নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

brotoweb.wordpress.com/

ব্রতশুদ্ধ

ব্রতশুদ্ধ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোবার উপাখ্যান(বহুত পুরানা গপ্পো রিপোস্ট)

০৯ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৫:১৯

মেক্সিকোতে যেদিন দানব গুলো নেমে এসেছিল সেদিন দুপুরের কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। একটা নির্জন জায়গায় বসে আসন্ন বৃষ্টি নিয়ে ফ্যান্টাসি করছিলাম। ভাবছিলাম যদি বৃষ্টির ফোঁটাগুলো শুধু আমাকেই ভিজিয়ে দিয়ে যেত তবে কত ভালই না হতো। ভেজা শরীর নিয়ে দেখতে পেতাম বৃষ্টির ফোঁটা থেকে বঞ্চিত মানুষ,পাখি, কুকুর কিংবা অপেক্ষায় থাকা অসংখ্য ছাতা গুলোকে। মানুষের অসহায়ত্ব নিয়ে মজা করতে আমি খুব ভালবাসি। এই পৈশাচিক আনন্দ আমার হৃদয়টাকে উচ্চ মাত্রায় উদ্বেলিত করে। গাঁজা লাস্ট খেয়েছিলাম গত শনিবার তবে কোন দিনও সেই অসহায়ত্ত্বের মজা এই নেশার রাজা আমায় দিতে পারেনি। তাই গত শনিবারের কড়া পাফটাই আমার জীবনের লাস্ট পাফ হয়ে গেছে। যাই হোক বৃষ্টি তো আর আমার পৈতৃক সম্পত্তি না যে যেভাবে চাইব সেভাবেই ঝরবে। সেটা নাকি ঈশ্বর নামের কোন ব্যক্তির হাতে। আমি তাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। তবে আমার এলাকায় সবাই তাকে চেনে। তার সবাই ভক্ত। ঈশ্বর বলতে তারা অজ্ঞান। কিন্তু কেন যেন আমার ভেতর সুপ্ত অবস্থায় থাকা সুপিরিয়র কমপ্লেক্সটা এই ব্যক্তিটার কর্তৃত্ব মেনে নিতে পারে না। আমি মানুষ হিসেবে একটু ভীতু প্রকৃতির, পাশের বাসার দানবীয় রাসেল সাহেবের ভয়ে সেটা বলা হয় না। কারন তিনি গতবছর ঈশ্বরের ফ্যান নাম্বার ওয়ানের এওয়ার্ডটা অর্জন করেছেন। আমার আবার এই ধরনের পুরস্কারের প্রতি কোন লোভ নেই কিন্তু আমার ঘনিষ্ট বন্ধু রাজু বিগত কয়েক বছর ধরে এই পুরস্কারের জন্য অনেক কাঠ খোট্টা পোড়াচ্ছে তাই তার জন্য আমার শুভকামনা সবসময়ই আছে তার সাথে। রাজুর চেষ্টা সফল হোক। 

হ্যাঁ ঈশ্বর নিয়ে আমি মাথাটা কম ঘামাই। তবে উঁইঢিবি পাড়ার বড় মন্দিরের ফাদার শ্রী হাসান ফার্দিনান্দকে আমি একদিন এক চল্লিশোর্ধ মহিলার নিতম্বের দিকে কামাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি। তখন অবশ্য তাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনতাম না। উনি কি করেন সেটাও জানতাম না। পরবর্তিতে আবিষ্কার করলাম সেই ঈশ্বর নামক ব্যক্তির প্রথম সারির ভক্তদের একজন তিনি। খারাপ লেগেছিল ব্যাপারটা, লোকটাকে দেখলেই ঘৃণা জন্মাতো মনে। এখন তাকে আমি ঘৃণা করি না। কারণ যত যাই হোক রক্তে মাংসে গড়া মানুষ তো?? 
এসব চিন্তা করতে করতেই সেদিন দুপুরে আসন্ন বৃষ্টিটা আর এলো না। হেঁটে রওনা দিলাম বাসার দিকে।একটু অন্যমনস্ক ছিলাম। রাস্তা ক্রস করার সময় একটা কালো জিপ এসে প্রায় মেরেই দিয়েছিল। কিন্তু দয়ালু, চৌকস ড্রাইভারের সফলতায় বেঁচে যাই। এই কাহিনী দেখে দৌড়ে আসা মানুষগুলো সম্পূর্ণ ক্রেডিট ঈশ্বরের বলে আকাশে বাতাসে ফেনা তোলা শুরু করে দিয়েছিল। তারপরও আমি ড্রাইভারের কাছে গিয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। কিন্তু ড্রাইভারের মুখ থেকে আসা শব্দগুলোও ঈশ্বরের গুণগান সম্পন্নই ছিল। 
খুব খিদে পেয়েছে। বাসা থেকে বের হবার আগে গলদা চিংড়ি আর পুঁইশাক রান্না করে এসেছিলাম। জম্পেশ খাওয়া হবে। স্নান করতে বাথরুমে ঢুঁকে দেখি সাবান শেষ। আমি আবার লাইফময় ব্যবহার করি। এই সাবান নাকি জীবাণুদের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকরী। কিন্তু দূর্ভাগ্য আমার আজ আর দেহের জীবাণু ধ্বংসযজ্ঞে সামিল হতে পারছি না। স্নান করে এবার খেতে বসলাম। চিংড়ীর তরকারীটাতে লবণ বেশ কম হয়েছে। তবুও নিজের হাতে রান্না করেছি তাই খেতে অমৃতের কাছাকাছি হয়েছে। আসল অমৃত আস্বাদন করেছিল সমুদ্র মন্থনে জয়ী দেবতাগণ। আমার বন্ধু রাজু আমাকে বলেছিল আমার স্পষ্ট মনে আছে। ঈশ্বর, দেবতাদের সম্পর্কে যতটুকু শুনেছি ওরা নাকি পারফেকশানিস্ট হয়। ভাবছি এদের হিংসা করা ছেড়ে দেব। ওদের সাথে টেক্কা দেওয়া বোধয় ঠিক হবে না। তার ওপর আবার রাসেল সাহেবের মত বিশালাকায় লোক তাদের দলে। এইতো কয়েকদিন আগেই একলোক ঈশ্বর নিয়ে কিঞ্চিত কটুক্তি করেছিল বলে রাসেল সাহেব সেই লোকের মাথায় ৮০ টা আন্ডা ভেঙ্গেছিলেন তাও আবার প্রকাশ্য দিবালোকে। ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারণ প্রকাশ্যে কেন মনে মনে করতেও আমার ভয় করে। আমার আরেক বন্ধুর কথা যখন আমি স্মরণ করি আমার ভয় আরও দ্বিগুণ হয়ে যায়। তার নাম পাবলো বিকাশ। খুব ভাল আর্ট করত সে। গত বছর তার একটি চিত্রে ঈশ্বরকে নিয়ে দৃষ্টিকটু কিছু খুঁজে পেয়েছিল ঈশ্বরের প্রথম সারির সেনারা। এর ৭ দিন পর একটি রোড এক্সিডেন্টে সে তার চোখ দুটো হারায়। সে এখন অন্ধ। এটা নাকি ঈশ্বরেরই কাজ। তাই নিঃসন্দেহে বলাই যেতে পারে যে ঈশ্বর একজন মহা শক্তিশালী ব্যক্তি। তাই আমি ঈশ্বরকে নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না।
অমিতাভ বচ্চন আর শশী কাপুড়ের খুব হিট একটা ভারতীয় সিনেমা ছিল। নাম ছিল ‘দিওয়ার’। সিনেমাটা আমি দেখিনি তবে একটা সংলাপ খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই সংলাপটা আমি অনেক বার শুনেছি। “ মেরে পাস মা হ্যায় ”। আমার বন্ধু রাজু আর এক বিত্তশালী বিজ্ঞানীর মধ্যে অপ্রত্যাশিত তর্কে এমনই একটি উত্তর দিয়েছিল আমার ঘনিষ্ট বন্ধু রাজু। “ যার কেউ নেই তার ঈশ্বর আছে ”। অমিতাভ-শশীর সংলাপের সাথে এর মিল নেই বটে কিন্তু তবুও আমি কোথাও খুব অদ্ভুত মিল খুঁজে পেয়েছলাম সেদিন। রাজুর আপন বড় ভাই অক্সফোর্ড থেকে নিউরাল ডারুইনবাদে পিএইচডী হোল্ডার একজন সুপুরুষ। শুনেছি উনি নাকি সমকামী। ইংল্যান্ডে তার একজন বয়ফ্রেন্ডও ছিল। খ্রিষ্টান ছিল ছেলেটা। একদিন স্বপ্নে কাজু ভাই( রাজুর বড় ভাই) দেখেছিলেন তার সমকামীতাকে পাপ হিসেবে। সেদিন স্বপ্নে দৈব বানী পেয়েছিলেন তিনি। এর পরদিনই কাজুভাই তার বয়ফ্রেন্ড কে ডাম্প করেছিলেন এবং এর ৩ দিন পর তার বয়ফ্রেন্ড নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করেছিল। সত্যতা জানিনা ঘটনাটার । রাজুই গল্পের ছলে আমাকে সেটা বলেছিল। জানিনা সে নিজে এই তথ্য কোথায় পেয়েছে। রাজু আমাকে খুবই বিশ্বাস করে। তবে হয়তোবা ঈশ্বরের মত নয়। ও হ্যা যা বলছিলাম; কাজু ভাই এখন ঈশ্বরের প্রথম শ্রেনীর ভক্তদের একজন । এখন তিনি দেশেই অবস্থান করছেন। গত বছরের জানুয়ারীতে বিয়েও করেছেন । অবশ্যই একজন নারীকে। সে বিয়েতে আমিও এটেন্ড করেছিলাম , অনেক মজা করেছিলাম। সেদিন বিয়ে বাড়ীতে একটা গান বাজছিল “ তুমি নির্মল কর, মঙ্গল করে মলীন মর্ম মুছায়ে ”- জানিনা গানটা কে লিখেছেন তবে এটা আমি সেদিন বুঝে গিয়েছিলাম যে এই 'তুমি' মানে সেই ঈশ্বর। গানটা অন্য সব বেজে যাওয়া গানের সাথে এতটাই বেমানান ছিল যে আমার মত দূর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন মানুষের মস্তিষ্কে তা এখনও রয়ে গেছে। আমি ঈশ্বর নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না।
খবরের কাগজ একসময় আমি খুব বেশি পড়তাম। যেদিন খবরের কাগজ আমি পড়তে পারতাম না সেদিন স্নান করলেও এমনকি লাইফময় সাবান দিয়ে স্নান করলেও দেহ থেকে জীবাণুগুলো যেতে চাইত না। এক ধাঁচের খবর দীর্ঘদিন পড়ে এখন আর খবরের কাগজ আমার পড়া হয় না। বেশ বিরক্ত লাগে। তবে যেদিন মেক্সিকোতে ভূমিকম্প হয়েছিল সেদিন বিকেলের কথাও আমার স্পষ্ট মনে আছে। হঠাৎই বৃষ্টিকে পাশ কাটিয়ে আকাশটা বেশ পরিস্কার হয়ে উঠেছিলো। খবরের কাগজের শিরোনাম সেদিন এক মহান ঈশ্বর বিশ্বাসী হয়েছিলেন । লোকটার চেহারাটার সাথে উইঢিবি পাড়ার সেই ফাদারের চেহারার বেশ মিল ছিল। এই ব্যক্তি নাকি এমন এক ঐশ্বরিক শক্তির অধিকারী যে শক্তির দ্বারা সে অনিবারণযোগ্য ‘গ্রেইটস’ নামক রোগের জীবাণু ধ্বংস করে দিতে পারে। মাথায় খেটে গেল একটা বুদ্ধি। যে জীবানুগুলো আমি প্রতিদিন লাইফময় সাবান দিয়ে ধ্বংস করি সেগুলো ধ্বংস করা এই মহান ব্যক্তির পক্ষে তো বা হাতের খেলা হবে। পরক্ষণেই দুটো কথা চিন্তা করে পিছিয়ে গেলাম। যে ব্যক্তির সাহায্যের আশা আমি করছি সে এত বড় মানের ব্যক্তি যার কাছে আমার মত সাদাসিধে মানুষের পৌঁছা প্রায় অসম্ভব আর যদি সম্ভবও হত তবুও লাইফময় কোম্পানীর ব্যবসার কথা চিন্তা করে আমার এই চিন্তায় ব্যারিকেড এটে দিলাম। হয়তোবা লাইফময়ের প্রতি আমার একটা দূর্বলতা জন্মে গিয়েছিল মনের অজান্তেই। যাই হোক, সেদিনের পেপারটা আমি পুরোটা পড়িনি। ঐ একটা ৫ বছর বয়সী সেলিনাকে ধর্ষনের খবর পড়ে আমি খুব মর্মামত হয়েছিলাম। আর পরবর্তী খবর পড়ার মন মানসিকতা আমার হয়ে ওঠেনি সেদিন । মনে প্রশ্ন জেগেছিল সেদিন। এই ধর্ষক কি ঈশ্বরের ভক্ত? সেই ৫ বছরের সেলিনা কি ঈশ্বরের ভক্ত? ঈশ্বর কার পক্ষ নিল আর কাকে পরাস্থ করল? যে এই নিষিদ্ধ যুদ্ধে জয়লাভ করেছে তার পক্ষে অবশ্যই ঈশ্বর মহাশয় ছিলেন। ঈশ্বর মহাশয়ের ব্যাপারটা বোঝা বড়ই দায় । আসলে সেদিন কে জিতেছিল সেই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে ছিল না। তবে এ আমি জানি যে সেলিনা হারেনি । ঈশ্বর তাদের পাশে না থাকলেও আমি থাকব। আভ্যন্তরীণ একটা গাঢ় অনুভূতি যা ক্রোধও নয় , জেদও নয় , এমনই একটা অনুভূতি আমার ভেতর কাজ করছিল সেদিন । পেপারটার অংশ বিশেষ আমি সেদিন কেটে আমার ঘরের পশ্চিমের দেয়ালে গেঁথে দিয়েছিলাম। অতিরিক্ত আবেগে পণ করেছিলাম ঈশ্বর এই সেলিনার ধর্ষককে শাস্তি দিক আর না দিক আমি এদের মত হাজার ধর্ষকের শাস্তির ব্যবস্থা করব। হয়তোবা একটু বেশি বেশিই করছিলাম আমি সেদিন। আজও আমার সেই প্রতিশোধ নেওয়া হয় নি। এখন এতটা ক্ষোভও নেই আমার মাঝে। অবশ্য আজও আমি ঈশ্বর নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না।
যেদিন মেক্সিকোতে হাজার হাজার মানুষ ভূমিকম্পে মারা গিয়েছিল সেদিন রাতের কথা আমার বেশ মনে আছে। ১২:0১ মিনিটে রাস্তা ক্রস করতে গিয়ে সেই পুরনো কাল পাজেরোর সাথে আমার আবার দেখা হয়েছিল। ড্রাইভারও একই ছিল তবে এবার তাকে আমি ধন্যবাদ দিতে পারিনি। এবারের ব্রেকটা কষতে তার একটু দেরীই হয়েগিয়েছিল। তাইতো আমার মগজটা কাজল মামার চালতার আচারের মত হয়ে গিয়েছিল। ধন্যবাদটা সেবার আমি এই ড্রাইভারকেই দিয়েছিলাম। তবে কি এবারের দোষটাও আমি ড্রাইভারকেই দেব? সেদিনের মত ঈশ্বর ভক্ত অনেক মানুষ আমার লাশ দেখতে এগিয়ে এসেছিলেন । চেহারা গুলোও সেই আগের মতই । তবে কারও মুখে ঈশ্বরের কথা উচ্চারিত হয় নি। আমি জানি আমার সৎকার অর্ধেক করেছিল রাস্তার কুকুর আমার ছিন্ন মগজের অংশ খেয়ে আর অর্ধেক হয়েছিল মর্গে । আমি উত্তর পাইনি। আমি হয়তো জীবিত অবস্থায় থেকে অনেক আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। কিন্তু আজও আমি ঈশ্বর নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৮:২৭

ঋতো আহমেদ বলেছেন: ঘুম ভেঙে এমন একটি​ গল্প পেলাম। অনেক ধন্যবাদ ব্রাদার​।

০৯ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:০৭

ব্রতশুদ্ধ বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রাদার :)

২| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৪৮

উম্মে সায়মা বলেছেন: অন্যরকম একটা গল্প পড়্লাম। ভালোই লিখেছেন শুদ্ধদা।

০৯ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:০৮

ব্রতশুদ্ধ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে :)
শুভ সকাল

৩| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:০০

শায়মা বলেছেন: একটু ভয়েরই আছে গল্পটা তবে লাইফময় সাবান কি?

এটা কি ইচ্ছা করেই লেখা নাকি টাইপের ভুল ভাইয়া?

০৯ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯

ব্রতশুদ্ধ বলেছেন: একটা অস্তিত্ব না থাকা সাবানের কোম্পানীর নাম।
১০০% ইচ্ছা করে লিখা :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.