নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষা আন্দোলন ও ভাষা কন্যাদের কথা

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২০

আমরা জানি ১৯৫২ সনে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ - দাবীতে কেঁপে উঠেছিল বাংলাদেশ অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান। তারও চার বছর আগে ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত ঘটে। ঐ বছরের ১১ মার্চ তারিখে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী গণ-পরিষেদের ভাষা-তালিকা থেকে বাংলাকে বাদ দিয়েছিল। তাছাড়া পাকিস্তানের মুদ্রা ও ডাকটিকেটে বাংলা ব্যবহার না করা এবং নৌবাহিনীতে নিয়োগের পরীক্ষা থেকে বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দূকে রাখার বিধান চালু করেছিল তারা। এর প্রতিবাদে ঐদিন ঢাকায় সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয় এবং ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে মিছিল বের করা হয়। মিছিলে পুলিশের আঘাতে মোহাম্মদ তোয়াহা গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে এর প্রতিবাদে ১২ থেকে ১৫ মার্চ আবার ধর্মঘট পালিত হয়।



পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক এভাবে বাংলার পরিবর্তে উর্দূকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালে, তা ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারীর ২১ তারিখে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। ঐদিন ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ দাবীতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল এদেশের ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণ এবং ছিনিয়ে এনেছিল ভাষার উপর আমাদের অধিকার। বাংলা হলো আমাদের রাষ্ট্রভাষা, মায়ের ভাষা। এর বিনিময়ে সেদিন ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত ও জব্বারের বুকের তাজা রক্তে। এরপর থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী অর্থাৎ অমর একুশে মিশে গেল আমাদের জাতিসত্তা ও অস্তিত্বের সাথে। আমরা প্রতি বছর হৃদয়ের উজাড় করা শ্রদ্ধার্ঘ ঢেলে পরিপূর্ণ মর্যাদায় স্মরণ করি ভাষা আন্দোলনের বীর সৈনিকদেরকে। শুধু তাদেরকে স্মরণ করাই নয়। প্রতি বছর অমর একুশ আমাদের মনে স্বাধিকারের চেতনা জাগিয়ে তোলে, আমাদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলে। শহীদ মিনারের কাছে গেলে দল-মত কিংবা ব্যক্তি স্বার্থের সংকীর্ণতা ভুলে দেশের জন্য অনেক কিছু করতে ইচ্ছে করে আমাদের।



কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন অমর একুশে পালনের বিষয়টি আত্মোপলব্ধি ও আত্মজাগরনের চেয়ে বেশি করে আনুষ্ঠানিকতার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। অনেকের কাছে আজ অমর একুশে পালন শুধু যেন আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ গান গাওয়া কিংবা খালি পায়ে প্রভাতফেরী করে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া।



এর বাইরে বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাষা সৈনিকদের বীরত্বপূর্ণ জীবনগাঁথা ও দেশপ্রেমের কথা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার কাজটি যদিও হয়ে আসছে, তা খুবই সীমিত আকারে, অনেকটাই যেন খন্ডিত। কারণ, একুশে ফেব্রুয়ারীর মিথ গানে কিংবা আলোচনা অনুষ্ঠানে সব সময় উঠে আসছে আমাদের ভাষা সৈনিক ভাইদের কথা। অথচ ইতিহাস সাক্ষী স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ গৃহিনীরা পর্যন্ত সে সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই ১৯৪৮ সাল থেকে। একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা আজকের দিনে মেয়েদের পক্ষে এভাবে আন্দোলনের জন্য বাইরে বেরিয়ে আসা যতটা সহজ, তখনকার দিনে তা ততটাই কঠিন ছিল। কারণ স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ছিল তখন অত্যন্ত কড়া। তাই এসব মেয়েদেরকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল প্রচন্ড ঝুঁকি মাথায় নিয়ে, স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের রক্ত চক্ষুকে অমান্য করে। তাই আজকের দিনের প্রেক্ষাপটে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রীদের ত্যাগকে যে আঙ্গিকে দেখা হয়, প্রকৃতপক্ষে তা এর চেয়ে অনেক বেশী গুরুত্বের দাবীদার। তাই আমি মনে করি অমর একুশকে ঘিরে তৈরী বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় এই সমস্ত ভাষা সৈনিক বীর কন্যাদের বীরত্বের কাহিনীও যথাযথ মর্যাদায় উঠে আসা জরুরী। তানাহলে প্রভাতফেরী, শহীদ মিনার কিংবা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ গান ইত্যাদি নিজ নিজ অবস্থানে থেকে যাবে ঠিকই, কিন্তু নতুন প্রজন্মের আত্মোপলব্ধির জগত থেকে আস্তে আস্তে সরে যাবে নারী ভাষা সৈনিকরা অর্থাৎ ভাষা কন্যাগণ। এমনটা হলে অমর একুশে পালন শুধুমাত্র প্রাণহীন আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হবে, ভাষা আন্দোলন ও ভাষা সৈনিকদের সত্যিকার মর্যাদা কখনও দেয়া হবে না।



বলছিলাম ভাষা আন্দোলনের খন্ডিত আনুষ্ঠানিকতার কথা। সেটাকে একটু সরলীকরণ করতে চাই এখানে। খন্ডিত করা বলতে আমি বুঝাতে চাচ্ছি যে, ভাষা আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দেয়া হচ্ছে এসব আনুষ্ঠানিকতা থেকে। সেই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ভাষা কন্যাগণ, যারা বায়ান্নর সেই দিনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ছাত্রজনতার সাথে সমানতালে রাস্তায় নেমে এসেছিল। শুধু তাই নয়, ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত থেকে তারা জড়িয়ে ছিল এই আন্দোলনের পরতে পরতে। ভাষা আন্দোলনের উপর তৈরী বিভিন্ন দলিলপত্র, তথ্যচিত্র ও গবেষণাধর্মী বই থেকে জানা যায় যে, সাধারণ মেয়েরাও সেই সময় ভাষা আন্দোলনে শরীক হবার জন্য এগিয়ে এসেছিল। তারা চাঁদা তুলেছে, সারা রাত জেগে পোস্টার লেখার কাজ করেছে, আন্দোলনে আহত ছাত্রদের খোঁজ-খবর নিয়েছে, সেবা করেছে।



শুধু তাই নয়। সে সময় গৃহিনীরাও তাদের গায়ের অলংকার খুলে দিয়েছিল ভাষা আন্দোলনের খরচ জোগাড় করার জন্য। আর প্রত্যক্ষ আন্দোলনে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে যে তথ্য জানা যায় তা হলো যে, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা না করা নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে যে বিতর্ক তৈরী হয়েছিল সেটার মীমাংসা করেছিল মেয়েরাই। তারা বলিষ্টভাবে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার পক্ষে মত দিয়েছিল। একথা আমরা সকলেই জানি যে, ২১ ফেব্রুয়ারীর সেই উত্থাল দিনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্রথম যে তিনটি দল এগিয়ে গিয়েছিল সেগুলো ছিল ১০ জন করে ছাত্রীর দল এবং প্রথম গ্রেফতারও হয়েছিল এদের তৃতীয় দলটি, যদিও একটু দূরে নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এই সমস্ত ভাষাকন্যাদের নাম আমরা অনেকেই জানিনা এবং জানার চেষ্টাও করিনা। শুধু তাই নয়। এই সমস্ত বীর কন্যাদের উপর গবেষণাধর্মী কাজও হয়েছে খুব কম। যতটুকু হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে তুষার আবদুল্লাহ সম্পাদিত নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা থেকে প্রকাশিত ‘বায়ান্নর ভাষাকন্যা’ বইটি। এই বই থেকে যে ক’জন ভাষাকন্যার নাম জানা যায় তারা হলেন ঃ রওশন আরা বাচ্চু, সুফিয়া খান, সারা তৈফুর, ডঃ শরিফা খাতুন, হালিমা খাতুন, প্রতিভা মুৎসুদ্দি, কায়সার সিদ্দিকী, মোসলেমা খাতুন, সুফিয়া আহমেদ, গুলে ফেরদৌস, মনোয়ারা ইসলাম, রওশন জাহান হোসেন, কাজী খালেদা খাতুন, রওশন আহমেদ দোলন, হোসনে আরা বেগম, জুলেখা হক ও নাদেরা বেগম প্রমুখ। এই বই থেকেই জানা যায় যে, নাদেরা বেগম ভাষা আন্দোলনে ছাত্রীদের পক্ষে নেতৃত্ব দেয়ায় কারারুদ্ধ হয়ে কঠিন নির্যাতন ভোগ করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ মডার্ণ গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকেও একই কারণে গ্রেফতার করা হলে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ভিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল এবং তাকে যাতে ঢাকায় নিয়ে না যেতে পারে সেজন্য কয়েক মাইলব্যাপী রাস্তায় শত শত গাছ কেটে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছিল। এরপর তার স্বামী তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি বন্ড সই করে মুক্তি লাভে অস্বীকৃতি জানালে তার স্বামী তাকে ডিভোর্স দেয়। সিলেটে সালেহা বেগমকে স্কুলে কালো পতাকা উত্তোলনের অপরাধে সেখানকার ডিসির নির্দেশে তিন বছরের জন্য স্কুল থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল।



বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য ভাষা কন্যাদের এমন বহু ত্যাগের কাহিনী বিভিন্ন জনের লেখায় অত্যন্ত স্বল্প পরিসরে উঠে এলেও সময়ের বিবর্তনে সেগুলো ক্রমশঃ যেন চাপা পড়ে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে আজকের প্রজন্ম ভাষা আন্দোলনের এই বিপ্লবী নারীদের সম্পর্কে জানার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এমন পুরুষ ভাষা সৈনকিরাও তাদের লেখায় অকপটে স্বীকার করেছেন এই সমস্ত ভাষা কন্যাদের বীরত্বগাঁথার কথা। তারা তাদের বইতে ভাষা আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে পৃথক শিরোনামে কিছু না লিখলেও খুবই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভাষা কন্যাদের অবদানের কথা বর্ণনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে বদরুদ্দীন ওমরের ‘ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গ ঃ কতিপয় দলিল’ বই এর কথা উল্লেখ করা যায়। উল্লেখ করা যায় আহমেদ রফিকের ‘একুশের ইতিহাস আমাদের ইতিহাস’ বইটির কথা। আর তুষার আবদুল্লাহ সম্পাদিত নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা থেকে প্রকাশিত ‘বায়ান্নর ভাষাকন্যা’ বইটির কথা তো আগেই বলেছি। এই বইটিতে ১৭ জন ভাষা কন্যাকে তুলে ধরা হয়েছে ভাষা আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে।



এরপরও এই সমস্ত ভাষা কন্যারা আজ অবহেলিত, অনেকটাই পাদপ্রদীপের আড়ালে চলে গেছেন তারা। অথচ একাত্তরের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মতো তারাও নারী সমাজের নিকট গৌরবের উপাখ্যান। তাই সংগত কারণেই প্রশ্ন আসে, একাত্তরে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধারা যদি পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো উঠে আসতে পারেন আমাদের প্রাত্যাহিক শ্রদ্ধার্ঘের বেদীমূলে তাহলে বায়ান্নর ভাষা কন্যারা কেন তা থেকে বঞ্চিত হবেন ? তাছাড়া ভাষা কন্যাদের ইতিহাস তো একাত্তরের ইতিহাসেরও অনেক আগের। তাই মনে জেগে উঠা খেদ থেকে অনেক ভাষা কন্যাগণ বলেছেন যে, শ্রদ্ধেয় আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ গানটি তাদেরকে সময়ের পাতা থেকে বিস্মৃত করতে অনেকটাই সহায়তা করছে। এ প্রসঙ্গে এটা বলা বোধহয় অত্যূক্তি হবেনা যে, শ্রদ্ধেয় আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর বিখ্যাত ঐ গানটিতে ‘আমার বোনের ত্যাগে জড়ানো একুশে ফেব্রুয়ারী' বা এই জাতীয় কোন একটি লাইন যদি রাখা যেতো তাহলে অমর একুশের এই মিথ গানে আমাদের ভাষা কন্যাগণও মানুষের মুখে মুখে বেঁচে থাকত বাঙালীর স্বাধিকার চেতনার আন্দোলনের বীর সেনানী হিসেবে।



শুধু তাই নয়। ভাষা আন্দোলন বা অমর একুশকে ঘিরে আরও একটি অসম্পূর্ণতা মনে খেদ জাগায়। সচেতন মানুষ মাত্রই এদিকে একটু মনযোগ দিলে খেয়াল করবেন যে, ভাষা আন্দোলন যেন ক্রমশই বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত সমাজের কার্যকলাপের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। শহীদ মিনার ও এর অস্তিত্বের পেছনের ঘটনাগুলো ক্রমেই যেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। অথচ এমনটি হওয়া উচিত উচিত ছিলনা। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। গ্রামের চাষা-ভূষা, কুলি-মজুর থেকে শুরু করে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী সবাই আমরা বাংলায় কথা বলি। আর বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ছাত্র সমাজের সাথে সাধারণ মানুষও যে রাস্তায় নেমে এসেছিল ভাষার দাবীতে একথা আমরা জানিনা এমন নয়। কাজেই ভাষা আন্দোলন, শহীদ মিনার, ভাষা সৈনিক, প্রভাতফেরী এই মিথগুলো সম্পর্কে জানার ও বুঝার অধিকার রয়েছে সাধারণ মানুষেরও। তাই অমর একুশে পালনের আনুষ্ঠানিকতাগুলোর সাথে এদেশের সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপলব্ধির গভীরে পৌঁছে দিতে হবে অমর একুশের প্রেক্ষাপটকে। এর দায়িত্ব অবলীলায় বর্তায় শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর উপর, যারা আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনাকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দেয়ার কাজে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। আমি মনে করি, যেদিন এদেশে এই দুটি মহান দায়িত্ব সুচারুরূপে সম্পন্ন হবে অর্থাৎ ভাষা কন্যাদের পরিপূর্ণ মর্যাদা দেয়া হবে এবং অশিক্ষিত খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকে অমর একুশে উদযাপনের সাথে যুক্ত করে নেয়া হবে, সেদিনই কেবল অমর একুশে পালনের আনুষ্ঠানিকতাসমূহ পরিপূর্ণতা পাবে এবং শহীদ ভাষা সৈনিকদের প্রতি যথাযোগ্য মর্যাদা প্রদর্শন করা হবে।



সবশেষে আরও একটি কথা বলতে চাই। একথা আমরা কেউ অস্বীকার করতে পারব না যে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালী জাতিয়তাবাদের মূল ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল। ভাষা সৈনিক ভাইদের পাশাপাশি ভাষা কন্যাগণও সেই ভাষা আন্দোলন তথা বাঙালী জাতিয়তাবাদ আন্দোলনের সূচনালগ্নের বীর কর্মী। তারা আমাদের ইতিহাসের গর্বিত অনুষঙ্গ। আমাদের জাতিসত্তার ইতিহাস নির্মাণে তাদের রয়েছে সক্রিয় ভূমিকা। একথা ভুলে গেলে সেটা হবে ইতিহাসের সাথে আমাদের প্রত্যক্ষ বেইমানী।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৫

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা রইল প্রতিটি পদক্ষেপ, মুষ্টিবদ্ধ হাত যা কিনা এগিয়ে গেছিল আন্দোলন করেছিল ভাষার জন্য। ভাষা কন্যারা আমাদের অহংকার। তাদের সেই সাহসিকতা, সমাজের রক্তচহ্মুর প্রতি বৃদ্ধাংগুল পাকবাহিনীর কুপ্রচেষ্টার বুকে যেন এক একটা পেরেক।
তাদের সম্মানিত করা আমাদের দায়িত্ব।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

সুফিয়া বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। ভাষা কন্যারা আমাদের অহংকার। তাদের যথাযথ সম্মান দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।

২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: দারুন একটা পোস্ট।


শ্রদ্ধা সেই সব নারীদেরকে এবং আপনাকেও।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪১

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ময়ূরাক্ষী আপনাকে। ভালো থাকুন।

৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৫

বিদগ্ধ বলেছেন:
** সেই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ভাষা কন্যাগণ, যারা বায়ান্নর সেই দিনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ছাত্রজনতার সাথে সমানতালে রাস্তায় নেমে এসেছিল। শুধু তাই নয়, ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত থেকে তারা জড়িয়ে ছিল এই আন্দোলনের পরতে পরতে। ভাষা আন্দোলনের উপর তৈরী বিভিন্ন দলিলপত্র, তথ্যচিত্র ও গবেষণাধর্মী বই থেকে জানা যায় যে, সাধারণ মেয়েরাও সেই সময় ভাষা আন্দোলনে শরীক হবার জন্য এগিয়ে এসেছিল। তারা চাঁদা তুলেছে, সারা রাত জেগে পোস্টার লেখার কাজ করেছে, আন্দোলনে আহত ছাত্রদের খোঁজ-খবর নিয়েছে, সেবা করেছে।**

গভীরভাবে একাত্মতা প্রকাশ করছি। একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট লেখেছেন!

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৪৪

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন সব সময়।

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪১

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: যৌক্তিক দাবী নিয়েই ভাষা কন্যাদের পক্ষ নিয়ে আওয়াজ তুলেছেন। নারীদের অর্জন পুরুষ শাসিত সমাজে বারবারই উপেক্ষিত হয়ে আসছে। তাদের নিয়ে আওয়াজ তোলার লোকের সংখ্যাও আমাদের সমাজে খুব কম। তারমধ্যেও আপনি ঠিকই আওয়াজ তুলেছেন যথার্থ আলোচনার মাধ্যমেই। আপনার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি সুফিয়া। বিষয়টা সবার ভেবে দেখা উচিৎ।
সুন্দর বিষয় চমৎকার পর্যালোচনা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার পোস্টটি ফেবুতে 'আওয়াজ দিয়ে যাই' পেজে শেয়ার দিলাম।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:২৪

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভাই। আপনি আমার লেখটা পেজ বুকে শেয়ার করেছেন জেনে খুব খুশী হলাম। ভীষণ ভালো লাগছে আমার। ধন্যবাদ আরেকবার সেজন্য।

ভালো থাকবেন সতত।

৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট।

প্রিয়তে নিলাম। প্রথম প্লাস।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু। আমার খুব ভালো লাগছে যে আমার পোস্টটা আপনার প্রিয়তে স্থান পেয়েছে।

৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৬

জাফরুল মবীন বলেছেন: ভাষাকন্যখ্যাত এসব মহিয়ষী নারীদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।

অাপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বোন এরকম একটি সময়োপযোগী তথ্যপূর্ণ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

মডারেশন প্যানেলের কাছে অনুরোধ এই পোস্টটিকে স্টিকি করে সবার জানার সুযোগ করে দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করতে

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ জাফরুল ভাই লেখাটা পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকুন আপনি সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.