নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীটা আজ বড়ই অদ্ভূত মনে হয়, ভাতের অভাবে যখন মৃত্যুময় জীবন, চাঁদের আলোয় তবু বেঁচে থাকা! ব্যার্থ প্রেমে জীবননাশ যেখানে, আবার সিগারেটের ধোঁয়ায় জীবনের ছবি আঁকা ।

শরীফ বিন ঈসমাইল

আমি ভীষণ খারাপ মানুষ, তবে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে দুর্দান্ত অভিনয় করি, সে হিসাবে আমি একজন তুখোড় অভিনেতাও বটে

শরীফ বিন ঈসমাইল › বিস্তারিত পোস্টঃ

Clash of Clans কবলে

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫০




মোবাইল গেম বর্তমানে এমন আকারে আমাদের মাথায় চেপে বসে আছে যে সকাল, দুপুর, রাত, কোন হুশ আমাদের নাই, সেদিন হঠাৎ ঘুমভেঙ্গে গেল কয়টাবাজে দেখার জন্য মোবাইল খুজছি কিন্তু মোবাইল কোথায় ....??? ঘুমানোর সময় তো চার্জে দিয়ে মাথার কাছে রাখছিলাম, চোর টোর আসিনাই তো..?
তাড়াহুড়া করে উঠে লাইট জালালাম। দেখলাম বেলকানীর দরজা খোলা পাশের বিছানাটা খালি দেখেই বুঝলাম ব্যপার কি?
বেলকানিতে যেয়ে দেখি আমার রুমমেট বসে বসে গেম খেলছে ...!!
মোবাইল নিয়ে দেখলাম রাত প্রায় শেষের পথে ৪.৩৫ এম....!

এটা গেল ঘুমথেকে ওঠার আগের ব্যপার,

আমি ঘুমথেকে উঠি সাধারনত 7.30 এর থেকে 8.00 ভিতর। শুক্রবার হওয়াতে একটু দেরি করেই উঠলাম ১০টার দিকে ঘুম বেঙ্গে গেল দেখলাম আমার রুমে যে বসেসে তাকে আমি চিনি না। তাহলে কে ইনি ? হয়ত আমার রুমমেট এর বন্ধু হবে এই ভেবে শুয়ে থাকলাম। হঠাৎ দেখলাম আমাব টেবিল-চেয়ারে বসে সিগারেটে সুঃখ টান দিচ্ছে যার ছাই আমার টিবিলের উপর আর শুয়ে থাকতে পারলাম না উঠেএসে জিঙ্গাসা করলাম কে ভাই ...??
ও ভাইয়া ভাল আাছেন আমি আল-আমিন এর বন্ধু (আল আমিন আমার রুমমেট) ও আচ্ছা তো ছিগারেট খাচ্ছেন ঠিক আছে ছাই টা আমার টেবিলের উপর কেন..?
হিাসি মুখে উত্তর দিল সরি ভাইয়া গেম খেলতেছিলাম তো খেয়াল করিনাই।

সন্ধ্যায় নিচে নামলাম চা খাওয়ার জন্য।
আশে পাশে অনেক দোকান থাকলেও বাবলু মামার দোকান বেষ্ট তাই ওনার ওইখানেই চায়ের আড্ডা চলে আমাদের ।

আমাদের পাশের ফ্লাটর আংকেল এখানেই বসে আড্ডা মারে সারাক্ষন আংকেল খুব মিশুক টাইপের আমাদের আনেক সিনিয়ার হলেও বন্ধুর মতই সম্পর্ক আমাদের সাথে, তাকে যতন আমি দেখি তার এক হাতে সিগারেট এবং অন্য হাতে মোবাইল নিয়ে গেম খেলাতে ব্যাস্ত থাকেন সারাক্ষন। আজকে দেখলাম মণ খুব খারাপ করে বসে আছে । যদিও গেম খেলা চলতিছে,
আংকেল এর কাছে জিগ্ঞাসা করলাম কি আংকেল গেম কি ঠিকমত চলছেনা ?? মন খারাপ কেন?

একটু বিরতি দিল গেমে ...
আরে বাবা আর বলোনা আমার ছেলেটারে তো চেনো?
বলল্লাম হুম চিনিতো..! এবার এস এস সি পরীক্ষা দিচ্ছে, কেমন হচ্ছে পরীক্ষা ?
হ্যা, ওই তো...! পরীক্ষা চলতেছে তাহলে পড়ালেখা করবেনা? তা না সারাদিন মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকবে...!
বল্লাম হয়ত সাজেসন্স খোজে এখনতো সব সাজেশন্স পাওয়া যায়, এতে খারাপ কি?
আরে বাবা তা না!
তাহলে ?
সারাটা দিন মোইল নিয়ে বসে বসে Clash of Clans নিয়ে পড়ে থাকবে এটা কি কোন কথা ?
আরে বেটা তোর পরীক্ষা চলতেছে এখোন গেম নিয়ে পড়ে থাকিস পরীক্ষায় কি পাশ করার কোন ইচ্ছা নাই ?
আজ তাই নিয়ে মারলাম ছেলেটাকে কি আর করব বল? কথা যদি না শোনে তাহলে না মেরে উপায় আছে?
এক দমে বলে একটা ব্রেক নিল।

বিঃ দ্রঃ- বাবা কিন্তু দিনের 24 ঘন্টার 12 ঘন্টাই Clash of Clans এর উপর থাকে,
আর ছেলের গেম খেলা নিয়ে তার এতো মাথা ব্যাথা।


বাপ আর ছেলের জন্য একটু সমবেদনা জানিয়ে বাসার উদ্দেশ্য পা বাড়ালাম
আংকেল এর ডাকে পিছনে ফিরলাম

বলল আমার ছেলের সাথে দেখা হলে একটু বুঝায় বলো যেন গেমটা একটু কম খেলে এগুলো একদম ভালো না। গেম খেলতে খেলতে কথা গুলো শেষ করল।
আর চুপচাপ আসতে পারলাম না পিছনে যেয়ে বললাম কি বুঝাব আংকেল?
কি আর যেন গেম না খেলে পরীক্ষার ভেতর এই।
এখানে বোঝানোর কি আছে বাপকা বেটা
মানে?
দেখেন আংকেল ওকে বোঝানো বা রাগ করার আগে আপনার উচিৎ আপনার নিজের বোঝা !
একটু গভীর ভাবে বলল মানে?
মানে টা একদম সহজ....! আপনে সারা দিন কি করেন?
কি আর করব ? ঘুরি ফিরি এখোনতো আর কোন কাজ নাই অবসর তো বিকালে বাবুলএর দোকানে বসে আড্ডা দেই এইতো!
রাতে ঘুমান কখন?
আমার রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে 2.30টা থেকে 3.00 বাজে !
এত রাত পর্যন্তদ কি করেন?
কি আর করব একটু মুভি দেখি গেম খেলি এই করতে করতেই তো দুইটা তিনটা বেজে যায়।

হ্যা এবার বলছেন কাজের কথা ! রাতে 3.00 পর্যন্ত আপনি Clash of Clans নিয়ে পড়ে থাকেন আর আপনার ছেলে কে বোঝাচ্ছেন বাবা এটা করে না, এটা ভালো না, এটা যদি আমার সাথে হতো তাহলে তো আমি এক কথায় বলে দিতাম আমি তোমার ছেলে তুমি যা কর আমার করতে দোষ কোথায়????
আরে বাবা আমার তো কোন কাম কাজ নাই আমি সারাদিন ঘুমাই ঘুরি ফিরি গেম খেলিকি আশে যায়?
এটাই তো আমাদের সমস্যা আংকেল ..!
এই চিন্তাধারা বদলে ফেলেন তাহলে কোন সমস্যাই থাকবেনা।
এর ভিতর আবার কিশের চিন্তা ধারা............???

দেখেন, আমরা যখন সানি লিওনের মাস্তিজাদে দেখি কোন ব্যাপার না! কিন্তু একটা মাদ্রাসায় পড়া ছেলে যদি 145 ডিগ্রী আ্যংগেলে-ও কোন মেয়ের দিকে তাকায় তখন তার চরিত্র নিয়ে আমরা কত প্রশ্ন তুলি ? আর আমরা এক রিক্সাতে বসে কাধে হাত দিয়ে ঘোরার সময় কি একবার ভাবি?
তোমার আর ওর কি কিয়ামত আলাদা ভাবে হবে..? আমার জন্য এ সব বৈধ আর ওদের জন্য অবৈধ, মাদ্রাসায় পড়ে দাড়ি রাখে নামায পড়ে ওর জন্য এটা পাপ আমার জন্য নয়?
এখানে আমি ও মানুষ আর একটা হুজুর ও মানুষ ওর জন্য যেটা হারম আমার জন্য-ও তো সেটা হারাম।

সেইভাবে আপনি গেম খেলছেন আপনার কাজ নেই বলে আপনার ছেলে খেলছে তার ভাল লাগছে বলে এখানে আপনার যদি কনো সমস্যা না থাকে তাহলে আপনার ছেলের সমস্যা কিসের........??
আপনি আগে গেম খেলা বন্ধ করে দেন এর পর আপনার ছেলে কে বলেন এর পর দেখবেন সে ও আর খেবেনা।

আমাদের সমাজে কোন পরিবর্তন নাই কেন?
কারন আমরা সবাই বড় বড় লেকচার দিলেও কাজের বেলা কেউ থাকিনা।
সারা রাত্র ধরে ওয়াজ শুনে আমরা ফজরের নামাজ পড়িনা কেন???
আমার পরিচিত এক বক্তা আছে সেই রকম ওয়াজ করে । পুরো বাংলাদেশ তাকে চেনে ? অথচ সে তার শশুরের কাছ থেকে মটর সাইকেল নেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে টর্চার পর্যন্ত করছে সেটা শুধু মুখে মুখে টর্চার নয় তার গায়ে হাত পর্যন্ত তুলছে। আর স্টেজে বসে ওয়াজ করছে যৌতুক নেওয়া হারাম...! হারাম...! হারাম...!
অর্থাৎ বর্তমান হুজুরের কথা হল আমি যা বলি তাই কর আমি যা করি তা নয়।

এটা আমাদের সমাজের বস্তবতা ।

আপনি যদি আপনার পরিবার কে পরিবর্তন করতে চান তাহলে সবার আগে নিজেকে পরিবর্তন করুন। দেখবেন আপনার চারপাশের লোক আপনা আপনি পরিবর্তন হয়ে যাবে।


আমার বয়স অনুযায়ী হয়ত আংকেলকে একটু বেশী জ্ঞান দিয়ে ফেললাম তাই একটু রাগত স্বরে বলল
তোমাকে আমি কি বক্তৃতা দিতে বলছি তুমার ইচ্ছা নাহেলে দরকার নাই কিছু বলার
শুধু শুধু লেকচারেরর দরকার কি? আমার খেলা আর ওর খেলা এক হল আমি অবসর থাকি আমি খেলি কিন্তু ও তো পড়ালেখা করে ও খেলে কিভাবে?

কি আর বলার আছে.......?? তাই কিছু না বলেই হাটতে থাকলাম বাসার দিকে.......!!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৬

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
++++++

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৭

শরীফ বিন ঈসমাইল বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯

রাকিব উদ্দিন নওশাদ বলেছেন: আমরা বাস্তবতা ভুলে ভার্চুয়াল লাইফে ঢুকে পড়ছি~ :(

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০১

শরীফ বিন ঈসমাইল বলেছেন: একদম ঠিক বলছে ভাই.....!

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৩২

Jokiad বলেছেন: আমার পরিচিত এক বক্তা আছে সেই রকম ওয়াজ করে । পুরো বাংলাদেশ তাকে চেনে ? অথচ সে তার শশুরের কাছ থেকে মটর সাইকেল নেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে টর্চার পর্যন্ত করছে সেটা শুধু মুখে মুখে টর্চার নয় তার গায়ে হাত পর্যন্ত তুলছে। আর স্টেজে বসে ওয়াজ করছে যৌতুক নেওয়া হারাম...! হারাম...! হারাম...!
অর্থাৎ বর্তমান হুজুরের কথা হল আমি যা বলি তাই কর আমি যা করি তা নয়।

হুজুর রে একটু চিনা চিনা লাগতাসে ??? ;) :P

০২ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:০৩

শরীফ বিন ঈসমাইল বলেছেন: লাগতেই পারে ভাই। তবে এসকল হুজুরের ফতুয়া থেকে সাবধান থাকবেন নাহলে বিপদেও পড়ওত পারেন :P :P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.