নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পৃথিবীর সন্তান।

সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন

এই ব্লগের সকল প্রকার তথ্য কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে ।

সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নগরপিতা চিনে না সন্তানদের, তারাও জানে না নগরভবন কোথায়।

১৪ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৫৫


দেশে কেউ আন্দোলন করে বিভাগের দাবী নিয়ে। কেউ বলে জেলা চাই, কেউ সিটি করপোরেশন। কিন্তু সিটি করপোরেশন যাদের জন্য অভিশাপ সেই ছেলে-মেয়েদের দেখতে গিয়েছিলাম। ঢাকার কপোরেট মেয়র আনিসুল হকের এলাকায় তাদের বসবাস। উন্নয়ন বাণিজ্যের নামে তাদের বাবাদের আদি পেশা মাছ ধরাটা বলি হয়ে গেছে
চামড়া রপ্তানিকারকদের মুনাফার কাছে।

ট্যানারির বিষাক্ত জল যে শুধু নদীর জলই বিষাক্ত করেছে তা নয়। গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর মুনাফা ধ্বংস করে দিয়েছে কয়েক প্রজন্মের ভবিষ্যৎ।

ছেলেমেয়েগুলোর বাবারা বেকার। মায়েরা বিভিন্ন বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। যাদের ঘরে ভাত নেই। তাদের পড়াশোনা মানে বিলাসীকতা। মাগনা স্কুল যেটা আছে তাতে ফাইভ পাশ দিলে। মেয়েরা বিয়ের জন্য সেনা হয়ে যায়। হাজার অভাব অনটনের এই পল্লীতে মেয়েগুলোকে বিয়ে দিয়ে দিলেই পরিবারগুলোর মুক্তি। সেই মুক্তিতে সুশীল বা ধনীর বাল্যবিবাহরোধে যে আইন আছে সেই কাগুজে আইন কোন প্রভাবই ফেলতে পারে না। কিছুটা ঝামেলা হয় আর কি। আর সেই ঝামেলা এড়াতে কারো কারো জন্য কাগজপত্র ছাড়া বিয়েটাই ভরসা হয়ে আছে।

তাদের কাছে নদী শুধুই নদী নয়। গত কয়েকশ বছরের বংশ পরম্পরায় বুড়িগঙ্গা তাদের জীবন জীবিকার উৎস, এ নদী তাদের পরিবারেই সদস্য। ধরুন পূজার পরিবারের কথা। নদীতে মাছ নেই, তার বাবা বেকার। ধীরে ধীরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তার মা বাধ্য হলে মানুষের বাড়িতে কাজ নিতে। পূজার মায়ের আয়ে সংসার চলে না। পূজার স্কুল যাওয়া বন্ধ। এ রকম অসংখ্য পূজার দেখা মিলবে বছিলা জেলে পাড়ায়।

প্রাইমারি স্কুলের পর জেলে পল্লীর অধিকাংশ মেয়ে স্কুলে যায় না। কারণ বছিলা প্রাইমারি স্কুল বিনা বেতনে পড়ালেও।উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল বিনা বেতনে পড়ায় না। যে ঘরে ভাত নেই সেখানে স্কুলে যাওয়া মানে বিলাসীকতা। তারচেয়ে গ্রামের কারো বাড়িতে কাজ করলে আয় হয়। আয় যাই হোক না কেন দু বেলা ভাত জুটে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের এলাকা বলে এখানের মেয়েরা উপবৃত্তি পায় না। তাই প্রাইমারি স্কুলের পর তাদের পড়াশোনার খরচ পরিবার জোগার করতে পারে না।অধিকাংশ পরিবারের মেয়েদের বাল্য বিবাহ দিয়ে দেয়।

এই সরু রাস্তা কয়েক জেলা পাড়ার প্রধান সড়ক।
তাদের যে ঘাটের জলে গৃহস্থালি কাজের ভরসা ছিল। সেই ঘাটে মেয়র সাহেবের লোকজন নালা তৈরি করেছে। আর ছবিতে যে সরু রাস্তা দেখছে এই রাস্তাটি কয়েকশত মানুষের সদর রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে আড়াআড়ি করে লাশ বের হয় না।জেলে পল্লীর কেউ মারা গেলে নাকি তার লাশ নদীতে নৌকায় ভাসিয়ে শশানে নিয়ে যাওয়া হয়।

গলিপথটা এতটা সরু নগরপিতার গাড়িও আসে না এখানে কখনো। নগরপিতা জানে না তার নগরের এই সন্তানদের কথা। সন্তানরা জানে শুধু একজন নগরপিতা আছেন। যিনি চাইলেই জেলে পাড়ার কাচাঁ পায়খানাগুলো পাকা হবে, নদীর জল সচ্ছ হবে, ছেলে মেয়েগুলো স্কুলে যাবে, বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে, বৃদ্ধ মানুষগুলো অপেক্ষায় আছে রাস্তাটা আর একটু চড়া হবে। মৃতুর পর তাদের লাশ আর নদীতে ভাসিয়ে শশানে যাবে না।

এই সরু রাস্তা ঠেলে, ঘর থেকে বের হয়ে উত্তরের মেয়রের নগর ভবনের দরজায় অভাব অভিযোগ নিয়ে যাবার সাহস দেখায় না জেলে পাড়ার কেউ। আর নগর ভবনের দরজাও কখনো খোলা হয় না বছিলার জেলে পাড়ার মানুষগুলোর অভাব অভিযোগ শুনার জন্য।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:০১

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: ইউরোপের একটি দেশ আছে, যার নাম Liechtenstein। ঐ দেশে গত দশ বছরে কোন খুন হয়নি!

এই দেশের প্রধান ব্যক্তিটি প্রায় সময়ই সকালে হাঁটতে বের হোন, একা! পথচারী কারো সাথে দেখা হলে মৃদু হেঁসে হ্যালো বলেন।

১৪ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:১১

সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: আমাদেরও হবে একদিন

২| ১৪ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:০৭

খরতাপ বলেছেন: এই নগরপিতার পারফরম্যান্সে হিরো জলিল মুগ্ধ। তার ভাষায়, ঢাকাকে নাকি রূপকথার মত করে পালটে দিয়েছেন মেয়র আনিসুল হক।

১৪ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:১০

সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: সবই ভাল কিন্তু যা লিখলাম তাও সত্য

৩| ১৪ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:১১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সময়ের বিবর্তনে গ্রাম এখন শহর হয়ে যাচ্ছে। অনেক আদি পেশাও এক সময় বিলুপ্ত হবে। উন্নয়ন ঠেকানো যাবে না...

২৩ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩

সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: ইহা উন্নয়ন নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.