নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ সোহাগ (A sinner slave of Allah) 2. সভ্যতার অসংগতি তুলে ধরার চেষ্ঠা করি ।\n

স্বপ্নবাজ তরী

প্রতিনিয়ত সৎ থাকার চেষ্টার যুদ্ধে লিপ্ত একসৈনিক

স্বপ্নবাজ তরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ আমার একটি দুঃখ আছে

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১৭

আমি অনিক আহমেদ। হাঁটতে হাঁটতে কখন যে ক্লান্ত হলাম ঢেরই ফেলাম না। চারদিকে মানুষ আর মানুষের পদযাত্রার ধ্বনি মোহাবিষ্ট করে রাখে আমায়। রাস্তার পাশের ঢং দোকান থেকে একবোতল পানি কিনে নিলাম। ডগডগ করে পান করতে যাবো তখনই দেখি এক শীর্ণাকার শিশু জামা ধরে টান দিল। আড়চোখে রাগী ভাব নিয়ে তাকাতেই জামা ছেড়ে পাশ কেটে চলে যাচ্ছিল শিশুটি। তার চলে যাবার পথের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে পকেটে হাত দিয়ে দেখতে থাকি কতটাকা আছে। সাথে পাঁচ টাকার আদলা একটাও খুঁজে পাই। শিশুটিকে ডেকে দিবো ভাবতে ভাবতে দেখি জনসমুদ্রে এরই মধ্যে সে হারিয়ে গেছে। মানুষের ভাবনার চেয়েও মানুষের ভাগ্য এগিয়ে থাকে। প্রচন্ড রোদে এরমধ্যেই আমি ঘেমে একাকার। শিশুটি চলে যাবার পরই মনে পড়ে যায় গতবছের ঘটনা। তুলনা করতে থাকি ঐ শিশু আর এই শিশুর মাঝে। খুঁজতে থাকি তাদের দুজনার মাঝের মিল অমিল। নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়, মনে হয় এমন কেন হলো, ইশ এমন যদি না হত, তবে আজ আমি আরো সুখি হতাম। আমি নিশ্চিতে হাঁটতে পারতাম, ঘুরতে পারতাম, হাসতে পারতাম, খেতে পারতাম, প্রেয়সীর হাতে হাত রেখে বলতে পারতাম, আমি সুখি, তার চোখে খুঁজে নিতাম আমার গন্তব্য আর হারানো অতীত। বোতলের মুখটি দুই আঙুলের মাঝে আটকিয়ে দোলাতে দোলাতে এগিয়ে যাচ্ছি আমি, আমার পথ যেন শেষ হয় না, আমার গন্তব্য যেন অস্পষ্ট, অসীম, পথের শেষ প্রান্তে আমার অপেক্ষায় যেন কেউ নেই। হঠাৎ এই জনসমুদ্র যেন জনবিচ্ছিন্ন মরুভূমি মনে হচ্ছে। আশে পাশের সব দেয়াল, গাছ পাখি যেন বড়ই দুঃখী। পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের ব্রাইব্রেশনে আমার ঘোর কাটে। ফোন রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে শীলা বলে, " আপনি কোথায় আছেন?"
-- রবিন্দ্র পার্কের উত্তর পাশের রাস্তায়।
একমাস আগে শীলা আমাদের অফিসে জয়েন করে। তারপর থেকে শীলার সাথে প্রায় অফিস সময়ের বাহিরে দেখা করি। কারণে অকারণে দেখা করা। শীলার পরিবার পারিবারিক ভাবে সম্পদশালী। এত ছোট জব শীলা না করলেও চলে কিন্তু জেদি মেয়ে চাকরি করবেই। শীলা আসবে, আমাকে চাকুরি নিয়ে জ্ঞান দিবে। কেন সরকারি চাকুরির জন্য চেষ্টা করছি না? কেন পরীক্ষা দিচ্ছি না? কেন জীবন নিয়ে সিরিয়াস হচ্ছি না? এমন আরো হাজারটা প্রশ্ন নিয়ে সে প্রতিনিয়ত হাজির হয়।
শীলার আমার প্রতি এই অদ্ভুত মনোযোগ, আগ্রহ, আমাকে নিয়ে তার মনোজগতনরর র ্ র গত চিন্তা আমাকে ভাবায়, আমাকে তাকে নিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে, আমাকে সাহসী করে, আমার চারপাশের সব জঞ্জাল কে নিমেষে অদ্ভুত আকর্ষণী করে তুলে। আমার সব দুঃখ আমার সব চাওয়াকে অসহনীয় করে তুলে, আমাকে ত্বারিত করে অসহনীয় প্রেমের প্রতি। কিন্তু তবুও আমি শীতল সরীসৃপ প্রাণীর মত নিশ্চল, নিঃশব্দে তার পাশে বসি, তার চোখে চোখ রাখি, ভোরের চড়ুই পাখির মত শ্রুতি মধুর কিচিরমিচির অভিমানী শব্দ নিঃসঙ্কোচে শুনি। মাঝে মাঝে মনে হয় শীলা আমায় ভালোবাসে আবার নিজেকে প্রশ্ন করি শীলা আমাকে কেন ভালোবাসবে? আমার নিজের চলার মত একটা অবস্থা আছে কিন্তু তা খুবই ভঙ্গুর। এতটাই ভঙ্গুর যে, হালকা অসুখ বিসুখ কিংবা অভাবের ঝড়ে বা মূল্যস্ফীতির আঘাতে ভেঙে পড়বে সহজেই।
রিক্সা থেকে নেমে আমার পাশে হাঁটতে থাকে শীলা। আমরা দুইজনেই নিশ্চুপ। কেন নিশ্চুপ তার কোন কারণ নেই আবার সুখী প্রেমিক-প্রেমিকার মত অট্টহাসিতে কথা বলতে বলতে হাতে স্পর্শও করা যাচ্ছে না। আমাদের সম্পর্কের যেমন কোন নাম নেই, আমাদের এই নিশ্চুপ থাকারও কোন কারণ নেই। তবুও আমরা হেঁটে যাচ্ছি, সামনের মোড়ে অতিক্রম করে আমাদের পা দুটো দাঁড়ায় শতবর্ষী আম গাছের নিচে। কথা চলতে থাকে বহমান নদীর স্রোতের মত। কথার ঝুড়ি খুলে বসে শীলা। আমিও।
আমিও বলি, আমার একটা দুঃখ আছে। যে দুঃখ আমি কাউকে বলতে পারছি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে ঘটনাটি মনে পড়লে। মনে হয় পৃথিবীর সব কিছু মিথ্যে, সব কিছু ধূসর। সেই ঘটনার পর আমি রঙের পার্থক্য ভূলে গেছি, সব কিছু অস্পষ্ট, মিথ্যে মনে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমি এখনও ঘুমিয়ে আছি, ঘুম ভাঙলেই সেই দুঃস্বপ্নের মত ঘটনাটা আমার জীবন থেকে বিলীন হবে, আমার কষ্টের অবসান হবে। আমি আবারও মন খুলে হাসতে পারবো। কিন্তু না, তা হয় না। এমন যদি একটা অপশান থাকত, আমার জীবনের বিনিময় সেই ঘটনার ক্ষতিটি পুষিয়ে দেয়া সম্ভব তবে আমি তাই করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হতাম না।
শীলা আমার কথা শুনে বলে, "আমাকে বলেন ঘটনা টি কি? তাহলে অন্তত কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে?
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি," এই না বলতে পারাটাই আমার যন্ত্রণা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে?"
শীলা অনেকক্ষণ জোড়াজুড়ি করে, ঘটনাটি তাকে বলতে। কিন্তু সত্য হচ্ছে এটা আমি কাউকে বলতে পারছি না। হয়ত কখন বলতেও পারবো না। শীলার অভিমান বাড়তে থাকে, রাগ বাড়তে থাকে, সাপের মত ফুুসঁতে ফুঁসতে মুখ ফিরিয়ে বসে। আর আমি তার অভিমান ভাঙানোর মত কথা খুঁজতে থাকি, খুঁজতে খুঁজতে আমি ফিরে যাই শৈশবের মাঠে, কি সাধারণের ভেতর দিয়ে অসাধারণ এক জীবন কাটিয়েছি আমি, অভাব ছিল, হাড় কাঁপানো শীতের মত প্রচন্ড ক্ষুধার তাড়না ছিল, শীর্ণকায় এক জীবনের ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠার মাঝেও সুখ ছিল, কষ্ট ছিল, দুঃখ ছিল, কত অবলীলায় নিজের কষ্টের কথা বলতে পারতাম, কত অবচেতন মনে তা বলে বেড়িয়েছি আমি ক্ষুধার্ত, আমি খেতে চাই। কিন্তু আজ আমি কি ভীষণ এক দুঃখবোধ বহন করে চলছি, অথচ কষ্টটা আমার না, অন্য জনের। আমি চলার পথে বহুজনকে দুইটা প্রশ্ন করেছি, যার ভেতর দিয়ে জানতে চেয়েছি, এমন কষ্ট আর কেউ বয়ে বেড়াচ্ছে কিনা? হঠাৎ মনে হলো শীলাকেও প্রশ্ন দুটি করি। শীলা তখনও মুখ ফিরিয়ে আনমনে মোবাইল টিপে যাচ্ছে। আমি পরিবেশ কিছুটা স্বাভাবিক করার জন্য বললাম, "ঠিক আছে আমি তোমাকে আমার দুঃখের কথা বলবো কিন্তু তার আগে আমার দুটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হবে তোমাকে। সে উদগ্রীব হয়ে তাকায়, প্রশ্ন দুটো শুনতে এতটা আগ্রহ দেখাবে ভাবি নি। " কি প্রশ্ন বলুন এখনই উত্তর দিচ্ছি?" শীলা বলে উঠে।
--- দেখ এই প্রশ্ন দুটো আমি বহুজনকে জিজ্ঞেস করেছি। সঠিক উত্তর কেউ দিতে পারেনি। সবাই হুটহাট করে মনে যা এসেছে তাই বলে দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন দুটো খুবই সহজ। শুধু মন থেকে উত্তর দিতে হবে। বিচার বিবেচনা কিংবা মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না।"
আমার এই দীর্ঘ ভাষণ শুনে সে বিরক্ত হয়। তারপর প্রশ্ন দুটো বলার জন্য তাগাদ দেয়।
--ওকে, প্রথম প্রশ্ন তোমার জীবনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত কোনটি? দ্বিতীয় প্রশ্ন, তোমার জীবনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্ত কোনটি?
শীলা কয়েক সেকেন্ডের জন্য পুরোপুরি চুপ হয়ে যায়। তার নিউরনের ত্বারণা তার চোখের অভিব্যক্তিতে বুঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে সে খুঁজে বেড়াচ্ছে কোনটি রেখে কোনটি বলবে। এই দৃশ্য দেখতে খুব খারাপ লাগছে না। এই দৃশ্য আমি আরো কয়েকজনের চোখে মুখে আগেও দেখেছি। এই যে খুঁজতে থাকা, এই যেন অসীম কোন পথ। আমি তার এই অস্থিরতা দেখে বললাম, ঠিক আছে তুমি ভেবে চিন্তে কাল উত্তর দিলেই চলবে। সে আরো ত্বারণা অনুভব করে, বড়ঘরের মেয়েরা জেদি হয়, সেও জেদি, তার রাগ হচ্ছে কেন সে উত্তর দুটো দিতে পারছে না। আমি তখনও তার চোখের দিকে তাকিয়ে ভাবছি কয়েকদিন আগের ঘটনা, রিক্সায় উঠে বটতলায় যাওয়ার পথে একই ভাবে প্রশ্নদুটো রিক্সাওয়ালাকে করি। সে কিছুটা স্মিতহেসে বলে, মামা সুখ কি তা বলতে পারমুনা কিন্তু যওন বৌ টা হাসতে হাসতে পাতে খাওন দেয়, ভালাই লাগে।দুঃখের কথা আর কি কমু, কোনটা রেখে আপনকে কোনটা কই? থাক মামা দুঃখের কথা বেশি মনে করন ভালা না।

রাত ১০টা। শীতে জমেছে সারা শহর। ভীষন একা আমি হেঁটে চলি ছাদের এপাশ থেকে ওপাশ। মোবাইল স্ক্রল করতে করতে মনে পড়ে রাবেয়ার কথা। কয়েকদিন ধরে ফেসবুকের মেসেঞ্জারে মেয়েটির সাথে কথা হচ্ছে। কথা বলে একবার মনে হচ্ছে পরিচিত আবার মনে হচ্ছে না অপরিচিত। মেয়েদের এই এক সমস্যা নিজের পরিচয় গোপন রেখে অন্য জনকে মায়ারজালে আটকানোর। কিন্তু আমাকে আটকানো একটু কঠিনই। রাবেয়া নিজের ব্যর্থ জীবনের দুঃখ ভুলতে বহুপুরুষকে তার মায়া জালে ফাঁসিয়েছে। তার দুঃখ সম দুঃখ অন্য জনকে বহন করতে বাধ্য করেছে। রাবেয়া তার দুঃখের কথা বলতে চায় আমায়। আমি রিকশা চালকের মত দুঃখের কথা কম শুনতে চাচ্ছি। তবু সে বলবে। বলতে থাকে তার দুঃখের কথা, তার প্রেমের কথা, পালিয়ে বিয়ের কথা অতঃপর সংসার ভাঙার কথা। তার দুঃখ যে বহমান নদী, গঙ্গা নদী। যা কখনই শুকিয়ে যায়নি। বরং দিনকে দিন বেড়েছে আর পাড় ভেঙে ভেঙে আরও বিশাল এলাকাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমার দুঃখ তার সাথে মিলে না, আমার দুঃখ একান্ত আমাকেই খুঁড়ে খুঁড়ে আমার অস্তিত্বকে গ্রাস করছে। আমার নিজস্বতা বিলীন করছে। আমি তাকেও প্রশ্ন দুটো করি। তার অসীম দুঃখবোধ থেকে সেও সেরা দুঃখকে বেছে নিতে পারেনি। তার চলমান দুঃখের মাঝেও রয়েছে এক ধরনের প্রহসন যা তাকে টিকিয়ে রেখেছে।

শীলা প্রশ্ন দুটোর উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়ে কয়েকদিন কথা বলা বন্ধ রাখে আমার সাথে। শ্রাবণের আকাশে ঘন মেঘ জমে আছে। সূর্য মাঝে মাঝে মেঘ ফুঁড়ে উঁকি দিয়ে আবারও মেঘে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বারবার। শীলা মেসেজ করে জানতে চায় কি করি? আমি মেসেজ দেখে উত্তর না দিয়ে চুপচাপ মেঘ দেখি। মেঘের উপরে মেঘ স্তুপ হয়ে জমে পাহাড়াকার ধারণ করে। শীলা এতক্ষণে রেগে আগুন হয়ে আছে নিশ্চয়। আমি কল্পনায় শীলার চোখ দুটো দেখার চেষ্টা করি। তার টলমলে চোখজোড়া রাগে ক্লান্ত হয়ে আছে। কল বাজতে থাকে। আমি আকাশ দেখি। আকাশের মেঘের ভেলায় আমার দুঃখ দেখি, সে উড়ে যাচ্ছে কিন্তু চোখের আড়াল হচ্ছে না। কী ভীষন দুঃখ আমার, যন্ত্রণা আমার, ছাদ থেকে পড়ে গেলেই সব কিছুর দাঁড়ি কমা টানা হয়ে যাবে, জেনেও আমি ছাদে দাঁড়িয়ে শীলার উড়ন্ত চুল দেখি, দেখি শীলার পিছিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট সেই শিশুটিকে। আমি পরাজিত তবুও জীবিত। আমি কাঁদতে পারি কিন্তু কাউকে বলতে পারি না। তবুও আমি একান্ত সেই ঘটনার সাক্ষী।
রাত হয়। স্বাভাবিক নিয়মের রাত। প্রতিদিনকার রাতের মতই। মেসেজ আসতে থাকে নিয়ম করে। রাবেয়াও আমাকে তাড়া দেয়, আমার দুঃখ জানার। আমার কষ্ট কিছুটা সেও লাঘব করতে চায়। সেও চায়, আমি মন খুলে হাসি। রাবেয়া এখন আমার প্রতিদিনকার রুটিন। খাবারের মত। একদিন রাবেয়া উদ্ভুদ এক সমাধান নিয়ে হাজির হয়। সে আমাকে বলে, আগামীকাল থেকে তুমি সব দুঃখ ভুলে যাবে। আমি আগামীকালের জন্য অপেক্ষা করি,আমি নতুন সকালের জন্য অপেক্ষা করি। সকাল গড়িয়ে বিকাল হয়, বিকেল শেষে সন্ধ্যার আগমন ঘটে। ফোন বেজে উঠে। শীলার বিষন্ন মন আমি স্পর্শ করতে পারে এপাশ থেকে। শীলার উড়ন্ত হাসিখুশি বিলীন হয়ে একটুকরো দুঃখ বেসেছে বাসা তার হৃদয় কোণে। সবচেয়ে সুখী মুহূর্ত আর সবচেয়ে দুঃখী মুহুর্ত খুঁজতে খুঁজতে সে ভীষন ক্লান্ত। আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি পরের দিনের কথা বলি।
রাতের তারারা হেসে যাচ্ছে কলকলিয়ে। রাবেয়ার সাথে এতদিন আমি অডিও কলে কথা বলেছিলাম। আজ রাবেয়া ভিডিও কল দেয়। সে আমায় দেখতে থাকেও। আমিও৷ তার চুল ফ্যানের বাতাসে উড়ছে, ঠোঁটদুটো লাল টকটকে রঙে সেজেছে। তার দীর্ঘকায় কপালে কালো টিপ যেন একটুকরো পাহাড়। ঠোঁটের ভাঁজ যেন কোন শিল্পীর কারুকাজ। লাল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে নকশার সৌন্দর্য মলিন হয়ে যাচ্ছে রাবেয়ার যৌবনে কাছে। কত সময় এইভাবে ছিলাম মনে নেই। সময় যেন থমকে গেছে। তাঁরারা যেন মুখ লুকিয়ে গেছে রাবেয়া উড়ন্ত যৌবনের কাছে। আমার যখন হুঁশ ফিরে, তখন দেখি মোবাইল স্কিনে লাল শাড়ি পেচিয়ে দুইটি নিথর পা দোলছে। পায়ের লাল রঙের আলতা করা। বৃদ্ধাঙ্গুলির নখের আলতাটা লাইটের আলোতে ঝলঝল করছে।

কয়দিন কেটেছে এ ঘোরে জানি না। অনেকদিন পর। এক পূর্নিমা রাতে আমি আবারও মেঘের ভেলা ভেসে যেতে দেখি।দেখি সেখানে রাবেয়া, আর ঐ শিশুটি। দুরে দাঁড়িয়ে আছে শীলা। তার ভীষন দুঃখবোধ চোখদুটো নিয়ে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:০১

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর লেখা।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৪

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.