নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একবার যখন দেহ থেকে বা’র হ’য়ে যাব আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে? আবার যেন ফিরে আসি কোনো এক শীতের রাতে একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে। কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে”

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সোহেল

স্পন্দিত রক্ত

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সোহেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি কুকুরের আত্মকাহিনী

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৩

সংবাদ এসেছিলো । লালু মারা গেছে। লালু আর কেউ নয়, এটা দীর্ঘ দিন আমাদেরই বাড়ীতে থাকা একটি কুকুর ছিল। যে দায়িত্ব, ভালোবাসা, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ও সংযম নিয়ে আমাদেরকে আগলে রাখতে এসেছিলো, যা মানুষকে নিঃসন্দেহে তাক লাগিয়ে দেবার মত। সে যেনো আমাদের পরিবারেরই একজন ছিলো। মানুষের মধ্য মনুষ্যত্ব হারিয়ে গেলে আমরা তাকে পশু হিসেবে বিনির্মাণ করি । কিন্তু আমরা কি আদো পশুদের অস্তিত্তের মূল রহস্য উদ্ঘাটন করতে পেরেছি?। কিছু কিছু পশুদের অসাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য মানুষকেও হার মানায়। যেমন দায়িত্ব পালনের ব্যাপার টি। পাঁচ বছর আগে সে রক্তে ভেজা ভাঙা পাঁজর নিয়ে যখন তীব্র কাতরাচ্ছিল । জানা গিয়েছিলো , যে বাড়ীতে থাকতো উনারা খেতে দিতো না, একদিন তীব্র ক্ষুধা নিয়ে পাশের বাড়ীতে কোন অপরাধ করলে কুকুরটিকে মেরে ফেলার মত করে মেরেছিলো। ব্যাপারটি আমার আম্মার নজরে আসলে, আমরা বাড়ীতে নিয়ে এসেছিলাম তাকে । সারিয়ে তুলেছিলাম তাকে। কখনো তাকে বলে দিতে হয় নি , তার দায়িত্ব কি। তার সীমানা কতোটুকু । কি করা যাবে , কোনটি করা ভাল নয় । কিছুই তাকে বলে দিতে হয় নি। অসংখ্য ভালো ভালো খাবার তার সামনে দিলেও , খাইতে ইঙ্গিত দেবার আগ পর্যন্ত সে খাই নি। পরিবারের প্রতিটি সদস্য , কে- কখন- কিভাবে তাকে ভালোবাসবে , সব তার নখদর্পণে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ কারো জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতেও দেখেছি তাকে । চেনা মানুষ গুলোর আগমনী বার্তা সে আগেই পেতো কিনা যানি না , তবে যতবার গোপালগঞ্জ থেকে বাড়ীতে গিয়েছি ততবারই তাকে রাস্তার পাশে লেজ নাড়িয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। আমাকে দেখেই সবাইকে আসার সংবাদটা জানিয়ে দেবার চেষ্টা করেছে। পরিবারের কেউ মারা গেলে তাকেও খাবার না খেয়ে নির্জীব হয়ে বসে থাকতে দেখেছি। মায়া কান্না অনেকেই কাঁদে , কিন্তু ভেতর থেকে তৈরি হওয়া পুঞ্জীভূত ভালোবাসা থেকে আসা চোখের জল কয় জন ফেলতে পারে। আমি কেঁদেছিলাম । ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়েছিলো সে । ধুঁকে ধুঁকে পরের দিনই মারা গিয়েছিলো।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৩

কানিজ রিনা বলেছেন: একজন মানুষ কুকুর পুষেছিলাম দুইযুগ
ধরে। সেই কুকুরের পিছনে কতইনা অবদান
রেখেছি। কুকুরটা ছিল মানুষের মতই দেখতে
মনুষত্ববোধ কিছুত ছিলইনা। কুকুরত্বও ছিলনা।
আসলে জানেন কিছু মানুষ আছে জানোয়ার
বললেও কম বলা হয়।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪০

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সোহেল বলেছেন: আপনার কথার গুঁড় অর্থ যদি ধরতে পারি , তাহলে বলবো , জন্মালেই আসলে মানুষ হওয়া যায় না । মানুষকে নিরন্তর চেষ্টার মধ্য দিয়ে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। অনেক মানুষ আছে যারা মনুষত্ববোধ এর ধারের কাছেও যাবার আদর্শ তৈরি করে না, উপরন্তু সে থেকে যায় মানুষের খোলসে বেড়ে উঠা এক প্রাণী, মূলত তাকে পশু বললে অনেক সময় 'পশু জাতী'কেও অপমান করা হয়। মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৩৮

অরুনি মায়া অনু বলেছেন: আহা লালুর মৃত্যুর কথা জেনে কষ্ট লাগল। বহু বছর আগে আমারো জন্মের আগের কথা। শুনেছি একবার ডাকাত পড়েছিল বাড়িতে। সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে এসেনি। এসেছিল আমাদের পোষা কুকুর। সে সোজা হয়ে গেইটে দাঁড়িয়ে গেইট আগলে রেখেছিল। ডাকাতদের ঢুকতে দিবেনা। অবশেষে ডাকাতরা তাকে গুলি করে মেরে বাড়িতে ঢুকেছিল।
আসলেই কুকুরের প্রভুভক্তির তুলনা হয়না।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭

দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সোহেল বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন ,কিছু কিছু কুকুর; মানুষকে এমন ভাবে নাড়া দিয়ে যায়, যেন সে বার বার মানুষের দায়িত্ববোধ, ভালোবাসার তীব্রতা ও কর্তব্য পরায়ণতার চলমান রীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ্য করছে । সে চোখে আঙুল দিয়ে ধিক্কার জানিয়ে দেখিয়ে দিতে চাচ্ছে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের অস্তিত্তের আদর্শিক গুণাবলী কি হওয়া উচিৎ। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে । সময় নিয়ে পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.