নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ সোহাগ (A sinner slave of Allah) 2. সভ্যতার অসংগতি তুলে ধরার চেষ্ঠা করি ।\n

স্বপ্নবাজ তরী

প্রতিনিয়ত সৎ থাকার চেষ্টার যুদ্ধে লিপ্ত একসৈনিক

স্বপ্নবাজ তরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নির্বাচন, নেতা ও ছ্যলা

২৯ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮

২০০১ সাল। আমার বয়স তখন ৯ বছর। প্রথম নির্বাচন ব্যপারটার সাথে পরিচয়। দল বলতে দুইদল আওয়ামীলীগ এবং চারদলীয় ঐক্যজোট। নৌকা, ধানের শিস, দাঁড়িপাল্লা। আমাদের এখানে নৌকা আর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে দুইজন দাঁড়ায়।
স্কুল ছুটির পর বিকালে বন্ধের দিন সারাদিনই খেলার পরিবর্তনে মিছিল করতাম। "আমার ভাই তোমার ভাই অমুক ভাই অমুক ভাই " অমুক ভাইয়ের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র" "ওওই মার্কা আছে নিরেরররর(টান হবে),কোন সে মার্কা, অমুক " এমন মুখরোচক স্লোগান দিয়ে মিছিল করতাম।কখনও নৌকার কখনও দাঁড়িপাল্লার। বিনিময়ে চট্রগ্রামের বিখ্যাত বেলা বিস্কুট দুইখান কিংবা খাস্তা বিস্কুট পাইতাম। অনেক সময় দেখা যেত পোলাপান আকর্ষণ করার জন্য লাঠির মধ্যে বেলা বিস্কুটের প্যাকেট বেঁধে মিছিল হত এতে পোলাপানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইত।
নির্বাচনের দিন ছিল অনেকটা উৎসবের মতো। বড়রা সারারাত ধরে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকত ফলাফল জানার জন্য।
আমরাও বসে থাকতাম তবে ফলাফলের জন্য না ছায়াছবি দেখার জন্য। বিটিভি রাতে নির্বাচনি ফলাফল দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে ছবি দেখাত।
সেই সব এখন গল্প। এলাকায় ফিট বিস্কুটের কবলে বেলাবিস্কুট এখন অমাবস্যার চাঁদ। বেলা বিস্কুটের মতো আমাদের নির্বাচনের মিছিলের ধরনেও এসেছে পরিবর্তন। বর্তমান পোলাপান এখন অনেক স্মার্ট, বেলাবিস্কুট তাদের কাছে অানস্মার্ট খাবার। বমিবমি ভাব হয় তাদের। ফেসবুক আর হোয়াটর্আপের চ্যাট বক্সে, সেলফি, কুলফি, চুলফি, বলফি, গরুফি তুলায় তারা ব্যস্ত। তাই প্রার্থীরা প্রচরণার জন্য অাশ্রয় নিয়েছে রেকডিং এর কাছে। রেকর্ড করা প্রার্থীর প্রশংসা সংবলিত জিনিস বাজিয়ে বাজিয়ে প্রচারণার কাজ শেষ করতে হচ্ছে। প্রচারণা চলছে পোস্টার, পত্রিকা,টেলিভিশনেও। যুব সমাজকে আকর্ষণ করতে ফেবুতেও চলছে প্রচারণা।

পরিবর্তন এসেছে ভোটদানের ধরনেও। আগে মানুষ ভোট দিত নিজে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে এখন না গেলেও চলে। আগে স্লোগান ছিল, "আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব।" এখন স্লোগান হল, "আপনার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব।"
বিস্কুটের বদলে এখন মিছিল মিটিং শেষ টাকা ছিটানো হয়। শুধু সময়ের অপেক্ষা কিছুদিন পর টাকার বান্ডেল লাঠির মধ্যে বেঁধে মিছিল করা হবে। যার বান্ডেল যত মোটা মিছিলে লোকসংখ্যাও সেদিকে বেশি হবে।
চলছে কুসিক নির্বাচনের প্রচারণা কার্যক্রম। অাত্মপ্রংশসা যে মানুষ এতটা নির্লজ্জের মতো করতে পারে তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না। এক মহিলা ওর্য়াড কমিশনার নির্বাচন প্রচারণার লিফলেটের মধে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দাদা শ্বশুড়, দাদী শ্বাশুড়ির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও বনর্না করেন শুধুমাত্র উনাকে একবাবের মত বিশ্বাস করার জন্য। নিজের আত্মবিশ্বাসের এতটাখাদ রেখে অন্যের বিশ্বাস কতটুকু টানা যায় তা নির্বাচনের পরেই জানা যাবে।
আমি সিটি কর্পোরেশনের ভোটার না। ঐদিন দেখি আমার এলাকার কিছু ছেলেমেয়ে নির্বাচনি প্রচারণা করছে। জিজ্ঞাস করার পর জানতে পারলাম, উপর থেকে অর্ডার তাই দলীয়প্রার্থীর ওয়ার্ক করতে এসেছে এবং তাদের নাকি নির্বাচনের দিন ওমুক ওয়ার্ডের দায়িত্বও পড়েছে। ব্যপারটা যতটা হাস্যকর যেমন তেমনি ভয়ংকরও বটে যদি এরা লাঠিয়াল বাহিনীর দায়িত্ব পালন করে তবে কি সুষ্ঠু নির্বাচনের অাশা করা যায়?
নিজের জনপ্রিয়তা না থাকলে দলীয় জনপ্রিয়তা, ক্ষমতার মাধ্যমে যদি এই ভাবে জনপ্রতিনিধি নিবার্চিত হতে থাকে তবে এই সকল জনপ্রতিনিধি কতটা জনসাধারণের জন্য কাজ করবে সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হল। নির্বাচনের দিন সকল অফিস আদালত খোলা ছিল। কারণ ঐ দিন কোন সাধারণ ছুটি ঘোষনা করা হয়নি। আর সামান্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কে সামনে রেখে আগামীকাল সকল স্কুল কলেজ, ব্যাংকে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। এই হচ্ছে অাজিব দেশে আজিব কর্মকান্ড।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫৩

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।শুধু নির্বাচনী প্রচারণাই নয়,দেশের সকল জায়গাতেই ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।তবে সকল পরিবর্তন সুফল নিয়ে আসেনা,তা আমরা আবারোও উপলব্ধি করার সুযোগ হলো।
আগে মানুষ প্রচারণা করত বেলা বিস্কুটের আশায়,আর এখন করে টাকার লোভে।

২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: এদেশে নির্বাচন মানেই টাকা আর ক্ষমতার প্রদর্শনী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.