নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপন ভোলা

সুবল চন্দ্র বর্মন

সাহিত্যিক ছদ্মনাম - শ্রীকৃষ্ণ মামাহাত্ম্য

সুবল চন্দ্র বর্মন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবা তুমি মোর স্মৃতরি পাতা

১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১২:৫১


আমি তখন তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও, বাবা? আমি উত্তরে সেদিন বলেছিলাম, "বাবা, আমি চিরকাল বাঁচতে চাই, আমি যেন কখনো না মরি। এর জন্য আমাকে কি করতে হবে সেটা বলুন।"
বাবা বলেছিলেন, "তুমি ভালকরে পড়, বাবা। যখন ভালকরে পড়াশুনা করবে তখন তুমি নিজেই বুঝতে পারবে। কিভাবে, কোথায়, কেমন করে বেঁচে থাকা যায়? এর জন্য তোমায় বেশি বেশি করে পড়তে হবে।"
বাবা আমাকে যে শিক্ষা দিয়েছেন, তা পৃথিবীর কোন সন্তান পেয়েছে কি'না তা আমার কাছে সন্দেহ জনক। সন্তানকে না মেরে অনুশাসন আর বিবেক বিবেচনার দ্বারা কেবল বুঝিয়ে একটা শিশুকে অপরাধ করা থেকে দূরে রাখা যায়, তা মনেহয় আমার বাবার চেয়ে অন্য কেউই এ বিষয়ে এত ভাল জানতেন না। তিনি আমার বাবা, আমার শিক্ষক, আমার কাছে একজন অনুসরণীয়।
আমার বাবা অন্য দশ জন বাবাবার মত নয়। তিনি চাষাভুষা মানুষ ছিলেন, খেতে খামারে কাজ করতেন। এরপরেও তিনি আমাকে অনেক সময় দিতেন। যা অন্যান্য শিশুরা এখনও পায়না। এত কিছু শিখিয়েছেন, তা সত্যিই অকল্পনীয়।
মানুষকে যে সংগ্রাম করে বাঁচতে হয়, এটা তিনিই প্রথম শিখিয়েছেন। মানুষ যেমন সৃষ্টির শ্রেষ্ট, তেমনি ভয়ানক রুঢ় জীবের মধ্যেও একটা। এটা তাঁরি শেখানো। তিনি বলতেন মানুষ ধর্মকে মন্যকরে। কিন্তু ধর্মের চেয়েও বড় কিছু আছে। তাকে বিশ্বাস বলে। কেননা সমগ্র বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ড কেবল মাত্র এই বিশ্বাসের উপরেই চলছে।
আমি বাবাকে ঠিক বুঝতে পাড়তাম না। বাবা আমাকে অনেক বোঝাতেন। তিনি কখনই আমাকে মারেন নি। অংক করার পরে কি ফলাফল হতে পারে তিনি আমাকে আগেই হিসাব করে দিতেন। তিনি আমাকে বাংলা আর গনিত খুবই ভালকরে বোঝাতেন। তাঁর কারনেই আমি শিক্ষায় এত আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলাম যে, আমি প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণীর বাংলা বই দিনে দু'তিন বার শেষ করতাম।
আমার কারনে কোনো খারাপ কিছু হলে তিনি কখনও রাগতেন না। ধৈর্য সহকারে বোঝাতেন। আমি কেন এটা করেছিলাম, এটার ফলাফল কি হতে পারে।
কিন্তু আজ আর আমার বাবা নেই, গত ১৫ মে ২০১৭ ইং সোমবার পরলোক গত হয়েছেন। ফোনে আমাকে বাবা একটা কথাই প্রায় বলতো, "তুমি এখন স্বাধীন, তবে স্বাধীনতার অপব্যবহার করনা। তাহলে তুমি একা ধ্বংস হবে না, তোমার শুভাকাঙ্খী সহ গোটা সমাজ ধ্বংস হবে।............নিজের খেয়াল রেখ, বেশি রাত জেগো না। রাত্রীতে বাইরে বেড় হইও না। কাউকে আঘাত করনা, অন্যের আঘাত সহ্যকরিও। আত্ম অহংকার করনা। আরো........ ইত্যাদি, ইত্যাদি।"
কিন্তু আজ একথা গুলো খুব বেশি মনেপড়ে। স্মৃতিগুলো চোখে ভেসে ওঠে। তখন অশ্রু ফোটা ফোটা পড়তে থাকে। এযেন ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ের গভীর থেকে আসা পিতা হাড়া সন্তানের হাহাকার শূণ্যতা।
(সংক্ষেপিত)
"বাবা দিবস" উপলক্ষ্যে সকল সন্তানের পক্ষ থেকে
সকল পিতার প্রতি উৎসর্গ।

১৮/০৬/১৭ ইং (টাঙ্গাইল)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:০৩

মফস্বলের মেয়েটি বলেছেন: লেখাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার বাবা যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন এই দোয়া করি।

১৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:০৬

সুবল চন্দ্র বর্মন বলেছেন: ধান্যবাদ আর শুভকামনা রইল।

২| ১৮ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৫:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো, সব বাবাই একদিন সন্তান ছিলেন।

১৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:১০

সুবল চন্দ্র বর্মন বলেছেন: ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। ধন্যবাদ।

৩| ১৮ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:১৪

তানুন ইসলাম বলেছেন: পৃথীবিতে অনেক খারাপ মানুষ আছে,তবে একজন ও খারাপ বাবা নাই

০২ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:২৪

সুবল চন্দ্র বর্মন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.