নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাচ্ছেতাই

সিদ্দিকী শিপলু

সিদ্দিকী শিপলু

সিদ্দিকী শিপলু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যাঙাচীর কান্না

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:১৮


বহুদিন আগের কথা,
তাই এটা উপকথা।

এক দেশে ছিল একটা মা ব্যাঙ। আর সেই মা ব্যাঙের ছিল দুষ্টু একটা ব্যাঙাচী ছেলে, খুব দুষ্টু। এই দুনিয়াতে দুষ্টু ছেলেটা ছাড়া মা ব্যাঙটার আর কেউই ছিল না। মা ব্যাঙটা সারাদিন পরিশ্রম করে ছেলের জন্য খাবার জোগাড় করে আনতো। কিন্তু ব্যাঙাচী ছেলেটা সারাদিন এদিক ঐদিক দৌড়াদৌড়ি আর খেলাধুলা নিয়ে থাকতো। সারাক্ষণ খেলা আর খেলা। আজ এ পাড়ায় তো কাল ঐ পাড়ায়। সে মা এর কথা একদম শুনতো না।
শুনতো না মানে, একদমই শুনতো না। বরং মা যেটা বলতো, সে তার উল্টোটা করতো। মা যদি বলতো আজ রোদে ঘুরিস না, তো ব্যাঙাচীটা সেদিন বেশী বেশী করে রোদে ঘুরতো। মা ব্যাঙ যদি বলতো ডানদিকে যা, তো ব্যাঙাচী যেত বামদিকে। মা ব্যাঙ এর মনেই নাই কোনদিন ছেলেটা তার কথা শুনেছে কি-না!!
এভাবে ব্যাঙ্গাচী ছেলেটা সারাজীবন তার মাকে জ্বালাতন করতো। আর মা ব্যাঙটা সারাদিন "ঐ বাজান তুই কই" বলে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করতো।
মা যদি একবার দেখে ফেলে বলতো, বাজান কাছে আয়, খাইতে আয়, তাহলে ব্যাঙাচীটা দৌড়ে পালাতো।

একবার মা ব্যাঙটার কঠিন অসুখ হলো। ছেলে ব্যাঙাচীটা এতদিনে মা এর জন্য আদর উছলে উঠলো। আসলে ছেলে ব্যাঙাচী দুষ্টু হলেও মা-কে খুব ভালোবাসতো। তাই মা এর যখন অসুখ হলো তখন সে চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে মা-এর সেবা করতে লাগলো। কিন্তু মা ব্যাঙ বুঝতে পেরে গেছে যে সে তার দুষ্টু ব্যাঙাচীকে একা ফেলে চলে যাচ্ছে চিরতরে।
কিন্তু মা ব্যাঙ যদি মারা যায়, তাহলে ছোট ব্যাঙাচীটা কি করে থাকবে বলো?
তাই যদি মায়ের কবরটা কাছে থাকে তাহলে ছেলেটা হয়তো শান্তি পাবে।
মা ব্যাঙটা ঠিক করলো তার কবরটা পাহাড়ের উপরে থাকুক, পাহাড়ের নীচে বর্ষায় পানি উঠে যায়, তাহলে মা এর কবর পানিতে ডুবে গেলে ছেলেটা তো অনেক কাঁদবে!!
কিন্তু!! কিন্তু!!! ছেলেটা তো তার মহা দুষ্টু, সারাজীবন মা যা বলেছে দুষ্টুটা তার উল্টোটা করেছে। এখন মা যদি পাহাড়ের উপরে কবর দিতে বলে, ছেলে নির্ঘাৎ পাহাড়ের নীচেই কবর দিবে। এই না ভেবে মা ছেলে ব্যাঙাচীকে বললো " আমি মারা গেলে তুই আমাকে পাহাড়ের নীচে কবর দিস" এই না বলে মা চলে গেলো না ফেরার দেশে।
ছেলে তো মা এর শোকে দুইদিন ধরে কাঁদলো। কাঁদলো আর কাঁদলো, অনেক অনেক কাঁদলো।
কান্না শেষে সবাই বললো মা কে তো এখন কবর দিতে হবে!! সবাই বললো তোমার মাকে পাহাড়ের উপরে কবর দাও।
কিন্তু ছেলে হায়,
কেঁদে কেঁদে কয়,
সারাজীবন তো কখনও
শুনিনি কথা মায়ের!
আজ কিভাবে অমান্য করি
তার শেষ আদেশের?

মায়ের শেষ ইচ্ছায় আমি মাকে পাহাড়ের নীচেই কবর দিবো।

ছোট্ট ব্যাঙাচী চোখের জলে বুক ভিজিয়ে পাহাড়ের নীচে তার মাকে কবর দিল।
এরপর ছোট্ট ব্যাঙাচীটা অনেক ভালো হয়ে গেছিল। কোন দুষ্টুমী করতো না। ভালো হয়ে থাকতো আর সারাদিন মায়ের জন্য দোয়া করত।
দিন যায়, মাস যায়,
এরপর বর্ষা এলো, পাহাড়ের নীচের নদিতে জোয়ার এলো। ডুবিয়ে দিল মায়ের কবরটা।
এ দেখে ছোট্ট ব্যাঙাচীর সে কি কান্না!
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে সেকি কান্না। তার দুঃখে সব ব্যাঙ রাও কান্না শুরু করে। তারা সব একসাথে সেই দুঃখী ব্যাঙাচীটার দুঃখে কান্না করে। প্রতি বর্ষায় কান্না করে।
এখন কান পেতে শুনলে প্রতি বর্ষায় ব্যাঙদের কান্না শুনবে। দুষ্টু ব্যাঙাচীটার জন্য সব ব্যাঙদের কান্না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২৫

সনেট কবি বলেছেন: বেশ

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৪

সিদ্দিকী শিপলু বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৩

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে সেকি কান্না। তার দুঃখে সব ব্যাঙ রাও কান্না শুরু করে। তারা সব একসাথে সেই দুঃখী ব্যাঙাচীটার দুঃখে কান্না করে। প্রতি বর্ষায় কান্না করে।
........................................................................................
আমার কাছে মোটে ও কান্না মনে হয় না
বরং মনে হয় কোরাস সঙ্গীত

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


পড়ে সময় নষ্ট

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: বেশ মজার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.