নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপন ভোলা

সুবল চন্দ্র বর্মন

সাহিত্যিক ছদ্মনাম - শ্রীকৃষ্ণ মামাহাত্ম্য

সুবল চন্দ্র বর্মন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও সাম্প্রতিক সভ্যতা

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৩

আধুনিক বিজ্ঞানের ছোয়া কোথায় লাগেনি? এমন কোনো কল্পনার জিনিস নেই যে, যেখনে আধুনিকতার উপস্থিতি নেই। আজকের মানব সভ্যতার এরূপ অত্যাধুনিকতার মূলে রয়েছে তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং তার ব্যপক বিস্তৃতি। যার ফলে আজকের পৃথিবী এত ছোট মনেহয়। মনেহয় আগের চেয়ে পৃথিবীটা একটু বেশি জোরেই ঘোরে। তাই তো আজকের আধুনিক সভ্যতা এত দ্রুত পরিবর্তন ও মানসিক রুচির বিবর্তন হচ্ছে।
কিন্তু একবার চোখ বন্ধকরে নিজেকে আর নিজের জগৎটাকে ভেবে দেখ। এত অত্যাধুনিকতার আসল উদ্দেশ্য মানুষের সুখ শান্তি আর আড়াম প্রিয়তা। নিজেকে কতটুকু সুখী আর প্রফুল্ল মনেকর? কতটুকু সময় পাও বসে থাকার? কতটুকু সময় পাও ঘুমাবার?
বাড়ির কাজের বুয়া থেকে শুরুকরে শেষ বয়সী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও এখন রাত বারটা পর্যন্ত সিরিয়াল দেখে। পাঁচ-সাত বছরের শিশুটি যার কথা ছিল রাত দশটার মধ্যে পড়াশুনা করে ঘুমানোর। সে এখন মোবাইলে গেম খেলায় আসক্ত।
ছোটদের কথা কি বলব? মাঝ বয়সীরাও গেমে মোটামিটি আসক্ত। তারা সময় নষ্টকরে। কিন্তু এ গেমে শিশুদের কোমল মনে কতটুকু প্রশান্তি আর কতটকু তাকে শিক্ষা দিবে। বরং গেমের অতিমানবীয় কার্যকলাপ ও দুঃসাহসিকতা তাদের মনে নেগেটিভ ধারনা দিতে পারে। তাদেরকে অনেক ভায়াবহ ও খারাপ দিকে প্ররোচিত করতে পারে। কেননা শিশুরা দেখে শুনে খুব দ্রুত যেকোন জিনিস আয়ত্ত করে নিতে পারে।
যে বয়সে আমরা দাদু-দিদিমা আর ঠাকুরমার কাছে গল্প শুনতে শুনতে ঘমিয়ে পড়তাম। মনের আনন্দে ছড়া আর যে কোন গল্পের বই পড়ে ফেলতাম। কিন্তু আজকের বাবা-মা ও পরিবারের বড়রা সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা বাচ্চাদের সময় দেয়না। সময় দেয় সিরিয়ালে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে। তাহলে শিশুরা নিজেরা একা একা কি শিখবে আর কতটুটুই বা শিখবে?
আধুনি বিশ্ব মানুষকে যতটুকু না শান্তি দিয়েছে, তার চেয়ে বেশি ব্যস্ততা আর ক্লান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। দুঃচিন্তা বাড়িয়েছে। গতকালকের বাবা-মা তাদের সন্তানদের নিয়ে যতটুকু না চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হত, তার চেয়ে আজকের বাবা-মা'রা বেশি ভাবে। ভবিষ্যতে এর পরিনতি আরও ভায়াবহ হতে পারে, যদি না কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে।
নিজের নিত্য দিনের রুটিন করলে বোঝা যাবে আসলে তুমি কতটুকু ভাল কাজ করেছ। শরীর বিছানায় ঠিক হয়ত বারটায় দাও। কিন্তু আসলে কি বারটায় ঘুমাও? সারাদিন অফিসে কাজ করেছ, হয়ত ক্লাসে পড়েছ। হয়ত কাজে খুব ব্যস্ত থাকতে পার। কিন্তু তার ফাঁকে সবকিছু ফাঁকি দিয়েও তুমি সামাজিক যোগাযোগ বিশেষ করে ফেসবুকে উঁকি দিয়েছ। ফেসবুকে কতটুকু ভাল কাজে সময় ব্যয় করেছ?
ইন্টারনেট যা সভ্যতার আরাক নব দিগন্তের উন্মচনকারী পন্থা। কিন্তু গুগলে বা ইউটিউবে কোন ভাল জিনিসও সার্চ দিলে অনেক নোংরা পেজ, পোস্ট, ইমেজ, ভিডিও আর অশ্লিল অ্যাড দেখা যায়। আজ আধুনিক বিশ্ব যেমন অত্যাধুনিকতায় সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি সব কিছুতেই ব্যবসার জাল ছড়ানো হয়েছে। যাতে কোন ধরেনের নৈতিকতা বা সামাজিকতা লক্ষ করা যায়না। সেটা যতই হোক অসাধু ও অনৈতি, দরকার ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ।
এসব নৈমিত্তিক ও আত্মস্বার্থ মূলক কারনে আজ মানব সমাজে অসামাজিকতা, অরাজকতা ও অনৈতিকতা বেশি দেখা যাচ্ছে। যেমন খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, নারি-শিশু নির্যাতন ইত্যাদি এখন নিত্য দিনের ঘটনা। অনেকে বলে, "আজ সোসাল মিডিয়ার কারনে এসব বেশি জানা-জানি হয়, আগেও হত। কিন্তু তখন এত দ্রুত প্রচার আর যোগাযোগ ব্যবস্থাও এত ভাল ছিলনা। বিধায় আমরা জানতাম না।"
আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলি, "তুমি কতটুকু সামাজিক যোগাযোগ নৈতিকতা অবলম্বন করেছ? কতটুকু নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রেখেছ?"
বিভন্ন পর্ণগ্রাফিক সাইটগুলো এতটা উন্মুক্ত যে, যে কেউ যে কোনো সময় পর্ণগ্রাফি দেখতে পারে, সেগুলো শেয়ার করতে পারে। যা সব বয়সী ছেলে-মেয়েদের জন্য অগ্রাসী এবং বড় হুমকি মূলক। এসব সাইট গুলো তাদের ওয়েব সাইটের লিংক ও পিকসহ অ্যাড বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ছরিয়ে দিচ্ছে। সেগুলো আবার হাওয়া-পানির মত সোসিয়াল মিডিয়ার সাথে মিশে ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পরছে। যা যে কেউ অতি সহজে হাতের কাছে পেতে পারে।
আজগের স্মার্ট ফোনগুলো এখন আগের যুগের অনেকটা মাটির খেলনা পুতুলের মত হয়েগেছে। যার ব্যবহার মানুষ কখনই বেশি ভালকাজে ব্যবহার করেনি। যতটা না খারাপ কাজে ব্যবহার করেছে। আজ কাল এমনও তথ্য শুনতে পাওয়া যায় যে, পিচাশ স্বামী তার নিজের স্ত্রীর অন্তঃরঙ্গতার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আজকের মানুষের রুচির পরিবর্তন এমন হয়েছে যে, তারা শিক্ষাটাকেও বিনোদন মনেকরে।
বিজ্ঞান কখনই অমানবিক ও অনৈতিক কোন কিছুকেই সমর্থন করেনা। কিন্তু সাধারন মানুষ বিজ্ঞানের অপব্যবহার করে। কিন্তু সে জানেনা যে, আজকের এই দিনটা কাল তার ছোট ভাই-বোনের বা তার সন্তানের উপর প্রভাব ফেলবে। এতে কোনো না কোনো ভাবে তার নিজেরি ক্ষতি হবে। সাথে সাথে গোটা সভ্যতা অধঃপতিত হবে। মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্ব হাড়াবে।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.