নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

web design and development, Graphics Designer, Digital marketer.। whatsapp +8801929766847। https://www.kulauranews.com/ , https://www.webbespace.com/

ওবায়দুল হক

আমি ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি না, আমি শুধু সৎ থাকতে চেষ্টা করি। মোবাইল: ০১৭১৮০২৩৭৫৯

ওবায়দুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

দান কাকে করবেন? দানের খাত কি কি? দান অকল্যাণের ৭০টি দরজা বন্ধ করে

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৮

দান সম্পর্কিত ৫টি ভুল ধারণা
১) আমার সম্পদ, আমার উপার্জনের মালিক আমিই
সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে, আমার উপার্জন, আমার ধন-সম্পত্তির মালিক আমিই। জমিয়ে রাখা বা খরচ করা আমার ইচ্ছাধীন। এ থেকে কাউকে কিছু দেয়া না দেয়া আমার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু আল কোরআনের শিক্ষা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। সূরা আদ্দাহরিয়াত (আয্যারিয়াত)-এর ১৯ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদে নিঃস্ব ও অসহায়দের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ আমরা যা দান করি, কোরআনের দৃষ্টিতে তা দয়া নয়; তা অসহায়দের অধিকার বা হক্কুল ইবাদ। আপনি যখন দান করেন, তখন আপনি সৃষ্টির অধিকারকেই সম্মান করেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করবেন।

নবীজী (স) খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, সৃষ্টির সেবায় যা ব্যয় করবে, তা-ই হচ্ছে তোমার সম্পদ, তোমার পরিত্রাণের উপায়। আর যা জমিয়ে রেখে যাবে, তা তোমার নয়; তোমার উত্তরাধিকারীর ভোগে ব্যবহৃত হবে। ঋগবেদে বলা হয়েছে, এসো প্রভুর সেবক হই। গরিব ও অভাবীদের দান করি। প্রকৃতপক্ষে হক্কুল ইবাদ বা মানবতার সেবাই স্রষ্টাকে পাওয়ার সহজ ও প্রশস্ত পথ।

২) আগে সচ্ছল হয়ে পরে দান করব
আগে সচ্ছল হয়ে পরে দান করব- এ দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই ভ্রান্ত। বরং বলা যায়, সচ্ছল হওয়ার জন্যেই দান করা প্রয়োজন। প্রাচুর্যের কোয়ান্টাম পঞ্চসূত্রের একটি হচ্ছে দান। কোয়ান্টাম সূত্র অনুসারে আপনি যখন দান করেন, তখন সেখানে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। প্রাকৃতিক নিয়মেই সে শূন্যস্থান পূরণে চারপাশ থেকে প্রতিদান আসতে শুরু করে। যেভাবে বাতাসের শূন্যতা ঝড় সৃষ্টি করে, একইভাবে সৎ দান প্রতিদানের প্লাবন সৃষ্টি করে।

দানের ধর্মীয় নির্দেশ নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী ধনী-গরিব সবার জন্যেই প্রযোজ্য। আপনার যা আছে তা থেকেই দান করুন। দানের ক্ষেত্রে পরিমাণ নয়; আপনার আন্তরিকতাই প্রমাণ করবে আপনি বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী। নবীজী (স) বলেন, যে ব্যক্তি তার বৈধ উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ দান করে, আল্লাহ ঐ দান নিজ হাতে গ্রহণ করেন এবং তাতে বরকত দিয়ে করে তোলেন পাহাড়তুল্য।

৩) ভিক্ষুককে ভিক্ষা না দিলে পাপ হয়
ইসলামসহ অন্যান্য সকল ধর্মে দান এবং তার মাহাত্ম্যের যে কথা বলা হয়েছে, আমাদের সমাজে প্রচলিত ভিক্ষা-ব্যবসা কোনোভাবেই তার আওতায় পড়ে না। সাপ্তাহিক ২০০০, দৈনিক যায় যায় দিন ও দৈনিক ইত্তেফাকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ সংক্রান্ত কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ভিক্ষুকদের ঘিরে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে এক বিশাল নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করছে পেশাদার ভিক্ষুক-গডফাদাররা। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে তারাই পরিচালনা করছে রাজধানীর ভিক্ষাভিত্তিক ব্যবসাকে। ভিক্ষুক-গডফাদাররা সারাদেশ থেকে ভিক্ষুক সংগ্রহ করে তাদের ভিক্ষার নানা কৌশল শিখিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে। সাধারণভাবে ১০০ টাকায় ৫০ টাকা, কখনো কখনো ৪০/৪৫ টাকা পায় ভিক্ষুকরা, বাকিটা চলে যায় ভিক্ষুক-গডফাদারদের পকেটে।

ভিক্ষাবৃত্তিতে ঢাকা শহরে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় করে সঙ্ঘবদ্ধ ভিক্ষুকের দল। এদের প্রতিদিনের আয় গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। মাসিক আয় ৯ হাজার টাকা এবং বছরে আয় ১ লাখ টাকার ওপর। (সাপ্তাহিক ২০০০, ১৮.০২.২০০৫)

ভিক্ষুক জমির আলীর জমি আছে ৩৫ বিঘা। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে প্রতিবছর রংপুরে তার গ্রামের বাড়িতে এক বিঘা করে জমি কেনেন। ছেলেমেয়েদের জন্মদিনে পাঠান ঢাকার অভিজাত কনফেকশনারির কেক। ১২টি বেবিট্যাক্সি ও ২টি মাইক্রোবাসের মালিক ভিক্ষুক জালাল মোল্লার মাসিক আয় ৬০ হাজার টাকা। গ্রামের বাড়িতে তার দোতলা বিল্ডিংয়ের নাম দিয়েছেন মুসাফিরখানা। ভিক্ষুক করম আলী শেখের আছে সুদের ব্যবসা। শহরে ভিক্ষুক সেজে ভিক্ষা করলেও গ্রামে রয়েছে তার আলিশান বাড়ি, প্রাইভেট রিকশা। রিকশাওয়ালার বেতনই দেন মাসে আড়াই হাজার টাকা। (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩.০১.২০০৭)
এদেরকে ভিক্ষা দিয়ে আপনি যদি মনে করেন যে অনেক পুণ্য হাসিল করছেন তাহলে এর চেয়ে বোকামি আর কিছু হতে পারে না।

৪) দান করে দানবীর হবো
যে দান লোক দেখানো, যা মানুষের প্রশংসা/বাহবা কুড়ানোর জন্যে দাতা পরিচয় বা হাসিলের উদ্দেশ্যে করা হয়, তা সৎ দান নয়। দান করে গ্রহীতাকে খোঁটা দেয়া, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শোষণ করা দানের বরকতকে নষ্ট করে। দানের বিনিময়ে গ্রহীতার কাছ থেকে যদি কোনো সুযোগ, আনুকূল্য, সমীহ বা বস্তুগত প্রাপ্তির প্রত্যাশা করা হয়, তবে তা যথার্থ দান নয়।

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করে ও তা গোপন রাখে এবং গ্রহীতাকে এজন্যে খোঁটা ও কষ্ট দেয় না তারা পুরস্কৃত হবে। তাদের কোনো ভয় ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। (সূরা বাকারা ২৬৩)। নিঃশর্ত দানের জন্যে রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশীর্বাদধন্য দীর্ঘ জীবন ও অমরত্ব। (ঋগবেদ ১:১২৫)

৫) নিজে দান করলেই হয়, অন্যকে বলার দরকার কী?
কাউকে দানে নিরুৎসাহিত করা গুরুতর অন্যায়। এ ধরনের কাজকে কোরআনে অবিশ্বাসীদের কাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা মাঊনে বলা হয়েছে, যারা বিশ্বাসী নয়, তারা মিসকিনদের খাবার দেয়ার ব্যাপারে লোকদেরকে উৎসাহিত করে না। এমনকি সূরা ফজরের ১৬ থেকে ২০ আয়াত ব্যাখ্যা করলে আমরা বুঝতে পারি, দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে অভাবগ্রস্তকে সাহায্য করতে অন্যদের উৎসাহিত না করা।

বুদ্ধবাণীতে বলা হয়েছে, কেউ যখন কাউকে দান করতে বাধা দেয় তখন সে তিনটি অন্যায় করে। প্রথমত, সে দাতাকে একটি ভালো কাজ থেকে বিরত করে। দ্বিতীয়ত, সে গ্রহীতাকে সাহায্য থেকে বঞ্চিত করে। তৃতীয়ত, নীচতার প্রকাশ ঘটিয়ে সে নিজের সত্তাকেই অপমানিত করে। (অংগুত্তর নিকয়া সূত্র নং ৫৭)

শাশ্বত ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে আমরা নিঃসংশয়ে বলতে পারি, অন্যকে দানে উৎসাহিত করা বিশ্বাসী হওয়ারও গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। তাই নিজে দানের পাশাপাশি অন্যকেও দানে উৎসাহিত করুন। সৎকাজে উৎসাহ দেয়ায় তার দানের কল্যাণের ভাগীদার আপনিও হবেন। আপনার জীবনেও কল্যাণের পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

প্রকৃতপক্ষে দান যেভাবে করা উচিত সেভাবে আমরা খুব কমই দান করছি। যাকে দান করছি সে তার জীবন কি বদলাতে পারছে? না কি দান গ্রহণ করা তার নিয়তীতে পরিণত করেছে? অনেক ভিক্ষুককে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি যারা আজো ভিক্ষা করছে। তো এটা কি সঠিক প্রকিয়ায় হচ্ছে? অনেকে আবার সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করছে, ভিক্ষা করছে আবার বড় বড় বাড়ি গাড়ির মালিকও হয়েছে তবুও সেই ভিক্ষা করছে। আবার কেউ কেউ সে টাকা দিয়ে নেশা করছে।

সবার আগে দান করা উচিত আমাদের ঘরের পাশে অভাবী প্রতিবেশীকে। কারণ তাকে আমরা চিনি। টাকাটা আসলে তার কতটা প্রয়োজন তা আমরা সহজে ফিল করতে পারব। আবার দান এমনভাবে করা উচিত যাতে তার ওই প্রয়োজনটাই মিঠে যায়। প্রয়োজনে আমরা কয়েকজন একসাথে মিলে দান করতে পারি যাতে সে প্রতিবেশীও স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে পারে। দানের খাত সমূহও দেখা উচিত। হ্যা অবশ্যই দান সঠিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত। তাহলেই সমাজ থেকে ভীক্ষবৃত্তি কমবে। এই নিয়ে ব্যবসা বন্ধ হবে। প্রকৃত গরীব তার হক পাবে।

দাতার কখনো অভাব হয় না। দাতার জীবনেই আসে প্রাচুর্য, আসে স্থায়ী সুখ। আর দাতা হতে হলে দান করতে হবে নিয়মিত। পরিমাণটা হবে আপনার সাধ্যমতো। তা হতে পারে ৫, ১০, ২০, ৫০০ বা হাজার টাকা। যা-ই দিন, দিতে হবে প্রতিদিন। তাই সকালে নাশতার আগেই দানের টাকা জমা দিন মাটির ব্যাংকে। আল্লাহর দরবারে দাতার তালিকায় লিপিবদ্ধ হোক আপনার নাম। সমস্ত অকল্যাণ দূর হোক আপনার জীবন থেকে। আর সকালে আপনি তৃপ্তি নিয়ে নাশতা করতে পারবেন এই ভেবে যে আপনার ক্ষুদ্র দান হয়তো জোগাবে কোনো নিরন্নের অন্ন, আলোকিত করবে কোনো এতিম-অনাথের জীবন।

১) দান উপার্জনকে শুদ্ধ করে।
২) দারিদ্র্য মোচন করে।
৩) রিজিকে বরকত দেয়।
৪) বালা-মুসিবত ও রোগ-ব্যাধি দূর করে।
৫) ভয়-পেরেশানি ও দুঃখ-কষ্ট দূর করে।
৬) পাপ মোচন ও দাতার অন্তরে তৃপ্তি প্রদান করে।

ভিক্ষা বনাম দান

ইসলামসহ অন্যান্য সকল ধর্মে দান এবং তার মাহাত্ম্যের যে কথা বলা হয়েছে, আমাদের সমাজে প্রচলিত ভিক্ষা-ব্যবসা কোনোভাবেই তার আওতায় পড়ে না। সম্প্রতি সাপ্তাহিক ২০০০, দৈনিক যায় যায় দিন ও দৈনিক ইত্তেফাকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ সংক্রান্ত কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ভিক্ষা-ব্যবসায়ী নেটওয়ার্ক : বছরে আয় ৩০ কোটি টাকা

ভিক্ষুকদের ঘিরে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে এক বিশাল নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করছে পেশাদার ভিক্ষুক-গডফাদাররা। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে তারাই পরিচালনা করছে রাজধানীর ভিক্ষাভিত্তিক ব্যবসাকে। ভিক্ষুক-গডফাদাররা সারা দেশ থেকে ভিক্ষুক সংগ্রহ করে তাদের ভিক্ষার নানা কৌশল শিখিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে। সাধারণভাবে ১০০ টাকায় ৫০ টাকা, কখনো কখনো ৪০/ ৪৫ টাকা পায় ভিক্ষুকরা, বাকিটা চলে যায় ভিক্ষুক-গডফাদারদের পকেটে।

ভিক্ষাবৃত্তিতে ঢাকা শহরে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় করে সঙ্ঘবদ্ধ ভিক্ষুকের দল। এদের প্রতিদিনের আয় গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। মাসিক আয় ৯ হাজার টাকা এবং বছরে আয় ১ লাখ টাকার ওপর। (সাপ্তাহিক ২০০০, ১৮.০২.২০০৫)

ভিক্ষুক জমির আলীর জমি আছে ৩৫ বিঘা
ভিক্ষুক জমির আলীর জমি আছে ৩৫ বিঘা। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে প্রতিবছর রংপুরে তার গ্রামের বাড়িতে এক বিঘা করে জমি কেনেন। ছেলেমেয়েদের জন্মদিনে পাঠান ঢাকার অভিজাত কনফেকশনারির কেক।
১২টি বেবিট্যাক্সি ও ২টি মাইক্রোবাসের মালিক ভিক্ষুক জালাল মোল্লার মাসিক আয় ৬০ হাজার টাকা। গ্রামের বাড়িতে তার দোতলা বিল্ডিংয়ের নাম দিয়েছেন মুসাফিরখানা।
ভিক্ষুক করম আলী শেখের আছে সুদের ব্যবসা। শহরে ভিক্ষুক সেজে ভিক্ষা করলেও গ্রামে রয়েছে তার আলিশান বাড়ি, প্রাইভেট রিকশা। রিকশাওয়ালার বেতনই দেন মাসে আড়াই হাজার টাকা। (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩.০১.২০০৭)

ভিক্ষুক যখন আতঙ্ক
ভিক্ষাবৃত্তির একাধিক কলাকৌশল ছাড়াও কখনো কখনো ভিক্ষুকরা হয়ে ওঠে আতঙ্ক। একশ্রেণীর মাদকসেবী ভিক্ষুক হাতে ব্লেড নিয়ে ভয় দেখিয়ে রিকশা কিংবা বেবিট্যাক্সি যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। মাঝে মাঝে ছিনতাইও করে। আরেকদল ভিক্ষার নামে মানুষের মল-মূত্র গায়ে মেখে গায়ে মল ছিটিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে কেড়ে নেয় পথচারী বা রিকশাযাত্রীর সর্বস্ব।
ভিক্ষায় আরো বেশি আয়ের জন্যে পঙ্গু বা বিকলাঙ্গ হতে ডাক্তারের কাছেও ধর্না দেয় এদের কেউ কেউ। (দৈনিক যায়যায়দিন, ১২.১০.২০০৬)
আপনি যখন দানকে ভিক্ষায় রূপান্তরিত করছেন, তখন আপনি সামাজিক পরগাছা সৃষ্টিতেই সাহায্য করছেন। নবীজী (স.) এ জন্যেই ভিক্ষাবৃত্তিকে অপছন্দ করেছেন এবং ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূলে বাস্তব পদক্ষেপও নিয়েছেন।

আমরা একটি এথিমখানা নিয়ে কাজ করছি। ১ হাজার শিশুকে নতুন আবাসন, শিক্ষা ও খেলাধূলার মাধ্যমে একটি আলোকীত জীবন গড়ে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। জাতীয়ভাবে তারা বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে দেশ ও জাতীকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখছে। প্রয়োজনে আপনিও সে সংঘের খুজ খবর নিতে পারেন। দান করতে পারেন এখানে নিয়মিত। কেউ যদি এই সংঘ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তবে ইমেল করুন >> [email protected]

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫

আবু আফিয়া বলেছেন: মহৎ উদ্যোগ

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
আসলে আমরা কেউ'ই মনে হয়- দান করার সময় এত বিচার বিবেচনা করি না।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ইসলামের নির্দেশিত পথে দান খয়রাতের ফযীলত

ইসলামসহ অন্যান্য সকল ধর্মে দান খয়রাত এবং তার মাহাত্ম্যের কথা বলা হয়েছে। ধন সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তা’আলা। তিনি যাকে ইচ্ছা উহা প্রদান করে থাকেন। এজন্য এ সম্পদ অর্জন ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে তাঁর বিধি-নিষেধ মেনে চলা আবশ্যক। সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও সৎ পথে উহা ব্যয় করা হলেই তার হিসাব প্রদান করা সহজ হবে। ইসলামে দান খয়রাত অবস্থাভেদে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। দানের ধর্মীয় নির্দেশ নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী ধনী-গরিব সবার জন্যেই প্রযোজ্য। সালমান বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “মিসকিনকে দান করলে তা শুধু একটি দান হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু গরীব নিকটাত্মীয়কে দান করলে তাতে দ্বিগুণ ছওয়াব হয়। একটি ছাদকার; অন্যটি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার।” (নাসাঈ, তিরমিযী) আপনার যা আছে তা থেকেই স্বতঃস্ফূর্ত দান করুন। স্বতঃস্ফূর্ত দান বলতে বোঝায় ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়। দানের ক্ষেত্রে পরিমাণ নয়; আপনার আন্তরিকতাই প্রমাণ করবে আপনি বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী। নবীজী (স) বলেন, যে ব্যক্তি তার বৈধ উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ দান করে, আল্লাহ ঐ দান নিজ হাতে গ্রহণ করেন এবং তাতে বরকত দিয়ে করে তোলেন পাহাড়তুল্য। তবে যে দান লোক দেখানো, যা মানুষের প্রশংসা/বাহবা কুড়ানোর জন্যে দাতা পরিচয় বা হাসিলের উদ্দেশ্যে করা হয়, তা সৎ দান নয়। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করে ও তা গোপন রাখে এবং গ্রহীতাকে এজন্যে খোঁটা ও কষ্ট দেয় না তারা পুরস্কৃত হবে। তাদের কোনো ভয় ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। (সূরা বাকারা ২৬৩)। সূরা বাকারার শুরুতেই ইরশাদ হয়েছে : এ (কোরআন) সেই কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই, এ মুত্তাকিদের জন্য পথ নির্দেশ। (মুত্তাকি তারাই) যারা গায়েবে ইমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাদের যে রিজক দান করা হয়েছে তা থেকে ব্যয় করে। (সূরা বাকারা : আয়াত ২-৩)। নবীজী (স) খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, সৃষ্টির সেবায় যা ব্যয় করবে, তা-ই হচ্ছে তোমার সম্পদ, তোমার পরিত্রাণের উপায়। আর যা জমিয়ে রেখে যাবে, তা তোমার নয়; তোমার উত্তরাধিকারীর ভোগে ব্যবহৃত হবে।
সূরা আদ্দাহরিয়াত (আয্যারিয়াত)-এর ১৯ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছেঃ নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদে নিঃস্ব ও অসহায়দের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ আমরা যা দান করি, কোরআনের দৃষ্টিতে তা দয়া নয়; তা অসহায়দের অধিকার বা হক্কুল ইবাদ। আপনি যখন দান করেন, তখন আপনি সৃষ্টির অধিকারকেই সম্মান করেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করবেন। কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে : যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস্যবীজ, যা উৎপাদন করে সাতটি শীষ, প্রত্যেক শীষে একশত শস্যকণা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়। তবে যারা মানুষের প্রশংসা নেয়ার উদ্দেশ্যে দান করবে, তাদের দ্বারাই জাহান্নামের আগুনকে সর্বপ্রথম প্রজ্বলিত করা হবে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “সর্বপ্রথম তিন ব্যক্তিকে দিয়ে জাহান্নামের আগুনকে প্রজ্বলিত করা হবে।… তম্মধ্যে (সর্ব প্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির, আল্লাহ যাকে প্রশস্ততা দান করেছিলেন, দান করেছিলেন বিভিন্ন ধরনের অর্থ-সম্পদ। তাকে সম্মুখে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত রাজীর পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নেয়ামত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরূপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে বলা হবে, সে দানবীর। আর তা তো বলাই হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাকে মুখের উপর উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (মুসলিম)
গোপন-প্রকাশ্যে যে কোনভাবে দান করা যায়। সকল দানেই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ ”যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি গোপনে ফকীর-মিসকিনকে দান করে দাও, তবে এটা বেশী উত্তম। আর তিনি তোমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন।” (সূরা বকারা- ২৭১)। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“কিয়ামত দিবসে সাত শ্রেণীর মানুষ আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে, তম্মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে:
“এক ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করে বাম হাত জানতেই পারে না।” (বুখারী ও মুসলিম)।
বর্তমান যুগে অনেক মানুষ এমন আছে, যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে দান করে এবং তা মানুষকে দেখানোর জন্য। মানুষের ভালবাসা নেয়ার জন্য। মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর জন্য। মানুষের মাঝে গর্ব অহংকার প্রকাশ করার জন্য। অনেকে দুনিয়াবি স্বার্থ সিদ্ধির জন্যও দান করে থাকে। যেমন, চেয়ারম্যান বা এমপি নির্বাচনে জেতার উদ্দেশ্য দান করে। কিন্তু দান যদি একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হয় তা দ্বারা হয়ত দুনিয়াবি কিছু স্বার্থ হাসিল হতে পারে কিন্তু আখেরাতে তার কোন প্রতিদান পাওয়া যাবে না। তবে কাউকে দানে নিরুৎসাহিত করা গুরুতর অন্যায়। এ ধরনের কাজকে কোরআনে অবিশ্বাসীদের কাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা মাঊনে বলা হয়েছে, যারা বিশ্বাসী নয়, তারা মিসকিনদের খাবার দেয়ার ব্যাপারে লোকদেরকে উৎসাহিত করে না। এমনকি সূরা ফজরের ১৬ থেকে ২০ আয়াত ব্যাখ্যা করলে আমরা বুঝতে পারি, দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে অভাবগ্রস্তকে সাহায্য করতে অন্যদের উৎসাহিত না করা। শাশ্বত ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে আমরা নিঃসংশয়ে বলতে পারি, অন্যকে দানে উৎসাহিত করা বিশ্বাসী হওয়ারও গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। তাই নিজে দানের পাশাপাশি অন্যকেও দানে উৎসাহিত করুন। সৎকাজে উৎসাহ দেয়ায় তার দানের কল্যাণের ভাগীদার আপনিও হবেন। আপনার জীবনেও কল্যাণের পরিমাণ বাড়তে থাকবে।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৪২

এন এইচ সরকার বলেছেন: সুন্দর ভাবে বর্তমান শহরের ভিক্ষা বানিজ্যের চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন, এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ কিন্তু গ্রামের অনেক ভিক্ষুক আছে যারা এরকম বানিজ্যের সাথে যুক্ত নেই আবার তারা নিরুপায়ও তাই সবাইকে এক পাল্লায় না দেখে একটু সচেতন হয়ে দান করা উচিৎ।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০

ক্স বলেছেন: শহরের ভিক্ষুক সবই ধাপ্পাবাজ। আমি একটা ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে ছিলাম। এক মহিলা এসে ঘ্যানর ঘ্যানর করতেই থাকল। শেষে বিরক্ত হয়ে পকেটের কোনাকাঞ্জি খুঁজে একটা দুই টাকার নোট বের করে দিলাম। টাকার চেহারা দেখেই মুখ বিকৃত করে বলল, "দুই ট্যাকা.......! আমার ভিক্ষা লাগবোনা, তোর পোলারে খাওয়া!" বলে পেছনের সিটে বসা আমার ছেলের দিকে ছুঁড়ে দিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.