নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্প--কুহেলিকা

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৫

কুহেলিকা

এই মনটা তোমাকে দিব বলেই তো তৈরী করেছি। যা কিছু উচ্ছিষ্ট ছিল এ মনে সব দূরে সরিয়ে দিয়েছি। যা কিছু ছিল জঞ্জাল-আবর্জনা সব দু’হাতে উপড়ে ফেলেছি। এরপরও বলো, তুমি কেন আমার হবেনা ? তোমাকে একলার করে পাবার জন্যই তো আমার এই আয়োজন। নিজকে সম্পূর্ণ একলা করে শুধু মন নিয়ে বসে আছি তোমাকে দিব বলে। তোমার অধিকারে নিজকে সমর্পণ করার এরচেয়ে ভালো কোন আয়োজন আমার জানা নেই।

তুমি রাগ করোনা বন্ধু। আমার এই সীমাবদ্ধতা তোমার প্রতি আমার অনুরাগের সীমাবদ্ধতা নয়। তুমি আমার মনে যতটুকু আছো, তা অসীম এক শূন্যতাকে ভরিয়ে দিতে পারে অবলীলায়। তাই তো বাঁধাহীন আকাশে মনের পাখা মেলে উড়তে আমি শুধু তোমাকেই দেখি।

তুমি ভেবোনা তোমাকে এভাবে দেখেই আমি পরিতৃপ্ত কিংবা মনের কল্পজগতে তোমাকে নিয়ে এভাবে ভেবে ভেবে আমি পূর্ণ। না; অত অল্পতে তৃপ্ত হবার মানুষ আমি নই। তাই তো মনের প্রাঙ্গণের বাইরেও তোমাকে খুঁজি বারবার। তোমাকে পেতে চাই আমার সত্তায়, আমার অস্তিত্বে।

আচ্ছা, তুমিই বলো, এটা কি আমার অতিরিক্ত চাওয়া ? কেউ কেউ বলে এটা আমার মিছে আশা, মরীচিকার মতো একদিন উড়ে যাবে। কিন্তু আমি এসব মানব কেন বলো ? আমি তো তোমাকে চিনেছি আজ নতুন নয়। সেই যে শৈশবে হাত ধরাধরি করে দু’জনে ছুটে বেড়াতাম দিগন্তজুড়ে, সেই থেকে আসাদের এই বন্ধন।

কিন্তু আমার চারপাশে যারা আছে তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা এটা। তাই তো দেখো, তোমার থেকে আমাকে দূরে রাখার জন্য তাদের কত উদগ্রীব প্রচেষ্টা। সেই যে তুমি বলেছিলে না, মনে মনে মিলন হলেও একটা তৃতীয় মন যেন এদের মাঝখানে থেকেই যায় - যে সব সময় সবকিছুতে বাঁধা দেয়।

আমারও আজ হয়েছে সেই দশা। তুমি মানো কি না জানিনা, আমি কিন্তু আমাদের দুই মনের মাঝখানে সেই তৃতীয় মনের অস্তিত্ব একটু একটু করে টের পেতে শুরু করেছি। তোমার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণা আমার এই মনটাকে সম্পূর্ণভাবে অধিকার করে নেয়ার আগে তাই আমি চাই তুমি চলে এসো আমার কাছে। এরপর আর কিসের বাঁধা আমাদের মাঝে ? কিসের তৃতীয় মন ? তুমি-আমি এক হয়ে যাব যখন।

কিন্তু এক হওয়া হয়না রুচিতার। রাতের গভীর নির্জনে একাকি বারান্দায় বসে মনে মনে এভাবেই প্রতিদিন কথা বলে রুচিতা বিপুলের সাথে। তার ছোটবেলার ভালো লাগার বিপুল। মনের গভীরে ক্ষত সৃষ্টি করা বিপুল। যে ক্ষত বয়ে বেড়াতে বেড়াতে আজ চারপাশে নিঃসঙ্গতার একটি দুর্ভেদ্য প্রাচীর তৈরী করে ফেলেছে রুচিতা। যে প্রাচীরে বন্দী থাকতে থাকতে ক্রমশঃ একটা নির্জন প্রকোষ্টে নিজকে আটকে ফেলেছে সে। সেখানে সে শুধু একা নয়। সেখানে তার সঙ্গী এসব সাজানো কথামাল।

মনে মনে কথার গাঁথুনিতে বিপুলকে এভাবেই নিজের মধ্যে ধরে রেখেছে রুচিতা। যখনই মন চায় বিপুলের সাথে এভাবে কথা বলে সে। কিন্তু প্রতিদিন ভোরের আলোতে রুচিতার সম্মোহনী ভাবাবেগ কেটে যেতেই সে দেখে নিজের চারপাশে এতদিন ধরে বিপুলকে নিয়ে সে যা সাজিয়েছে তা কেবলই কুহেলিকা ! কোথাও নেই বিপুল। আর আসবেওনা কোনদিন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

নীল লোহীত বলেছেন: ভালো লাগলো।

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫০

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: এমন মন খারাপ করা গল্প লেখেন ক্যান।
:( :( :(



পোষ্টে +++




লিখে যান নিরন্তন...

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫১

সুফিয়া বলেছেন: গল্প তো গল্পই। কোনটায় মনে খুশী লাগবে, কোনটায় মন খারাপ হবে।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪৪

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: শৈশবের ভালো লাগাটা রুচিতার মনে বিরাট একটা দাগ কেটে রয়েছে মনে হয়। নিজের অজান্তেই হয়তো দাগটা সে লালন করে আসছে। তাই পরিণত বয়সেও সেটা মুছে যায়নি। বরং তার মধ্যে এক ধরণের ঘোর সৃষ্টি হয়েছে। বিপুলকে নিয়ে একটা নিজস্ব জগৎ। যেখানে অন্য কারো ঠাই নাই।

এটাকে অণুগল্প না লিখে গল্প লিখা উচিৎ সুফিয়া। অণুগল্পের বৈশিষ্ট্যের সাথে ঠিক মিলে নাই।

আমার মনে হয় অনুগল্প এক বা দুই প্যারায় হলে ভাল ৷ আর সার্থক শব্দ নির্বাচন কিন্তু বৃহৎ বাক্য অনেকাংশে ছোট করে দেয় ৷ ছোট গল্পের প্লটই এ গল্পের বিবেচ্য ৷ অনুগল্প হিসেবে আকৃতি কিঞ্চিৎ দীর্ঘ হয়েছে আরো নাতিদীর্ঘ হলে পাঠক কিছু প্রশ্নোত্তর খুঁজতে বারবার গল্পটি পড়তে বাধ্য হত নিশ্চয় ৷ বাক্য গঠনে আরেকটু যত্নবান হলে ভাল হত অনেক সময় যথার্থ শব্দ ব্যবহারে বাক্যের রূপান্তর ঘটে পাঠক মনে ৷ যাই হোক চূড়ান্ত বিচারক কিন্তু লেখক নিজেই ৷ কলম বা কাঁচির মালিক আপনার চিন্তাশক্তি ৷

অনুগল্প প্রসঙ্গে জনাব শাহরিয়ার সোহেল তার প্রবন্ধে বেশ সুন্দর বলেছেন। সেখান থেকে কিছু অংশ তুলে ধরছি। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।

“অনুগল্পে আসলে অনুভবের বিষয়টি থাকে প্রকটতরভাবে। ঠিক কবিতা নয়, আবার ঠিক ছোটগল্পও নয়; এর মাঝামাঝি অনুগল্পের অবস্থান। অনুগল্প মূলত ফোরডাইমেনশন বা চতুর্মাত্রিক। সব দিক থেকেই যার বিশ্লেষণ করা সম্ভব। একটি লাইনের অর্থ বহুভাবে বিশ্লেষিত হবে, তবে অপ্রাসঙ্গিক বা শৃঙ্খলহীনভাবে নয়।অদৃশ্য সুতার বাঁধনি থাকবে অবশ্যই। ছোটগল্প যদি নৃত্য হয়, অনুগল্প হবে একটি সার্থক ভাবমুদ্রা। তবে সেই ভাবমুদ্রা থেকে নৃত্যের পুরোটুকুই আস্বাদন করাসম্ভব হবে। ছোটগল্প সমাজের কথারূপ ব্লু-প্রিন্ট, অনুগল্প সম্ভাবিত সমাজের কথাকলি নির্দেশ। অনুগল্প কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, সুনিয়োজিত ঘটিতের ওপরএক সারি অর্থবহ শব্দের টেরাকোটা নির্মিতি।
অনুগল্পের বলার প্রয়াসটি বিদ্যুৎ চমকের মতন; যা এক মুহূর্তে সমস্ত আকাশ চিনিয়ে দেয়, দেখিয়ে দেয় এবং যা শুধু অবাকই করে না, মোহিত করে। সে আসেসংক্ষিপ্ত অবয়বে পূর্ণতার ব্যাপ্তি নিয়ে। যেন কচুপাতার ওপর টলমলে শিশিরে সমস্ত আকাশ। a neat critical wisdom is must there. একটি পূর্ণ বিজ্ঞতার ছাপঅবশ্যই অনুগল্পে থাকবে। অনুগল্পের ভাষা হবে অবশ্যই সংক্ষিপ্ত ও ঘনত্বসমৃদ্ধ। অনুগল্পে লিখতে হলে চাই সমূহ ভাষা, ভোরের ভাষা; যা সমস্ত দিনকেইআলোকপাত করে। কবিতার মতো ব্যক্তিক ভাষা বা সন্ধ্যা ভাষা নয়। যদি বলা হয়, কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল যে, সে আগে মরে নাই। এটাই কিন্তু সমূহ ভাষারউদাহরণ।
অনুগল্প পিকাসোর গোয়ের্নিকা বা মাতিসের আকাশের মতো বৃহৎ; তবে অনুগল্প ব্যঞ্জিত করে না, ব্যক্ত করে।
অনুগল্পের শব্দকে অবশ্যই প্রতীকী হতে হবে। প্রতিটি শব্দ থেকে মূর্ছিত হবে অসংখ্য গুঞ্জন, যেমন : গঙ্গা শব্দটি অনুগল্পে ব্যবহৃত হলে, এর অর্থ অনেক প্রকারহতে পারে। এটি হতে পারে লৌকিক নদী, পবিত্র তরল পদার্থ, একজন দেবী বা অসংখ্য myth-এর ধারক। পাঠকই খুঁজে নেবেন কিভাবে শব্দটি লেখক ব্যবহারকরেছেন।
অনুগল্পের দর্শন ব্যাপক, ভয়াল, খণ্ডিত চিত্রকল্প। অনুগল্পে সব কিছু বলে দেয়া হয় না, শুধু ইঙ্গিত করা হয়। পাঠক সেই ইঙ্গিত অনুযায়ী এগিয়ে যাবেন।”


সব শেষে তাই বলবো এটাকে ঠিক অণুগল্প না বলে ছোট গল্প বললেই মনে হয় ভালো হবে। আমি নিজেই অণুগল্প লেখার চেষ্টা করছি। এই ব্লগে কয়েকটা পোস্টও দিয়েছি কিন্তু এখনো কোনটাকে সার্থক করে তুলতে পারি নাই। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ধন্যবাদ সুফিয়া। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

সুফিয়া বলেছেন: প্রথমত ঃ আমারও এটা প্রথম চেষ্টা অনুগল্প লেখার। অসম্পূর্ণতা অনেক রয়ে গেছে তা বুঝতে পাচ্ছি আপনার বক্তব্যে।

দ্বিতীয়ত ঃ একথা বলতে দ্বিধা নেই যে অনুগল্পের প্রকৃত ধরন বা বিশ্লেষণ আমার পুরোপুরিভাবে জানা ছিলনা। আপনার বিস্তৃত ও গভীর উপলব্ধি থেকে যেভাবে বিশ্লেষণ করলেন সেটা আমার জন্য অনেক উপকারী।

তৃতীয়ত ঃ সত্যিকার হিতাকাংখী ছাড়া নিজের এতটা সময় খরচ করে এভাবে ব্যাখ্যা দিতে কেউ এগিয়ে আসত না।

তাই আপনার মন্তব্যের বিপরীতে আমি কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাব ভেবে পাচ্ছিনা। ধন্যবাদ দিব সেই সাহসও পাচ্ছিনা। তবে নিজকে কৃতার্থ মনে করছি এই কারণে যে আপনি আমার এই লেখাটা পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন।

তবুও কৃতজ্ঞতা জানাবার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনা।

৪| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৫

নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: নীচের দু'প্যারা বাদ দিয়ে উপরের অংশটুকু আমার কাছে চিঠি'র মত মনে হয়েছে এবং অনুগল্পের ক্ষেত্রে উপরের কথোপথন অপ্রোয়জনীয় মনে হয়েছে

যাই হোক নিচের দুটো প্যারা দিয়েই কিন্তু আপনার অনুগল্প হয়ে যেত যদিও আমি নিজেও কোনদিন অনুগল্প লিখিনি।

তবে নীচের দুটো প্যারা বেশ ভাল লেগেছে এবং পাঠককে ভাবাতে বাধ্য।

ভাল থাকুন

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫৬

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আমার লেখার অসম্পূর্ণতা ধরিয়ে দেয়ার জন্য।

ভালো থাকবেন।

৫| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:০৫

কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনুগল্পে ভালো লাগলো ।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩২

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ কলমের কালি শেষ ভাই। আপনার ভালো লেগেছে দেখে আমারও ভালো লাগল। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.