নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মত আমি

আসুক যত ঝড় বিপতি বাধা.... উননত করি শির ,নোয়াবোনা মাথা

মাহামুদ রোমেল

মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি তোমাদেরি লোক আর কিছু নয় এই হোক শেষ পরিচয়

মাহামুদ রোমেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি গৌরবহীন বৈধ নির্বাচন

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১০

--আতিক মাহামুদ রোমেল



এমন দৃশ্য যেন অচেনা। ভোটারের দীর্ঘ সারি নেই, নেতাকর্মীদের দৌঁড়ঝাপ নেই, চায়ের কাপে ঝড় নেই, রাস্তায় কিংবা পাড়া মহল্লায় নেই উৎসবের আমেজ। যা আছে তা হচ্ছে উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠা, আছে চাপা আতঙ্ক। এর মধ্যেই নির্বাচন হচ্ছে। যেনতেন নির্বাচন নয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন।

টিভিতে সংবাদ দেখছি। রিপোর্টার একটি কেন্দ্রের সচিত্র প্রতিবেদন দেখাচ্ছেন। রাজধানী মিরপুরের কোন একটি ভোটকেন্দ্র। ততক্ষনে ভোট পড়েছে মাত্র তিনটি। ঘড়িতে সকাল সাড়ে দশটা। প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আশা, বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। বাহিরে তখন হালকা কুয়াশা। কনকনে শীত। শহুরে সকাল জেগে উঠেনি তখনো।

প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আশা বিফলে যায়নি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বেড়েছে। তবে কতটুকু বেড়েছে, তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্ননা করি-

নবাবপুর হাইস্কুল ঢাকা-৬(সুত্রাপুর-গেন্ডারিয়া) আসনের অন্তর্ভুক্ত একটি কেন্দ্র। যেখানে মোট ভোটার সংখ্যা আড়াইহাজারের কিছু বেশি। বেলা ২টার পর সেখানে গিয়ে জনা পঞ্চাশেক ভোটারের উপস্থিতি দেখা যায়। লাইনের কোন বালাই নেই। বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তারা। কেউ ভোট দিয়েছে, কেউ দিতে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তখন পর্যন্ত শ’পাঁচেক ভোট কাষ্ট হয়েছে। তবে কোন অনিয়ম কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ পাওয়া যায়নি সেখানে।

আশেপাশের আরো কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে মোটামুটি একই চিত্র দেখা যায়। সেখানকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে এসেছেন তারা। নির্ভীগ্নে ভোট দিয়েছেন, কোন সমস্যা হয়নি। তবে নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মধ্যে।

তবে কিছুটা ভিন্ন স্বাধও পাওয়া গেছে। নারিন্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। একজন এসে বল্লো ভোট দেবেন নাকি? বললাম, দেওয়া যাবে? সে এক প্রার্থীর নির্বাচনী বুথে নিয়ে গেল। ভোটার নাম্বার সহ একটি স্লিপ হাতে ধরিয়ে দিল। বললাম, ভেতরে সমস্যা হবে না? সমস্যা হলে দেখবে বলে আশ্বস্থ করে নিজেই এগিয়ে দিতে চাইলো। ফ্রি দেব? বলতেই লোকটা মুখ ভার করলো। পরিচয় জানার পর সে তো মহা বিব্রত। কাছুমাছু করে ব্যাস্ততা দেখিয়ে পালালো।

রাস্তাঘাট ফাঁকা। গনপরিবহন সব বন্ধ। ঢাকার এমন ফাঁকা রাজপথ মিডিয়া কর্মীদের জন্য প্রাইম খবর। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি আলাদা। কারন আজ ভোট। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকবে যেন এটাই স্বাভাবিক। তবে ঢাকা শহরে রাস্তা ফাঁকা থাকার একটা সুবিধা আছে। গুপ্ত প্রতিভা’রা সব রাজপথে নেমে আসে। ব্যাট বল হাতে প্রতিভা বিকাশের আকাঙ্খায় চলে সাধনা। সাকিব তামিমের উত্তরসূরী হওয়ার অদম্য বাসনা নিয়ে প্রতিভা’রা সব রাজপথ মাতিয়ে রাখে। আজ অবশ্য এমন দৃশ্যও খূব একটা চোখে পড়েনি।

বিরোধী দলের বর্জন এবং প্রতিহতের ঘোষণার মধ্যে গুরুত্ব হারানো অর্ধ নির্বাচন বড় ধরনের কোন সহিংসতা ছাড়াই অবশেষে শেষ হয়েছে। তবে মুল্যও কম দিতে হয়নি। দেশব্যাপী সহিংসতায় ১৩জন প্রান হারিয়েছে আজ। প্রতিহতের নামে বিএনপি-জামায়াত শতাধিক স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিপন্ন করেছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত। বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী সরঞ্জাম পুড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারিদের উপর হামলা করেছে। তাদের কয়েকজনকে হত্যাও করেছে। ভোটারদের ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়েছে। এছাড়া নির্বাচন এবং যুদ্ধাপরাধ বিচারকে কেন্দ্র করে গত কয়েকসপ্তাহের তান্ডবে শতাধিক মানুষকে হত্যা ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন ব্যাবস্থা পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিবর্তিত ব্যাবস্থায়ই হচ্ছে নির্বাচন। ক্ষমতাসীন দলসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহন করছে। প্রধান বিরোধীদলসহ কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহন করা না করা সংবিধানের বাধ্যবাধকতা নয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে। এখানে নির্বাচন যেমন গনতান্ত্রিক, নির্বাচনে অংশগ্রহন কিংবা বর্জনও গনতান্ত্রিক। কিন্তু অগনতান্ত্রিক সেটাই যখন সাংবিধানিক নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয় এবং সহিংসতা চালিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপন্ন করা হয়।

এতসব সত্ত্বেও নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জয়লাভ করতে যাচ্ছে। কিন্তু সত্যিই কি তারা জয়ী হবে? এই জয়ে গর্ব করার মত কিছু আছে? এই জয় তারা উদযাপন করতে পারবে? এই নৈতিক অবস্থান কি আছে তাদের মধ্যে? আমি তাদের চোখে লজ্জা দেখেছি। আমি দেখেছি তাদের আতঙ্কিত সব মুখ। এর অবসান চায় সবাই। আর কতো?

এমন দৃশ্য যেন অচেনা। ভোটারের দীর্ঘ সারি নেই, নেতাকর্মীদের দৌঁড়ঝাপ নেই, চায়ের কাপে ঝড় নেই, রাস্তায় কিংবা পাড়া মহল্লায় নেই উৎসবের আমেজ। যা আছে তা হচ্ছে উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠা, আছে চাপা আতঙ্ক। এর মধ্যেই নির্বাচন হচ্ছে। যেনতেন নির্বাচন নয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন।

টিভিতে সংবাদ দেখছি। রিপোর্টার একটি কেন্দ্রের সচিত্র প্রতিবেদন দেখাচ্ছেন। রাজধানী মিরপুরের কোন একটি ভোটকেন্দ্র। ততক্ষনে ভোট পড়েছে মাত্র তিনটি। ঘড়িতে সকাল সাড়ে দশটা। প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আশা, বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। বাহিরে তখন হালকা কুয়াশা। কনকনে শীত। শহুরে সকাল জেগে উঠেনি তখনো।

প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আশা বিফলে যায়নি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বেড়েছে। তবে কতটুকু বেড়েছে, তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্ননা করি-

নবাবপুর হাইস্কুল ঢাকা-৬(সুত্রাপুর-গেন্ডারিয়া) আসনের অন্তর্ভুক্ত একটি কেন্দ্র। যেখানে মোট ভোটার সংখ্যা আড়াইহাজারের কিছু বেশি। বেলা ২টার পর সেখানে গিয়ে জনা পঞ্চাশেক ভোটারের উপস্থিতি দেখা যায়। লাইনের কোন বালাই নেই। বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তারা। কেউ ভোট দিয়েছে, কেউ দিতে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তখন পর্যন্ত শ’পাঁচেক ভোট কাষ্ট হয়েছে। তবে কোন অনিয়ম কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ পাওয়া যায়নি সেখানে।

আশেপাশের আরো কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে মোটামুটি একই চিত্র দেখা যায়। সেখানকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে এসেছেন তারা। নির্ভীগ্নে ভোট দিয়েছেন, কোন সমস্যা হয়নি। তবে নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মধ্যে।

তবে কিছুটা ভিন্ন স্বাধও পাওয়া গেছে। নারিন্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। একজন এসে বল্লো ভোট দেবেন নাকি? বললাম, দেওয়া যাবে? সে এক প্রার্থীর নির্বাচনী বুথে নিয়ে গেল। ভোটার নাম্বার সহ একটি স্লিপ হাতে ধরিয়ে দিল। বললাম, ভেতরে সমস্যা হবে না? সমস্যা হলে দেখবে বলে আশ্বস্থ করে নিজেই এগিয়ে দিতে চাইলো। ফ্রি দেব? বলতেই লোকটা মুখ ভার করলো। পরিচয় জানার পর সে তো মহা বিব্রত। কাছুমাছু করে ব্যাস্ততা দেখিয়ে পালালো।

রাস্তাঘাট ফাঁকা। গনপরিবহন সব বন্ধ। ঢাকার এমন ফাঁকা রাজপথ মিডিয়া কর্মীদের জন্য প্রাইম খবর। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি আলাদা। কারন আজ ভোট। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকবে যেন এটাই স্বাভাবিক। তবে ঢাকা শহরে রাস্তা ফাঁকা থাকার একটা সুবিধা আছে। গুপ্ত প্রতিভা’রা সব রাজপথে নেমে আসে। ব্যাট বল হাতে প্রতিভা বিকাশের আকাঙ্খায় চলে সাধনা। সাকিব তামিমের উত্তরসূরী হওয়ার অদম্য বাসনা নিয়ে প্রতিভা’রা সব রাজপথ মাতিয়ে রাখে। আজ অবশ্য এমন দৃশ্যও খূব একটা চোখে পড়েনি।

বিরোধী দলের বর্জন এবং প্রতিহতের ঘোষণার মধ্যে গুরুত্ব হারানো অর্ধ নির্বাচন বড় ধরনের কোন সহিংসতা ছাড়াই অবশেষে শেষ হয়েছে। তবে মুল্যও কম দিতে হয়নি। দেশব্যাপী সহিংসতায় ১৩জন প্রান হারিয়েছে আজ। প্রতিহতের নামে বিএনপি-জামায়াত শতাধিক স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিপন্ন করেছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত। বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী সরঞ্জাম পুড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারিদের উপর হামলা করেছে। তাদের কয়েকজনকে হত্যাও করেছে। ভোটারদের ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়েছে। এছাড়া নির্বাচন এবং যুদ্ধাপরাধ বিচারকে কেন্দ্র করে গত কয়েকসপ্তাহের তান্ডবে শতাধিক মানুষকে হত্যা ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন ব্যাবস্থা পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিবর্তিত ব্যাবস্থায়ই হচ্ছে নির্বাচন। ক্ষমতাসীন দলসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহন করছে। প্রধান বিরোধীদলসহ কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহন করা না করা সংবিধানের বাধ্যবাধকতা নয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে। এখানে নির্বাচন যেমন গনতান্ত্রিক, নির্বাচনে অংশগ্রহন কিংবা বর্জনও গনতান্ত্রিক। কিন্তু অগনতান্ত্রিক সেটাই যখন সাংবিধানিক নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয় এবং সহিংসতা চালিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপন্ন করা হয়।

এতসব সত্ত্বেও নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জয়লাভ করতে যাচ্ছে। কিন্তু সত্যিই কি তারা জয়ী হবে? এই জয়ে গর্ব করার মত কিছু আছে? এই জয় তারা উদযাপন করতে পারবে? এই নৈতিক অবস্থান কি আছে তাদের মধ্যে? আমি তাদের চোখে লজ্জা দেখেছি। আমি দেখেছি তাদের আতঙ্কিত সব মুখ। এর অবসান চায় সবাই। আর কতো?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.