নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন হলো এক কাপ গরম চা আর একটি জ্বলন্ত সিগারেটের মতো। গরম চা এক সময় জুড়িয়ে যাবে, সিগারেটের তামাকও পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।

পয়গম্বর

The woods are lovely, dark and deep, But I have promises to keep, And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep.---Robert Frost

পয়গম্বর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৯

এক.



”কি দিবেন, তাড়াতাড়ি দ্যান। নামাজের ওয়াক্ত পার হয়ে যাচ্ছে।” টেবিলের ওপর রাখা ফাইলটার ভেতরের কাগজগুলো সাইন করতে করতে কফিল সাহেব আমাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বললেন।



আমি একটু ইতস্ত:ত করে চেয়ারের পাশে রাখা ব্রিফকেসের ব্যাগ থেকে হলুদ খামটা বের করে টেবিলের উপরে রাখলাম। আমার ইতস্ত:ত ভাবটা কফিল সাহেব ফাইল থেকে মুখ না উঠিয়েই বুঝতে পারলেন। তারপর শেষ কাগজটাতে সাইন করে সশব্দে ফাইলটা বন্ধ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলেন। লম্বা কাঁচা-পাকা দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন, ” আরে ইয়াং ম্যান, আপনিতো দেখি লজ্জায় মারাই যাচ্ছেন। এ্যাত লজ্জার কি আছেরে ভাই? কষ্ট করে আপনাদের জন্য সেবামূলক কাজ করছি। কাজের পারিশ্রমিকতো দিবেন? হে: হে:। দ্যান দ্যান, হলুদ খাম আমার বড়ই পছন্দের জিনিস।” কথাটা বলেই টেবিলের ওপরে খানিকটা ঝুঁকে পড়ে অনেকটা ছোঁ মেরেই খামটা নিয়ে নিলেন কফিল সাহেব। তারপর খাম থেকে টাকার তোড়াটা বের করে ডান হাতের তজর্নীতে জিহ্বার আগা থেকে একটু থুতু লাগিয়ে ’বিসমিল্লাহ’ বলে গুণতে শুরু করলেন।



আমি অনেকটা নির্জীবভাবে বসে থেকে তার টাকা গোণা দেখতে লাগলাম। একটা সময় টাকা গোণা শেষ হলো। টেবিলের ওপরে এখন একহাজার টাকার নোটগুলো দুই ভাগে ভাগ করা। একদিকে সুস্থ্য সবল অনেকগুলো নোট। আরেকদিকে টেপ লাগানো দুইটা নোট। কফিল সাহেবের চোখে মুখে স্পষ্ট বিরক্তি প্রকাশ পেল। আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন, ”এই টেপ লাগানো নোট দুইটা নিয়ে যান। পরে একদিন এসে টেপ ছাড়া ভালো নোট দিয়ে যাবেন। কি বলছি বুঝতে পারছেনতো ইয়াং ম্যান?”



আমি ছোট করে ’হ্যাঁ’ সূচক মাথা নাড়লাম। তারপর ছেঁড়া নোট দু’টি পকেটে রাখতে রাখতে বললাম, ”এখন তাহলে আসি?”



”হ্যাঁ, আসেন। আমিও নামাজে যাই। আল্লাহু আকবার।” কাঁচা-পাকা দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়লেন কফিল সাহেব।



অফিস রুমের বাইরে বের হয়ে এসে বাইরের নেম-প্লেটে আর একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। ওখানে লেখা আছে ”ডা: কফিল উদ্দিন, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন)”। স্বস্তির একটা নি:শ্বাস ফেলে মনে মনে ভাবলাম, ”যাক, কাজটা অবশেষে করাতে পারলাম।”



কফিল সাহেবের খোঁজ আমি পাই আমার অনুজ সজীবের কাছ থেকে। বিষয়টা ছিল আমার দূর সম্পর্কের এক ভাগ্নী ডা: রত্না'র চাকুরির বদলি বিষয়ক। আরেকটু বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে বি.সি.এস স্বাস্থ্য ক্যাডারে নতুন জয়েন করার পর ডা: রত্নাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বদলি করা হয়েছে তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মেয়ে মানুষ এত দূরে গিয়ে থাকবে কিভাবে? এইটা নিয়ে কান্নাকাটি। এমনিতেই বাপ-মা মরা মেয়ে। কাছের আত্মীয় বলতে তেমন কেউ নেই। কাজেই আমাকেই দায়িত্ব নিতে হলো ঢাকার কাছাকাছি একটা পোস্টিং-এর ব্যবস্থা করার। সজীবের আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বেশ ভালো চেনা-শোনা আছে। সে-ই জানালো যে কফিল সাহেব এই বদলির কাজটা করে দিতে পারবেন। অবশ্য সেক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের খরচাপাতিও দিতে হবে তাকে।



প্রথম যেদিন কফিল সাহেবের সাথে দেখা, সেদিন আমি রীতিমতো বিব্রত বোধ করেছিলাম। বিব্রত বোধ করার কারণটা খুবই পরিষ্কার। পঞ্চাশোর্ধ আলখাল্লা পরিহিত একজন মানুষ। লম্বা দাঁড়ি আর কপালের বড় বড় কালো দুটি দাগ দেখলেই বোঝা যায় যে, এক ওয়াক্ত নামাজও তার বাদ যায়না কখনো। আল্লাহওয়ালা বয়ষ্ক এমন একজন মানুষকে কত টাকা দিতে হবে, কিভাবেই বা টাকাটা দিব, এসব ভাবতে ভাবতেই উৎকণ্ঠা বাড়ছিল। এদিকে রত্নার কাজটা না করালেই নয়। অবশ্য সজীব-ই আবার ভরসা হয়ে দেখা দিল। ওর কাছ থেকেই কফিল সাহেবের ’কাজের রেট’ টা জেনে নিয়ে আজ তাকে হলুদ খামে ভরে টাকাগুলো দিতে পারলাম। বেশ প্রসন্ন মনেই মহাখালী স্বাস্থ্য অধিপ্তরের বাইরে বের হয়ে এসে একটা বেনসন ধরালাম।



দুই.



আমাদের মাইক্রোবাসটা ছুটে চলেছে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে। গাড়িতে আমরা ড্রাইভারসহ আছি মোট পাঁচজন। আমরা বলতে আমি ছাড়াও আছেন আমার সিনিয়র কলিগ ডা: মনসুর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানবিদ তপন কুমার এবং আমাদের টিম লিডার ডা: কফিল উদ্দিন, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন)। দিরাই হাসপাতালে ’নবজাতকের মারাত্মক রোগসমূহ প্রতিরোধ’ বিষয়ক পাঁচ দিনের একটা ট্রেনিং প্রোগ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীদের ট্রেনিং দিতে যাওয়াটাই এই টীমের উদ্দেশ্য। যেহেতু বিদেশী ডোনারের অর্থায়নে আমাদের অর্গানাইজেশন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই প্রকল্পে যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে, তাই ট্রেইনার হিসেবে আমি এবং মনসুর ভাই ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তপন দা’ এবং ডা: কফিল উদ্দিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।



”বুঝলেন মনসুর সাহেব, এইসব রিমোট এলাকায় ট্রেনিং প্রোগ্রামে আমি আসতে চাইনা।” একটু বিরক্তি নিয়ে কফিল সাহেব বললেন কথাটা। ”একে তো থাকা খাওয়ার অসুবিধা। আর তার ওপরে দৈনিক ভাতার পরিমাণটাও ঠিক সেরকম না। আপনারা ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ করেন, আপনাদের এসব মানায়। আমাদের কি আর এ্যাত সময় আছে নাকি? অফিসে বিস্তর কাজকর্ম। জরুরী কাজ ছেড়ে অজপাড়া গাঁয়ে পড়ে থাকার মানেই হয়না। শুধুমাত্র বড় স্যারের নির্দেশেই এবারের মতো আসলাম। ভবিষ্যতে আমাকে আর ডাকবেননা প্লিজ।”



”ইয়ে মানে, স্যার, এবার দৈনিক ভাতার পরিমাণটা অন্যান্য বারের থেকে একটু বেশি-ই। আর তাছাড়া আপনিতো থাকবেন সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউজে ভালো ব্যবস্থায়। ওখান থেকে দৈনিক গাড়ি দিয়েই আপনাকে দিরাই উপজেলায় আনা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ডা: মনসুরের কথাগুলো শুনে কফিল সাহেবের দাঁড়ির ভেতর দিয়ে পান খাওয়া লাল দাঁতগুলো বের হয়ে এলো। ”হে: হে:। দেখেন যেটা ভালো মনে করেন। আল্লাহু আকবার।”



”বাই দ্য ওয়ে, তপন, শোন ভাই, তুমি একটু দেখো বাবুর্চীকে বলে নদীর ফ্রেশ মাছ-টাছ রান্নার ব্যবস্থা করতে পারো কিনা। রোজা রমজানের মাসে তো ইফতার আর সেহরিতেই যা একটু আহার করা যায়। ওটা যেন একটু ভালো ভাবে হয় আরকি।” কফিল সাহেব তার দাঁড়ির ভেতরে আঙ্গুলগুলো বুলাতে লাগলেন।



”ও নিয়ে আপনাকে চিন্তাই করতে হবেনা স্যার। যা খেতে ইচ্ছে হবে, একবার শুধু মুখ ফুটে বলবেন, বাকীটা আমি-ই দেখবোনে।” তপন দা’-এর কথা শুনে কফিল সাহেব ’হুম’ শব্দ করে গম্ভীরভাবে মাথা নাড়লেন।



”স্যারের ফ্যামিলি কি ঢাকাতেই?" মনসুর ভাই কথাচ্ছলে কফিল সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন।



”হ্যাঁ। এখন ঢাকাতেই ফ্যামিলি নিয়ে থাকি। সরকারী চাকুরীর পোস্টিং-এ কোথাও কি আর শান্তিতে থাকতে পেরেছি ভাই? গত পাঁচ বছর ধরে মোহাম্মদপুরের জাপান-গার্ডেন সিটিতে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে আছি। উত্তরার বাড়িটা কমপ্লিট হলে এইটা ভাড়া দিয়ে ওই দিকে চলে যাবো। আরে ভাই, ঢাকায় বাড়ি তুলতে গেলেও অশান্তি। যে সরকারকে ভোট দিলাম, সেই সরকারের দলীয় লোকজন-ই এসে চান্দা চায়। মহাখালী ডি.ও.এইচ.এস- এর মতো জায়গায় আমার দশ কাঠা জায়গার উপরে বাড়ি তোলার সময় পর্যন্ত আমার কাছে চান্দা চাইলো। চিন্তা করেন ব্যাপারটা। দেশটা কোন দিকে যাচ্ছে?!



মনসুর ভাই স্যারের কথা শুনে দু:খসূচক মাথা নাড়লেন। ”ঠিকই বলেছেন স্যার, খুব খারাপ অবস্থা। তো আপনার ছেলে-মেয়েরা কে কি করছে?”



”ছেলে আর পেলেন কই ভাই? তিন তিনটা মেয়ে হবার পর অনেক আশা করে আরেকটা সন্তান নিলাম। আল্লাহ এইটাও মেয়ে দিলো।” কফিল সাহেবের কণ্ঠে দীর্ঘ শ্বাস। একটু দম নিয়ে বললেন, বড়টা প্রাইভেট মেডিকেলের ফাইনাল ইয়ারে। মেজটাও একই মেডিকেলের থার্ড ইয়ারে। সেজটা এই বছর নর্থ-সাউথে বিবিএ তে ঢুকলো। আর ছোটটা স্কুলে যায়।” স্যার কিছুক্ষণের জন্যে যেন খানিকটা উদাস হয়ে গেলেন।



”বুঝলেন মনসুর সাহেব, এই দুনিয়াটা আসলে দুই দিনের। মরিচীকা। সবই মরিচীকা। আজ আছে, কাল নাই। এইসব ছেলে-মেয়ে, সহায়-সম্পত্তি -সবকিছুই ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই যে দুনিয়াজুড়ে আজকাল মারামারি, হানাহানি, এইগলার কোন মানে নাই।” কফিল সাহেব দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন। ”আমরা আল্লাহর গুনাহগার বান্দা। আল্লাহ এবং নবী রাসূল যা বলেছেন, সেই মোতাবেক চলার চেষ্টা করতে হবে। আর নামাজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিক মতো পড়তে হবে।”



তারপর হঠাৎ ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ”শোন ভাই, রাস্তার পাশে কোন মসজিদ দেখলে গাড়িটা থামাও। আসরের নামাজটা আদায় করতে হবে। স্যারের কথামতো গাড়ি থামলো রাস্তার পাশের ছোট এক মসজিদে। নামাজ শেষ হবার পর আবার আমাদের যাত্রা শুরু হলো। আশা করছি সুনামগঞ্জ পৌঁছেই ইফতারটা ধরতে পারবো।



তিন.



”কি অবস্থা আপনাদের? ট্রেনিং ঠিকঠাক মতো চলছেতো?” বিকালের সেশনটা শেষ হবার ঠিক আগ মুহূর্তে কফিল সাহেব ট্রেনিং রুমে ঢুকলেন। উপস্থিত সবাই তার সম্মানে উঠে দাঁড়ালো।



অনেকটা ভাষণ দেবার ভঙ্গিতে কফিল সাহেব সবার উদ্দেশ্যে বললেন, ”বসেন বসেন। আসলে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই কারণে যে, ট্রেনিং-এর উদ্বোধনী দিনে আপনাদের সাথে দেখা হবার পর নানা রকম ব্যস্ততায় আপনাদের খোঁজ-খবর নেওয়া হয়নি। অবশ্য আমার বিশ্বাস, বাকী ট্রেইনাররা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে আপনাদেরকে প্রয়োজনীয় জ্ঞানটুকু পরিপূর্ণভাবে দিতে সক্ষম হয়েছেন। আজকে ট্রেনিং-এর সমাপনী দিন। যারা এই পাঁচদিন কঠোর পরিশ্রম করে ’মা ও নবজাতক’ বিষয়ক এই গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনিং সম্পন্ন করেছেন, তাদের জন্যে জনপ্রতি দৈনিক দুইশত টাকা ভাতা হিসেবে পাঁচ দিনের জন্য সর্বমোট এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ আছে। আমি এখন নাম ডাকবো, আপনারা লাইন ধরে একজন একজন করে আমার কাছ থেকে একহাজার টাকা নিয়ে যাবেন।” কফিল সাহেব তপনদা’র কাছ থেকে নামের লিস্টটা চেয়ে নিলেন।



তপনদা’ লিস্ট এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, ”স্যার, ট্রেনিং-এ তো আসার কথা ছিল মোট দুইশ' জনের। কিন্তু ভাটী অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কারণে মাত্র পঞ্চাশজন আসতে পেরেছে।”



”ব্যাপার না। বেশি মানুষ আসলেতো বিপদ। এ্যাত মানুষকে কন্ট্রোল করাটা কঠিন বিষয়। যত কম পার্টিসিপেন্ট হবে, ততো সাক্সেসফুল দ্যা ট্রেনিং প্রোগ্রাম। বুঝলে তপন? হে: হে:।” মানুষ কম এসেছে শুনে স্যারের মনটা অনেক ভালো হয়ে গেল।



এরপর স্যার একে একে নাম ধরে ডাকলেন। যারা ট্রেনিং-এ উপস্থিত আছে, তারা এসে কফিল সাহেবের টাকা প্রাপ্তির কাগজে সাক্ষর করে পাঁচশো টাকার দুইটা করে নোট নিয়ে চলে গেল। অনুপস্থিতদের স্বাক্ষরটা স্যার নিজেই করে দিলেন।



পুরো ব্যাপারটা আমি আর মনসুর ভাই স্যারের পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। টাকা প্রদান পর্ব শেষ হবার পর মনসুর ভাই হঠাৎ কফিল সাহেবকে একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে বললেন, ”স্যার, দৈনিক ইফতারের রিফ্রেশমেন্ট বাবদ জনপ্রতি যে একশো টাকা করে বরাদ্দ আছে, অর্থাৎ পাঁচ দিনে জনপ্রতি পাঁচশো করে যে টাকাটা পাবে, সেটার কি হলো? পার্টিসিপেন্টদেরকেতো সেই টাকা দেওয়া হলোনা। আর অনুপস্থিত প্রায় দেড়শ’ জন যারা আসতে পারেনি, টাকা প্রাপ্তির কাগজে তাদের স্বাক্ষর করা মানেতো তারা ট্রেনিং-এ উপস্থিত না থেকেও টাকা নিয়েছে।”



”আহ্! মনসুর সাহেব। বেশি কথা বলবেননা প্লিজ। বেশি কথা আমি একদম পছন্দ করিনা।” কফিল সাহেবের কণ্ঠে বিরক্তি। ”কাঁচা কাজ এই কফিলউদ্দিন কখনো করেনা। বুঝলেন? টাকা প্রাপ্তির কাগজে অনুপস্থিতদের স্বাক্ষরগুলো করেছি এবং উপস্থিতির কাগজেও তাদের উপস্থিতি দেখিয়ে দেবোনে। নো প্রবলেম। টেক ইট ইজি।”



”যারা অনুপস্থিত, তাদেরকে উপস্থিত না দেখালে তাদের এতগুলো টাকাতো সরকারের কছে ফেরত চলে যেতো। তাইনা? তাতে কার কি লাভ হতো বলেন? ওটা বরং আমাদেরই ব্যর্থতা হতো। এই আমি কফিল যদি না থাকতাম তাহলে কম মানুষকে ট্রেনিং দেবার অপরাধে দেখতেন ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ আপনাদের সবাইকে কৈফিয়ত জারি করেছে।”



”আর শুনেন, ওসব ইফতারের রিফ্রেশমেন্ট বাবদ টাকা এদেরকে না দিলেও কিছু যায় আসবেনা। জনপ্রতি হাজার টাকা দিচ্ছি -এটাইতো অনেক! ট্রেনিং এবং রিফ্রেশমেন্ট বাবদ যে টাকাগুলো ’কাগজে-কলমে’ দেখানো হবে, সেটার 'সরকারী সিল-ছাপ্পর'সহ কাগজপত্র ঠিক করে আপনাকে দিলেইতো হলো, নাকি? শুনেন মনসুর সাহেব, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুঝে ’সরকারী সিল-ছাপ্পর’ আর ’স্বাক্ষরসহ কাগজপত্র’। এর বেশি কিছু দেখার কারও সময় নাই। ও.কে?” বেশ রাগত স্বরেই কথাগুলো মনসুর ভাইকে কফিল সাহেব শুনিয়ে দিলেন।



”কিন্তু স্যার, ট্রেনিং-এর অংশগ্রহণকারীরা কিন্তু অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে। কষ্ট করে রোজা রেখেও পাঁচটা দিন ট্রেনিং করেছে। অন্তত: ইফতার বাবদ টাকাতো তাদের ’হক’, তাদের প্রাপ্য টাকা। এটাতো তাদেরকে দেওয়াটা উচিত স্যার। এই টাকাটাতো মেরে দেওয়া কোনভাবেই ঠিক নয়। আর আপনিতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। আপনারতো এই বিষয়টা আরও ভালোভাবেই বোঝা উচিত।” মনসুর ভাই স্পষ্ট ভাষায় কফিল সাহেবকে কথাগুলো জানালেন।



”আমাকে জ্ঞান দিতে আসবেননা প্লিজ মনসুর সাহেব।” কফিল সাহেবের কণ্ঠ এখন উদ্ধত। ”কোনটা উচিত আর কোনটা অনুচিত, অন্তত: আপনার থেকে আমি ডা: কফিলউদ্দিন অনেক ভালো বুঝি। আর আপনিতো লোক সুবিধার না ভাই?! কি কথার মাঝে কোন কথা টেনে আনলেন?! কথা হচ্ছে ট্রেনিং নিয়ে, আর আপনি এর মধ্যে ধর্ম-নামাজ -এইসব বলছেন? আল্লাহপাক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে বলেছেন। এটা আল্লাহর বিধান। কাজেই নামাজ, নামাজের জায়গায়। আর হকের কথাই যদি বলেন, তাহলে বলতেই হয় যে, এই জমানায় অন্যের হক না মারলে আপনি নিজে কোনদিন বড়লোক হতে পারবেননা। যাইহোক, এসব ব্যাপারে আপনার সাথে পরে কথা হবে।” কফিল সাহেব রুম থেকে হন হন করে বের হয়ে গেলেন।



*************



ঢাকায় ফেরার পরের সপ্তাহেই মনসুর ভাইয়ের চাকরীটা চলে গেল। কারণ হিসেবে দেখানো হলো, এই মুহূর্তে প্রোজেক্টে আর বেশি লোকের প্রয়োজন নেই। অবশ্য আমাদের অর্গানাইজেশনের বড় স্যার তাকে রুমে ডেকে নিয়ে আলাদাভাবে কথা বলেছিলেন। তার ফলাফল আশানুরূপ ছিলনা সেটা বড় স্যারের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট প্রতীয়মান ”সরকারী আমলাদের সাথে কাজ করার জন্যে মনসুর ছেলেটা একেবারেই উপযুক্ত নয়।”



পুনশ্চ: 'ডা: কফিলউদ্দিন' নামটি কাল্পনিক। যার ব্যাপারে গল্পটি লিখলাম, তার সম্মানের কথা বিবেচনাপূর্বক আসল নামটি গোপন করলাম।

মন্তব্য ৫০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

নিষ্‌কর্মা বলেছেন: আমার দেখা এই জাতীয় আল্লাহওয়ালা লোক তেমন সুবিধার হয় নাই। এদের জীবনে কোন না কোন ঝামেলা থেকেই এদের জোব্বা ধারণ (কিংবা সুন্নতের পথে যাত্রা)। কিন্তু আপদমস্তক শয়তান এই লোকগুলোর জন্য আমরাও ভুল পথে যাচ্ছি। এদের দেখে এদের ধর্মের ধ্বজাধারী হিসাবে ভাবার কোনই মানে নাই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৪

পয়গম্বর বলেছেন: সত্য ঘটনা অবলম্বনে এই গল্পটা লেখার চেষ্টা করেছি। মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৮

মনিরুল হাসান বলেছেন: মানুষ কি তবে 'প্রতিবাদ' শব্দটি ভুলে যাবে?

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৮

পয়গম্বর বলেছেন: সরকারী আমলাদের কাছে আমরা জিম্মী।

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: কফিল সাহেবের ঘুষের পরিমানটা নগন্য। সরকারী অফিসগুলোতে কর্তারা তাদের কর্তারা, নেতারা ম..ীরা এরচাইতে হাজার গুন বেশী ..য়ে থাকেন।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২০

পয়গম্বর বলেছেন: সহমত।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪২

মুসাফির... বলেছেন: সরকার হলো জালিম... আর সরকারের কর্মচারীরা হলো জালিমের সহচর...--- আবু জর গিফারী (রাঃ)

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:১৭

পয়গম্বর বলেছেন: B:-) /:)

৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩০

ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: দীর্ঘশ্বাস আর আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার নেই। কস্টলাগে এরাই বড় বড় পদে বসে সাধারন মানুষকে শোষন করে যাচ্ছে। দেশ ছেড়ে কেউ পরবাশী হলে তার দেশপ্রেম নিয়ে কথা তোলে , কিন্তু যারা দেশপ্রেমের নামে দেশকে গিলে খাচ্ছে তাদের নিয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। আর যারাও সাহস করে তাদের অবস্তা মনসুর সাহেবের মত হয়।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:২৪

পয়গম্বর বলেছেন: চমৎকার বলেছেন!

৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

কলমের কালি শেষ বলেছেন: যখন টাকার লেনদেন থাকেনা তখন ধর্ম নিয়ে বড় বড় ভাষন আর যখন টাকার ঘ্রান পায় তখন এরা শয়তান হয়ে যায় । এরা হচ্ছে দুমুখো স্বভাবের লোক । সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রজাতি । সাইলেন্ট কিলার ।... :(

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

পয়গম্বর বলেছেন: বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির এটা শুধু Tip of the iceberg মাত্র।

৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০০

সারাহেপি বলেছেন: Ha haha.

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩

পয়গম্বর বলেছেন: সারাহেপি কি স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ে অথবা স্বাস্থ্যঅধিদপ্তরে কাজ করছেন? ;)

৮| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

সারাহেপি বলেছেন: Ha haha.

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৯

পয়গম্বর বলেছেন: আমার পরিচিত এক পাকিস্তানী সেদিন বললেন, পাকিস্তান আর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে পার্থক্য কি জানেন?

পার্থক্য হলো, বাংলাদেশে ঘুষের টাকা দিলে কাজ হবে এটা মোটামুটি ‌১০০ ভাগ নিশ্চিত। আর পাকিস্তানে ঘুষের টাকা দিয়েও মানুষ ১ ভাগ নিশ্চিত না যে কাজটা আদৌ হবে কিনা। :)

৯| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

সারাহেপি বলেছেন: Ha haha.

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৪৭

পয়গম্বর বলেছেন: B:-)

১০| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

সারাহেপি বলেছেন: Ha haha.

১১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০২

সারাহেপি বলেছেন: Ha haha.

১২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: পয়গম্বর ,




আসলেই মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন ।

আমার নিজের অভিজ্ঞতা খুব সংক্ষেপে বলি - আমার এক চেনা লোকের এই রকম একটি লেনদেন করার ঘটনার সময় আমি তার সাথে ছিলাম। ড্রাগ ব্লকলিষ্টে র'ম্যাটেরিয়ালস আমদানীর ছাড়পত্র নিতে হবে । যার কাছে কাজ তিনি সেদিনই হজ্ব থেকে ফিরে অফিস করতে এসেছেন । আমার সাথের লোকের হাতে আপনার মতো একটি খাম । পিয়ন এসে বলে গেল , এখোন যা এনেছেন তাতে কাজ হবেনা । স্যার হজ্ব থেকে এসেছেন । রেট বেশী দিতে হবে । শুনে আমিই লজ্জা পেলাম ।

ওয়েটিংরুমের পেপার দেখছি । সেই সরকারী ভদ্রলোকটি এলেন । মাথা কামানো, তাতে সৌদিদের মতো একখানা টুপি । হাতে তসবিহ । যার সাথে এসেছি তিনি এগিয়ে গেলেন । খাম খানা তার হাতে দিতেই হাজী সাহেব খেকিয়ে উঠলেন , "আহাম্মক , জানেন না আমি হজ্ব করে এসেছি ? হাতে দ্যান ক্যানো ? আগে যা বলে গেছি তাতে এখন হবেনা । পরে বাকীটা দিয়ে যাবেন ।" এই বলে উনি তার টেবিলের ড্রয়ারটি টেনে দেখিয়ে দিলেন খামটা এখানেই রাখতে হবে ।
আমি লজ্জায় নিজেই পেপারটি দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললাম ....

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮

পয়গম্বর বলেছেন: পেপার দিয়ে মুখ ঢাকলেতো চলবেনা আহমেদ ভাই। এখন এদেরকে প্রতিহত করার সময় এসেছে। যতই এতের সাথে নতজানু ভাব দেখাবেন, ততই এরা আপনাকে পেয়ে বসবে।

ইন্টারেস্টিংলি, বাংলাদেশের সরকারী দুর্নীতিবাজলোকগুলো কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে মাথায় দাগ ফেলে দিয়েছে। মুখে সবসময় নীতিকথার বাক্য তাদের। অথচ তাদের মতো দিনে দুপুরে বড় ডাকাত, বড় দুষ্কৃতিকারী দ্বিতীয়টি কি আছে?

১৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

শিরোনাম যথার্থ ৷ তবু আশা থাকে আগামীর পথে......

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০০

পয়গম্বর বলেছেন: আলাদিনের চেরাগ -এর একটা ব্যবস্থা করেন জাহাঙ্গীর ভাই। তারপর সেই দৈত্য দিয়ে যদি বাংলাদেশের দুর্নীতি দূর করতে পারেন। অবশ্য দৈত্য পেলে যে কেউ নিজের উন্নতির কথাই প্রথম চিন্তা করবে। ;)

১৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১১

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: পড়ে ভীষণ খারাপ লাগলো -- আসলে এটাই তো হচ্ছে ---আপনি শুধু তুলে ধরেছেন সত্যটা

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৭

পয়গম্বর বলেছেন: আপনার খারাপ লেগেছে, কিন্তু আপনার আশেপাশে যারা এসব করছে, তাদের কাছে এগুলোই স্বাভাবিক, কারণ তারা একটা 'সিস্টেমে'র ভেতরে আছে।

'নামাজ' এবং 'সিস্টেম' দুইটা ভিন্ন জিনিস তাদের কাছে। সরকারী দুর্নীতিবাজ আমলাদের অধিকাংশ 'আণ্ডার দ্য টেবিল' ইনকাম সবাই জানে, কিন্তু সেটা পত্রপত্রিকায় আসেনা।

দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বাংলাদেশের নির্লজ্জ বাংলাদেশি দুর্নীতবাজ কুকুরদের আল্লাহপাক হেদায়েত করুন। আমিন।

১৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৫

িনয়ামুল কারীম মানসুর বলেছেন: এরা ধর্মীয় পোষাকটাকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করছে । ইদানীং শুনেছি অনেক প্রফেশনাল ক্রিমিনালরাও নাকি হুজুর সাজতেছে ।এতে করে যারা প্রকৃত ধার্মিক, এদের কারণে সুন্নতী পোষাকের উপর থেকে ভক্তি উঠে যাচ্ছে ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৭

পয়গম্বর বলেছেন: সহমত।

১৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

দুঃখী রাজপুত্র বলেছেন: একটা ছিঁচকে চোর ধরতে পারলে আমরা তাদের এমন ধোলাই দেই যে সারাজীবন এই ধোলাইয়ের দাগ থাকে তার শরীরে।
অথচ,এই চোরগুলিকে ধোলাই দেয়ার কেউ নাই।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫০

পয়গম্বর বলেছেন: বড় চোরগুলো 'সিস্টেম'-এ চলে রে ভাই :)

১৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২২

সায়েদা সোহেলী বলেছেন: মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন , ধোলাই প্রয়োজন :|

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৪

পয়গম্বর বলেছেন: যারা মুখে দেশপ্রেম আর ইসলামের কথা বলে আর দুর্নীতি করে বেড়ায় তাদের বিবেকবোধ জাগ্রত না হলে কতক্ষণ ধোলাই -এর উপর তাদেরকে রাখবেন সোহেলী?

১৮| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

//”হ্যাঁ, আসেন। আমিও নামাজে যাই। আল্লাহু আকবার।” কাঁচা-পাকা দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়লেন কফিল সাহেব।//


-ভণ্ড! ঠিক এরাই ধর্ম সম্পর্কে নিরীহ মানুষগুলোর মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। ভণ্ড!

-মনসুরদের সংখ্যা আরও কমবে.... থাকবে শুধু কফিরেরা।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০৭

পয়গম্বর বলেছেন: মনসুর ভাইয়ের জন্যে আসলেই কষ্ট হয়। সৎ মানুষটার পরিবারে বাবা মা বউ বাচ্চা সবাই তার হালাল আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল। সত্যি কথা বলার অপরাধে তার চাকুরীটা চলে যাবার পর পুরো পরিবারটা চোখের সামনে পথে বসে পড়লো।

১৯| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৪

উপপাদ্য বলেছেন: থা হচ্ছে ট্রেনিং নিয়ে, আর আপনি এর মধ্যে ধর্ম-নামাজ -এইসব বলছেন? আল্লাহপাক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে বলেছেন। এটা আল্লাহর বিধান। কাজেই নামাজ, নামাজের জায়গায়।

পুরাই সেকুলার হুজুর।

মন্তব্য আসলেই নিষ্প্রয়োজন।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০২

পয়গম্বর বলেছেন: মজার ব্যাপার কি জানেন উপপাদ্য? অবিকল এই ডায়লগটাই আমি শুনেছিলাম সেই ব্যাক্তির থেকে যাকে নিয়েই এই সত্য ঘটনাটি লেখার একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার।

২০| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: বিদগ্ধ এবং শৈল্পিক ঘুষখোর!

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৪

পয়গম্বর বলেছেন: আরে হাসান ভাই যে! কেমন আছেন? :)

২১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৭

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: দিরাই গিয়েছিলাম কয়েকবার,ওই ট্র্রেইনিং এর কাজই,ট্রেইনিং রূমটার পাশে খুব সুন্দর একটা দীঘি আছে।

আর আপনি যেটা তুলে ধরলেন সেটা আমাদের ডিজি হেল্‌থ এর দৈনন্দিন কার্যকলাপ,সোনার বাংলা ঠকায় কে।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৬

পয়গম্বর বলেছেন: তাহলে আশা করি এ ধরণের অভিজ্ঞতা আপনারও আছে?! :)

২২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: *ঠেকায়

২৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২০

ওয়্যারউলফ বলেছেন: ভাই আমার অভিজ্ঞতাটা আর একটু সরেস। কাকরাইলে মোড়ে জনশক্তি,কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষন ব্যুরো নামে একটি আফিস আছে। যত লোক কাজ নিয়ে বিদেশে যায় তাদের কাছ থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে বিদেশে যেতে হয়। এর জন্য বহির্গমন পরিচালককে মাল পানি দিতে হয়। তো একদিন এক পরিচালক নিজ হাতে খামটা না নিয়ে তার পিয়নের হাতে দিতে বললেন। কারন কি ? কারন অতীব নেকি!!!!!!!
কাল তিনি হজ্বে যাচ্ছেন।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫৭

পয়গম্বর বলেছেন: ডিজি হেল্থ-এর দুর্নীতিবাজ 'Cheap Bastard' সরকারী আমলাগুলো 'টপ টু বটম' আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দুর্নীতি করে টাকা কামানোই তাদের লক্ষ্য্।

তাদেরকে ঘুষ দেওয়াটা এখন একটা অত্যাবশ্যকীয় নিয়ম। টাকা ছাড়া এইসব দুর্নীতিবাজ 'বেজন্মা'গুলো পশ্চাতদেশ নাড়াতে চায়না। আর নাড়ালেও সঠিক কাজটি না করে তারা ব্যস্ত থাকে কিভাবে সরকারী-বেসরকারী টাকা লুটপাট করে সরকারী 'সিল-স্বাক্ষর সংবলিত কাগজপত্র' রেডি করে কাগজপত্রের দিক দিয়ে নিজেকে 'সেইফ' রাখা যায়।

পাঠকের কাছে আমার প্রশ্ন, আমরা সবাই নিজেদের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরছি, সমস্য চিহ্নিত করছি। কিন্তু এর থেকে পরিত্রাণের কোন পথ বা এই দুর্নীতি প্রতিরোধক সমাধান কি আদৌ আছে?

২৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৩

আবু শাকিল বলেছেন: সমসাময়িক বাস্তব গল্প ।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৭

পয়গম্বর বলেছেন: ব্লগে সাথে থাকার জন্যে শাকিল ভাই কে ধন্যবাদ।

২৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪২

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। শিক্ষিত প্রতিষ্ঠিত মানুষ টাকার জন্য নিজেদের ব্যক্তিত্ব কত নিচে নামাতে পারে সেটা দেখার সবচাইতে আদর্শ জায়গা হচ্ছে সরকারী অফিস। করুণা হয় তাদের দেখলে :D

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৩

পয়গম্বর বলেছেন: "দুর্জন বিদ্যান হইলেও পরিত্যাজ্য"

২৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪২

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: ধুর এক ইমো দিতে আরেক ইমো দিয়ে ফেলছি, :( ইমো হবে

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৩৫

পয়গম্বর বলেছেন: ব্যাপার নাহ :)

২৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৮

অপেক্ষায় নাজির বলেছেন: নামটা বললেন না কেন ভাই? ওই হারামীর আবার সম্মান কি?

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৩

পয়গম্বর বলেছেন: মানী লোক বলে কথা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.