নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন বীথি

স্বপ্ন বীথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন ব্রীজ পাগল মানুষের স্বপ্ন

১২ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫


খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ কম বেশি সবারই আছে। খেলাধুলা পছন্দ করেনা এমন লোক মেলা ভার। আজ আমি এমনই একটা খেলার কথা বলব যা অনেকেরই ভাবনায় আসেনা বা চিন্তা করেন না। খেলাটি হচ্ছে ব্রীজ। বাংলাদেশের ব্রীজ দল আন্তর্জাতিক আসরে যায় এটাই বা কয়জন জানে! এটি হয়তো বাংলাদেশের হাজার দর্শকের প্রাণ ছুঁয়ে যাবে না, মাঠ কাঁপাতে পারবে না, কিন্তু দেশের লাল সবুজ পতাকা ওড়াতে পারবে। ২০১৬ ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ টিমস চ্যাম্পিয়নশিপে’ খেলতে এখন ইতালিতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ জুনিয়র ব্রীজ টিম"। এ আসরের পর্দা নামবে ১৩ আগস্ট। ১১ দিনব্যাপী এ খেলা মোট একুশটি সেশনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের আসরে মোট ২২ টি দেশ অংশগ্রহন করছে। এই টুর্নামেন্টটি মূলত অনুর্ধ ২৫ বৎসরের খেলোয়াড়দের জন্য। বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন বিশ্বজিৎ সাহা, রাফসান সিদ্দিকি, আমিরুল ইসলাম ও রাশেদুল হাসান। বাংলাদেশ ব্রিজ ফেডারেশনের সহায়তায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলছে এ চার তরুন। ২১টি দেশ বিভিন্ন বাছাই পর্ব পেরিয়ে এলেও বাংলাদেশ সরাসরি মূল পর্বে খেলার সুযোগ পায়। বলা যায় প্রতিটি দলই দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ এবং বহুবিধ সুবিধা নিয়ে ইটালীতে সমবেত হয়েছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ দলের খেলোয়ারা কোন প্রকার প্রশিক্ষণের সুযোগ ছাড়াই পাড়ি জমিয়েছে ইতালীতে। এমনকি দেশের বাহিরে ভ্রমনের অভিজ্ঞতাও নেই তাদের। সরাসরি ঢাকা থেকে ইটালি। খেলার আগের দিন রাত ১ টায় হোটেলে পৌঁছে সকাল ৯ টা থেকেই খেলা শুরু করতে হয়েছিল। অন্তত অচেনা পরিবেশেকে মানিয়ে নেওয়া এবং ভ্রমণজনিত ক্লান্তি দূর করার জন্যও দুই-একদিন প্রয়োজন ছিল। ব্রীজ দল গঠিত হয় ৬ জন খেলোয়াড়, একজন কোচ ও এক জন এনপিসি নিয়ে। যেখানে প্রতিটি খেলায় ৪ জন করে খেলেন এবং পালাক্রমে ২ জন খেলোয়াড়কে রেস্ট নেবার সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু শুধুই আর্থিক অপ্রতুলতার কারনে ৬ জনের স্থলে মাত্র ৪ জন খেলোয়াড়কেই পাঠাতে হয়েছে এবং ২১টি দেশের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্ন ২১ রাউন্ড খেলা মাত্র ৪ জন খেলোয়াড়কেই চালিয়ে নিতে হয়েছে। যেটা অত্যন্ত কস্টকর এবং অমানবিক বটে। সাধারণত প্রশিক্ষক এবং এনপিসি খেলা চলাকালীন প্রতি খেলোয়াড়ের ভুল ত্রুটিগুলো পর্যবেক্ষণ করেন এবং টিম মিটিং এ কৌশলগত বিষয়গুলো নির্ধারণ করেন। আর্থিক অপ্রতুলতার কারণে প্রশিক্ষক ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। একটি বিষয় লেখার প্রয়োজন বোধ করছি, বাংলাদেশ ব্যতীত এই ২২টি দেশের মধ্যে প্রায় প্রতিটি দেশেই তাদের স্কুলের পাঠ্যসূচিতে "ব্রীজ" অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সুতরাং তারা শিশু বয়স থেকেই ব্রীজের সংস্পর্শে আসতে পারছে। পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষকের কাছে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছে তারা। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশ দলের ছিল বিশাল ঘাটতি। বিভিন্ন ঘাটতি সত্ত্বেও বাংলাদেশ দল কানাডা, জাপান, ফিনল্যান্ড, সিংগাপুর, জার্মানি দলের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে এবং এউএসএ১, এউএসএ২, চায়না, সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে স্বল্প ব্যবধানে পরাজিত হয়। খেলার এই ফলাফলে আমি সত্যিই মুগ্ধ। এজন্য মহান সৃস্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। খেলোয়াড়গণ অন্তত সুস্থ থেকে টুর্নামেন্টটি খেলতে পারছে এটা বড় ব্যাপার, অন্যথায় ওয়াকওভার দেওয়া ছাড়া কোন বিকল্প ছিলনা। বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা উড়ছে ইটালীতে এটা আমাদের কাছে অহংকার করার মতই একটি বিষয়। তবে দুঃখের সাথে জানাতে হয়, বর্তমানে খেলার জন্য আমাদের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও খেলা চালিয়ে নিতে আমাদের প্রয়োজন অন্তত ৬০০০ বর্গফুট আয়তনের একটি জায়গা। অলিম্পিকের সন্মানিত সভাপতি মহোদয় ও মহাসচিব এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর প্রতি আকুল আবেদন "বাংলাদেশ অলিম্পিক কর্তৃক ধার্যকৃত একটি ফেডারেশনর পৃষ্ঠপোষকতায় একটি ব্যাংক" সেই নীতিতে বাংলাদেশ ব্রিজ ফেডারেশনের জন্য কোন একটি ব্যাংককে যদি ৫ বছরের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার ব্যবস্থা করে দেওয়া এবং ৬০০০ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ করা যায় তাহলে বাংলাদেশ ব্রীজ ফেডারেশন তৈরি করতে পারবে অনেক প্রতিভবান নুতন খেলোয়াড় এবং ছিনিয়ে আনতে পারবে দেশ মাতৃকার সন্মান বৃদ্ধির পদক সমুহ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.