নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন বীথি

স্বপ্ন বীথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

পাশবিকতা, নিষ্ঠুরতা, নৃশংসতা, নির্মমতা ইত্যাকার সবকিছুকে ছাপিয়ে এবং ছাড়িয়ে গিয়েছিল শিশু রাজন হত্যাযজ্ঞ। এমন নারকীয়তা সহ্যাতীত অবশ্যই। হত্যাকারীরা উল্লাসে মত্ত হয়ে নিরপরাধ শিশুটিকে পাশবিক জিঘাংসায় প্রাণনাশ করেছিল। শিশু হত্যার আনন্দে তারা মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিল। মনোবিকলন এমন মাত্রায় আশ্রয় পেয়েছিল যে, মানবিক বোধ আর কাজ করেনি খুনীদের। কিন্তু বিচারের বাণী কাঁদেনি নীরবে নিভৃতে। দেশের মানুষও ক্ষোভে-বিক্ষোভে পড়েছিল ফেটে। এই হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে। আদালত চারজনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়। একজনকে যাবজ্জীবন এবং পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদন্ড দেয়া হয়। হাইকোর্ট সেই রায় বহাল রেখেছে। শুধু যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত একজনের শাস্তির মেয়াদ হ্রাস করে ছয় মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এই নৃশংস হত্যাকান্ড দেশবাসীকে কাঁদিয়েছিল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ হত্যা মামলার আসামিদের আইনের আওতায় এনে বিচার সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে দেশে নিঃসন্দেহে আইনের শাসনের একটি উজ্জ্বল মাইলফলক প্রতিষ্ঠিত হলো। ফাঁসির রায় পাওয়ার ফলে আগামীতে একই ধরনের নিষ্ঠুর অপরাধ করার আগে যে কোন নরাধম শতবার ভাববে। নৃশংসতার হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতেই হবে দেশবাসীকে। এই বিভীষিকাময় হত্যাকান্ডের সেই দৃশ্য দেখেছে দেশবাসী নেটের মাধ্যমে। সিলেটের সবজি বিক্রেতা ও শিশু রাজনের হত্যাকারী ঘাতকরা ছিল পশুর চেয়েও অধম। ২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে একটি দোকান ঘরের খুঁটিতে বেঁধে চোর ‘অপবাদে’ তেরো বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীদেরই এক সহযোগী নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিলে গোটা সমাজের মর্মমূলই প্রচন্ডভাবে নাড়া খেয়েছিল। লাখো মানুষের বিবেক বলে উঠেছিল, এ কোন্ বর্বরতা! মানুষ এতটা নির্মম-নৃশংস-নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারে? পৈশাচিক উল্লাসে মত্ত হয়ে রাজনকে যারা হত্যা করেছিল, তারা দেখতে অবিকল মানুষের মতো হলেও মানুষ নয় তারা। পাষন্ড, নরাধম, বিকৃত মস্তিষ্ক, নরকের কীট কোন বিশেষণেই তাদের পরিচয় যথার্থভাবে তুলে ধরা যায় না। হত্যার পর প্রধান হত্যাকারী কামরুল সৌদি আরব পালিয়ে গেলেও কূটনৈতিক প্রক্রিয়া ও ইন্টারপোলের সহায়তায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এ ধরনের দৃঢ় আইনানুগ তৎপরতা সমাজে বিরল। বর্তমান সরকারে এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। শিশু হত্যার বিচারের রায় প্রমাণ করে আন্তরিকতা থাকলে দ্রুততম সময়ের ভেতর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব। মরদেহ গুম করার সময় হত্যাকারীদের একজন ধরা পড়ে। প্রধান হত্যাকারীকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছিল অর্থের বিনিময়ে। নির্যাতিত হওয়ার এক পর্যায়ে রাজন পানি পান করতে চাইলে প্রথমে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ময়লা-নর্দমার পানি খেতে দেয়া হয় এবং পরে ঘাম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর পরামর্শ দিয়েছিল ওই মানুষরূপী জানোয়াররা। তাদের এই নিষ্ঠুর আচরণ কোন মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। জঘন্য অপরাধ করেছে এরা। যাদের মধ্যে ছিল না মনুষ্যত্ব। এই রায়ের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে বলে সমাজের যে ধারণা, তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বলা যায় দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৫৭

ইয়াসিরআরাফাত বলেছেন: আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার প্রশংসার দাবিদার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.