নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চিরকুমার মুজিবর কোনদিন ভাবেনি তাকে ষাট বছর বয়সে এসে বিয়ে করতে হবে। তাও আবার নাত-বউ কে। অন্যদিকে তালাক দেওয়া স্বামীর চাওয়ার কাছে হার মানতে হলো আছিয়াকেও। গ্রামের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা হাফিজুরের পরামর্শ মতো বউকে মুজিবর নানার সাথে বিয়ে দিল কিসমত আলী। বাসর ঘর সাজানো ছাড়া সব আয়োজনই ছিলো। গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই যেন বহুদিন পর উৎসবের আমেজে ভাসলো। কলা পাতায় পেট ভরে খিচুড়ী খেল সবাই।
তালাক দেওয়া বউকে আবার ঘরে তুলতে না পারলে গলায় দড়ি দেবে কিসমত। বাধ্য হয়ে গত সোমবার গ্রামের বিশিষ্টজনদের নিয়ে আদাবর মোড়লের বাড়ীতে বৈঠক বসে। সেখানেই মাওলানা হাফিজুর সবাইকে বলেন, ‘তালাক দেওয়া বউকে পুনরায় বিবাহ করিতে হইলে আছিয়াকে চার মাসের জন্য অন্য কাহারো সহিত বিবাহ দিতে হইবে। সেইখানে আবারো তালাক ঘটাইয়া চার মাস পর পুনরায় বিবাহ করিতে পারিবে কিসমত। ইসলামে ইহাকে বলে ‘হিল্লা বিয়ে’। এছাড়া কোনমতেই আছিয়ার সহিত কিসমতের বিবাহ সম্ভব না।’
পাতলা গড়নের মায়া ভরা মুখ মুজিবরের। বিয়ে না করায় নিজের কোন নাতী-নাতনী নেই । তবে ভাইয়ের নাতী-নাতনী বা পুতা-পুতনীদের জান দিয়ে ভালোবাসেন। অন্যদিকে মুজিবর তার নানার ভাই হলেও নিজের আপন নানার মতই দেখে কিসমত। তাই কিসমতের এই দুর্দিনে ‘না’ করতে পারল না মুজিবর। তবে বেঠকে কী মনে করে তিনি এক শর্ত জুড়ে দিলেন।
-বিয়েডা কিন্তু ধুমধাম কইরা হইতে হবে
- ক্যান নানা, তার আবার কী দরকার? তুমি শুধু নামেমাত্র আমার বউডারে বিয়ে কইরবা। এতো সবের কী দরকার!
-তুই বুজবিনে। বিয়া যহন করতেছি, সংসার করি না করি বিয়ার আনন্দ তো করতে দিবি।
একটা গুনজন শুরু হলো। কেউ একজন বললো, ‘এই বুড়োর মতলব বালো না। কিসমত তুই অন্য কারো সাতে বিয়ে দে’। কিন্তু কিসমতের কথা, আপনজনের সাতে না দিয়ে পরের সাথে বিয়া দিলি যদি ওই বেটা পরে নিজের ইচ্ছেয় তালাক না দেয়?’ সবশেষে মুজিবরের সাথেই শুক্রবার বিয়ে ঠিক হলো। কিসমতের মতামত নিয়ে কেবল বাসর ঘর সাজানো বাদে সব আয়োজনই হইলো।
আছিয়ার মতামত কেউ জানতে চাইল না। ভাসা ভাসা চোখ আর লম্বাটে নাক তার। গায়ের রং ফর্সা হওয়ার গ্রামের মানুষ তাকে রাঙ্গা ভাবী বলে ডাকে। বয়স একুশ-বাইশ হবে। আছিয়ার মা মারা গেছে তিন বছর আগে। বাবা আছে। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে তিন মেয়ে নিয়ে কোন রকম সরসার চালাই। তারপর আবার বড় মেয়ের অসুখ। বিয়ে হয়না। ছোট মেয়ে কেবল আট বছরে পড়েছে। আছিয়া তার বড় বোঝা। তালাক নিয়ে এসে বাপের ঘাড়ে উঠেছে।
শশুররা খুব বড়লোক না হলেও অভাব নেই। বিয়ের প্রথম দিন থেকেই কাজ না করা নিয়ে কিসমতের সাথে আছিয়ার ঝগড়া। গাজার নেশাও আছে কিসমতের। এই নিয়ে কিছু বলতে গেলেই মার থেতে হয় আছিয়াকে। দুই বছরের মাথায় এক সকালে আশপাশের লোক ডেকে আছিয়াকে তালা দেয় কিসমত।
দুই.
বিয়ের রাতে ঘরে ঢুকলো মুজিবর। এটাই তাদের প্রথম দেখা না। একই গ্রামে বাড়ী হওয়ার প্রত্যেক সপ্তাহে হাটে যাওয়ার সময় কিসমতদের বাড়ী হয়ে যেত মুজিবর। আছিয়াও মুজিবরের সাথে বেশ গল্পসল্প করত। কিসমতকে একটু বুঝাইতে অনুরোধ করত আছিয়া।
- আছিয়া, দেইখছিস কিসমত হারামজাদাডা আমার বাসর সাজাতি দেলো না। জীবনে প্রথম বিয়া করলাম। আর কি বয়স আছে যে পরের বার বিয়া কইরা বাসর সাজামু...আসো দেহি তুমারে কিরাম লাগতিছে।
- নানাজান ফাজলামি কইরেন না, মন মিজাজ বালো নেই।
-আইচ্ছা, তুমি তালি ঘুমাই পরো। আইজ আবার গরম পইড়তাছে।
মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো আছিয়ার। চোখ খুলে যা দেখলো তাতে যেন আকাশ থেকে পড়লো। মুজিবর ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে পলকহীন তার দিয়ে তাকিয়ে আছে। মায়াভরা চোখ দিয়ে কেবলই পানি ঝরছে। একহাতে তাল পাখা। বিরতিহীনভাবে বাতাশ করছে আছিয়াকে।
তিন.
(বিয়ের এক সপ্তাহ পর)
-কী ব্যাপার নানাজান, আপনি ঘুমাননি?
-না,তুই ঘুমা। বাতাশ দিই।
-বাতাশ লাগবেনা আপনি ঘুমাইয়া পড়েন। সকালে কিসমত আসবে আপনারে নিয়া কোনহানে যেন যাবে।
শুয়ে পড়লো মুজিবর। তবে আছিয়া বুঝতে পারলো সে না ঘুমিয়ে কাঁদছে। ঘন্টা খানেক পর আস্তে করে ডাকলো
-নানাজান...
-ক আছিয়া, শুনতেছি।
-আপনার জীবনের পণ ভাইঙ্গা দিলাম। আমাগোর জন্যি আপনার এই ঘইটলো। মাফ কইরা দিয়েন।
(অনেক্ষন কোন সাড়া দিলো না মুজিবর)।
-আছিয়া একখান কথা কমু? রাগ করবি না তো?
-না করমুনা, কন
-হাফিজুর হুজুর যহন বিয়া পড়াতেছিলো আমার মনে হইছিল আসর থেইকা উইঠা পড়ি। কষ্ট কইরা উথাল-পাথাল যৌবন পার কইরাছি। তবু বিয়া কইরবনা বইলা নিজেরে ভুলাই রাখছি। শেষ কালে আইসা...। তোর জন্যি বড্ড মায়া অইল। তাই আর যাতি পারলাম না। তুই আমার একখান কথা রাখবি?
-কন, চেষ্টা কইব রাখনের
-আমার ক্যান যেন মনে অইতেছে মইরা যাবো। সারা জীবন এই গরখানে একলাই থাইকছি। তু যে কয়ডা দিন থায়িস আমারে...(কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে)...স্বামীর মতই দেহিস। বুড়া বয়াসের ভিমরতি ভাবিসনারে।
আছিয়া কোন কথা বললনা।
চার.
প্রায় এক সপ্তাহ হলো কিসমত মুজিবরের বাড়ীতে আসেনা। শহরে গেছে কাজের খোজে। এবার আর কোন ভাবে সে হারাতে চাইনা আছিয়াকে। মুজিবরের পাটের ব্যবসাও বেশ ভালো চলছে। কিসমতকে বহুবার বলছে তার সাথে কাজে নামতে। কিন্তু পাটের ব্যবসা তার একদমই পছন্দ না। শহরে ইট-খোয়া ভাঙবে সেও ভালো।
দুই মাস কেটে গেলো আছিয়া মুজিবরের সংসার।
আছিয়ার স্বাস্থ্য আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। মুজিবরকে সে আর নানা ডাকে না। কিছু বলেই সম্বোধন করেনা। সারাদিন বাড়ীর কাজ-কর্ম করে। আঙিনা ভরে শাক-সবজি লাগিয়েছে। নতুন গাভীর দুধ হচ্ছে। সকালে বের হয়ে যায় মুজিবর। আসে জোহরের আযানের সময়। দুজন মিলে দুপুরের খাওয়া খায়। তারপর উচু ডুয়ার বারান্দায় বসে পান খায়। গল্প করে। এর মধ্যে হাফিজুর মোল্লা কয়েকবার এসেছে খোঁজ নিতে। তার আচার ব্যবহার আছিয়ার ভালো লাগেনি। সে সোজা মুজিবরকে বলেছে, হাফিজ যেন আর না আসে। চার মাস হইয়া গেলে তাকে ডাইকা সব মিটমাট করা হবে।
-আছিয়া, আইজ বিকালে হাট থেইকা একটা হাস কিনে আনমু। তুই চিতাই চিঠা বানাইস। চুলার পিঠে বইসা হাসের গোশত দিয়া গরম গরম পিঠা খাইমু। কিসমতরে খবর দিমুনি।
-আইচ্ছা। তই কিসমতরে কিছু কইতে হবেনা। আপনার জইন্যে হাসের ডিম বসাইছিলাম। বাচ্চা ফুইটছে। বড় হইলে জবাই কইরা খাইয়েন। পাশের বাড়ীর শিউলিরে কইয়া যাইমুনি দেইখা রাখতে। খালে পানি আইসলে আর সমস্যা অইবনা।
-তুই বুঝলি ক্যামনে আমি হাসের গোশত পছন্দ করি?
-এতো কতা জিগান ক্যান?
আছিয়া বাড়ীতে একা থাকায় রাতে একটু আগেই বাড়ী ফেরে মুজিবর। আজ আরো একটু আগে ফিরলো। হারিকেনের আলো কমিয়ে রেখে চুপচাপ শুইয়ে আছে আছিয়া। বুঝতে পারলো মুজিবর তার পাশে এসে বসেছে।
-আছিয়া ঘুমাইছিস?
-না। বারেন্দায় ঘটিতে পানি আছে। হাত মুখ ধুইয়া নামাজ পইড়া লন। আমি আপনের খানা দিতেছি।
-তোর জইন্যে আকখান জিনিস আইনছি। ক তো দেহি কী?
-কী আর, মির্জপুর হাটের বাতাশা।
-না। পারোস নাই। আগের মাসেও তোর জইন্যে প্রাত্থম হাইট থেইকা এইরাম একখান জিনিস আনছিলাম। তোর খুব পছন্দ অইছিলো। এইডা আরো পছন্দ অইব।
-ঘুম আইতেছে। কী আনছেন তাড়াতাড়ি কন। কাজ সাইরা ঘুমাইতে যামু।
-ঠিক আছে যা। দেহন লাগবো না।
আছিয়াও কোন কথা বললো না। খাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়লো। সকালে চোখ মেলে যা দেখল তাতে ভয়, লজ্জা নাকি রাগ করবে বুঝে উঠতে পারলোনা। গায়ে তার সবুজ রঙের শাড়ী। রেশমের উপর পাকা রং। ঘুমের মধ্যেই কেউ তাকে পরিয়ে দিয়েছে। আর সেটি মুজিবর ছাড়া আর কেউই হওয়ার সম্ভাবনা নাই। সোজা বারান্দায় এসে দাড়ালো আছিয়া। উঠানে পাটের গোছা মেলছিলো মুজিবর। তাকে দেখেও না দেখার ভান করলো। একটু পর বলল-
-আরে কিডা দেহি! এদিকে আয়
-আপনে এইডা ঠিক করেননাই (রাগে গদগদ করতে করতে আছিয়া বলল)।
-এই দিকে আয়, তোরে একখান জিনিস দেহায়। পরে রাগ করোস। ওই যে পিয়ারা গাছটার দিকে চাইয়া দ্যাখ। কয়দিন থেক্যা দেখতাছি বুনো টিয়া পাখিডা পেয়ারা খাইতে আসে। লাল ঠোট আর সবুজ রং দিয়া কি সুন্দর কইরা আল্লাহ তারে বানাইছে। ওইডা দেইখ্যা তোরে এই শাড়ীডা কিইনা দিলাম। তই তোরে বুনো টিয়া না, এক্কেবারে বড়লোকের বাড়ীর আদইরে টিয়ার মতন লাইগতাছে।
আছিয়া কোন কথা বলতে পারলোনা। কিছু একটা বলতে যেয়ে থেমে গেলো। দৌড়ে ঘরে চলে গেলো। তারপর ঘর থেকে চিৎকার করে বললো- বেলা দুপুর হইছে, বুড়া এখনো কিছু না খাইয়া বনের টিয়ার সাতে প্রেম কইরতাছে কেন? টিয়া তার শাড়ী বড্ড পছন্দ কইরছে। এহন খাইতে আসলে ভালা হয়। পানতা পইচা যাবে।
পাঁচ.
আর এক সপ্তাহ বাদে চার মাস পূর্ণ হবে আছিয়া মুজিবরের হিল্লা বিয়ে। কিসমত-আছিয়ার দুজনের প্রতি মায়া বেড়েছে। মুজিবর প্রতিদিন একবার হলেও বলে, ‘তোরে বড্ড দরদ করিরে আছিয়া’। আছিয়া চুপ করে থাকে। এদিকে কিসমত এরই মধ্যে আছিয়ার সাথে পুনরায় বিয়ের আয়োজন শেষ করেছে।
চার মাস পূর্ণ হওয়ার আগের দিন সব গোছগাছ করছে আছিয়া। মুজিবর উঠানে অন্যমনষ্ক হয়ে হাসুয়াতে ধার দিচ্ছে। হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠলো মুজিবর। হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে। ছুটে এলা আছিয়া। ওরে আল্লারে বইলা কাটা আঙুল চিপে ধরল। উঠানের কোনে থাকা গাঁদা ফুলের পাতা চটকিয়ে লাগিয়ে দিলো কাটা জায়গায়। তবু রক্ত বন্ধ হয়না। ঘন্টা খানেক পর বন্ধ হলো। হাতের ব্যাথায় সন্ধ্যায় জ্বর চলে এলো মুজিবরের।
-আপনের কি বেশি খারাপ লাইগতেছে? কিছু খাইবেন?
-রুচি হইতেছেনা আছিয়া
-বিকালে ক্ষেত থেইকা করলা তুলে রাখছি। আলু দিয়া ভাইজা দিই? তিতা খাইলে রুচি আইবো।
খাওয়া শেষে শুতে গেলো আছিয়া। ঘুমের মধ্যে কাতরাচ্ছে মুজিবর। আছিয়ার ঘুম আসছেনা। মুজিবরের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। নিজের সাথে কথা বলছে আছিয়া। ‘এই মানুষটা আমারে বড় মায়া করে। মায়া ভরা মুখ করে বলে, ‘তোরে বড় দরদ করিরে আছিয়া’। আছিয়ার বুক ভেঙে কান্না আসে। কী দরকার ছিলো চিরকুমার থাকার পণ করা এই মানুষটাকে নিয়ে খেলা করার। শেষ জীবনে সাজানো বিয়ে দিয়ে সংসারের নামের নতুন হাল ধরানোর? আছিয়া চলে গেলে হাসের বাচ্চাগুলো কে দেখবে? বড় হলে জবাই দিয়ে চিতাই পিঠা বানাইয়া কে তাকে হাসের গোশত খাওয়াবে? মুজিবর কি আর কোন দিন ‘মুজিবর নানা’ হয়ে হাটের পথে তাদের বাড়ীতে থামবে?
টিয়া পাখি দেখে এবার কি...নাকি হলদে পাখি দেখে হলুদ শাড়ী নিয়ে আসবে মুজিবর? এসব ভাবতে ভাবতে আছিয়া ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে। হঠাৎ তার মনে হয় যুবক কিসমতের জন্য এমন সুখের কান্না তার কোনদিন আসেনি। ‘তাইলে কি আমিও এই মানুষডারে দরদ করি?’
আগামিকালই তো মুজিবর তাকে তালাক দিবে। হাফিজুর হুজুর বলছে তালাক শেষে চার মাস বাপের বাড়ীতে থেকে ইদ্দত পালন করতে হবে। এরপরই আবার কিসমতের সাথে তার বিয়ে। কিসমতই হবে তার বৈধ স্বামী। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ আবারো মাথা ঘুরে ওঠে তার।
ভোর বেলায় ঘুম ভেঙে আছিয়াকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে মুজিবর। লাফ দিয়ে উঠে তার চোখে মুখে পানি দেয়। আছিয়া টলতে টলতে উঠে বসে। হঠাৎ দরজার কড়া নড়ে। দরজা খুলে দেখে কিসমত ও তার পেছনে মাওলানা হাফিজুর, আদাবর মোড়ল, কিসমতে নিজের নানা অর্থাত মুজিবরের ভাই সহ গ্রামের লোকজন।
-নানাজান চলেন। আছিয়ারে তালাক দিয়া বাপের বাড়ী চার মাসের ইদ্দত পালনের জইন্যে পাঠাইতে হইবে।।
-দাঁড়া কিসমত, আছিয়ার শরীলডা বালা নাই
-নানা আপনে সবসময় শেষ কালে আইসা প্যাচাল বাধান
-কই সে? চলো আছিয়া। সবাই অপেইক্ষা কইরতাছে
ছয়.
গ্রামের মানুষ জটলা পাকিয়ে গোল হয়ে বসে আছে। সবাই যেন খুব মজা পাচ্ছে। মুজিবর একভাবে চোখের পানি ফেলছে। আত্বীয়-স্বজনরা অবাক হয়ে দেখছে। কিসমতের মা উঠে দাড়িয়ে মুজিবরকে বললো, ‘চাচা আপনি তাড়াতাড়ি তিন তালাক কইয়া ফেলেন। সবাই অপেক্ষা কইতাছে।’ মুজিবর অস্ফুট শব্দ করলো কেবল। কেউ একজন উঠে দাড়িয়ে বললো, ’এই তো মুজিবর মিয়া তিন তালাক বইলা দিছে’। সাথে সাথে অন্যরা হ-হ-হ, করে সাড়া দিলো।
বাপের বাড়ীতে চলে গেলো আছিয়া। আজ রাতই হয়তো তার জীবনের শেষ রাত। অবশেষে সে বুঝতে পেরেছে মুজিবরের দরদ তার শরীরে নতুন একটা কিছুর জন্ম দিয়েছে। বাড়ীতে এসেই তার বাপজানকে সেটি বলে দিয়েছে। বাপ বলেছে, ‘কাল সকালে উঠে যেন তোর মরা মুখ দেখি। না হলে আমিই ব্যবস্থা করব।’
এই শেষ খবরটি মুজিবরকে বলে যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল আছিয়ার। কিন্তু বাইরে খুব ঝড়। মুজিবরের বাড়ীও হেটে যেতে কমপক্ষে এক ঘন্টা লাগবে। ঝড়ো বাতাশে দড়ির উপর দুলছে ভাজ করে রাখা আছিয়ার সবুজ শাড়ী। বিদ্যুৎ চমকালেই চোখে পড়ছে তা। সেদিকে তাকিয়ে হঠাৎ উঠে পড়লো আছিয়া। জড়িয়ে নিলো গায়ে। পা টিপে টিপে বের হলো। ঝড়ের গতিতে হাটতে লাগলো মুজিবরের বাড়ীর দিকে। এদিকে মুজিবরের জ্বর আরো বেড়েছে। অজ্ঞানের মতো পড়ে আছে পেছনের বারান্দায়।
-কে? কে আমার কপালে হাত রাইখলো?
-আপনার বউ। আমি জানি আপনি তিন তালাক বলেননাই। আমারে তালাকও দেননাই।
-তুই আইছোছ ক্যান? সইজনে গাছে হলুদ পাখি বসে, বুনো টিয়া মইরা গেছে। নতুন কেই আইসবে মনে কয়। (জ্বরে আবোল-তাবোল বকে মুজিবর)
-সেই নতুন খবর দেওনের লাইগাই আপনার কাছে আইছি। আপনি বুড়া হইলেও এইডা আপনার আর আমার দুই জনার জন্যিই নতুন।
এমন সময় কাল-বৈশাখী ঝড়ের মত গর্জন করে ঘরে ঢুকলো কিসমত। আছিয়াকে মুজিবরের বাড়ীর দিকে আসতে দেখে একটু বেশিই নেশা করেছে। গাঁজার সাথে কড়া তরল জাতীয় নেশা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেড়ায় গুজে রাখা ধারালো হাসুয়া হাতে নিলো সে। মজিবরকে আছিয়া নতুন খবর দেওয়ার আগেই ঘটে গেল সব।
শেষ.
ঝড় থেমে গেছে। সকালে আছিয়ার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া গেল মুজিবরের ঘরে। বুড়ো মুজিবরেরও গলা কাটা। পাটের গাঁদার উপর অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে কিসমত। কেউ জানলো না, খুন কেবল আছিয়া ও মুজিবরই হয়নি। আরেকজনও হয়েছে। মানুষ হয়ে পৃথিবীতে আসা হলোনা তার। তবে টুনটুনি কিংবা দোয়েল পাখি হয়ে ঠিকই আসবে এই বাড়ীতে। হয়ত উড়ে গিয়ে বসবে উঠানের বরই গাছে।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ভাঙ্গাচুরা ধন্যবাদ। ধন্যবাদ টা কিন্তু আস্ত
২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬
অল্পভাষী বলেছেন: "তোরে বড় দরদ করিরে আছিয়া"-- অসাধারণ। +++++
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম..।
৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৯
টুনা বলেছেন: খুব ভাল হয়েছে। চালিয়ে যান। শুভকামনা রইলো।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: জ্বী...। ভালো থাকবেন..
৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৩
বাবুরাম সাপুড়ে বলেছেন: অসাধারণ ! ভীষন ভালো লেগে গেছে..
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: তাই নাকি...! বাহ ভালো লাগলো শুনে।
৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫
নতুন বলেছেন: খুবই ভাল লাগলো... একটানে পড়ে ফেললাম... ++
এখনো কিছু মানুষ এই হিলা বিয়েতে মত দেয়...
কিছুদিন আগে আমার কয়েকজন কলিগের সাথেই এই ব্যপারে কথা হচ্ছিলো...
তারা হিলা বিয়ের বিষয়ে সমথ`ন করে..
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: আমি সমর্থন করিনা। নারীর জন্য এ এক ধরনের জুলুম।
৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৬
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
চমৎকার লিখসেন ||
৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮
রুদ্রাক্ষী বলেছেন: অসাধারণ। এক পলকে পড়ে ফেল লাম। শুরু করে কখন, যে শেষ হ ল বুঝতে পারিনি।খুব ভাল লাগ্ল।++
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: অনেক ভালো লাগল জেনে...ধন্যবাদ রুদ্রাক্ষী।
৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বড় দরদীয়া গপ্প!!!
আহা টিয়া আর ময়নার মতোই সুন্দর!!
++++
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: :-)
৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫
মোরতাজা বলেছেন: সে রকম হইছে
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: কোন রকম ভাই?
১০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: হৃদয় ছুয়ে গেল আপনার গল্পটি... বলে রাখা ভাল, হিল্লা বিয়ের এই নিয়ম ইসলামে বৈধ নয়, এটি আমাদের দেশে ধর্মের একটি অপচর্চা...
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: আমিও এমনটিই জানি। তবে এই সংষ্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিঁৎ।
১১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০
নাসরীন খান বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগল।আদি যুগেই আছি আমরা যখন ছিলনা কোরআনের সঠিক অনুবাদ ।কিন্তু এখন জানার সুযোগ রয়েছে ।এমনটি হওয়া অনুচিৎ।সুরা তালাক ,এর অনুবাদ ঐ নানার পড়া উচিৎ তাহলে এমন বর্বর কাজটি করত না।হাঃ-----হাঃ----হাঃ-----।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: নানা আসলে নাতীর কথা ভেবে বাধ্য হয়েছে। পরে কষ্টের পাল্লা তার ভাগে কম পড়েনি। তবে এটা ঠিক যে তিনি জানেও কম।
১২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬
আহলান বলেছেন: বড়ই উপাদেয় ... +++++
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: খেয়ে ফেললেন??? :-(
১৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২
মিথিলা মাহমুদ বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।অনেকদিন পর আনপ্রেডিকটেবল একটা গল্প পড়লাম। মুজিবরের চিরকুমার থাকার কারনটা নিয়ে একটু কিছু লিখলে হতো।কিন্তু সব মিলিয়ে খুব ভালো।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: তা ঠিক বলেছেন, আসলে ছোট করব ভেবে..।সব কথা লিখতে পারিনি।
১৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪
শিব্বির আহমেদ বলেছেন: শুরুতেই বলে নেই যে ,বাংলাদেশে যে হিল্লা বিয়ে প্রচলিত আছে তা ইসলামে বৈধ নয় ।
কন্ট্রাকচুয়াল বিয়ে , যেমন নির্দিষ্ট সময় পরে তালাক দেয়া হবে এই রকম ঠিক করে বিয়ে করা অবৈধ ।
আসুন এবার জেনে নেই হিল্লা বিয়ে কি । ইসলামী আইন অনুযায়ী কোন স্বামী তার স্ত্রীকে চূড়ান্ত ভাবে ৩ তালাক দিয়ে দিলে সেই স্ত্রী তার স্বামীর জন্য আর বৈধ থাকেনা, হারাম হয়ে যায়। স্বামী চাইলেও সেই স্ত্রীকে আবার নিজের কাছে ফিরিয়ে নেয়া ইসলামী আইনে সম্ভব হয় না। তবে এই মহিলাটির যদি স্বাভাবিক ভাবে আস্থা, ভালবাসা ও আজীবন বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহে অন্য এক পুরুষের সাথে ২য় বিয়ে হয়, এবং পরবর্তীতে সেই স্বামীর মৃত্যু বা তার কাছ থেকে সংগত কোন কারণে ঐ মহিলা তালাক প্রাপ্তা হয়ে যান । এরপর ইদ্দত কাল অতিবাহিত হবার পর পূর্বতন স্বামী-স্ত্রী নতুন ভাবে বিয়েতে আবদ্ধ হতে ইসলামী আইনে কোন বাঁধা থাকেনা।
এখানে কিছু বিষয়ের প্রতি লক্ষ করুন---
০১। ২য় বিয়ে আস্থা, ভালবাসা ও আজীবন বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহে হতে হবে , কোন চুক্তির ভিত্তিতে নয় ।
০২। ২য় স্বামীর মৃত্যু বা তার কাছ থেকে সংগত কোন কারণে ঐ মহিলা তালাক প্রাপ্তা হয়ে যান, শুধু মাত্র সে ক্ষেত্রেই ইদ্দত পালন শেষে পূর্বতন স্বামী-স্ত্রী নতুন ভাবে বিয়েতে আবদ্ধ হতে ইসলামী আইনে কোন বাঁধা থাকেনা। এখানে স্পষ্ট যে , চুক্তির ভিত্তিতে তালাক নিয়ে পুনরায় ১ম স্বামীকে বিয়ে করা বৈধ নয় ।
আশা করি , এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ক্লিয়ার হয়েছে । বাংলাদেশে কাঠমোল্লারা ব্যাক্তিগত স্বার্থ বা অর্থের বিনিময়ে এই অপকর্মের অনুমোদন দেয় আর সমাজের নেতারা ব্যাক্তিগত যৌন লালসা মিটানোর জন্য বা অর্থ লাভের জন্য এই সব চুক্তি ভিত্তিক অবৈধ বিয়ে চালু রেখেছেন ।
যতদিন ইসলাম সম্পর্কে মানুষ না জানবে , ততদিন এইসব অপকর্ম চলতেই থাকবে । আমাদের অজ্ঞতার জন্য কাঠমোল্লারা , মোড়ল আর সমাজের প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা সুযোগ নিতেই থাকবে ।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: জেনে রাখলাম ভাই। আপনার এই জানানোর দায়িত্বকে স্বাগত জানায়। ভালো থাকবেন।
১৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২১
নজরুল ইসলাম বিডি বলেছেন: বেশ ভালো অসাধারন
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম।
১৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭
মদন বলেছেন: ++++++++++++
১৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯
শাহরিয়ার খান রোজেন বলেছেন: আমি বেশকিছুদিন যাবত এত বড় লেখা পড়িনা, আজ কিসের টানে যেন পড়লাম।
অসাধারণ লিখেছেন।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: অনেক অনেক , ধৈর্য্য ধরে আমার লেখাটা পড়ার জন্য।
১৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এটা সামুতে পড়া আমার সেরা গল্প। দারুণ।ভালবাসাটাই আসল। ভালহীনতা থেকে তালাকের উৎপত্তি।সেখান থেকে ভেজালের শুরু বুড়ু মুজিবর ঠিকই মন করেছিল আছিয়ার।হিল্লা বিবাহ আছে কিনা এখনো বলতে পারবো না। চাক্ষুষ দেখিনি। তবে মাসালা হলো যদি হিল্লা হয় তাহলে শরীরীক সম্পর্ক মাস্ট হতে হবে। এমনটাই জানি এর অন্যখা হলে কেউ জানাবেন। কেন মানুষ রাগের মাথায় উল্টা প্াল্টা কাজ করে। রাগ খুুব ক্ষতিকর। তবে তিন তালাক হয়ে যাবার পর যার সঙ্গে বিচ্ছেদ হলো তাকে বিয়ে করার এমন ফর্মূলা । এটা এক ধরণের শাস্তি। অন্য কাউকে বিয়ে করলে হিল্লা বিয়ে করার নিয়ম নাই ।এভাবে ভাবতে হবে। কিসমত কিন্তু ভিলেইন সেই সবচেয়ে খারাপ। ভাল লাগলো ।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: অনুপ্রাণিত হলাম। আশা করি সাথে থাকবেন।
১৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫
সুখী মানুষ বলেছেন: ও ভাই করছেন কী!!!! সত্যিই মুগ্ধ... সত্যি সত্যি সত্যি। তিন সত্যি।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০১
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ দিলাম। তিন সত্যি স্কয়ার।
২০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২১
দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: ইন্টারেস্টিং! এবং ডিফ্রেন্ট! প্লাস!
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০১
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম।
২১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২২
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: অসাধারন একটা গল্প পড়লাম। কিছু দিন আগে পেপারে পড়লাম হিল্লা বিয়ে নিয়ে একটি দম্পতিকে একঘরে করে রেখেছে। এই দেশে ইসলামকে যতটা না অন্য ধর্মের লোক বা নাস্তিকরা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তার চেয়ে বেশি করেছে এই সব কাঠমোল্লারা।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০২
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: সত্যিই তাই।
২২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: গল্পটা ভাল লাগল। তবে এতে হিল্লা বিয়েকে বিকৃত রুপে উপস্থাপন করা হয়েছে
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৩
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: আমাদের সমাজ এটাকে বিকৃত করেছে। সেটিই এতে তুলে ধরা হয়েছে।
২৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
মামুন রশিদ বলেছেন: হিল্লা নিয়ে প্রথম কোন কিছু পড়লাম ।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৩
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম...
২৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০
মুনসীমাহফুজ বলেছেন: শরি্যতের আলোকে একটু হিল্লা বিয়ের বিষয়টা ব্যখ্যা করি।
প্রথমেই বলে রাখি, আমাদের দেশে গ্রামে গন্জে কিছু অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত লোক হিল্লা বিয়ে দেয় ইসলাম এই ধরনের কোন হিল্লা বিয়ে সমর্থন করে না, এই ধরনের চুক্তিবদ্ধ হিল্লা বিয়ে যে করে এবং যাকে করে উভয়কে যেনার শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন হযরত উমর রা: তার খেলাফতের সময়।
হিল্লা বিয়ে আসল কোথা থেকে ? পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ২৩০ নং আয়াতে আছে, "তারপর যদি সে (স্বামী) তাকে (স্ত্রী) তালাক দেয় তবে এরপর সে (স্ত্রী) তার জন্য বৈধ হবে না যে পর্যন্ত না সে (স্ত্রী) অন্য স্বামীকে বিবাহ করে"।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যামানায় একবার এক সাহাবী তার স্ত্রীকে তালাকে দিলে সেই স্ত্রী চারমাস ইদ্দত পালন করার পর আর এক সাহাবীকে বিবাব করেন, কিন্তু কিছুদিন পরে সেই স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অভিযোগ করে যে আমি আমার নতুন স্বামীকে কাপড়ের আচলের মত পেয়েছি (অর্থাৎ পুরুষত্বহীন) আমি কি পূর্বের স্বামীর কাছে ফিরতে পারব ? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাব দিলেন , "যতক্ষন না তুমি তার স্বাদ নিতে পার অথবা সে তোমার স্বাদ নিতে পারে (অর্থাৎ পূর্ন শারীরিক মিলন)।
এর দ্বারা আমরা বুঝি হিল্লা বিয়ে ইসলামে নেই, অর্থাৎ ১ম স্বামী যদি স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেয় তাহলে ঐ স্ত্রীকে ইদ্দত (তিন মাসিক পরিমান সময়) পালন করতে হবে এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যে যে সে গর্ভবতী নয়, তারপর দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিয়ের পরে স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন কাটাতে হবে (কোন রকম চুক্তি অথবা পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই), এরপর যদি কোনদিন ২য় স্বামী মারা যায় অথবা তালাক দেয় তখন সে পুনরায় ইদ্দত পালনের পর প্রথম স্বামীর সাথে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ব হতে পারবে। এটাই হচ্ছে হিল্লা বিয়ের প্রক্রিয়া যা খুবই কঠিন।
এ ছাড়া আমাদের সমাজে যা হচ্ছে তা যেনা ব্যভিচার ছাড়া কিছু না।
এখন আপনাদের প্রশ্ন হতে পারে আল্লাহ রাহমানুর রাহীম বান্দাহ ভুল করে একটা কাজ করেছে তার জন্যে এত কঠিন শর্ত দিলেন কেন?
কিসমত চাষারা উঠতে বসতে ঘরের বউদের তালাক দেবে, ভাত দিতে দেরী হইলেই তালাক দেবে, আল্লাহ স্ত্রীদের এই অপমান থেকে মুক্ত করতে চেয়েছেন, মন চাইল তালাক মন চাইল ফিরায় নিলাম এর থেকে মানব সমাজ মুক্ত করতে চেয়েছেন।
তালাক হল অগতির গতি। স্ত্রীর সাথে বনিবনা হচ্ছে না, তার সাথে দীর্ঘ জীবন কাটানো সম্ভব না, দেও তিন তালাক একসাথে , না, এ ভাবে তালাক দেওয়া হারাম, সকল মাজহাব এ ব্যাপারে একমত।
এক্ষেত্রে শরিয়ত সম্মত তালাকের পদ্ধতি হচ্ছে, সে মাসিক থেকে পবিত্র হওয়ার পর তাকে এক তালাক দিবেন, তারপর পরবর্তি মাসিক পর্যন্ত দীর্ঘ একমাস চিন্তা করুন তাকে রাখবেন না ছেড়ে দিবেন এই সময় সেও চিন্তা করবে যে সে থাকবে না চলে যাবে। তারপর দ্বিতীয় মাসিক থেকে তৃতীয় মাসিক পর্যন্তও স্বামী স্ত্রী উভয়ই ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করার পাবে (এই পুরা সময় স্বামীর এখতিয়ার আছে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার কোন রকম হিল্লার আশ্রয় নেওয়া ছাড়াই)।
এই পুরা সময়ও যদি স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেয় তখন তার উপর তিন তালাক পতিত হবে। অর্থাৎ এক তালাক দিয়ে রাখার পর যদি ফিরিয়ে না নেওয়া হয় তবে প্রতি মাসিকে এক এক তালাক করে তিন মাসিকে তিন তালাক অটোমেটিকভাবে পড়বে এবং স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: তথ্য সম্মৃদ্ধ হলাম। আশা করি অন্য সবার এটি কাজে লাগবে।
২৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০০
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: অন্তত চমৎকার ! একটানে পড়ে যাওয়ার মতো লিখনি । আপনাকে অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা !
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৫
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: আচ্ছা।
২৬| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১১
দি সুফি বলেছেন: এক কথায় অসাধারন একটা গল্প। ++++++++++
হিল্লার ব্যাপারে ১৪ নম্বর কমেন্টে শিব্বির আহমেদ ভাই বলেছেন, আর ২৪ নাম্বারে মুনসীমাহফুজ ভাই চমৎকারভাবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৬
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: আশা রাখি নবাই তথ্য সম্মৃদ্ধ হবেন...।
২৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫১
হায়দার সুমন বলেছেন: অসাধারন এক লেখা
অফিসে লগ ইন ছাড়াই কলিগদের সাথে এক নিঃশ্বাসে পড়েছি
লগ ইন করে ভালোলাগা জানালাম।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: শুনে খুব খুব ভালো লাগল...। শুভ কামনা সুমন ভাই।
২৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৩
আম্মানসুরা বলেছেন: মন ছুয়ে গেল। চমৎকার গল্প।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৮
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্য হলাম।
২৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৬
সায়েদা সোহেলী বলেছেন: + গল্প অনেক ভালো হয়েছে .
ভালো লাগা জানাতে আর কিছু বলতেই মন্তব্য এর ঘরে এসেছিলাম , কিন্তু তার আর এখন প্রয়োজন নেই
লেখক কে ধন্যবাদ
আপনাদেরকেও ধন্যবাদ
@ সিব্বির আহমেদ , মুনসীমাহফুজ
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৯
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম...
৩০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৭
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: মাই গড!! পুরাই অসাম। আপনের লেখার দরদে পইড়া গেলাম। পোস্টে ভাললাগা।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ভালো তো, ভালো না?
৩১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৭
রানা িসরাজুল বলেছেন: বহুদিন পর কোনকিছু একমনে পড়লাম. /
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: মনকে ধন্যবাদ। তার জন্য শুভকামনা।
৩২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৬
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: শিব্বির ভাইকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ পুরো ব্যাপারটা সহজভাবে পরিষ্কার করার জন্য অন্যথায় অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনা পোষণ করে ফেলত।
৩৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৪
রিয়াদ হাকিম বলেছেন: *********************
শিব্বির আহমেদ যা বলেছেন তাই যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর যদি পুনরায় স্বামী স্ত্রী উভয়ে বিয়ে করতে চায় তাহলে ইসলামী শরিয়াতসম্মত পন্থাটি কি হবে????
ধরেন আমি আমার বউকে তালাক দিলাম, কিছুদিন পর আমি ভুল বুঝতে পারলাম, এখন আমরা দুজনে দুজন থেকে দূরে থেকে কষ্ট পাচ্ছি তাই সিদ্ধান্ত নিলাম পুনরায় বিয়ে করবো। ইসলাম সম্মত উপায়ে তা করতে হলে (শিব্বির আহমেদ যা বলেছেন তাই যদি সত্যি হয়ে থাকে), আমার বউ আরেকজনকে বিয়ে করবে এবং তাকে বিয়ে করতে হবে ওই ব্যক্তির প্রতি আস্থা, ভালবাসা ও আজীবন বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের খাটি নিয়তে –absolutely contradicting, আমাকে বিয়ে করতে গিয়ে আমার এক্স বউ যদি আরেক পুরুষের প্রতি খাটি ভালোবাসা অনুভব করে ফেলে, তাহলে সে আমাকে বিয়ে করবে কিভাবে??
************************
গল্প খুবই সুন্দর হয়েছে, আমি সচরাচর ব্লগে গল্প কম পড়ি, কিন্তু আপনার গল্প পড়া শুরু করার পর পুরোটা পড়েই গেলাম, ধন্যবাদ, হিল্লা নামক এই কুৎসিত প্রথার কুৎসিত প্রভাবকে এমন সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলার জন্য।
তবে একটি লাইন ঠিক ধরতে পারিনি, “মজিবরকে আছিয়া নতুন খবর দেওয়ার আগেই ঘটে গেল সব”, এখানে কোন খবর দেওয়ার কথা বুঝিয়েছেন? মানে সে কি প্রেগন্যান্ট ছিল বা অন্য কিছু?
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: জ্বী রিয়াদ ভাই,,,,আছিয়া প্রেগনেন্ট ছিল
৩৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১৬
ধানের চাষী বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগলো।
এ ধরনের হিল্লা বিয়ে ইসলাম মতে সম্পূর্ণ হারাম। দ্বিতীয় বিয়ের পর তালাক হলে প্রথম স্বামী আবারো গ্রহণ করতে পারে, তবে তা এরকম সাজানো হতে পারবে না।
৩৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৪৪
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: দি সুফি বলেছেন: এক কথায় অসাধারন একটা গল্প। ++++++++++
হিল্লার ব্যাপারে ১৪ নম্বর কমেন্টে শিব্বির আহমেদ ভাই বলেছেন, আর ২৪ নাম্বারে মুনসীমাহফুজ ভাই চমৎকারভাবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন।
সহমত।
ইসলামের নাম নিয়ে এমন অনেক কিছুই হচ্ছে যা ইসলাম মোটেই সমর্থন করে না যেমন আপনার গল্পের সাজানো হিল্লা বিয়ে যাতে পাত্রীর ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন দাম নেই-তাই পরিনতি কত মর্মান্তিকই না হলো।কিসমতের ইচ্ছার কাছে মজিবর-আছিয়ার জীবনের কোন দাম নেই। অথচ ইসলামে হিল্লা বিয়ের বিধান দেয়াই হয়েছিল নারীদের দাম্পত্য অধিকার ও মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করতে।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: হুম.....
৩৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩১
চলতি নিয়ম বলেছেন: অনেকদিন পরে অসাধারণ একটা গল্প পড়লাম
১০০ +
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ ইনটেল কোর আই ৯
৩৭| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
কোবিদ বলেছেন:
চমৎকার, খুব ভালো লাগলো
তবে বিয়োগান্তক গল্পটির
নায়ক নায়িকার জন্য
খুব খারাপ লাগছে
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: :-(
৩৮| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১১
ভাবসাধক বলেছেন: অসাধারণ! অসাধারণ! বহুদিন পর কোনকিছু একমনে পড়লাম।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১১
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: একমনে পড়ায় মন নাই কেন..? যাইহোক ধন্যবাদ সাধক..।
৩৯| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২
যুবাইরআজাদ বলেছেন: Dear Sister,
আপনি পোষ্ট দেয়ার সাথে সাথে আমি আপনার পোষ্টটির শিরোনাম দেখে সন্দেহের তালিকায় রেখে ছিলাম এবং পরে পড়বো চিন্তা করে নতুন ট্যাবে খুলে রেখেছিলাম, ঘন্টা খানেক পরে পড়ার সুযোগ পেয়ে সাথে সাথে পড়তে শুরু করি, শেষ ও হয়ে যায় কিন্তু শেষ হয়না। মনটা খারাপ হয়ে যায়। আর বোঝার চেষ্টা করি এটাকি শুধু গল্প না অন্য কোন কারণ আছে। তবে ভাল লেগেছে এটা দেখে যে কেউ সমালোচনা করেনি, এবং দুই ভাই হিল্লা বিয়ের সঠিক সিস্টেম কি তা লিখেছেন। প্রাপ্তি অনেক। আমি সাধারণত ব্লগে কোন গল্প পড়িনা, ওই সন্দেহের কারণেই পড়া তার পর ভাল লাগা, কষ্ট পাওয়া। আমি ভেবেছিলাম নায়িকা প্রতিবাদী হয়ে তার আগের স্বামীকে আর গ্রহণ করতে রাজি হবে না।
যাহোক ভালো থাকবেন।
রিয়াদ হাকিম ভাই বলেছেন.....
ধরেন আমি আমার বউকে তালাক দিলাম, কিছুদিন পর আমি ভুল বুঝতে পারলাম, এখন আমরা দুজনে দুজন থেকে দূরে থেকে কষ্ট পাচ্ছি তাই সিদ্ধান্ত নিলাম পুনরায় বিয়ে করবো। ইসলাম সম্মত উপায়ে তা করতে হলে (শিব্বির আহমেদ যা বলেছেন তাই যদি সত্যি হয়ে থাকে), আমার বউ আরেকজনকে বিয়ে করবে এবং তাকে বিয়ে করতে হবে ওই ব্যক্তির প্রতি আস্থা, ভালবাসা ও আজীবন বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের খাটি নিয়তে –absolutely contradicting, আমাকে বিয়ে করতে গিয়ে আমার এক্স বউ যদি আরেক পুরুষের প্রতি খাটি ভালোবাসা অনুভব করে ফেলে, তাহলে সে আমাকে বিয়ে করবে কিভাবে??
>>>> ভাই বিষয়টা আপনি যে ভাবে দেখছেন তা ঠিক ওই রকম নয়। এক তালাক দেয়ার পর যে এক মাস অপেক্ষা করার কথা বলা হয়েছে ওই সময়ের মধ্যে ভুল বুঝতে পারার কথা, আর তার জন্য মনের টানে শুধু শারীরিক সম্পর্ক হলেই বিবাহ বৈধ থাকছে, আর যদি মিল না হয় তবে আর এক তালাক দেয়ার নিয়ম এবং বিছানা আলাদাই থাকবে, তখন যদি ভাবীর জন্য আপনার মন পোড়ে আর ভাবীর ও আপনার প্রতি ভুল ভাঙ্গে তবে নিয়ম হলো নতুন করে বিয়ে পড়িয়ে নিতে হবে, কোন হিল্লা বিয়ের দরকার নাই। কিন্তু তখনও অর্থাৎ দুই মাস পার হবার পর ও যদি আপনি ভাবীর প্রতি বিশ্বাস ফিরে না পান বা ভাবী আপনার প্রতি বিশ্বাস ফিরে না পায় তাহলে ৩য় তালাক দেবার নিয়ম। আর এবার কিছু করার নেই ভাবী আপনার জন্য হারাম হয়ে গেল। ২ মাসেও যদি ভুল না ভাঙ্গে তবে বুঝতে হেবে আপনি বা ভাবী কেউ একে অপরকে ভালোবাসেননা। তাই আবার একসাথে বাসকরার কথা ও আসেনা। ধরে নিলাম আপনি ভাবীকে এক সাথে ৩ তালাক দিয়েছিলেন, সে ক্ষেত্রে ভাবী আপনার জন্য তালাকের পর থেকেই হারাম, তা শোধরানোর কোনই নিয়ম নেই, আপনি যদি ইসলাম মেনে চলতে চান তাহলে আপনার জন্য কোন রাস্তই খোলা নেই অপেক্ষা করা ছাড়া। যদি ওই মহিলার অন্য কোথাও বিয়ে হয় আর কোন কালে কোন কারণে যদি সেই স্বামী মারা যায় বা ছেড়ে দেয় (বা অন্য কোন যোগ্য কারণে বিবাহ ভেঙ্গে যায়) তাহলেই কেবল ওই মহিলা আপনার বিয়ের জন্য বৈধ হবে এবং তিনি রাজী হলেই কেবল আবার বিয়ে করে আমাদের ভাবী বানাতে পারবেন। আর চুক্তি করে অন্য কারো সাথে বিয়ে দেয়ার কোন বিধান ইসলামে নেই, তাই ভাবীকে পাওয়ার আশায় তাকে আবার বিয়ে দেবার প্রশ্ন ও উঠছেনা। সব মেয়েই ঘর বাধে সুখে শান্তিতে সারা জীবন তার সাথে কাটানোর জন্য, তাই অন্য কোথাও বিয়ে যদি স্বাভাবিক ভাবে হয় তাহলে তিনি তার ওই স্বামীকে ১০০% ভালোবাসবেন এবং তার সাথে সারা জীবন কাটাতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক। আশা করি পরিস্কার হয়েছে।
ধন্যবাদ, সবাই ভালো থাকবেন।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: নায়িকা প্রতিবাদী হওয়ার আইডাটা ও বেশ ভালো....। আশা করি আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর দিবেন রিয়াদ হাকিম ভাই বা অন্যান্যরা...
৪০| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৩
রিয়াদ হাকিম বলেছেন: কমেন্ট করার জন্য অনেক কিছু লিখলাম, কিন্তু সাবমিট করার পর বলে "You have to log in", সামুর কাজ কারবার বুঝা বড়ই দায়।
যাই হোক, যা বুঝলাম তা হলো তালাকের পর স্বামী স্ত্রী যদি পুনর্মিলিত হতে চায় (অন্যত্র বিয়ে না করে), তাহলে তার কোন ইসলাম সম্মত উপায় নাই।
শুধু জানার জন্য বলছি, বাংলাদেশের আইনে কিন্তু এইরকম কোন বাধা নাই...
৪১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬
শিনজন বলেছেন: ধন্যবাদ। এদেশে ধর্মীয় অশিÿার কারণে ইসলামের নামে ধর্ম ব্যবসায়ী আর অসৎ ব্যক্তিবর্গরা সুযোগ নেয়।
৪২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
যুবাইরআজাদ বলেছেন: আমাদের দেশের বিবাহ সংক্রান্ত সব আইন শরীয়া সম্মত নয়।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ঠিক..।সহমত।।
৪৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৭
খেয়া ঘাট বলেছেন: তবে টুনটুনি কিংবা দোয়েল পাখি হয়ে ঠিকই আসবে এই বাড়ীতে। হয়ত উড়ে গিয়ে বসবে উঠানের বরই গাছে।
শেষের এই লাইনগুলো যোগ করে গল্পটাকে একেবারে নীহিরিকায় পৌঁছে দিয়েছেন। সাবাশ।
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ খেয়া ঘাট...।
৪৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:০৮
মুদ্দাকির বলেছেন: সাধারন অসাধারন +++++++++++++++++++++++
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:০৯
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: ধন্যবাদ.।
৪৫| ০৬ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩
রায়হান চৌঃ বলেছেন: অসাধারণ.........
অনেক সুন্দর হয়েছে.......... এক পলকে পড়ে ফেল লাম। কখন যে শেষ হয়ে গেল বুঝতে পারিনি। তবে রেষ টা একনো কাটেনি......
ভালো থাকবেন......।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:১০
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: জ্বী, আপনিও।
৪৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৬
এম হাবিব আহসান বলেছেন: অসাধারন+++++++ তবে পড়তে গিয়ে জেনেছি অনেক। গল্পে যতটা ভালোলাগা ছিলো কষ্ট পেয়েছি তার চেয়ে বেশি। তবে বুজতে পেরেছি যে সত্যি এমনটাই হই আধিকাংশ ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত অমানবিক।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:১১
লাকমিনা জেসমিন সোমা বলেছেন: জ্বী। ভালো থাকবেন। আশা করি সাথে থাকবেন।
৪৭| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৪৩
আরজু পনি বলেছেন:
বাহ খুব সুন্দর গল্প।
অনেক শুভকামনা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০০
ভাঙ্গাচুরা যন্ত্রপাতি বলেছেন: অসাধারণ! অসাধারণ! বহুদিন পর কোনকিছু একমনে পড়লাম।