নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন হলো এক কাপ গরম চা আর একটি জ্বলন্ত সিগারেটের মতো। গরম চা এক সময় জুড়িয়ে যাবে, সিগারেটের তামাকও পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।

পয়গম্বর

The woods are lovely, dark and deep, But I have promises to keep, And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep.---Robert Frost

পয়গম্বর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রিপ টু লাস ভেগাস - হুভার ড্যাম ভ্রমণ

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

১৫ নভেম্বর, ২০১৬

ট্রিপ টু লাস ভেগাস - যাত্রা হলো শুরু
ট্রিপ টু লাস ভেগাস - পৃথিবীর আশ্চর্য গ্র্যাণ্ড ক্যানিয়ন দর্শন

ফ্লোরিডা থেকে গত ১২ নভেম্বর এসেছি আমেরিকার সিন সিটি খ্যাত লাস ভেগাস শহরে। আগে থেকেই ট্যুর প্ল্যানটা করা ছিল। কাজেই আজ বেশি দেরী না করে সকাল ১০টার দিকে ম্যাকডোনাল্ডস থেকে ব্রেকফাস্ট সেরে গাড়ি নিয়ে সবাই রওনা দিলাম হুভার ড্যামের উদ্দেশ্যে। চমৎকার একটা ওয়েদার। গাড়ি চলছে পাহাড়ী উঁচুনিচু রাস্তায়।








যাবার পথে আমাদের প্রিয় সিরাজ মামা বললেন, প্রথমে আমরা ইনফরমেশন সেন্টার-এ গেলে কেমন হয়? সবাই এক বাক্যে রাজী হয়ে গেলাম।





ইনফরমেশন সেন্টারের হাস্যময়ী নারী কর্মকর্তার থেকে আমরা আশেপাশের দর্শনীয় এলাকাগুলো সম্পর্কে একটু জেনে নিলাম। এরপর রওনা দিলাম প্রথমে পুরনো বোল্ডার সিটি দেখার উদ্দেশ্যে। একেবারে কাছেই পাহাড়ের ওপরের এই পুরনো সিটিটা গাড়ি নিয়েই ঘুরে দেখলাম। এরপর রওনা দিলাম পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হুভার ড্যাম দেখার উদ্দেশ্যে।











হুভার ড্যামের ইতিহাস ছোট করে একটু বলে নেই:
বিশ শতকের শুরুতে the U.S. Bureau of Reclamation কলোরাডো নদীতে বিশালাকৃতির বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি প্রকল্পের একটি প্ল্যান তৈরি করে। এই প্রকল্পটি অ্যারিজোনা-নেভাদা বর্ডারে তৈরি করা হয় যা দক্ষিণ পশ্চিম আমেরিকার বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে সক্ষম। এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধটিই ’হুভার ড্যাম’ নামে বিশ্বখ্যাত। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই বাঁধ তৈরিতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ ছিল। যেমন: বাঁধ নির্মাণকারী শ্রমিকদেরকে নির্মাণকালীন সময়ে কার্বন মনোক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসের টানেলে প্রবেশ করতে হয়েছে। সময়টা ১৯৩৫ সাল এবং তৈরি হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুত বাঁধ। আমেরিকান জাতির ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক যার মাধ্যমে Lake Mead -এ যথেষ্ট পরিমাণ পানি ধরে রেখে ২ মিলিয়ন একর জমিতে চাষাবাদ করাটাও সহজতর হলো। সর্বোপরি এটি হলো পর্যটকদের জন্যে একটি দর্শনীয় স্থান।











'হুভার ড্যাম'-এর নামকরণ:
লাস ভেগাস শহর থেকে ৩০ মাইল দক্ষিণ পূর্বে হুভার ড্যাম অবস্থিত। এটি তৈরি করতে পাঁচ বছর সময় লেগেছিল। এই বাঁধ তৈরির পেছনে অন্যতম কারণ ছিল কলোরাডো নদীর বন্যা প্রতিরোধ এবং ক্যালিফোর্নিয়াসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো।

’হুভার ড্যাম’ নামের একটি চমকপ্রদ ইতিহাস রয়েছে। এই ড্যাম বা বাঁধ তৈরির শুরুতে এটি 'বোল্ডার ড্যাম প্রজেক্ট' নামে পরিচিতি পায়। কিন্তু ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩০ সালে নেভাদা’র এক অনুষ্ঠানে ইউ.এস সেক্রেটারি অব ইন্টেরিয়র Ray Lyman Wilbur ঘোষণা করেন যে, এই ড্যামের নাম করণ করা হবে President Herbert Hoover -এর নামে। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, রিপাবলিকানপন্থী প্রেসিডেন্ট হুভার আমেরিকার ৩১ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৯২৯ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন ছিলেন।











পরবর্তীতে ডেমোক্রেটিকপন্থী Franklin D. Roosevelt ৩২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকার ক্ষমতা লাভ করেন এবং তাঁর সেক্রেটারি অব ইন্টেরিয়র Harold Ickes হুভার ড্যামের নাম পরিবর্তন করে পুনরায় 'বোল্ডার ড্যাম' রাখেন। কেননা আমেরিকার ইতিহাসে গ্রেট ডিপ্রেশনের জন্যে President Herbert Hoover -কে দায়ী করা হয় এবং Harold Ickes সহ বিপুল সংখ্যার আমেরিকানদের কাছে তিনি আস্থা হারান। কিন্তু পরবর্তীতে এই ড্যামটি হুভার ড্যাম এবং বোল্ডার ড্যাম দুই নামেই পরিচিতি লাভ করে। প্রখ্যাত লেখক Michael Hiltzik লিখিত “Colossus: Hoover Dam and the Making of the American Century” বইটি থেকে আমরা জানতে পারি যে, সর্বশেষ ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে ডেমোক্রেটিক পন্থী President Harry Truman (যিনি জাপানে এটোমিক বোমা ফেলার জন্যে বিখ্যাত) এই ড্যামকে 'হুভার ড্যাম' নামে ঘোষণা করেন।











হুভার ড্যাম নিয়ে আরও তথ্য:
১. ১৯৩০ সালের শুরুতে নেভাদা রাজ্যের বর্তমান হুভার ড্যামের কাছে পুরো একটা আস্ত শহর তৈরি করা হয় এই হুভার ড্যাম তৈরির উদ্দেশ্যে। এই প্রজেক্ট -এ যারা কাজ করেছিলেন তাদের জন্যে ৫০০০ বাড়ি তৈরি করে সরকার।
২. এই ড্যামটি প্রায় ২৪৮ স্কয়ার মাইল জুড়ে বিস্তৃতি এবং এটি ২৮.৯ মিলিয়ন একর ফিট পানি ধারণে সক্ষম। এই ড্যাম তৈরির সময় Lake Mead - এর সৃষ্টি হয় যার ফলে নেভাদা রাজ্যের সেন্ট থমাস এলাকা বন্যা প্লাবিত হয়ে ভূতুড়ে শহরে পরিণত হয়। বর্তমানে বোটিং, ফিশিং এবং সাঁতারের জন্যে লেক মিড অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি জায়গা।
৩. ছয়টি কোম্পানীর একুশ হাজার শ্রমিক মিলে ৪৮.৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি করা হয় বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র হুভার ড্যাম।
৪. পাথর সরিয়ে এই ড্যামটি নির্মাণকাজ আসলেই কঠিন এবং কষ্টসাধ্য ছিল। হুভার ড্যাম ৭২৬.৪ ফিট উচ্চতা বিশিষ্ট। ১৯৩০ এর সময়ে এটি ছিল বিশ্বের উচ্চতম বাঁধ। ১৯৬৮ সালের দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত ৭৭০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট Oroville Dam পৃথিবীর উচ্চতম বাঁধ এবং তারপরেই হুভার ড্যামের অবস্থান ছিল। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত Jinping-I Dam, যেটি চায়নাতে অবস্থিত, বিশ্বের উচ্চতম ড্যামের খেতাব পায়। এটি ১০০১ ফুট উচ্চতার।
৫. ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত হুভার ড্যাম ছিল আমেরিকার বৃহত্তম হাইড্রোইলেকট্রিক স্টেশন। বর্তমানে এটি বছরে প্রায় ৪ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম যা নেভাদা, অ্যারিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার আবাসিক স্থান এবং ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
৬. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বোমা মেরে হুভার ড্যাম উড়িয়ে দেয়া ছিল জার্মানীদের লক্ষ্য।







পড়ন্ত বিকেলে রওনা দিলাম লাস ভেগাসের উদ্দেশ্যে:




শেষ করার আগে আপনাদের জন্যে আমার নিজের করা কয়েকটি ভিডিও:



সূত্র:
http://www.history.com/news/history-lists/7-things-you-might-not-know-about-the-hoover-dam
http://www.history.com/topics/hoover-dam

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৮

Baba Fahim বলেছেন: লেখক ভাই অাপনি কানাডায় কি করেন....?( I mean I want to know what is your job position...?

২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:০৯

ভণ্ড বাবা বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.