নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য, সুন্দর ও শান্তির জন্য,,,,,,,,

সেতুর বন্ধন

সম্পাদক, মাসিক ব্রাহ্মনবাড়িয়া ফিচার, সাংগঠনিক সম্পাদক কসবা প্রেসক্লাব, গীতিকার, কসবার গান

সেতুর বন্ধন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাহাড়ে ঊনকোটি মুখ

২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:২১





পাহাড়ে ঊনকোটি মুখ
===============================================================================
লোকমান হোসেন পলা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ডাকোটার বিস্তৃত অঞ্চল থেকে দেখা যায় মাউন্ট রাশমোর, যার চূড়ায় খোদাই করা রয়েছে সে দেশের প্রাক্তন চার প্রেসিডেন্টের মুখ। ১৪ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করেন প্রায় ৪০০ জন কারিগর এই মুখগুলি তৈরি করতে। ১৯২৭ থেকে ১৯৪২ সালের মধ্যে তৈরি হয় মাউন্ট রাশমোরের ওই চারটি মুখ। কিন্তু, ভারতের ঊনকোটির ইতিহাস বেশ ধোঁয়াশা।১৯৯৫ সালে আমি এই গল্প শুনেছি এবং দেখার জন্য আগ্রহী ও ছিলাম যদি ভারতে আমার প্রায় যাওয়া হয় কিন্তু ঊনকোটি যাওয়র সময় করে উঠতে পারেনি, ফেইজ বুকে কল্যাণে কৈলাসহর রাম কৃষ্ণ মহা বিদ্যলায়ের শিক্ষিকা শান্তশ্রী দিদি বিশেষ অগ্রহে সেখানে ও সফর সংগী বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল কায়ূইম, কলকাতার কবি শিশির দাশগুপ্ত,আগরলাতার কবি ড. মৃনাল দেবনাথ, তুলসী প্রকাশনীর, মালিক নিলোৎপল এর সহযোগিতায় যাত্রা শুরু।
ভারতের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য ত্রিপুরা। সবুজে মোড়া তার রাজধানী শহর আগরতলায় থেকে প্রায় ১৭৮ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে, ‘এক আশ্চর্য’ নির্মাণ শৈলী ।



আগরতলা থেকে ট্রেনে তিন ঘণ্টারও খানিক বেশি সময় লাগে। মসৃণ রাস্তার দু’পাশে ঘন জঙ্গল মনোরম। তারই মাঝে হঠাৎ হঠাৎ উঁকি দিচ্ছিল এক ধরনের বুনো ফুল। পাহাড়ি অঞ্চল, তাই এঁকেবেঁকে রাস্তা চলে গিয়েছে কৈলাসহর সাব-ডিভিশনের দিকে।কুমার ঘাট নেমে গাড়িতে যেখানকার বিশেষ দ্রষ্টব্য ও পর্যটন স্থল এই ঊনকোটি।
পাহাড়ের একটা বাঁকে গাড়ি থেকে নেমে কয়েক পা এগোলে আচমকাই চোখের সামনে ভেসে উঠবে এক অসাধারণ দৃশ্য। পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা বিশাল সাইজের নানা মুখ। ভালো করে দেখলে বোঝা যায়, সেগুলি বিভিন্ন হিন্দু দেবদেবীদের অবয়ব। তবে এই স্থানের মূল খ্যাতি শৈব তীর্থ হিসেবেই।
সঠিকভাবে এখনো জানা যায়নি, কে বা কারা এই কীর্তি স্থাপন করেছিল। তবে, লোকচক্ষুর আড়ালে থাকায় ঊনকোটির বেশিরভাগ মূর্তিই এখনো জঙ্গলে ঢাকা। ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ-এর দৌলতে এখন এই স্থান ‘ঐতিহ্য’র তকমা পেয়েছে। চার পাশ দিয়ে সিঁড়ি করা হয়েছে, যাতে পর্যটকরা অনায়াসেই ঘুরে দেখতে পারেন। ভবিষ্যতে এই স্থানের আরো উন্নতির লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে এই সংস্থা। ইউনেস্কোর কাছে ভারত সরকার প্রস্তাবও পাঠিয়েছে, ঊনকোটিকে ‘ওয়ার্
প্রসঙ্গত, দেবদেবীদের মূর্তিগুলি প্রচলিত মূর্তির মতো একেবারেই নয়। তাদের মুখের আদল ত্রিপুরার আদিবাসীদের মতো। এমনকী, তাদের সাজসজ্জাতেও রয়েছে সেখানকার ‘ট্রাইবাল’দের ছাপ।
ঊনকোটির আশ্চর্য এই পাহাড়-শিল্প দেখতে বছরের প্রায় প্রতিদিনই ভিড় জমান পর্যটকের দল। কখনো তারা যান ভিন্ন রাজ্য থেকে, কখনো থাকেন স্থানীয়রাই। এখন পর্যন্ত কোনো প্রবেশমূল্যের প্রয়োজন হয় না। তবে, সতর্ক নজরদারি রয়েছে পাহাড় জুড়ে।
হিন্দু দেবদেবী মানেই পৌরাণিক গল্প। সঙ্গে লোকগাথা। ঊনকোটিও বাদ পড়েনি সেই পরম্পরা থেকে। এ স্থানের নামকরণ নিয়ে রয়েছে তেমনই দুটি গল্প—


ঊনকোটি নাম গল্প-১
মহাদেবসহ এক কোটি দেবদেবী কাশীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। দেবাদিদেব নিজেই ছিলেন সেই যাত্রার নেতৃত্বে। ত্রিপুরার এই বনাঞ্চলে পৌঁছলে রাত নেমে আসে বলে, তিনি সকলকে এ স্থানেই বিশ্রামের জন্য আদেশ দেন। সঙ্গে এও বলেন যে, পর দিন সূর্যোদয়ের আগেই সকললে ঘুম থেকে উঠতে হবে।

কিন্তু দেবদেবীদের কেউই সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠতে পারেননি। অগত্যা, মহাদেব একাই রওনা দেন কাশীর পথে। তবে যাওয়ার আগে তিনি অভিশাপ দেন, যার ফলে সকল দেবদেবীই পাথরের হয়ে যান। সত্যি মিথ্যে যাই হোক, পৌরণিক গল্পের এক অদ্ভুত মজা রয়েছে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলেই মন ভরে যায়।
ঊনকোটি নাম গল্প-২

পৌরাণিক গল্পের পাশাপাশি, যেকোনো জায়গার লোকগাথাও সমান রোমাঞ্চকর হয়। ঊনকোটির তেমনই এক গল্পের নায়ক হল কালু কামার। পেশায় যে ছিল ভাস্কর।
দেবী পার্বতীর এই ভক্তের খুব ইচ্ছে ছিল যে, সে তার আরাধ্য ভগবানের সঙ্গে কৈলাসেই থাকে। এবং পার্বতীও সে ব্যাপারে সম্মতি দেন। কিন্তু, মর্ত্যলোকের বাসিন্দাকে তো আর কৈলাসে থাকার অনুমতি দেওয়া যায় না! তাই ভেবেচিন্তে একটি ফন্দি করেন মহাদেব। তিনি কালুকে বলেন, তার ইচ্ছে তখনই পূরণ হবে যদি সে এক রাতের মধ্যে এক কোটি শিবের মূর্তি তৈরি করতে পারে।

মন-প্রাণ দিয়ে কাজ করেও কালু সেই অসাধ্য সাধন করতে পারেনি। সকালবেলা মহাদেব গুণে দেখেন যে, আর একটি মূর্তি তৈরি করতে পারলেই কালুর কৈলাস যাওয়া নিশ্চিত ছিল। অর্থাৎ এক কোটির চাইতে একটি কম মূর্তি তৈরি করেছিল কালু। তাই এই স্থানের নাম ‘ঊনকোটি’।



যেভাবে যাবেন:
সড়ক পথে: আগরতলা থেকে সড়কপথে দূরত্ব ১৭৮ কিলোমিটার। কেবলমাত্র যাওয়া আসার সময় লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা।
রেল পথে আগরতলা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে কুমার ঘাট রেল স্টেশন। এখান থেকে গাড়িতে পৌছে যাওয়া যায়। কৈলাসহরে থাকর বেশ কয়টি রেস্ট হাউজ ও হোটেল রয়েছে, আমরা ছিলাম নির্মলা হোটেলে শান্তশ্র্রী দিদি আমার জন্য এসি রোমোর ব্যাবস্তা করে রেখেছিলেন। শান্তশ্রী গাইড় না করলে আমরা এতো সুন্দর করে ঊনকোটি ও কৈলাসহর দেখা হতো না,শান্তশ্রী দিদির বর মুনো ভ্যালি চা বাগানের কর্মকতা শ্যামল দাশগুপ্ত দাদা আমাদের কে রাতের খাওয়ালেন সব মজাদার খাবার। কৈলাসহর প্রেসক্লাবের সকলে প্রতি গভীর ভালোবাসা, কারন উনাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ আমরা।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: দারুণ তথ্যবহুল পোস্টটি পড়ে ভাল লাগল।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: দারুণ তথ্যবহুল পোস্টটি পড়ে ভাল লাগল।

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: দারুণ তথ্যবহুল পোস্টটি পড়ে ভাল লাগল।

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

সেতুর বন্ধন বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৫:৫৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: বেশ তথ্যবহুল সুন্দর লেখা । Ashokastami Mela উনকোটিতে বছরের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত অশোকাষ্টমী মেলাতে একবার যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল । সে অবশ্য অনেক দিন আগের কথা, তবু সেখানকার পাথরে খোদাই করা ভাস্কর্যগুলির কথা আজো মনে গেথে আছে । উনকোটি মানেইতো হলো কোটি থেকে এক কম , সে হিসাবে উনকোটির নাম প্রসঙ্গে এ পোষ্টে তুলে ধরা গল্প-২ টিই যতাযথ বলে মনে হয় আমার কাছে । আসলে্ সেখানে রয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য :


গণেশের মুর্তী


উনকোটিশ্বরা- কাল- ভৈরবা

ছবিসুত্র : গুগল

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ।

০৪ ঠা মে, ২০১৮ রাত ১০:৫৪

সেতুর বন্ধন বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্টে এসে এতো সুন্দর মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.