নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুনভাবে নিজের চিন্তার শক্তি আর ভাবনার বিশ্লেষণ করার সামর্থ অর্জনের জায়গা হল ব্লগ। বিচিত্র ভাবনারাশির আলোয় নিজেকে আলোড়িত আর আলোকিত করার উদ্দেশেই আমরা ব্লগে আসি। অবসর সময়টাকে ভালোভাবে কাটানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম উপায় আর নেই। তদুপরি বিনোদন এখানে উপরি পাওনা

এস এম ইসমাঈল

মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।

এস এম ইসমাঈল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসংগ ইসলাম ও দাস প্রথা

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২০


ইসলাম যদি হয় মধ্যযুগীয় তাহলে ঈহুদী আর খৃষ্ট ধর্মকে কী নামে ডাকা যেতে পারে? আমি তো দেখছি অতি আধুনিক বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার টপ লেভেল থেকে বটম পর্যন্ত বর্বরতায় ঠাসা। ভাড়ায় বা চুক্তিতে নিয়োজিত কাজের মহিলা বা মেয়েদের সাথে আমরা এই একবিংশ শতকের সুসভ্য মানুষেরা কী জঘণ্য আচরণ করছি সেটা দেখলে যে কোন সুস্থ্য মানুষও নির্ঘাত অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন।
যেমন –
১। যথাসম্ভব কম বেতন ও কম খেতে দেয়া। নিজেদের ব্যবহৃত পুরানো কাপড় ঘরের কাজের লোকদেরকে দিয়ে মহা তৃপ্তির ঢেকুর তোলা। অনেক বাসায় কিন্তু বাড়ীর কাজের লোকদের জন্য আলাদা রান্নার ব্যবস্থা থাকে। যেখানে নিম্ন মানের চাল, ডাল, কচুঘেঁচু ইত্যাদি কম দামী সবজী গেলানো হয়ে থাকে।
২। তাঁদের বেতনের টাকা আটকে রাখা – এ অজুহাতে যে, সে চাকুরী ছেড়ে চলে যেতে পারে।
৩। কারনে অকারনে তাঁদের বকাঝকা করা, শারীরিক নির্যাতন করা, ঠিকমত ঘুমাবার সুযোগ না দেয়া,
৪। ফাঁকফোকরে কর্তা, কর্তার ছেলে, বা পরিবারের কোন কোন সদস্য এসব কাজের লোককে যৌনকাজে বাধ্য করেন।
৫।নিজেরা কোথাও বেড়াতে গেলে কাজের লোকদেরকে ভিতরে রেখে বাইরে থেকে তালা মেরে দেয়া হয়।
৬। নিজেদের দুষ্কর্ম লুকোতে কাজের লোকদেরকে অনেক সময় হত্যাও করা হয়।
যদিও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কাজের লোকেরাও কিন্তু ধোয়া তুলসী পাতা নন।
এমন অনেক পরিবারও আছেন যারা এসব নোংরা কাজ করেন না এবং আল্লাহ্‌কে ভয় করে রাসুল দঃ এর নির্দেশ মোতাবেক চলার সযত্ন প্রচেষ্টায় নিয়োজিত। তাঁদের জন্য রইলো মুবারাকবাদ।


এবার দাস প্রথা নিয়ে কিছু তথ্য শেয়ার করবো, ইনশা আল্লাহ।
দাস প্রথা তখনকার যুগের সমাজ ব্যবস্থার একটা রূঢ় বাস্তবতা। হটাৎ করে সেটাকে নিষিদধ করা যেতো না। তাই এ ব্যপারে ধীরে চলো নীতিতে একে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, যেমন মদ্যপান ও সুদের ব্যাপারে করা হয়েছে।
দাস প্রথা উচ্ছেদ না করার ব্যাপারে কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করেছে। যেমন ১। মানুষকে ব্যাভিচার থেকে বাঁচানো ২। মুসলিম ফ্যামিলির সংখ্যা বা উম্মতের সংখ্যা বাড়ানো। ৩। দাসদের প্রতি উদারতা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাঁদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করা। সে যুগে কোন দেশ এসব কথা চিন্তা করেছে? না গ্রীক না রোমান, না ইয়াহুদী না খৃষ্টান সম্প্রদায়?
তিউনিসীয় পরিব্রাজক ইবনে বতুতা বাংলাদেশ থেকে একজন স্বল্প বয়েসী কৃত দাসী খরিদ করে নিয়ে গেছিলেন।
আজকের সভ্যতার দন্ড মুণ্ডের কর্তা ইউরোপ বিশেষতঃ ইংল্যান্ড দিনেমার, দাচ, ফরাসীরা এক সময় ছিল সবচেয়ে বড় জলদস্যু, লুটপাটের হোতা। তারা নীরিহ কালো বর্ণের লোকদেরকে পশুর মত খাঁচায় বন্দী করে গরু ছাগলের মত প্রকাশ্য বাজারে নিলাম করতো। আমাদের দেশেও ওনারা কি কম অত্যাচার করেছেন? ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কথা এত সহজে কি ভোলা যাবে? নীল কর আর বর্গিদের ইতিহাস আজো আমাদের শঙ্কিত করে।আমেরিকানরা দাস প্রথা থেকে মুক্তি পেয়েছে তাও তো খুব বেশী দিনের কথা নয়।
সে কালে যুদ্ধ বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করা হতো, সব দেশেই এটি ছিল রেওয়াজ। মহানবী দঃ পণ নিয়ে যুদ্ধ বন্দীদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। বদর যুদ্ধের ৭০ জন বন্দীদের মুক্তি পণ ছিল সম সংখ্যক মুসলমান লোকদের লেখাপড়া শিখানো।
আরেক যুদ্ধে প্রিয় নবীজী দঃ এর দুধ বোন শায়মা বন্দিনী হিসেবে এলে বড় বোনের কষ্ট লাঘব করার উদ্দেশ্যে তিনি ঐ গোত্রের সব বন্দী লোকজন কে মুক্তি দিয়েছিলেন।
এরকম সহজ শর্তে মানুষকে শৃংখল মুক্ত করার নজির বিশ্ব ইতিহাসে পাওয়া যাবে কি?
ইসলামে দাস মুক্তি দেয়াকে একটা অনেক বড় পূন্য কাজ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। দাস-দাসীদের সাথে সদাচরণের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। কৃত দাস দাসীদেরকে আপনি নিজে যেমনটা খাওয়া পরা করছেন, তাদেরকেও একই রকম খাবার ও পরিধেয় বস্ত্র দেয়ার জন্য হাদীসে বলা হয়েছে। মুক্ত কৃতদাস হযরত বেলাল রাদিআাল্লাহু তায়ালা আনহু ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হবার গৌরব অর্জন করেছিলেন। আপনারা কেবল দাসীদের নিয়ে মেতে থাকবেন আর ইসলাম এসব ভাগ্যাহত লোকদের জন্য কী করেছে তা একটু শুনুন।
সে যুগে কেনা গোলামদেরকে পণ্যের মত ভাবা হত, যা তৎকালীন পৃথিবীর সব দেশেই প্রচলিত ছিল। মেয়েদেরকেতো কেউই মানুষ বলেও গণ্য করতে চাইতো না। এ ব্যাপারে ইসলামের হুকুম একেবারে পরিষ্কার।
১। দাস-দাসীদের উপর তার সাধ্যের বেশী কাজ দেয়া যাবে না। তার কাজকারবার যদি তোমার অপছন্দ হয়, তবে তাঁকে তুমি স্বাধীন করে দাও, এটা অনেক বড় পূণ্যের কাজ।
২। মালিক তার কেনা দাসীর সাথে যৌন কর্ম করতে পারবে। এতে যদি ঐ দাসীর পেটে বাচ্চা আসে, তবে সে দাসীকে মালিক আর কখনো বিক্রি করতে পারত না। এসব দাসীদেরকে বলা হতো উম্মে ওয়ালাদ। আর ঐ সন্তান বাবার সম্পদের ভাগ পেতো। মিসরের মামলুক রা আর ভারতের সুলতানি রাজত্বের আমলে দিল্লীতে দাস বংশীয়দের রাজত্বের সূচনা হয়েছিল।
৩। মালিককে নিদৃষ্ট অঙ্কের অর্থ আয় করে দেয়ার শর্তে দাসেরা মুক্ত হবার সুযোগ ছিল। যেমন - মদীনার জীবনে একজন সাহাবীকে ইয়াহুদী মালিক তার বাগানে ১ হাযার খেজুর গাছ লাগাবার শর্তে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব দেয়। ঐ সাহাবীর নামটা যদিও এ মুহুর্তে মনে আসছে না। এ কথা জানতে পেরে প্রিয় নবীজী দঃ সব সাহাবীদের কে নিয়ে ঐ ইয়াহুদীর বাগানে খেজুর গাছ রোপণ করেছিলেন। এবং সব সাহাবীদেরকে তাঁর মুক্তিকামী ঐ ভাইকে গাছ লাগিয়ে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
৪। ইমাম আবু হানিফা রাহঃ কখনো কখনো এক দাসের ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে বসতেন। কেউ তাঁকে প্রশ্ন করে যে, জনাব ঐ লোকটা একটা সামান্য দাস। আর আপনি যুগের ইমাম হয়ে তার মাহফিলে গিয়ে বসাটা মোটেই শোভনীয় নয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬

সনেট কবি বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৬

এস এম ইসমাঈল বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা জনাব সনেট কবি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.