নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মত আমি

আসুক যত ঝড় বিপতি বাধা.... উননত করি শির ,নোয়াবোনা মাথা

মাহামুদ রোমেল

মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি তোমাদেরি লোক আর কিছু নয় এই হোক শেষ পরিচয়

মাহামুদ রোমেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি পাখি পোষার অতৃপ্ত বাসনা

০১ লা মে, ২০১৩ বিকাল ৫:১৩

ছোটবেলায় একটা পাখি পোষার ভীষন সখ ছিল আমার। এই পাড়া থেকে ওই পাড়া, এই গাছ থেকে ওই গাছ, পুকুর পাড়ের জঙ্গল, বাঁশবন এসবে চষে বেড়াতাম সারাদিন পাখির খোঁজে। কোন কোন দিন হয়তো সফল হোতাম। পেয়ে যেতাম দু-একটা। কি যে খুশি লাগতো তখন। দাদীর ঘর থেকে চুরি করে এনে চাল ভাঙ্গা খাওয়াতাম, জল খাওয়াতাম, বুকে জড়িয়ে আদর করতাম, চুমু খেতাম। সারাদিন ঘুরে বেড়াতাম এদের নিয়ে। দিনশেষে আবার আকাশে উড়িয়ে দিতাম পাখিগুলোকে। তখন মনটা খুব খারাপ হতো। ধরে রাখতে ইচ্ছা করতো ভীষন। কিন্তু পারতাম না। কারন আমার কোন খাঁচা ছিলো না। একটা খাঁচার জন্য মনটা ছটপট করতো। কিন্তু খাঁচা কেনার সামর্থ আমার ছিল না। বৈশাখী মেলায় খাঁচার স্টলের সামনে গিয়ে তাকিয়ে থাকতাম। কতো রঙ বেরঙের খাঁচা উঠতো সেখানে। খুব ইচ্ছা হতো, একটা কিনে ফেলি। কিন্তু খাচাঁর দাম আমার পকেটে থাকতো না। বাবাকে ভয় পেতাম খুব। তাই কখনো আবদার করার সাহস হয়নি। আর পাখি পোষার সখও পুরন হয়নি কখনো আমার।



একদিন বাড়ির পেছনে ডুমুর গাছটায় একটা টুনটুনির বাসা আবিষ্কার করলাম। খুব সুন্দর একটি বাসা। বাসায় দুটো ডিম। মা টুনটুনি ডিমে ওম দিত। আমি আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখতাম। প্রতিদিন কয়েকবার করে দেখে যেতাম। একদিন ডিম ফুটে বাচ্চা বেরুলো। ফুটফুটে দুটি বাচ্চা । মা খাবারের সন্ধানে গেলে আমি তাদের কাছে যেতাম। খাবার দিতাম। হাতে নিয়ে আদর করতাম। কি তুলতুলে শরীর, নরম ঠোঁট। মনটাই জুড়িয়ে যেত। আমার প্রতিদিনের রুটিনে স্কুল, টিচার, খেলাধুলা এসবের সাথে টুনটুনির ছানা দুটিও যোগ হলো। দিনগুলো ভালোই কাটতে লাগলো।



একরাতে প্রচন্ড ঝড় হলো। ঝড়ে আমাদের নড়বড়ে চালাটি উড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। মা আমাদের ভাইবোনদের জড়িয়ে ধরে ঘরের এক কোনায় বসে দোয়া পড়তে লাগলেন। আর আমি অজানা কোন এক ভয়ে মায়ের আঁচলে মুখ লুকিয়ে রাখলাম। ঝড় থামলো সকালে। বাহিরে ঝড়ের তান্ডবচিহ্ন। গাছের ডালপাতা সব ছড়িয়ে আছে এলোমেলো। আমি দৌড়ে বাড়ির পেছনের দিকটায় গেলাম। নাহ, কিছুই অবশিষ্ট নাই। পাখি গুলো চলে গেছে কোথাও যেন। ভাঙ্গা বাসাটা পড়ে আছে দূরে। আমার খুব কান্না এলো। মনের মধ্যে আরেক ঝড় শুরু হলো।আমি ভাঙ্গা বাসাটার কাছে গিয়ে বসলাম কিছুক্ষন। তারপর বাসাটা আবার গাছের সাথে বেঁধে দিলাম। ভাবলাম হয়তো পাখিগুলো আবার ফিরে আসবে। আবার এখানে ঘর বাঁধবে। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়। আমি অপেক্ষায় থাকি। কিন্তু পাখিরা আর ফিরে আসে না। ফিরে আসে নি আর কখনো।



ছোটবেলার আবেগ হয়তো ঝরে গেছে অনেক আগেই। পাখি পোষার সখও কখন যে মিশে গেছে জীবনের স্রোতে।



এখন আমি বড় হয়েছি। পাখি পোষার নতুন সখ হয়েছে আমার। হয়তো পাখির সজ্ঞাও পরিবর্তন হয়েছে আমার জীবনে। এই পাখি বড় মায়াবী, মায়াকাড়া তার চোখের চাহনি । সারাক্ষন ডানা ঝাপ্টায় এসে মনের চিলেকোঠায়। জড়িয়ে রাখে মন কেমন এক অদ্ভুত মায়ায়। আমি পাখিকে ধরি, দিনশেষে আবার উড়িয়ে দিই। তখনো মন খুব খারাপ হয় আমার। কিন্তু কি আর করা, ছোট বেলার অভাব যে এখনো কাটেনি আমার।



পাখি উড়ে বেড়ায়। তার যে বিশাল আকাশ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪

আকরাম বলেছেন: আমারও পাখী পোষার সখ ছিলো।
একবার একটা টিয়া পোষছিলাম, বেশ কিছু দিন পর গলায় সুন্দর মালাও এলো। সুন্দর শীষ দিত। খুবই ভালো ছিল পাখীটা, ওর পায়ে চিকন চেইন দিয়ে বেধে রাখতাম।

একদিন সকালে দেখি আমার সেই সখের টিয়া পাখী নিজের পা নিজেই কেটে চলে গেছে। চেইনের সাথে কাটা পা পড়ে ছিলো, আর সে চলে গেছে কোন এক অজানা গন্তব্যে! বনের পাখী বনেই চলে গেছে হয়তো!
তারপরই প্রতিজ্ঞা করলাম, আর কক্ষনো পাখী পুষবো না।
বন্যরা বনেই সুন্দর।

০১ লা মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

মাহামুদ রোমেল বলেছেন: হুম.....ঠিকই বলেছেন..........বন্যরা বনেই সুন্দর।

আবার কখনো কখনো আমাদের মনেও পাখি বাসা বাঁধে। সেই পাখিটা আবার মনেই সুন্দর। হয়তোবা আমাদের পাশেও।

২| ০১ লা মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১০

আকরাম বলেছেন: হ্যা,মনে যদি কোন পাখী বাসা বাধে্ঁ ; তাহলে কথা আলাদা।

৩| ০১ লা মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

কালোপরী বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.