নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Still, I don\'t know myself Perfectly!

শরতের ছবি

...

শরতের ছবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৮

(আজ আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস । তাই একটু কিছু বলবার চেষ্টা ।)

প্রকৃতি বড় রহস্যময় ।
সৃষ্ট সৌন্দর্যের সকল উপাদানই রহস্যময় ।
এর মধ্যে চাঁদ ,ফুল নদী সবচেয়ে বেশি রহস্যময়।

পুরুষ মনে করে এই সব স্ত্রী বাচক ।
সূর্য কে ভাবে আবার পুরুষ বাচক । কেননা তার একটু পুরুষ পুরুষ ভাব ।
প্রখরতা বেশি ।

পুরুষের মনে চাঁদ যেমন প্রভাব ফেলে
নারীর মনে ও সে রকমই প্রভাব ফেলে ।

ফুল ও নদীর ক্ষেত্রেও তাই । ফুল এবং নদী নারী পুরুষকে সমান ভাবেই আকর্ষণ করে ।
পুরুষ ফুলকে নারীর সাথে তুলনা করে । ভালতো , এসব রোমাঞ্চের বিষয় ।

আচ্ছা ঠিক আছে ,তাতে ও সমস্যা নেই । কারো ভাবনার স্বাধীনতায় হাত দেয়া যায় না । তারা যদি ফুল কে নারী ভেবে ভালবাসে তাতে দোষ কি ? নারী ও চাঁদ কে পুরুষ ভেবে জ্যোৎস্নার খেয়ায় ভেসে ঘর ছাড়লে সমস্যা কি ?

সবই যদি স্ত্রী লিঙ্গ হয় ,পুরুষ লিঙ্গ কোথায় ? বিধাতা কি নারীদের ঠকিয়ে দিলেন ?
বিধাতা ক্যাচাল সৃষ্টি হবার কোন অবকাশ রাখেন নি । তাইতো সৌন্দর্য প্রকৃতির কোন লিঙ্গ নেই । সবই নারী পুরুষের জন্য সমান আবেদন সৃষ্টিকারী । তিনি নিজেকে ও কোন লিঙ্গে সীমাবদ্ধ রাখেন নি । তিনি পুরুষ ও না নারী ও না । পুরুষ হলে তো পুরুষ মহলে নারী জাতির কোন মুল্যই থাকতো না । বিধাতা নিরাকার কিন্তু মহাজ্ঞানী ।

সৃষ্টিকর্তা কোন বিতর্কের জন্ম দেন নি ।বিতর্ক তৈরি করেন পুরুষ । তারা মনে করেন এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে তাদের জন্য । তাই তারা সমাজকেও বানিয়ে নিয়েছে পুরুষ শাসিত। তাইতো ভাত খেতে হলে নারীকেই রান্না করতে হয় । সেই সুত্র ধরে নারীর প্রতিভা বন্দি হয়ে যায় রান্না ঘরে । এটি নারীর প্রতিভা বিকাশে সবচেয়ে বড় অন্তরায়।

তবে আমার আসল কথা এসব বলা নয় বলতে চাই নারীর উপরে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন হয় ।নারী যেমন পুরুষ দ্বারা নির্যাতিত হয় তেমনি নারী নারী দ্বারাও নির্যাতিত হয়। এটাই বলতে চাই। বলতে চাই যে নারীর এত ত্যাগ- তিতিক্ষার কেন কোন মূল্যায়ন হয় না ? এর জন্য দায়ী কে ? কেন নারী আপন ঘরে নির্বাসিত ? কেন ই বা তাকে সন্তান জন্ম এবং শিক্ষিত করার পরে ও বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিয়ে হয় ।

একজন নারী বিয়ের পরে সংসারকেই ভালবেসে যান । ক্যারিয়ার নেই ।সন্তান জন্ম দেয়া ,তাদের মানুষ করা বড় কাজ এবং একমাত্র কাজ ভেবে নিজের
সকল শখ আহ্লাদ জলাঞ্জলি দেন। ধীরে ধীরে সন্তানরা বড় হয় ।বড় হলে তো প্রেম ও করতে হয় । তাই তারা প্রেমে ফেঁসে যায় ,মা চাক বা না চাক ,প্রেমের বয়স বা সময় হউক বা না হউক।মেয়ে খারাপ হউক বা ভাল মাকে মেনে নিতে হয় । এই মেনে নেয়ার ধাক্কা সামলানো মায়ের জন্য যদিও কঠিন । মা ভাবেন এক রকম ,ছেলে করে অন্য রকম ।এখানেই তাল গোল পেকে যায় ।অশান্তির কালো ছায়া এভাবেই নামতে থাকে। প্রেম থেকে বিয়ে । তাতে ও দোষ নেই ।

সমস্যাটা তখনই সৃষ্টি হয় যখন
ছেলেরা ও ভুলে যায় মায়ের অবদানের কথা । তারা সংসারের সুখের জন্য বউ কে মূল্যায়ন করে ,মাকে নয় । তারা কখনও ভাবে না এই মা -ই তার জন্য রাতের পর রাত জেগেছে ,কেরিয়ার নষ্ট করেছে। নিজের কানের দুল বিক্রি করে তাদের খরচ জুগিয়েছে , নতুন শাড়ি না কিনে পুরাতন শাড়িতেই দিন পার করেছে । কত স্বপ্ন দেখেছে --ছেলে বড় হলেই দুঃখ ঘুচে যাবে । অথচ সেই স্বপ্নের কথা ছেলের মনে থাকে না ।

নতুন স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায় ছেলে । একটা বাড়ি ,একটা গাড়ি একটা সিমসাম সংসার । সেজন্য মায়ের ওষুধের খরচটা একটু বাড়তি মনে হয় ।চশমাটা ভেঙে গেলে বা পাওয়ার বদলে গেলে আরেকটা কিনতে দেরী হয়ে যায় । কিন্তু তারা ভুলে যায় সন্তানের কোন ইচ্ছা পূরণ করতে মা এক মিনিটও দেরী করতেন না । নিজের কানের দুল বাবাকে লুকিয়ে বিক্রি করে তার বায়না পূরণ করতে দ্বিধা করতেন না ।

নিজের পেটের সন্তান যখন মায়ের এই অবদানের কথা ভুলে যায় তখন ঘরে পরের মেয়ে এলে কি তার মাকে সঠিক সম্মান দেবে ?

তাইতো সময়ের ব্যবধানে এই গর্ভধারিনীকে দিন কাটাতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে কিংবা আপন ঘরে পরবাসী । আসলে মহিলারা এক সময় মা এক সময় শুধু গর্ভধারিণী হয়ে যান ।
জীবনে একজন নারীর প্রসব বেদনার চেয়ে ও বড় বেদনা পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সন্তানের মা হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা । বাবা- মা দুজনের একই পরিণতি মেনে নিতে হয় । সংসারে বাবা-মায়ের অবদান অনস্বীকার্য ।

আর এর জন্য সব চাইতে বেশি দায়ী অন্য আরেকজন নারী । তাই আজ এইআন্তর্জাতিক নারী প্রতিবাদ দিবসে বলতে হয় - নারীই নারীর শত্রু । হরিণের মাংস যেমন হরিণের শত্রু ।তাই আমাদের মায়েরদের উচিৎ মেয়েদেরকে শিক্ষা দেয়া ,যাকে বিয়ে করছ শুধু তাকে নয় ,তার গর্ভধারিণীকে ভালবেসো । তাহলে তোমার মাকে এবং ভবিষ্যতে অন্য কেউ এসে তোমাকেও সম্মান করবে।


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

ক্লে ডল বলেছেন: আমাদের মায়েরদের উচিৎ মেয়েদেরকে শিক্ষা দেয়া ,যাকে বিয়ে করছ শুধু তাকে নয় ,তার গর্ভধারিণীকে ভালবেসো । তাহলে তোমার মাকে এবং ভবিষ্যতে অন্য কেউ এসে তোমাকেও সম্মান করবে।

আশ্চর্যজনকভাবে শেষ পর্যন্ত আপনি দ্বায়িত্ব সব নারীর কাধে তুলে দিয়ে গেলেন? একজন মা কেন শুধু মেয়েকে শেখাবে? বাবা তার নিজের মাকে ভালবেসে ছেলে অথবা মেয়েকে প্রাকটিক্যালী শেখাতে পারে না?

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩

শরতের ছবি বলেছেন: যেখানে কেটে গেছে সেখানে ঔষধ দিতে হয় । অন্য জায়গায় দেয়ার কি প্রয়োজন ? দিলাম বলে সব জায়গায় দিতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।আর বাবা কত টুকু সময় বাসায় থাকেন । তাঁকে বাইরেই সময় কাটাতে হয় ৯০ ভাগ । বাসায় ৮ /৯ টায় ফিরা সকাল ৮ টায় অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়া । অন্যদিকে মায়ের সাথে সন্তানের ,ছেলে অথবা মেয়ের সারাটা সময় কাটে । মা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শিক্ষক ।
নেপোলিয়ন বলেছিলেন , "আমায় একটি শিক্ষিত মা দাও ,আমি একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব ।''
তিনি কি তবে ভুল বলেছেন ? তিনি কেন বলেন নি ,একটি শিক্ষিত বাবার কথা ?
সন্তানের মধ্যে মায়ের প্রভাব কত টুকু মানুষ মাত্র ই জানে । আসলে সমস্যার শিখরে পৌঁছাতে সবাই জানে না চায় ও না ।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৬

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সোসালাইজেশনের মাধ্যমেই নারী পুরুষ সমাজ হতে শেখে ---- নারী নারীর শত্রু = এটা কিন্তু সোসালাইজেশনেরই ফল ----

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫

শরতের ছবি বলেছেন:



আমার ব্লগে আপনার প্রথম পদার্পণ । তাই শুভেচ্ছা এবং স্বাগতম আপনাকে ।
মন্তব্য পেয়ে ভাল লেগেছে ।

৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


বেশ ভাল একটা বিষয় নিয়ে লেখেছেন। আই আধুনিক জুগে মুস্লিম পারিবারিক আইন, বিবাহ ও তালাক আইন, এসিড সন্ত্রাস আইন, নারী নির্যাতন আইন, নারী নির্যাতন নিরোধ আইন করেও নারীদের প্রতি সহিংসতা কমিয়ে আনা যাচ্ছে না। তাই আমাদের এই বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। নারী নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে।

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১

শরতের ছবি বলেছেন:



উৎসাহিত করলেন প্রথম কথাতেই । সমস্যার মূলে না পৌঁছালে এই নির্যাতন থাম্বে না । সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া আমাদের দেশে কিছুই হয় না । ধন্যবাদ ভ্রমর পাশে থাকার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.