নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন বীথি

স্বপ্ন বীথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

১৩ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:১৬

বাংলাদেশের (তখনকার পূর্ব পাকিস্তান) স্বাধীনতা সংগ্রামকে দাবিয়ে রাখতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বিশ্বসভ্যতার অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তবে এখনো ঐ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি, এমনকি পাকিস্তান সরকার এখনো তা অস্বীকার করে চলেছে। তবে বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগে গত ১১ মার্চ (শনিবার) বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়ায় ঐ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের পথ সুগম হয়েছে। আগামীতে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হবে বিধায় বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন সহজ হবে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকার ও নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাঙালিদের উদ্যোগী হতে হবে। উল্লেখ্য, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে শহীদজননী জাহানারা ইমাম ১৯৯৩ সালে প্রথম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ২৫ মার্চের কালরাতে মশাল প্রজ্বালন এবং শহীদদের স্মরণে আলোর মিছিল কর্মসূচি উদ্বোধনকালে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন। এরপর স্বাধীনতার ৪০তম বর্ষপূর্তি উদযাপনকালে ২০১১ সালে জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেসকোর কাছে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির জন্য দাবি জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন আর্মেনিয়া প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশে দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয় কি না। পরে আর্মেনিয়ার প্রস্তাবেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশসহ ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্র সর্বসম্মতভাবে ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। দুই বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ দিবস পালিত হচ্ছে। ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের সুযোগ এখন না থাকলেও ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সহায়ক হবে। এ জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে প্রকাশিত গ্রন্থ, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, গবেষণাপত্র, আলোকচিত্র, দলিল ও প্রামাণ্যচিত্রের একটি ফাইল তৈরি করে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর দূতাবাসে এবং আইনপ্রণেতাদের দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে বিস্মৃতপ্রায় এ গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে বিভিন্ন দেশকে তাদের পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণের অনুরোধ করতে হবে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দেশের পার্লামেন্টে এ প্রস্তাব গৃহীত হলেই জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যার স্বীকৃতির প্রস্তাব উত্থাপন করা সহজ হবে। গত ডিসেম্বরেই আর্মেনিয়ার পার্লামেন্টে বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতির পক্ষে প্রস্তাব পেশ করেছেন সে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রান্ট বাগরাতিয়ান। আর্মেনিয়াকে বাংলাদেশ সরকারিভাবে অনুরোধ করলেই এ প্রস্তাব গৃহীত হবে বলে জানা গেছে। এভাবে ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়া, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, রুমানিয়া, কিউবা, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য বন্ধু দেশের প্রতি সরকারিভাবে একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে আহ্বান জানাতে হবে। দেরিতে হলেও জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব অনুমোদন একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসের সত্যকে রক্ষা করবে এবং একই সঙ্গে গণহত্যা অস্বীকারের নির্লজ্জ পাকিস্তানি অপপ্রচারের যোগ্য জবাব হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া অত্যাবশ্যক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.