নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের প্রয়োজনে বেচে আছি । অবিরাম সংগ্রাম শুধুই মাথা তুলে তাকানোর। নেই আর কোন অভিলাষ । পৃথিবীটা মনে হয় শুধুই পরিহাস ।

বিষাদ সজল

স্বপ্ন দেখি একটা সাম্যবাদী পৃথিবীর ।

বিষাদ সজল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসমত আলী, ওঠো ওঠো -

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:০০

হাসমত , রহমত দুই ভাই । সেই ছোট্টবেলা থেকেই দুই ভাই হরিহর আত্মা । ভাইদের মধ্যে রহমত বড় । বড় ভাইয়ের সাথেই হাসমতের প্রথম স্কুলে যাওয়া । একসাথে স্কুল পলায়ন , গনিদের বাগানে আম চুরি করে খাওয়া , মায়ের চোখ ফাকি দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা নদীতে ডুবসাতারে মেতে ওঠা অথবা বাবার চোখ এড়িয়ে গভীর রাতে পালা গান দেখতে বের হওয়া ছিল তাদের উদ্দাম শৈশবের দৈনন্দিন চিত্র । সম্পর্ক বন্ধুর মত হলেও বড় ভাইয়ের প্রতি হাসমতের শ্রদ্ধাবোধ ছিল অসীম । আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকায় গৃহস্থ এই পরিবারের ছেলেদুটোর পড়াশুনা খুব বেশি দূর এগোয়নি । শিঘঘিরই বিয়ে করে সংসারী হল এই দুই ভাই । তবু তারা একত্রে একই পরিবারে বসবাস করতে থাকে ।



সময়ের পরিক্রমায় তাদের সন্তানেরা বড় হতে থাকে । একটা সময়ে পিতৃপ্রদত্ত সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় মানসিক দ্বন্ধ । তাদের সন্তানেরা রীতিমত হাতাহাতিতে মেতে ওঠে । দুই ভাইয়ের কেউই এ ব্যাপারে জড়াতে না চাইলেও সন্তানদের পীড়াপীড়িতে তারা বাধ্য হয় নিজেদের প্রাপ্য সম্পত্তির যথার্থ অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে । যে বড় ভাইয়ের প্রতিটি বাক্যই হাসমত বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিত আজ কিছু কানপড়া দেয়া প্রতিবেশীর কুমন্ত্রণা আর সম্পত্তির কারনে সেই বড় ভাইকেই সে ঘৃণা করতে শুরু করে । ফলে দুই ভাইয়ের মধ্যে শুরু হয় মনোমালিণ্য । কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখতে নারাজ । ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে এক পর্যায়ে সে বড় ভাইয়ের গায়ে হাত তোলে।



রাতে বাড়ি ফিরে হাসমত কেমন যেন অস্থির বোধ করে । জাগতিক সব কিছুই তার কাছে শূণ্য মনে হয় । মনে হয় এই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থলকে সে ছেড়ে চলে এসেছে । কারো সাথেই কোন কথা বলেনা । অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকে । চোখ ফেটে যেন অশ্রুরা বাধ ভেঙ্গে আসতে চায় । বউকে ডেকে এক গ্লাস পানি দিতে বলে । কিন্তু পানি নিয়ে আসার আগেই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । তারপর নীরব নিথর দেহ । এই পৃথিবীর সব পিছুটান ঝেড়ে নীরবে চলে যায় সে না ফেরার দেশে ।

কান্নার আওয়াজ কানে যেতেই রহমতের হৃদয় কেঁপে ওঠে । দৌড়ে চলে আসে ছোট ভাইয়ের লাশের পাশে । হাউমাউ করে শিশুর মত কাঁদতে শুরু করে । পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় ধনটাতো সে ক্ষণকাল আগেই হারিয়ে ফেলেছে । ডুকরে কেঁদে ওঠে । তবু চোখটা বড় শান্ত । শুধুই হাহাকার করতে থাকে –



আসমত আলী, ওঠো ওঠো -

মরব আমি , মরছ তুই

ওঠো ওঠো আসমত আলী

ওঠো………………..









মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:২৪

আরজু পনি বলেছেন:

সম্পত্তি যে কাছের মানুষগুলোকে কতো দুরে ঠেলে দিতে পারে তা আমিও দেখেছি :(

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪৫

বিষাদ সজল বলেছেন: ঠিকই বলেছেন । সবচেয়ে কাছের মানুষগুলোও এই সম্পত্তির কারনে পর হয়ে যায় হয়তো ক্ষণিকের ভূলে । তবে ভেতরে ভেতরে ঠিকই ভালবাসা জমা থাকে সেই প্রিয় মানুষটির জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.