নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

brotoweb.wordpress.com/

ব্রতশুদ্ধ

ব্রতশুদ্ধ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্ত হতে হবে , সৃষ্টিশীল হতে হবে, গড়তে হবে এক নতুন বিশ্ব যেখানে ভাঁড়ামোর একমাত্র স্থান হবে আস্তাকুড়ে।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৩

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। ছোট বেলা থেকে তাই শুনে এসেছি। পরিবার সমাজ যা শিখিয়েছে চেষ্টা করেছি সেই পথে চলার। এই দেখানো গন্ডির বাইরে গেলেই সমাজ ক্রমাগত দিয়েছে গালি এবং করেছে বঞ্চনা। এখনও সমাজ সেই পথেই চলছে। পরিবর্তনের স্থান টা হতে পারে মৌলিক চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু মোদ্দা কথা সেটাই রয়ে যাচ্ছে। আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি তা আর পাঠকদের বোঝার বাইরে থাকার কথা নয়। নাভিশ্বাস উঠে গেলেও একটা মৌলিক পরিবর্তন সাধন করা অসম্ভবের পর্যায়ে চলে গেছে।চলুন তাহলে পাগলামো কিংবা ছাগলামোর পরিমাণটা আরেকটু বাড়ানো যাক।
একটি শিশু আজ আপনার পাশের বাসায় ভূমিষ্ট হল। স্বাভাবিক ফুটফুটে একটি শিশু। সমাজবদ্ধ আরেকটি জীব। তার মা-বাবার এই সন্তানটিকে ঘিরে অসীম প্রত্যাশা। "অসীম" শব্দটি মানাচ্ছে না। প্রত্যাশা সীমিতই বটে। সন্তান বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হবে। এই মানুষের মত মানুষ বলতে বোঝায় ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার। হ্যাঁ ব্যাস হয়ে গেল আদর্শ সমাজের আরেকটি কলুষিত কীটের পাকাপোক্ত অবস্থান। তাহলে বোঝা যাচ্ছে এখানে দুটো জিনিস বেশ বড়ো উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হল টাকা আর ক্ষমতা। এর পেছনে আরেকটি বেশ শক্তিশালী হাতিয়ার কাজ করছে আর তা হল 'ভয়'। আপনি মানুষকে ভয় দেখানোর কিংবা জিম্মি করার যত প্রক্রিয়া প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে অর্জন করবেন আপনি সমাজে তত্ বেশি সম্মানী ব্যক্তি হবেন। রাজনীতি ব্যাপারটাও সেরকমই। যদিও নেহাত রাজনৈতিক এবং রাজনীতির দ্বারা নিষ্পেষিত পরিবারের সদস্য ছাড়া কেউ পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যটির ভবিষ্যৎ একজন রাজনীতিবিদের হোক তা চায় না কিংবা চাইবে না।
ওহ হ্যাঁ যা বলছিলাম, ধরুন আপনার পাশের বাসার সেই বাচ্চাটিকে জন্ম দেবার ঠিক ১ সেকেন্ড পড়ে তার বাবা- মা ছেড়ে চলে গেল। বাচ্চাটি বাড়িতে একা কাঁদছে। দুনিয়াদারী সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। জানে শুধু ক্ষুধা আর শৈশবের জৈবিক চাহিদাগুলো। এবার আপনি এটা জানতে পেরে আপনার মাথায় খেলে গেল দুষ্টুমি। আপনি এই শিশুটিকে একটি গিনিপিগের মত ব্যবহার করার স্বিদ্ধান্ত নিলেন। খাবার সময় কেবল খাবার দিলেন আর বাকি সময়টা ঘরে আটকে রাখলেন। বললেন না কোন কথা। এভাবেই বড় হচ্ছে শিশুটি। ধরুন সেই শিশুটি বড় হল একটি যুবকের ন্যায় কায়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আপনার সামনে। এখন কিছু মৌলিক প্রশ্ন এল আপনার সামনে
-রাষ্ট্র সম্পর্কে এই শিশুটির কোন ধারনা আছে কি? কিংবা রাজনীতি সম্পর্কে?
-যৌনতা তার দেহে জোয়ার বইয়ে দিলেও সে কি বলতে পারবে তার সেই যৌনাঙ্গ কি উদ্দেশ্যে রয়েছে তার দেহে?
-ঈশ্বর সম্পর্কে তার কোন ধারনা আছে কি?? কিংবা ধর্ম সম্পর্কে?
-ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা তার ভবিষ্যতের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোন ধারনা?
এবার তাকে শিক্ষা দেওয়া হল, বর্নমালার পরিচয়। আঁকতে শেখান হল রংপেন্সিল দিয়ে। একটা সাদা কাগজ তার সামনে দিয়ে বলা হল যে
রাষ্ট্র কি?
- উত্তর কি আসতে পারে?
ঈশ্বর কি?
- কি আসতে পারে উত্তর?
ডাক্তার কি , ইঞ্জিনিয়ার কি? স্বপ্ন কি? ফ্রয়েড কি? রাজনীতি কি? বলিউড কি?
- কি উত্তর আসতে পারে তার কাছ থেকে এমন এলিয়েন প্রশ্নে?
এবার তাকে তার আবাস স্থলকে পৃথিবী, তার নিজ জাতিকে মানুষ আর পাশাপাশি বসবাস করা প্রজাতি সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হল। তার জিঘাংসা বেড়ে যাবে। সে অবশ্যই বেরিয়ে যেতে চাইবে সেই বদ্ধ দেয়াল ভেদ করে। জানতে চাইবে তার নিজের অস্তিত্ত্ব সম্পর্কে, তার আবাস স্থল সম্পর্কে, তার মাথায় ঢুঁকে যাবে বিজ্ঞান।
এবার আরও কিছু প্রশ্নের উদ্ভব হল।
মানুষ কি অতীতে এই পর্যায়েই ছিল?
উত্তর হল হ্যাঁ।
জানার ইচ্ছা প্রত্যেক মানুষেরই আছে। এই একটি মানুষের উদাহরন যদি প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে যোগাই তবে কেমন হয়? যদি বলি আমার উদ্দেশ্য আমি নিজেই বের করব। পরিবার তা ঠিক করে দেবে কেন? লাইসিয়াম কিংবা নালন্দার উদ্দেশ্য ছিল আগ্রহী বিদ্যান তৈরী করা কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী করছে প্রতিযোগিতা যেখানে ৩০০০০ টাকা বেতন পাওয়া ব্যক্তিটি প্রতিনিয়ত বঞ্চনা করছে ৫০০০ টাকা বেতন পাওয়া লোকটিকে। বঞ্চনার শিকার হওয়া ব্যক্তিটি দূর্নীতি করার চেষ্টা করছে। সে প্রতিনিয়ত ধুকছে হতাশায়। সামাজিক অবক্ষয়ের মৌলিক বিপর্যয়ের জন্য দায়ী শিক্ষা ব্যবস্থাও।
এতগুলো কথা বলার প্রয়োজন নেই। নেই কোন লাভ। অনেকে হয়তোবা আগের কথাগুলোর সাথে যৌক্তিকতা খুজছেন শেষের কথা গুলোর সাথে।
আছে অনেক মিল আছে । আমি বলতে চাই প্রতিটি মানুষের ভেতরই আছে জানার আগ্রহ, আছে নানা সৃষ্টিশীল যোগ্যতা, অর্থ সে কম কামালেও সমাজে তাকে নিম্নশ্রেনীর ব্যক্তি হিসেবে দেখবেন না। আগত শিশুটির ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করবেন না। বরং আপনার শিশু সন্তানটিকে লক্ষ্য করুন যে তার ভেতর কোন কোন জিনিসের প্রতি ঝোক বেশি। খারাপ জিনিসের প্রতি ঝোক থাকাটাই স্বাভাবিক তাকে সেই খারাপ জিনিসগুলো করতে বাঁধা কম দেবেন তাতে সেই খারাপ জিনিসের প্রতি আগ্রহ তার কমে যাবে ধীরে ধীরে। একেই বলে সচেতনতা।সময়ে মানুষ এইডস রোগের প্রতিশেধকও তৈরী করে ফেলবে তাতে আপনার সন্তানের অবদান নাও থাকতে পারে কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা চলবেই। সমাজ চলবেই। মন থেকে জটিলতা মুছে নিজেকে একজন উন্নত ব্যক্তিত্ত্বের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন। আদর্শ পিতা মাতা হোন এবং আপনার সচেতনতাই সমাজের চলমান অবক্ষয় রুখে দেবে, রাজনৈতিক সমস্যা রুখে দেবে , সচেতন সমাজ গড়তে সহায়তা করবে।সমাজে ভন্ডদের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। মুখোশের পরিমানও বেড়ে গেছে। সত্য বলতে মানুষ ভয় পায় কারণ তার মনের সত্য পাশে থাকা মানুষটির কাছে করে তুলতে পারে তাকে অপ্রিয়।মুক্ত হতে হবে , সৃষ্টিশীল হতে হবে, গড়তে হবে এক নতুন বিশ্ব যেখানে ভাঁড়ামোর একমাত্র স্থান হবে আস্তাকুড়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.