলেন ‘আসমান তারা’ নামে এক রূপসী মুসলিম কন্যাকে যার পিতা ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্ ও মাতা ছিলেন ফুলজানী বেগম।
কেন রাজা গনেশ এভাবে একের পর এক প্রাসাদ ষড়যন্ত্র করলেন? শুধু কি ক্ষমতার লোভে? চার’শ বছরের পুরনো বিশাল জমিদারী ছিল তাদের। (টিকাঃ গণেশের জন্ম একটাকিয়ার ভাদুড়ি বংশে। এরা বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ, এবং এরা মুসলমান শাসকের পুরোনো কমপ্রাদর। শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহর হয়ে এই বারেন্দ্র ব্রাহ্মণরা সেনাপতির কাজ, মন্ত্রীর কাজ করে প্রথম ক্ষমতাসীন হয়েছেন। এর কয়েক প্রজন্ম পরে গণেশের উত্থান। তিনি অতিরিক্ত শক্তিশালী হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তিনি নিজেকে সুলতান বলে ঘোষণা করেন নি। @তমাল দাশগুপ্ত) তৎকালীন সব রাজা মহারাজা তাদের সম্মান করে চলত। গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্ থেকে শুরু করে পরবর্তী সব মহারাজই ছিল একরকম তাঁর হাতের পুতুল।তিনি চাইলেই সিংহাসনের দৃশ্যপট পাল্টে দিতে পারেন। শিহাব যদি একজন ক্রীতদাস হয় তবে একজন ক্রীতদাসকে দিয়ে মহারাজকে হত্যা ফের তাকেই করিয়ে সিংহাসনে বসানো চাট্টিখানি কথা নয়।

আমার সন্দেহ এখানে অন্যখানে।
রাজা গনেশের ব্যাপারে মুসলিম ইতিহাসবিদেরা বেশ কঠোর ছিলেন। তারা বলছেন যে, তিনি ক্ষমতায় এসে মুসলিম হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠেন।
মুসলিম ইতিহাসবিদেরা বলছে যে,
ক্ষমতাসীন হয়ে তিনি মুসলিমদের ওপর অত্যাচারের স্টীম রোলার চালাতে থাকেন। বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিবর্গকে হত্যা করা হয়। শায়খ বদরুল ইসলাম ও তাঁর পুত্র শায়খ ফায়েদুল ইসলামকে রাজ-দরবারে নিয়ে হত্যা করা হয়। একদল ইসলামী ব্যক্তিত্বকে নৌকাতে উঠিয়ে নদীতে ডুবিয়ে মারা হয়। বহু মসজিদ ভেংগে ফেলা হয়।
মুসলিমগণ শায়খ নূর কুতবুল আলমের নেতৃত্বে সংগঠিত হন। শায়খ জৌনপুরের শাসক ইবরাহীম শার্কীকে বাঙালায় সামরিক অভিযান চালাবার আহ্বান জানান। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইবরাহীম শার্কী সসৈন্যে পাণ্ডুয়া পৌঁছেন। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজা কংস (জমিদার গনেশ) শায়খ নূর কুতবুল আলমের শরণাপন্ন হন। শায়খ তাঁকে ইসলাম গ্রহণ করতে বলেন। প্রথমে রাজি হয়ে তিনি পরে আবার অসম্মতি প্রকাশ করেন। তবে আপন পুত্র যদুকে ইসলামে দীক্ষত করে মসনদে বসাবার জন্য শায়খকে অনুরোধ করেন। শায়খ যদুকে মুসলিম বানিয়ে তাঁর নাম রাখেন জালালুদ্দীন মুহাম্মদ। শায়খ ও তাঁর সাথীগণ তাঁকেই মসনদে বসান। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে ইবরাহীম শার্কী জৌনপুরে ফিরে যান।
এর সাথে অনেকটাই সুর মিলিয়েছেন ইতিহাসবিদ বাংলাদেশের ইতিহাস/ রমেশচন্দ্র মজুমদার।
এই সময় বাংলার মুসলমান দরবেশরা হিন্দু রাজার বিরুদ্ধে মুসলমান প্রজাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলেন। এই সময় গণেশ কয়েকজন বিদ্রোহী দরবেশকে হত্যা করেন। ফলে মুসলমান প্রজাদের বিদ্রোহ চরম আকার ধারণ করে। এই সময় বিদ্রোহীদের নেতা নূর কুতুব আলম জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহিম শর্কিকে বাংলা আক্রমণের আমন্ত্রণ জানান। ইব্রাহিম শর্কি বাংলা আক্রমণ করলে, গণেশ সিংহাসন ত্যাগ করেন। এই সময় তাঁর পুত্র যদু সেন (ভিন্ননাম জিৎমল), ইব্রাহিমের পক্ষে চলে যান। পরে রাজ্য লোভে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে জালালউদ্দিন নাম ধারণ করেন। ইব্রাহিম শাহ, জালালুদ্দিনকে সিংহাসনে বসিয়ে জৌনপুরে ফিরে যান।

কিন্তু অন্য একটা নথিতে উল্লেখ আছে;
গণেশের মুসলমান বিদ্বেষ সম্পর্কে কেবল রিয়াজ-উস-সালাতিন থেকেই জানা যাচ্ছে, বাকি দুটি ফার্সি সোর্স পড়লে মনে হয়, এটি মুসলমান বিদ্বেষ ছিল না, এটি শেখ নুর বাঙ্গালির সঙ্গে গণেশের রাজনৈতিক সঙ্ঘর্ষ ছিল। সেটাকেই শেখ নুর বাঙ্গালি একটি ধর্মীয় জেহাদের রূপ দিয়েছিলেন, নতুবা গণেশের সঙ্গে মুসলমানদের যথেষ্ট সদ্ভাব ছিল।
গণেশ সম্পর্কে মধ্যযুগের ফার্সি নথিতে এরকমও বলা আছে যে তিনি মুসলমানদের প্রিয়পাত্র ছিলেন, এবং মুসলমানি আচার-ব্যবহার এতদূর অবধি রপ্ত করেছিলেন যে তিনি মারা যাওয়ার পরে তাঁকে সমাধিস্থ করার প্রস্তাব উঠেছিল (তারিখ-ই-ফিরিশ্তা)। লোকমুখে প্রচলিত প্রবাদের ওপরে ভিত্তি করে দুর্গাচরণ সান্যাল (লেখক বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ, গণেশ এই জাতির লোক) বলেছেন যে গণেশ যখন গৌড়ে থাকতেন তখন মুসলমান বেগমদের সঙ্গে মুসলমানের মত থাকতেন এবং যখন পাণ্ডুয়ায় থাকতেন তখন পরিবারবর্গের সঙ্গে নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণের মত বাস করতেন। রজনীকান্ত চক্রবর্তী আরেকটি লোকপ্রবাদের কথা বলেছেন, গণেশই প্রথম সত্যপীরের সিন্নি প্রচলন করেন, হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সাংস্কৃতিক অভিন্নতা প্রচলনের স্বার্থে। @তমাল দাশগুপ্ত

এখানে একটা কি পয়েন্ট আছে; গণেশ যখন গৌড়ে থাকতেন তখন মুসলমান বেগমদের সঙ্গে মুসলমানের মত থাকতেন। তাঁর অর্থ এখানে তাঁর মুসলিম স্ত্রী ফুলজানীর কথা বলা হচ্ছে। এর অর্থ দাঁড়ায় যে, তিনি একজন অভিজাত ব্রাহ্মণ হওয়া স্বত্তেও ফুলজানীর স্বার্থে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত ছিলেন। একজন মুসলিম রাজার অন্দরমহলে বাইরের যত প্রভাবশালী হউক না কেন একজন অন্য ধর্মীয় পুরুষের সাথে তাঁর বেগমদের সাক্ষাৎ প্রায় অসম্ভব। গনেশের সাথে গিয়াসুদ্দীন আজম শাহ্‌, এর মত প্রতাপশালী রাজার স্ত্রীর প্রেমময় সম্পর্ক কিভাবে গড়ে উঠল সেটা এক বিস্ময়!
তবে কি আজম শাহের মৃত্য, তাঁর পুত্র হামজা শাহের হত্যাতে ফুলজানীর কোন ইন্ধন ছিল?
আবার দেখুন ফুলজানীর কন্যার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয় গনেশের ছেলে যদু বা জিৎমল। অথবা তাঁকে যখন প্রথমবার ধর্মান্তরিত করে ক্ষমতায় আনা হয় তখন ফুলজানী নিশ্চয়ই বাধ্য করে তাঁর কন্যাকে বিয়ে করতে যাতে বাবার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা না করতে পারে।
তবে কিছু কিছু ইতিহাসবিদেরা বলছেন, ইব্রাহীম শার্কির বাংলা অভিযানের পরে গনেশ ছেলেকে সরিয়ে নিজেই ক্ষমতা গ্রহন করেন ও পুত্র যদুকে ‘সুবর্ণধেনু ব্রত’ দ্বারা পুনরায় হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত করেন।
কিন্তু মুসলিম ইতিহাসবিদেরা বলছেন, যদু বা জালালুদ্দিন হিন্দু ধর্মে আর দীক্ষিত হয়নি।

এখানে তিনটে পয়েন্ট;
গনেশ যেভাবে হিন্দু- মুসলিম উভয়ের সাথেই মিলে মিশে চলত তাতে করে সে ছেলেকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করার কথা নয়, যেখানে সে নিজেই মুসলিম ধর্মের অনেক রীতি নীতি নিজেই মেনে চলত বলে জানা যায়।
গনেশের স্ত্রী ফুলজানী যার সামনে গনেশ নিজেই পাক্কা মুসলিম সেজে থাকে সে তাঁর কন্যার স্বামীকে কখনোই ধর্মান্তরিত হতে দিবে না।
[যদু যখন ধর্মান্তরিত হয় ও ক্ষমতায় আরোহন করে তখন নাকি তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। এই বয়সে সে ধর্মের কি বুঝত? শাসন, ক্ষমতা, বিয়ে এসব আমার মাথায় আসে না। এখানে যদুর সঠিক বয়স কোন তথ্য থেকেই জানা যাচ্ছে না।
(অন্য একটা সোর্স বলছে, সে নাকি এক আফগানী মুসলিম নারীর প্রেমে পড়ে ধর্মান্তরিত হয়ে তাঁকে বিয়ে করে)
প্রভাবশালী মুসলিম আলেম নুর কুতুবুল আলমের আহ্ববানে জৈনপুরের শাসক ইব্রাহীম শার্কীর যে বাংলা আক্রমনের কথা বলা হচ্ছে সেটা এক বিরাট গোলমেলে ধাঁধা। প্রায় সব বাংলা ইতিহাসবিদেরা বলছেন; তাঁর আক্রমনে ভয় পেয়ে গনেশ নুর কুতুবুল আলমের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিজের সন্তানকে ধর্মান্তরিত করে ক্ষমতায় বসান।
কিন্তু আসল ঘটনা অন্যখানে
অনেক স্বাধীন সূত্র নিশ্চিত করে যে, ‘আসলে ঘটনা ঘটেছিল ঠিক উল্টো’ জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহিম শাহ শর্কী রাজা গণেশের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন ( তথ্য সুত্রঃ তৎকালীন চীনা স্মৃতিকথা, আরাকান ও বার্মার ইতিহাস এবং আফগানিস্তানের তিমুরিদ শাসকের দূত।)

ইব্রাহিম শাহ শার্কির আক্রমণের পূর্ববর্তী বিবরণ রিয়াজ-উস-সালাতিনে প্রদত্ত বিবরণ থেকে ভিন্ন। একটি চীনা সূত্র উল্লেখ করেছে যে বাংলার পশ্চিমে অবস্থিত একটি রাজ্যের রাজা গণেশের অধিকৃত এলাকা আক্রমণ করেছিল, কিন্তু স্বর্ণ এবং অর্থ দ্বারা আক্রমণ বন্ধ করা হয়েছিল। সমরকান্দির আবদ আর-রাজ্জাক তার রচনা 'মাতলা-ই সেদায়ন ওয়া মাজমা অ্যান্ড বাহরাইন'-এ উল্লেখ করেছেন যে ১৪৪২ সালে হেরাতের তিমুরিদ শাসক (রাজত্ব ১৪০৫-১৪৪৭) শাহরুখের সেবাকারী একজন কূটনীতিক লিখেছিলেন যে, তার প্রভু জৌনপুর যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং বেঙ্গল সুলতানের অনুরোধে বাংলা, জৌনপুরের সুলতানকে বাংলার সুলতানকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে বা পরিণতির দায় স্বীকার করার জন্য অনুরোধ করে যার ফলশ্রুতিতে জৌনপুর সুলতান বাংলা সালতানাতের উপর আক্রমণ পরিত্যাগ করেন। আধুনিক আরাকানি ইতিহাসে আছে যে রাজা গণেশের সেনাবাহিনী, যেটি তখন পান্ডুয়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল, ইব্রাহিম শাহ শর্কীকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিল। এই ইতিহাস অনুসারে, আরাকানের একজন শাসক, যিনি ১৪০৬ সালে বার্মিজ রাজার কাছে পরাজিত হয়ে পান্ডুয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি রাজা গণেশকে সামরিক পরামর্শ দিয়েছিলেন যা তার সেনাবাহিনীকে ইব্রাহিম শাহ শর্কীকে পরাজিত করতে সক্ষম করেছিল। (রুশীয় সোর্স)
শুধু কি তাই –বিশ্বের অন্যান্য ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখি আধুনিক ইতিহাস কি বলে; ( শার্কির এই আক্রমনটা বিশ্ব ইতিহাসের একটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার। তুর্কি রিয়াজ উল সালাতিনের পাশাপাশি, ইব্রাহিমের সাথে গণেশের দ্বন্দ্ব সমসাময়িক চীনা,বার্মিজ এবং তৈমুরিদের ইতিহাসে ও উল্লেখ করা হয়েছিল।
দিল্লির সুলতান এবং জৌনপুরের সুলতান পান্ডুয়াকে আক্রমণ করার জন্য এক বিশাল সেনাবাহিনীকে একত্র করেছিল। এই সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন ইব্রাহিম শাহ শর্কী।
রাজা গণেশ , মিথিলা ও আরাকানের রাজা এই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একত্রে অবরোধ তুলতে পেরেছিলেন এবং দিল্লি বাহিনীকে এক অপমানজনক পরাজয় দিয়েছিলেন।আফগানিস্তান এর হিরাট থেকে প্রাপ্ত নথি অনুসারে সুলতানের এমন অবস্থা হয়েছিল যে তৈমুর বংশীয় আফগান সুলতান শাহরুখ রাজা গনেশের সাথে সন্ধি করেন ও ইব্রাহিম কে দ্রুত সেনা সরানোর নির্দেশ দেন।
***
এটা যদি সত্যি ধরে নেই তবে জালালুদ্দিনের ধর্মান্তরিত হবার কারন অন্য। কেননা কোন কোন ইতিহাস বলছে, জালালুদ্দিনকে সরিয়ে গনেশ একবার নিজেই ক্ষমতায় আসীন হন কিংবা তাঁর ছোট ছেলে মহেন্দ্রদেবকে ক্ষমতায় বসান। গনেশের মৃত্যুর পরে( কারো কারো মতে জালালউদ্দিন তাঁকে হত্যা করেন) মহেন্দ্রদেবকে হত্যা করে কিংবা অন্যভাবে সরিয়ে জালালুদ্দিন ফের ক্ষমতায় বসেন।
কেউ কেউ বলে মহেন্দ্রদেব কখনোই ক্ষমতায় বসেন নি- জালালুদ্দিন তাঁকে এমনিতেই হত্যা করেছেন।
আসলে আধুনিক ইতিহাসবিদেরা বলছেন, গনেশ সবসময়ই de facto রাজা ছিলেন, de jure ছিলেন না।
তাহলে জালালউদ্দিন ১৪১৫ থেকে একটানা ১৪৩৩ সাল পর্যন্ত বাংলার ক্ষমতায় ছিলেন বলে ধরে নেয়া যায়।

তবে মুল ক্ষমতা কিন্তু অন্দরমহল থেকে সামলেছেন দু'জন নারী। একজন সুলতান গিয়াসুদ্দীন আজমশাহ্‌ এর বিধবা স্ত্রী ফুলজানী তাঁর সুযোগ্যা কন্যা ‘আসমানতারা’।
‘ফুলজানী’ যেমন ছিল রাজা গনেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আরোহনের ‘ডি ফ্যাক্টর’ ঠিক তেমনি জিৎমল, যদু বা সুলতান জালালুদ্দিন-এর পুরো শাসনামলের সকল ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের পেছনে ছিল একজন নারীর বিশেষ অবদান, সে হচ্ছে ‘ আসমান তারা’। যে তাঁর সুলতান স্বামীকে গড়ে তুলেছিলেন ঠিক তাঁর বাবা গিয়াসুদ্দীন আজম শাহ্‌ এর আদলে। কেন যেন ইতিহাসবিদদের নজর এড়িয়ে গেছে সে দিকটা সেটা এক বিস্ময়!
পরের পর্বে আসছি সেই বিষয় নিয়ে।
****


খন এই ছবিটি দেখুন ( উনবিংশ শতাব্দির গোড়ার দিকে এক বাঙ্গালী শিল্পীর আঁকা সম্ভবত।) যেই ছবি উইকি থেকে শুরু করে প্রায় সব মাধ্যমেই রাজা গনেশ ও জালালুদ্দিন মোহাম্মদ শাহ্‌ এর আলমোস্ট অরিজিনাল বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। ছবি দুটো ভাল করে লক্ষ্য করুন;
হুবুহু একই ছবি, শুধুমাত্র একজনের দাড়ির ছাপ দেয়া। এখানে সুক্ষ একটা সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপার আছে যে, হিন্দু হলে তাঁর দাড়ি থাকবে না। কি হাস্যকর ব্যাপার ভাবুন। ১৪০০ সালে দাড়ি গোফ মন্ডিত ক্লিন শেভের একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ভূ-ভারতে বিরল ছিল, নয় কি?
***
ফুটনোটঃ (একটি তথ্য অনুসারে, দিনাজপুর নামটি এসেছে রাজা দিনাজ বা দিনরাজ থেকে যিনি দিনাজপুর রাজ (দিনাজপুরের এস্টেট) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু অন্য একটি প্রথা অনুসারে, রাজা গণেশ ছিলেন এই এস্টেটের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা।)

আগের পর্বঃ ভুলে ভরা ইতিহাস!

রাজা গনেশকে নিয়ে বিশেষ দুটি পুস্তকঃ

• রাজা গণেশ (উপন্যাস) - শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
• বাংলার গৌরব বা রাজা গণেশ (নাটক)-নবকৃষ্ণ রায়

মন্তব্য ৫২ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৫২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:২১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


ইতিহাসের এসব রাজা-বাদশাদের জন্মসাল ঠিক করে বয়স বাড়ালে/কমালে কি আর হবে;পুণমুদ্রণে পাঠাতে চাইলে ঠিক আছে।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বুঝলাম না B:-)
আমার মুল লেখালেখির বিষয়বস্তু অন্য অনেক কিছু শুধু বয়সের ভুলভ্রান্তি নহে।

২| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ইতিহাস নিয়ে লেখা চমৎকার এই পোস্টির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
- পোস্টটিতে প্লাস এবং প্রিয়তে যোগ করলাম।
- গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের কবর আমি দেখেছি বেশ অনেক বছর আগে। তখন অবাক হয়েছি একজন সুলতানের কবর সেখানে কেনো এইভাবে হলো তা ভেবে।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: অনেকদিনপরে আপনাকে আমার পোস্টে পেয়ে ভাল লাগলো। ইতিহাসে কত আগ্রহ আপনার সেটা আমি জানি। আমার কোন পোস্ট প্রিয়েতে নেয়া মানে সেটা বিশেষ একটা ব্যাপার।
দারুণ প্রীত হলাম। ভাল থাকুন।

৩| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৩

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: কতকিছু অজানা। দারুণ তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৪৮

শেরজা তপন বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ও ভালবাসা আপনাকে। শুভকামনা রইল।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:০২

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


:ঠিক বুঝলাম না B:-)

-বড় লিখা,বিভিন্ন পয়েন্ট,বিভিন্ন তথ্যসূত্র তাই পুরোটা পড়িনি;তবে আপনি কস্ট করে লিখেছেন বুঝা গেলো।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৪৮

শেরজা তপন বলেছেন: ফের আসার জন্য ধন্যবাদ। সময় সুযোগ পেলে পুরোটা পড়ার অনুরোধ রইল।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮

বিষাদ সময় বলেছেন: বেশ শ্রম সাধ্য পোস্ট এবং লেখাটির লজিকগুলো পরিস্কার ভাবে বুঝতে হলেও যথেস্ট মাথা খাটাতে হবে। তবে এত শত বছর আগের ইতিহাস ভুলে ভরা থাকবে, অনেক কনট্রাডিকশন থাকবে, মনের মাধুরী মিশানো থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। অতদিন আগের কথা বাদ দিলাম ১৭৫৭, ১৯৪৭, ১৯৭১ এর ইতিহাসই তো কতজন কত ভাবে লিখছেন। আসলে ইতহাসের নানা রকম বর্ণনা থেকে পাবলিকের মনে যে পারসেপশন তৈরী হয় সেটাই প্রচলিত সত্য হয়ে দাড়ায়। প্রকৃত সত্য নির্ণয় করাটা শুধু সু-কঠিন নয় প্রায় অসম্ভব।

১৪০০ সালে দাড়ি গোফ মন্ডিত ক্লিন শেভের একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ভূ-ভারতে বিরল ছিল, নয় কি?

শেভের ইতহাস তো আরো প্রাচীন তহলে একজন দাড়িবিহীন (ছবিতে একবারে ক্লিন কিনা বুঝা যাচ্ছে না) হিন্দু রাজা থাকাটা খুব অস্বাভাবিক হবে কেন?

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার কথা অবশ্যই ঠিক ও যুক্তিযুক্ত এ নিয়ে আমার কোন দ্বিমত নেই।

আপনি বলেছেন;
শেভের ইতহাস তো আরো প্রাচীন তহলে একজন দাড়িবিহীন (ছবিতে একবারে ক্লিন কিনা বুঝা যাচ্ছে না) হিন্দু রাজা থাকাটা খুব অস্বাভাবিক হবে কেন?
আমি আসলে সেভাবে ব্যাপারটা বোঝাতে চাইনি। ছবিটা আঁকা হয়েছে ১৯ এর শতকে। এখানে একটা সাম্প্রদায়িক ব্যাপার আছে যে, দাড়ি রাখলেই মুসলমান পরিচয় পাবে আর ক্লিন শেভ হলে সনাতন বা অন্য ধর্মের পরিচয় পাবে। দেখুন দুটোতে হুবুহু একই ছবি ব্যাবহার করা হয়েছে, শুধু ভিন্নতা দাড়িতে। কিনতি ১৪শ এর শতকে হিন্দু মুসলিম সব রাজা জমিদারেরাই দাড়ি গোঁফ রাখতেন কিংবা তাঁর কোন একটা রাখতেন কিংবা রাখতেন না তখন স্মভবত এই দাড়ি ফাড়ি নিয়ে ধর্মের পরিচয় কোন ফ্যাক্টর ছিল না।
যাই হোন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনার মুল্যবান মতামত অবশ্যই আমাকে আরো ভাল কিছু লিখতে অনুপ্রাণিত করবে।

৬| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:২১

রাজীব নুর বলেছেন: এই পর্বে আপনি আমার জানা ইতিহাস নিয়ে আলচনা করেছেন।
গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের কবর আমি দেখেছি। সোনার গাওতে। তখন ছবি তুলতে নানান জাগায় ঘুরে বেড়াতাম।
গিয়াসউদ্দিন আজম কে নিয়ে অনেক গল্প কবিতা লেখা হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিনের দেশ বিদেশের অনেক কবি সাহিতিকের সাথে সুসম্পর্ক ছিলো।
গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ কে নিয়ে সামু ব্লগেও অনেক ব্লগার লিখেছেন।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০১

শেরজা তপন বলেছেন: ভাইরে, আমিতো এখানে গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ্‌ এর জীবনী বা বা ইতিহাস লিখিনি। আমি লিখেছি রাজা গনেশ ও তাঁর ছেলে
সুলতান জালালুলুদ্দিনকে নিয়ে।
তাদের আলোচনায় ঘুরেফিরে গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ্‌ এর নাম চলে এসেছে।
আপনি পুরো লেখাটা ভাল করে পড়ে দেখুন। এর মধ্যে আপনার জানা ইতিহাসের বাইরে একদম ভিন্ন কোন ইতিহাস খুঁজে পাবেন গ্যারান্টি।

৭| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক সময় লেগেছে পোস্টটি পড়তে। ভুলগুলো বুঝতে হলে উপর-নীচ স্ক্রল করে একই লেখা একাধিকবার পড়ার প্রয়োজন পড়ে। আমি অবাক হয়েছি, এমন অ্যানালাইসিস করতে আপনাকে কত বেগ পেতে হয়েছে!

আসমানতারা আর নয়নতারা কি একই নায়িকা?

মাথায় জট পেকে যায় পড়তে পড়তে :)

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:২৯

শেরজা তপন বলেছেন: লিখতে গিয়ে আমার মাথায় যে ভীষণ জট লেগে গেছে সেটা না বললেই নয়। সে জন্য না বহু চেষ্টা স্বত্বেও কোথাও কোথাও জটিল প্যাঁচ রয়ে গ্যাছে! ইতিহাস বড় জটিল বিষয় কিনা জানিনা তবে যুগে যুগে ইতিহাসবিদেরা এটাকে বড় বেশী জটিল করে তুলেছেন।
এতদ্‌ বিষয়ে আরো পড়াশুনা করলে মনে হয় পাগল টাগল হয়ে যাব :(

:) ঠিক ধরেছেন ওটা আসমান তারাই হবে- ঠিক করে দিয়েছি। আপনার চোখে কত কি ধরা পড়ে!! কবির চোখ তো।

দারুনভাবে অনূপ্রাণিত হলাম ফের। ভাল থাকুন।

৮| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:২০

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার পোস্টটি খুবই কৌতূহলোদ্দীপক।

আপনার এই লেখাগুলো পড়ে বেশ হীনমন্যতায় ভুগছি। মনে হচ্ছে বাংলার ইতিহাস এত কম জানি! এই ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে এত "twist and turns" এর কিছুই জানিনা। পড়ে ভেবে দেখলাম ইতিহাস বিষয়ে বই পড়েছি খুবই কম। রমেশচন্দ্র মজুমদারের বাংলা দেশের ইতিহাস ছাড়া আর কোন বইয়ের কথা মনে করতে পারলাম না যা পড়েছি। আর সেই পড়ার কিছুই প্রায় মনে নাই।

প্রসঙ্গান্তরে, আপনি রমেশচন্দ্র মজুমদার কে ভারতীয় ইতিহাসবিদ বলেছেন দেখে একটু অবাক হলাম! তার বাড়ি ফরিদপুরে, জীবনের বেশীরভাগ সময় বাংলাদেশেই ছাত্র পড়িয়েছেন।

আর হ্যা, আপনার এই ইতিহাস বর্ণনার স্টাইলটা কঠিন। পড়লে মনে হয় অনেকগুলো তথ্য প্রথমে সংগ্রহ করেছেন, তারপর সেগুলো জোড়া লাগাচ্ছেন। একারনে পড়তে গেলে স্বাভাবিক গতিটি কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয় বলে মনে হল।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৪৭

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি তো আমাকেই লজ্জার মধ্যে ফেলে দিলেন।
অল্প জেনে বেশী বাগাড়ম্বড় করে ফেলেছি।
রমেশচন্দ্র মজুমদার এর ব্যাপারে আগের পর্বে আপনি আরো কিছু তথ্য দিয়েছিলেন- ধন্যবাদ এবার আরও নতুন কিছু তথ্য সংযোজন করার জন্য।
এতো ইতিহাস এই ছোট্ট পরিসরে জোড়া লাগাতে গিয়ে বেশ হিমসিম খেতে হয়েছে। তাই বিস্তারিত বলার সুযোগ আসে নি কিংবা আমি সাবলীলভাবে বলতে পারিনি। পড়তে কষ্ট হবার জন্য দুঃখিত।
এতো মনযোগ দিয়ে লেখা পড়ে গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

৯| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৩১

কামাল১৮ বলেছেন: মারফতি কাজ কারবার।
ছয় মাসের এক কন্যা ছিলো
৯ মাসে গর্ভ হলো?
১১মাসে তিনটি সন্তান।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০৮

শেরজা তপন বলেছেন: পুরাই মারফতি :)
তা আপনি পড়ছেন তো? একটু চেষ্টা করেন- মাথার উপ্রে দিয়ে যাওয়ার মত লেখা না।

১০| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৬

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আসলে ইতিহাস লিখা হয় বিজয়ীদের দ্বারা, তাই সঠিক ইতিহাস পাওয়া খুবই দূষ্কর, এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন সোর্স এবং কমন সেন্স কাজে লাগতে হবে।

আপনি বেশ জটিল এক একখান পোস্ট করছেন, এখানে মতামত জানানো আমার সাধ্যের বাইরে।

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১২

শেরজা তপন বলেছেন: মন্তব্যের প্রথমটুকুর সাথে সহমত- কিন্তু মধ্যযুগীয় ছেড়া ছেড়া ইতিহাসের ব্যাপারে কমন্সেন্স কাজে লাগানো দুস্কর!

কি যে বলেন ভাই, এখানে গাদার এক প্রেমগাথা আছে। সহজ বিষয়- মজার ইতিহাস। এই ইতিহাসবিদেরা বড় কাঠখোট্টা ছিল- তাদের চোখ এই সহজ বিষয়টা এড়িয়ে গেছে :)

১১| ২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০৭

নিমো বলেছেন: আদমের স্বর্গপতন থেকে আজম শাহের পতন, সব খানেই দেখি নারীদের দোষ দেয়ার প্রবনতা! পুরুষরা কি সব নির্বোধ!

২২ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: আরে এখানে আপনি নারীদের দোষ কোথা পেলেন? এতো স্বর্গীয় প্রেমের ব্যাপার স্যাপার!!
একজন নারীর জন্য পুরুষ যেমন স্বর্গ ছাড়তে পারে অনায়াসে তেমনই চারখানা সুলতানকে অবলীলায় হত্যা করতে পারে।
নয়নতারা কিন্তু জালালুদ্দিনকে দারুনভাবে মোহাবিষ্ট করেছিল বলে আমার মনে হয়। জালালুদ্দিন কুটনীতি দেশ পরিচালনা সহ অন্যতম সেরা সুলতান হিসেবে বাংলার ইতিহাসে অমর অক্ষয় হয়ে আছেন। এর পেছনে নয়নতারার নিশ্চিত অবদান ছিল বলে আমার বিশ্বাস।
পরের পর্বে এই বিষয়ে বিশদ লেখার চেষ্টা করব।

১২| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৭

নিমো বলেছেন: লেখক বলেছেন: আরে এখানে আপনি নারীদের দোষ কোথা পেলেন? এতো স্বর্গীয় প্রেমের ব্যাপার স্যাপার!!
হা-হা! যা বুঝলাম স্বর্গীয় প্রেমের অপর নাম পরকীয়া। আদমের স্বর্গপতন, সাপের প্ররোচনায় কি কোন ত্রিভূজ প্রেমের ঈঙ্গিত আছে ?

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫১

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি আমাকে প্যাঁচে ফেলছেন :)
*** শয়তান কেন ইডেনে থাকবে তাহলে মানে কোন যুক্তিতে? ত্রিভুজ প্রেমের একটা দারুণ ... না থাক, ইভ তো সেদিকে ঝুকতেও পারে। মাফ করুন মাবুদ।

১৩| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:১৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক সময় লেগেছে পোস্টটি পড়তে। ভুলগুলো বুঝতে হলে উপর-নিচ স্ক্রল করে একই লেখা একাধিকবার পড়ার প্রয়োজন পড়ে। আমি অবাক হয়েছি এমন অ্যানালাইসিস করতে আপনাকে কত বেগ পেতে হয়েছে! আসলেই। আমি অবশ্য আগেরদিনের ইতিহাস পড়লে সাল-তারিখ নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বক্তব্যের দিকে মনোযোগ বেশি দেই। আর ইতিহাস পড়তে বরাবরই ভালো লাগে।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: এই সিস্টেমটা বেশ ভাল। তবে ওদিকে আমার চোখ চুলে যায় বারবার।
এই পর্ব নিয়ে কিছু মন্তব্য করলেন না যে মাস্টার সাহেব?

১৪| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:৫৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ১৪১১ গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের মৃত্যু
হত্যা করেন রাজা গণেশ

গিয়াস উদ্দিনের পূত্র হামজা শাহ
মৃত্যু ১৪১২
হত্যা করেন তার দাস শিহাব
অন্য মতে শিহাব, হামজার পূত্র
হামজার মৃত্যুতে সিংহাসনে বসে।

শিহাবউদ্দিনকে হত্যা করেন রাজা গণেশ

শিহাব উদ্দিনের পুত্র আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ
শিহাবউদ্দিনের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন
হত্যা করেন রাজা গণেশ।

গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের স্ত্রীকে আবার গণেশ বিয়ে করেন। তাদের পুত্রের নাম আবার জালালুদ্দিন মোহাম্মদ শাহ। সে আবার বিয়ে করে নয়ন তারা নামে আরেক মেয়েকে। যে কিনা তার সৎ বোন।

এখন এখানে কয়েকটা বিষয় হতে পারে, যেহেতু সবগুলো ঘটনা ১৪১০ এর পরের ৪-৫ বছরের, তাই বলা যায়, ১. সেসময় একজন রাজাকেই গণেশ হত্যা করেন, বিভিন্ন ইতিহাসবিদ বিভিন্ন নামে তা লিখেছেন।
২. হতে পারে এ রাজারা আসলেই ১ -১.৫ বছর করে ক্ষমতায় ছিলেন, সবাইকেই রাজা গণেশ হত্যা করেছে৷
৩. হতে পারে গিয়াসউদ্দিনকে রাজা গণেশ হত্যা করে, তার স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী করে নিয়েছেন ও গিয়াসউদ্দিনের ছেলে হামজা শাহকে সিংহাসনে বসান ও ভৃত্য শিহাবকে দিয়ে হত্যা করান। এরপর কিছুদিন শিহাবকে সিংহাসনে সাময়িক সময়ের জন্য বসান এবং পরে তাকে হত্যা করেন। কিন্তু জালাল উদ্দিনের সিংহাসন কাল ১৪১৫ সাল থেকে সেটা মিলছে না। এদের বিয়ে কবে হলো, সন্তান কবে হলো?

সেক্ষেত্রে বলা যায়, গিয়াসউদ্দিনই শুধু মারা যান, মাঝের সব শাহগুলা ভুয়া। জালালউদ্দিন গিয়াসউদ্দিনের পুত্র। তাকে গণেশ সিংহাসনে বসান।
সেক্ষেত্রে আবার নয়ন তারাকে বিয়ের ব্যাপারটা মিলছে না।সে তো তার নিজের বোন।

নাহ, আর ভাবতে পারছি না। মাথা ঘুরতেছে। এক রাজা গণেশের উপর নিয়া সব খুনখারাবির দোষ দিয়া রাখছে৷

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার মাথাও আউলাইলো আমারটাও আউলায় দিলেন!!!!
এইটা কি কইলেন যুদু মানে জিৎমল মানে জালালুদ্দিন কেন গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ্‌ এর পুত্র হবে?
সে নিশ্চিতভাবে গনেশবাবুর সন্তান। পরের পর্বে খোলসা হবে। তাঁর মাতার নাম 'ত্রিপুরা সুন্দরী' তিনি নিশ্চিত গনেশের স্ত্রী ছিল।

গনেশ খুন করেছে না অন্দর মহলের রাণীর ইশারায় খুন হয়েছে সেটা এক ধাঁধা!!

১৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:১৩

সোহানী বলেছেন: ইতিহাস আমার বিষয় না কিংবা খুব যে আগ্রহ আছে তাও না। তবে আপনার কঠিন পরিশ্রমকে স্বাগত জানাই।

আমার ছেলের প্রিয় বিষয়। এবং তা নিয়েও পড়াশোনা করছে :-B । এবং বেশ কিছু লিখালিখিও তার আছে ইতিহাস নিয়ে। এবং একটা ইতিহাস ভিত্তিক নাটক লিখে তা মঞ্চস্থ করেছে গত বছর।

আজকে তার সাথে আলোচনা করবো এ বিষয়গুলো নিয়ে। তবে সম্ভবত কিছু কারেকশান আছে এসব নিয়ে।

তবে আপনি কার কথা বিশ্বাস করবেন?? সে সময়ের সত্যিকারের ইতিহাস জানা অসম্ভব। কারন বিজিতই ইতিহাস লিখতো.................

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১

শেরজা তপন বলেছেন: এর আগেও জেনেছি আপনার বেটার ইতিহাসে বেশ আগ্রহ। আগ্রহ আমারও খুব কিন্তু এবিষয়ের ছাত্র ছিলাম না বলে আগে তেমন কিছু জানা হয়নি। সবকিছু এখন নতুন করে জানছি।
তাঁর মাধ্যমে নতুন কিছু জানলে কিংবা কিছু কারেকশন থাকলে অবশ্যই জানাবেন- অপেক্ষায় রইলাম...

১৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: *পুত্র বানানটা ভুল লিখেছি উপরের কমেন্টে।

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: এইটা একটা ব্যাপার হইল 8-|
তবে এমন ভুল করে দোষ স্বীকার করলে আমার মন্তব্যের পরিমান বাড়তে থাকবে- ব্যাপারটা খারাপ না :`>

১৭| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৪০

ধুলো মেঘ বলেছেন: মুসলিম শাসক মাত্রই দাড়ি থাকতে হবে - এরকম ভাবার কি কারণ? সম্রাট আকবর বা জাহাঙ্গীর - এরা কি মুসলিম শাসক ছিলেন না? তথাপি এদের কোন শশ্রুমন্ডিত ছবি কেউ কখনও এঁকেছে? মারাঠা রাজা শিবাজি রাও পেশোয়া কেবল হিন্দুই নন - চরম মুসলিম বিদ্বেষী ছিলেন? তার দাঁড়ি ছাড়া কোন ছবি কোথাও কখনও পাওয়া গেছে?

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক তাই- দারুণ কিছু রেফারেন্সের জন্য ধন্যবাদ।


* তবে প্রশ্নগুলোতো আমাকে করেন নাই নাকি? আমিই কিন্তু এর উত্তরগুলো খোঁজার চেষ্টা করছি।

১৮| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:১০

টবগমৃুাপৃসত বলেছেন: This is a crazy period in Bengali history. I never knew about Raja Ganesha's influence or the conflicting accounts of who killed whom. https://fnfgo.org

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: সম্ভবত আপনি প্রথম আসলেন আমার ব্লগ বাড়িতে। লিঙ্কটা সম্ভবত কোন গেম সাইটের- নাকি?
আপনি কি সেটা প্রমোট করছেন না ডেভলপার?

অনেকেই বাংলার এই সময়কালের কথা জানে না। আমিও কয়েক মাস আগে জানতাম না তেমন একটা।

১৯| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: টিকাঃ গণেশের জন্ম একটাকিয়ার ভাদুড়ি বংশে। এরা বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ, এবং এরা মুসলমান শাসকের পুরোনো কমপ্রাদর। ''কমপ্রাদর'' জিনিসটা কি? আপনার গবেষণা থেকে মনে হলো, রাজা গনেশ আসলে একজন সাইকোপ্যাথ ছিল। ক্ষমতার জন্য হেন কাজ নাই, যা সে করতে পারতো না। একাধিক সুলতান হত্যা স্বাভাবিক কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে, কিন্তু ক্ষমতার জন্য মুসলমান নারীর সাথে প্রেম, বিশেষ করে নিজের ছেলেকে মুসলমান বানানো স্বাভাবিক না। ব্যাটার কাজ-কারবার বড় রহস্যময়!!

রাশিয়াতে থাকাকালীন আপনের কার্যকলাপ নিয়া ব্লগের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছে আগে। সেই সময়ে কোনভাবে কেজিবি'র সাথে জড়িত ছিলেন নাকি?এই পোষ্টে আপনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেইখা আমার মনে এই প্রশ্নের উদয় হইলো। =p~

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৫

শেরজা তপন বলেছেন: কমপ্রাদর অর্থ আমিও বুঝি নাই- তবে ভেবেছিলাম আপনাদের মত ঋদ্ধ ও বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গগণ বুঝিবেন। কিন্তু এর অর্থ জিজ্ঞেস করিয়া এখন বড়ই চেঙ্গীর মধ্যে ফেলিয়া দিলেন!
যাহোক অবশেষে বাংলা অভিধান, এ আই,কপিলট উদ্ধার করতে না পারলেও 'তমাল দাশগুপ্ত' সহ কিছু সাহিত্যিকগন আমাকে কিঞ্চিৎ উদ্ধার করেছেন।
কমপ্রাদর—আধুনিকতার জাতশত্রু, চক্রান্তকারী ! মুৎসুদ্দি বুর্জোয়া
***
প্রেমতো আর হিন্দু মুসলিম কৃশ্চান রমণী দেখে হয়না- এখানে তাঁকে সাইকোপ্যাথ না বলে রহস্যময় চরিত্র বলাটাই যথোপযুক্ত।
তবে সে সম্ভবত এতগুলো খুন করে নাই- পরের পর্বে আমি বিষদ আলোচনা করার চেষ্টা করব এ নিয়ে। পুরো বিষয়টা সম্ভবত নারী আর ক্ষমতা নিয়ে- ধর্ম এখানে শুধু আই ওয়াশের ব্যাপার ছিল সম্ভবত।

কেউ কেউ বলে আমি নাকি আদম ব্যাবসা করতাম( এর থেকে নীচেও খানিকটা নামতে চায় অনেকে ব্লগ বলে বলে না হয়তো) আপনি বানাইলেন গুপ্তচর। আহা আর কত যে প্রফেশান হইব :)
তাও ভাল লেখা বেইচ্যা পেট চালাই না- আপনি এইবার ক্ষুর চালান নাই দেইখা বড়ই আশ্চাম্বিত হইলাম!!

২০| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:০১

সত্যপীরবাবা বলেছেন: "গণেশই প্রথম সত্যপীরের সিন্নি প্রচলন করেন, হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সাংস্কৃতিক অভিন্নতা প্রচলনের স্বার্থে"
বিচক্ষন লোক, তার হিন্দু-মুসলিম দুই স্ত্রী (উপ-পত্নী) ও সম্ভবত রাজনৈতিক কারনে।
নিজের নাম দেখে আপ্লুত হলাম।
(আদম ব্যবসা, গুপ্তচরগিরির পরও এত সময় পান কই?)

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: আমার কেন যেন মনে হচ্ছে আপনি সেই পুরনো 'সত্যপীরবাবা' নতুন করে এসেছেন- যার এক সময় নিয়মিত বিচরণ ছিল এই সামুব্লগ জুড়ে, তাই কি?
ঠিক বলেছেন, সম্ভবত এই গনেশই সত্যপীরের সিন্নী প্রচলন করেন। তবুও মুসলিম ইতিহাসবিদেরা নানাবিধভাবে এই রাজার তুলোধুনো করেছেন। তাঁকে নিয়ে সঠিক ইতিহাস লেখা হয়নি। দুই পক্ষই দ্বিধান্বিত ছিল!

* আমি খুব এলোমেলো মানুষ। একটা বিষয় নিয়ে খুব বেশী সময় ধৈর্যধারণ করে থাকতে পারি না তাই দ্রুত সেই কাজ শেষ করার চেষ্টা করি। প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি হলেও ( অনেকে গোস্যা করলেও আমি বাক্য ব্যাকারনগত ও বানান বিষয়ক ভুল নিয়ে) খুব বেশী মাথা ঘামাই না, যতটুকু সময় সেই বিষয় নিয়ে থাকি একান্তভাবে মনোযোগ দেবার চেষ্টা করি। মাথার ভুত না নামানো পর্যন্ত শান্তি পাই না।
আগের পর্ব আর এই পর্বের মধ্যে প্রায় দুই সপ্তাহের ফারাক- ৫০/৬০ বছরের জীবনের জন্য দুই সপ্তাহ অনেক সময় ( এর মধ্যে মোট ত্রিশ ঘন্টা আমি ব্যয় করেছি এই লেখার পেছনে)।

২১| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:৩৮

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: তাহলে মনে হয় ভুল ভাবলাম। জালালউদ্দিন কি তাহলে ত্রিপুরা সুন্দরী আর গনেশের ছেলে?

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৪:৩৩

শেরজা তপন বলেছেন: হ্যাঁ সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। এখন কি মাথার জট খানিকটা খুলল?

২২| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৫:৩৮

সোহানী বলেছেন: ছেলের সাথে কথা হলো এ নিয়ে। সে বললো,

অতি পুরোনো ইতিহাস ভেরিফাই করা কঠিন। যেমন, আলেকজান্ডার এর ইতিহাস পাই তার পালা ৬ জন লেখক ছিল। সে ৬ জনের মাত্র ১ জনের লিখা পাওয়া গেছে। যার কারনে সত্য মিথ্যা জানার কোন উপায় নেই। যা লিখা আছে তাই ইতিহাস ধরা হয়। কিন্তু মধ্য যুগ বা যে ইতিহাস নিয়ে আপনি বলছেন তার প্রচুর সোর্স আছে সত্য মিথ্যা জানার। বিকল্প লিখা আছে এবং তারা যখন এ নিয়ে পড়ে তখন আগে সোর্স দেখে। তারপর কাউন্টার করে তা থেকে। তবে সে বলেছে যে, ইতিহাস জানতে ভুলেও যেন উইকি না দেখে। উইকি ভুলে ভরা এবং আর বায়াসড্।

যাকগা.... বক্তব্য পৈাছে দিলাম ;)

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ তথ্য শেয়ার করার জন্য।
তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মকে বার্ড, এ আই এর প্রযুক্তি কি ইতিহাস শেখাবে?

২৩| ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার। পোষ্ট তৈরি করতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে আপনার বুঝা যাচ্ছে।

অনেক কিছুর গরমিল লক্ষ করা যাচ্ছে বিশেষ করে গিয়াস উদ্দিন আর তার পুত্রের বয়সের গরমিল চোখের পরারমত। আমাদের ইতিহাসবিদদের এখানে কিছুটা দায় আছে, এই ধরনের তারতম্যের সঠিক ব্যাখ্যা প্রয়োজন। তখনকার মুদ্রা, আগে বাঁ পরের ঘটনা বিবেচনা করা, তখনকার সময়ে যারা ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছিলেন সেই সোর্সগুলো ক্রস চেক করে আমাদের ইতিহাসবিদরা কিছু ঘটনার অন্তত একটি লজিকাল ব্যাখ্যা করতে পারেন হয়তবা যদি চান!

বিস্তারিত তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।


২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:০৯

শেরজা তপন বলেছেন: ফের আপনার মন্তব্য পেয়ে প্রীত হলাম।
অবশ্যই আমাদের ইতিহাসবিদদের দায় আছে -তারা মাত্র ছ'য়শ বৎসরের পুরনো ইতিহাসে যদি এমন গোলমাল পাকিয়ে ফেলেন তবে কেমন হবে!! এরপরে বাংলার এমন গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। বাঙ্গালী বলে বেশি কাজে লবডঙ্কা!

আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন।

২৪| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: জালালউদ্দিন এর জট না হয় খুলল। বাকিগুলোর সময় টময় মিলতেছে না। আর ত্রিপুরা সুন্দরীকে নিয়ে পরবর্তীতে লিখবেন?

২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১১

শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ঘেটেঘুটে ত্রিপুরা সুন্দরী আর আসমান তারা'র খানিক হদিস মিলেছে। তবে কতটুকু সত্য তা নির্নয় করা দুষ্কর!
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ-পরের পর্বে দেখা হচ্ছে।

২৫| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

রানার ব্লগ বলেছেন: ইতিহাস সাধারনত বীজিতের সাঙ্গোপাঙ্গরাই লেখে । তারা তাদের মতো গোজামিল দিয়ে লেখে। এতে অতিরঞ্জিত অনেক কিছুই থাকে। আপনি এই সব নিয়েকম নাড়াচাড়া করুন বলা যায় না ইতিহাসের পাজি ভুত আপনার ঘাড়ে চড়তে পারে ।

আমার একটা প্রশ্ন আছে । ইতিহাসের প্রায় সকল রাজা অত্যাচারী, লালসা গ্রস্থ, নারি লিপ্সু ছিলো কিন্তু এদের কবর কে মাজার টাজার বানিয়ে হুলুস্থুল করার কি আছে ?

২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: এখানে কার পক্ষে কে কথা বলছে এইটাই বের করা মুশকিল। কেউ কেউ রাজা গনেশকে তুলোধুনো করছে কেউবা তাঁকে সেরা রাজা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে কুন্ঠাবোধ করছে না। কেউ তাঁকে মুসলিম বিদ্বেষী বলছে কেউবা দারুণ ধর্ম সহিষ্ণু বলছে।


তবে সব রাজা বাদশা এমন ছিলেন তা নয়। ভাল মানুষ ছিলেন কিছু অবশ্যই। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে এইসব সমাধী,বেদী মাজার বিরোধী যদি সেটা ধর্মীয় উপাসনায় ব্যাবহৃত হয়।

২৬| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:১৫

শেরজা তপন বলেছেন: খুব ভাল কাজ করেছেন- এই সুবাদে একখানা মন্তব্য বেড়ে গেল আমার। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.