নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহ বিশ্বাসী................... স্রোতের বিপরীতে একজন।

সাইদুর রহমান সিদ্দিক

স্রোতের বিপরীতে একজন

সাইদুর রহমান সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি শর্বনাসী...!!!

২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ২:৩৩

আজ দুদিন থেকেই আমি ভেসে আসতেছি গঙার জলপথ হয়ে। গত দুদিন আগে বাবা আমাকে ক্ষেতের মধ্য থেকে আমাদের ছাগলটিকে নিয়ে আসতে বলছিল সেটা আমার মনে আছে।

আমি অনুভাবিত পাচ্ছি আমাকে আমাদের বাড়ীর সবাই অনেক খুজতেছে আর আমার জন্য কান্না করতেছে, অনেকটা আদরের মেয়ে ছিলাম বটে তা না হলে কি হতভাগির জন্য অনেকেই কাদবে

প্রথম যখন ওরা আমাকে রাতের আধারে গঙার জলে ভাসিয়ে দিল তখন আমার এই পাপিষ্ঠ দেহখানা বেশ তরতাজাই ছিল। কিন্তুু গঙার সেই খড়স্রোতের তরে ভেসে আসতে আসতে কেন জানি দেহের মাংসপেশী একটু একটু করে নরম হয়েছে

এখনও গঙার পেটেই আমি আছি কিন্তুু কিছু কিছু গায়ের মাংস শরীর থেকে ছুটে গিয়েছে আর মাঝে মাঝে গঙার অনেক শ্রেণীর মাছেরা আমার শরীর থেকে কিছু মাংস ঠুকরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে,তাদের কোন অসুবিধেই হচ্ছে না কারণ পানিতে ভাসতে ভাসতে শরীর নরম হয়েছে

আমার গায়ের জামাটা আর আগের মত নেই, ছিঁড়ে গিয়েছে ওদের সবার হাতের টানা হিছরের কারনে যে টুকু পড়নে ছিল সেটাও আবার নরম হয়ে গা থেকে খুলে যাওয়ার উপক্রম।

আমি ভাসছি আর ভাসছি..... আমাদের বাড়ীর উজান থেকে শ্রোতের টানে ভাটির অনেক দুরেই চলে এসেছি

বাবা মা হয়তো ভাবতেছে যে___আদুরের মেয়েটা মনে হয় অন্য দিনের মত আমাদের সাথে অভিমান করে হয়তো কোনো আত্নীয়র বাড়ীতে লুকিয়ে আছে, আর গত দুদিনে না পেয়ে অনেক কাঁন্না করতেছে

আমি যাচ্ছি আর যাচ্চি গঙার শ্রোতে ভাটির দিকে ঠিক আমার শরীরের পচনের গন্ধে আমার উপর আকাশে কাক ও শকুনেরা উড়তেছে,কিছুক্ষণ পর পর কয়েকটি শকুন ছোঁ মেরে আমার মুখের মাংস তুলে খাচ্ছে, সেই সাথে চোখ আমার নাক উপড়িয়ে নিয়েছে তারা, এখন আমার সেই মুখের রুপ নেই। বিবর্ণ ধরণের হয়ে গেছে

দুদিন পার হয়ে গেল এখন আমি গঙার ছোট্ট একটা চরে আটকিয়ে আছি , ঔ দিকে মাঝিরা নৌকা চালিয়ে লোক পারাপার করতেছে আর জেলেরা মাছ ধরার জন্য ব্যস্ত

ওদুরে একদল ছেলে গঙার জলে স্নান করতেছে আর পানি থৈ থৈ করে হৈ হুল্লর করে খেলেয় মেতে উঠতেছে, তার মধ্যে একটা ছেরের চোখ এই হতভাগির বিশ্রি শরীরে পড়ল

আমায় দেখে ছেলেরা ভয়ে চেঁচামেচি করতে লাগল,ছুটে এলো সেই দুরের গ্রামের অনেক লোক, আর কেউ ঘেন্যা করতে লাগল কেউ বা আমায় উঠাতে ব্যস্ত হয়ে চোখের জল ফেলতে লাগল

অনেক তথ্য না পেয়ে আমাকে বে-ওয়ারিশে দাফন করা হল.......

আজ অনেকদিনেই হয়ে গেল,থানার ডায়েরীর পাতাও হয়তো খুজে পাওয়া যায় না হয়তো আমাকে খুজতে খুজতে অনেক আগেই ভুলে গেছে আমার বাবা মা গ্রামের সকল আত্নীয়, আর আমার সৃতিও মনে হয় তাদের চোখে ভেসে উঠে না

এমনকি তারা হয়তো আজও জানে না তার সেই মেয়েটার কি হয়েছ, হাড়িয়ে গিয়েছে নাকি কোন অঘটনে মরে গেছে

আর ওই নরপিছাস শৃগাল গুলি হয়কো আজও আমার মত কোন মেয়েকে ধর্ষন করে ঠিক আমার মত পরিনতির করতেছে

আজ কেউ জানে না........... আমি কে,বা কি করেই মরে গেলাম....?

....জ্বী আমি হলাম অনেকের হাতে ধর্ষিতা হতভাগি রুপা...!!!!

যা সবাই জানে না

-নষ্ট ক্যাঁপাচিটার

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.