নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

brotoweb.wordpress.com/

ব্রতশুদ্ধ

ব্রতশুদ্ধ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাবা কান্ত দা

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২৭

কান্ত দা কথা কম বলে। অন্যের হাসানোর চেষ্টা মার্কা গপ্পে অনায়াসেই কেলিয়ে হেসে দেয় তাতে হাঁসির খোরাক অতি কম মাত্রায় হলেও তার হাঁসির মাত্রাটা অট্টো পর্যায়েই থাকে। শীতের রাতে হারু, স্বপন, মিন্টু, পাভেলরা গোল হয়ে বসে আগুন তাপায় আর বৃত্তের বাইরে দাঁড়িয়ে কান্ত দা কথা শুনে কেলিয়ে দিয়ে হাসে।
কেলিয়ে হাসে । হাবার মত হাসে। একদিন গরম পিঠা মুখে দিয়ে জিহ্বা পুড়িয়ে ফেলে তাও কান্ত দা হাসছে। হেমন্ত দা কান্ত দা'র চেয়েও বড়।

'কিরে কান্ত হাবার মত হাসছিস যে? বোকা** তোর জিহ্বা পুড়ে গেছে তাও হাসছিস? যা আজ থেকে তোর নাম হাবা কান্ত'

এটা শুনেও কান্ত দা হাসছে। ব্যাস পাড়ায় নাম হয়ে গেল হাবা কান্ত। এ শুনে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মিন্টু কান্ত দা'র কানে এসে বলে। কিগো হেমন্ত দা তোমার নাম হাবা কান্ত রাখলো তুমি তাও হাসছো যে ?'
অদ্ভুত উত্তর দিয়ে বসে কান্ত দা, ' হেহেহে আমার বাসার সবাই তো আমাকে হাবা বলেই ডাকে। হেমন্ত দা নামটা অনেক পড়ে দিয়েছে , দেরী হয়ে গেছে ওর নামটা দিতে তাই হাসছি।'

একদিন আগুন তাপানোর সময় কান্ত দা দাঁড়িয়ে বলে উঠলো; 'ইশ খুব খেজুরের রস খেতে ইচ্ছে করছে রে।' বদমায়েশ হারুর মাথায় একটা দুষ্টামি বুদ্ধি খেঁটে গেল।

- ইচ্ছে হয়েছে তো খেয়ে নাও। এখানে দাঁড়িয়ে বললে লাভ কি?
- কিন্তু পাব কোথায়?
- কেন পল্টু দা'র বাসার পেছনেই তো একটা ইয়া বড় খেজুর গাছ আছে। আরেকটু রাত হলে গাছে উঠে হাঁড়িটা নামিয়ে নেবে। তারপর আমরা সবাই মিলে মজা করে খাবো। কি বলিস তোরা?

এ কথা শুনে স্বপন মিন্টু পাভেল একটা চাপা হাঁসি দিল। চাপা হাঁসি কান্ত দার কানে গেল। তা শুনে হাবা কান্ত দা হো হো করে হাঁসি শুরু করলো আর বলে উঠলো ' ঠিকই তো এই বুদ্ধি তো আমার মাথায় ই আসেনি। ঠিক আছে যা আজ রাতে আমি তোদের খেজুরের রস খাওয়াচ্ছি। তোরা প্রস্তুত থাকিস।'
- এই না হলে কান্ত দা। তোমাকে যে কেন হাবা বলে ডাকে তাই বুঝি না।
- এইযে আমি হাবাদের মত হাঁসি যে তাই ডাকে। হেহেহেহে।

রাত একটু গভীর হল। হারু আর মিন্টু কান্ত দার কানে ব্যাপারটা মনে করিয়ে দিল। হারু বলে উঠলো

- কান্ত দা রাত কিন্তু বেশ হয়েছে। এখনই সবচেয়ে ভালো সুযোগ।

- হ্যাঁ হ্যাঁ চল চল।

তিন জন বেরিয়ে পড়লো পল্টুদার বাসার উদ্দেশ্যে । পল্টুদার বাসার পেছনে ঘুটঘুটে অন্ধকার।কিচ্ছু দেখা যায় না। টর্চ লাইটও আনা হয় নি।

- কান্ত দা। আমি গাছটা দেখিয়ে দিচ্ছি তুমি শুধু গাছ টাকে জাপটে ধরে উপরে উঠতে থাকো। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাঁড়ি খানা মাথায় ঠেকে।

- বুঝে গেছি। কিন্তু তোরা আমায় ছেঁড়ে যাস নে।

- শশশশশশ।। আস্তে কথা বলো। পল্টু দা শুনতে পারলে চিবিয়ে খাবে।

- ঠিক আছে ঠিক আছে।

হারু একটা গাছের গোঁড়ায় হাত দিয়ে কান্তদাকে ওতে উঠতে বললো। কান্তদাও লুঙ্গি খুলে নিচের হাফপ্যান্টটা বের করে গাছটাকে জাপটে ধরলো চার হাত পায়ে। তারপর কান্ত দা উঠছে। উপরে উঠছে। আরো উঠছে।

- বেশ লম্বা তাল গাছ রে শেষ ই হচ্ছে না।
- আরে কথা আস্তে বলো। পল্টু দা শুনতে পারবে। বললাম না যতক্ষণ পর্যন্ত হাঁড়ি মাথায় গিয়ে না ঠেকে।

হারু দা আরো উঠলো। তারপর উপরে থেকে নিম্নস্বরে বলে উঠলো। এই এখানে তো অনেক গুলো ছোট ছোট হাঁড়ি মনে হচ্ছে।

অমনি হারু আর মিন্টু হো হো করে হাঁসি শুরু করে দিল। মিন্টু হাঁসি মুখে বলে উঠলো

- তুমি হাবা যে হাবাই কান্ত দা । ওগুলো হাঁড়ি নয় ঝুনা নারিকেল। ওটা নারিকেল গাছ। নাও এবার নারিকেল গাছে উঠে খেজুরের রস খাও।'

কান্ত দা হা করে ওপর থেকে দু জনকে দেখছে। হঠাতই হারু চিৎকার করে উঠলো ' পল্টু দা দেখ কান্ত দা তোমার নারিকেল গাছে উঠেছে নারিকেল চুরি করতে।' এই বলেই হারু মিন্টু চম্পট আর পল্টু দা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে গাছ থেকে হাবা কান্তকে নামিয়ে দিল আচ্ছা মত পিটুনি।
মার খেয়ে বাসার দিকে একাই যাচ্ছে কান্ত দা আর থেকে থেকে কাঁদছে আবার থেকে থেকে হাসছেও। আর একা একা বলছে

' আমি হাবা যে হাবাই; হে হে হে হে'

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৬

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: বেশভাল লিখেছ ।
আমাকে মেল কর
[email protected]

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.