নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“There is a pleasure sure in being mad which none but madmen know.”― John Dryden
অনেক দিন পর সুমন নামে এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা। পেশায় উনি সাংবাদিক। অনেক দিন পর দেখা হওয়ায় অনেক গল্প শুরু হয়ে গেলো। গল্পের তালে আমি ওনাকে বললাম গাজীপুরে এক ফকির বাবা আছে, অনেক ক্ষমতা ওনার।
বড়োভাই মুখে একচিলতে হাসি নিয়ে বলল শুনি ওনার কি ক্ষমতা আছে?
-আমাদের অফিসের এক লোকের অনেক টাকা বাড়ি থেকে চুরি যায়, পরে ঐ ফকির বাবার সাহায্যে টাকা পাওয়া যায়।
-তাই নাকি, ঠিক আছে ঐ ফকির বাবার ঠিকানা যোগাড় কর সামনে সপ্তাহে যাব।
সত্যি সত্যি আমরা পরের সপ্তাহে বের হলাম সেই ফকির বাবার সন্ধানে। এর মধ্যেই আমি ঠিকানা নিয়ে রাখছি। আমরা যেখানে যাচ্ছি সেটা গাজীপুর বললে ভূল হবে। আমার ধারনা ছিলনা গাজীপুরে এমন গ্রাম দেখতে পাবো। গ্রাম পার হয়ে সামনে একটা ঘন জঙ্গল বন। বাড়ি কই!!!! দূরে একটা কুড়ে ঘর দেখা যাচ্ছে। আমি সুমন ভাইকে বললাম ঐটা মনে হয় ফকির বাবার বাড়ি।
বাড়ির সামনে খাদেম টাইপ এক লোক দাড়ায় আছে। আমাদের দেখে লোকটা দুটো চেয়ার আনে দিলো।
-বাবা এখন ধ্যনে আছেন, আধা ঘন্টা পর আপনাদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
সুমন ভাই আমার কানে ফিস ফিস করে বলল আমাদের দেখে শালা ধ্যনে বসছে, কতো বড়ো ভন্ড, আমাদের ইচ্ছে করে অপেক্ষা করাচ্ছে।
অবশেষে আমাদের আপেক্ষা শেষ হলো। খাদেম এসে বললো বাবা আপনাদের তলব করেছেন।
ঘরের ভেতরে ঢুকে আমি অবাক হয়ে গেলাম। ঘরের ভেতরে অন্ধকার। খুব হালকা আলো। আর পুরো ঘরে হালকা একটা মিষ্টি গন্ধ। ঠিক কিসের গন্ধ আমি বুঝতে পারতেছি না। ফকির বাবার রোগাটে চেহারে, খালি গায়ে বসে আছে। গলায় লাল রঙ এর একটা গামছা। আর ঘরে মাঘ মাসের ঠান্ডা অথচ বাহিরে রোদ আর গরম।
আমি কিছু বললাম না, সব সুমন ভাই বলল। ফকির বাবার খুব কাছে গিয়ে বলল বাবা আমার স্ত্রীর বাচ্ছা হয় না,গত তিন বছর অনেক ঔষধ,অনেক ডাক্তার দেখাইছি কোন কাজ হয় না।
আমি অনেক কষ্টে হাসি চেপে আছি কারন সুমন ভাই এখনো বিয়ে করেনি বাচ্ছা হওয়া দূরের কথা। বাবা কিছুক্ষান চুপ থেকে বলল তোর স্ত্রী কি তোর থেকে হালকা খাটো?
-হ্যা বাবা
-গায়ের রঙ উজ্জল ফর্সা?
-হ্যা বাবা।
ফকির বাবা একটা গাছের শিকড়ের মতো কি যেন সুমন ভাইয়ের হাতে দিলো। আর বলল প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কামড় করে খেতে।
আমি মোটামুটি নিশ্চিত হলাম এই শালা ভন্ড। হটাৎ সুমন ভাই বলল আপনার ঘরে এই গন্ধটা কিসের।
ফকির বাবার মুখ দেখে মনে হলো উনি এই প্রশ্নের অপেক্ষায় ছিলেন, প্রশ্ন শুনে খুশি হলেন।
-এই গন্ধ আমার কেরামতি, আপনারা চাইলে আপনাদের পছন্দের গন্ধ এই ঘরে ছড়ায় দিতে পারি।
-আমি বললাম লেবুর গন্ধ ছড়ান।
সাথে সাথে পুরো ঘর লেবুর গন্ধ ছড়ে গেলো। সুমন ভাই এবার একটু নড়ে চড়ে বসলেন।
-আচ্ছে এমন কোন গন্ধ কি আছে যা আপনি আনতে পারেন না।
-হু, খুব ছোট বেলায় জঙ্গলের মধ্যে জঙ্গলি একটা ফুলের গন্ধ অনেক ভালো লাগে তবে সেই ফুল গাছ আর কোন দিন দেখি নাই আর সেই গন্ধও আর আনতে পারি না।
কথা শেষ হওয়ার আগে পুরো ঘরে অদ্ভুত এক গন্ধ ছড়ায় গেলো। সুমন ভাই উঠে দাড়াতে দাড়াতে বলল ফকির বাবা গন্ধটা চিনতে পারছেন? গন্ধটা আপনার জন্য উপহার রইলো।
এবার আমিই বোকা হয়ে গেলাম।
বাহির হয়ে সুমন ভাইকে বললাম ভাই কিছুই তো বুঝলাম না। সুমন ভাই হাসতে হাসতে বলল আমার জায়গায় তুই যদি ফকির বাবারে মিথ্যা বলতি তাহলে ধরা পড়তি। কারন বাবার হয়ত যাদু ক্ষমতা নেই কিন্তু উনি চিন্তাধারা পড়তে পারেন। আমার কল্পনা শক্তি এতোটা বাস্তবিক করতে হয়েছে যে উনি আমার চিন্তাধারা পড়ে বিশ্বাস করেছে আমার স্ত্রী আছে।
-আর গন্ধের ব্যপারটা? আপনি কি ভাবে শেষে গন্ধটা ছড়ালেন?
-থাকনা কিছু গল্প রহস্য সব যদি জানে ফেলিস তাহলে রহস্যের মজা পাবিনা তো।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৫২
স্বরব্যঞ্জ বলেছেন: ধন্যবাদ বিজন রয় ভাই
২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫
সুমন কর বলেছেন: শেষটা ভালো।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:০৪
স্বরব্যঞ্জ বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর ভাই
৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: মজার ব্যাপার!
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪০
স্বরব্যঞ্জ বলেছেন: ধন্যবাদ আরণ্যক ভাই
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২
বিজন রয় বলেছেন: ভাল গল্প।
++++