নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রাম বাংলার যে খেলাগুলো আমার স্মৃতিকে এখনও আলোড়িত করে

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৭

গ্রাম বাংলার যে খেলাগুলো আমার স্মৃতিকে এখনও আলোড়িত করে।





মোরগের লড়াই



আমি নিজকে অনেক বড় সৌভাগ্যের অধিকারী মনে করি এ কারণে যে আমার শৈশবের একটা বড় অংশ কেটেছে বাংলাদেশের একটি ছায়া সুনিবিড় গ্রামে। যেখানে পাখির ডাকে ঘুম ভাঙত খুব সকালে আর বাঁশঝাড়ে পেঁচার ডাকে সন্ধ্যা নামত ভূতুড়ে আয়োজনে। যেখানে গাছের ডালে পাখির গানে কন্ঠ মিলিয়ে রাখাল বালক মনের সুখে হারিয়ে যায় আজও। যেখানে কলসি কাখে গাঁয়ের বধূ পুকুর ঘাটে যেতে ঘোমটা টানে বারেবারে কেউ বুঝি দেখে ফেলে। যেখানে ঘাগড়া পরা চঞ্চল কিশোরীর নুপুর পরা পায়ের ছন্দে পথের ধূলিরা চমকে চমকে উঠে। যেখানে বাউল-ভাটিয়ালী আর রাখালিয়া সুরে প্রাণ জাগে নব আশার কোলে। এমনি একটি গ্রামে শৈশব কাটিয়ে আমি আজ নিজকে মনে করি অনেকটাই সমৃদ্ধ, অনেকটাই পরিপূর্ণ। আমার সেই গ্রাম আজও আছে, তেমনি আছে ছায়াঢাকা কোকিলডাকা মেঠোপথের পাড়ে। শুধু আমি এখন নেই সেই গ্রামে। জীবনের টানে, সামনে যাবার প্রত্যয়ে আমার সেই গ্রাম আমার কাছ থেকে দূরে চলে গেছে। কিন্তু আমার জীবনের এই অবস্থান থেকে আমার গ্রামকে একেবারে সরে যেতে দেইনি আমি। তাই ফিরে ফিরে যাই আমার শৈশবের স্মৃতি মুখরিত গ্রামে। আর সেখানে গেলেই বারবার মনে পড়ে যায় সেই দিনগুলোর কথা। খেলাধূলা-দস্যিপনা সব মিলিয়ে দিনগুলো ছিল সত্যিই অনন্য সম্ভারে সমৃদ্ধ। মনে হয় যদি আরেকবার ফিরে যেতে পারতাম সেই দিনগুলোতে ! আরেকবার বন্ধুরা মিলে শুকনো ধানের খেতে কিংবা পুকুর পাড়ে জমাতে পারতাম সেই খেলার আসর।

খেলার প্রসঙ্গে অনেক কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে। আমাদের ময়মনসিংহ অঞ্চলে যে খেলাগুলো আমরা তখন খেলেছি বা উপভোগ করেছি সেগুলোর অধিকাংশই এখন বিলুপ্তপ্রায়, জেগে আছে কেবল আমাদের স্মৃতির পাদপীঠে। সেই খেলাগুলো নিয়ে আমার এই লেখা।









১) লাঠিখেলা Ñ ময়মনসিংহ অঞ্চলের একটি অতি পরিচিত খেলা, এখনও কোন কোন জায়গায় চালু আছে। বৎসরের একটা নির্দিষ্ট দিনে সাাধারণত পৌষ মাসের কোন একদিন লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হতো। এই খেলায় যারা অংশ নিত দেখা যেত তারা বংশানুক্রমিকভাবে এর সাথে জড়িত থাকত। খেলাটা অনেকটা শক্তি প্রদর্শনের মতো। পঞ্চাশ থেকে ষাটজন শক্তিমান যুবক বয়সের পুরুষ এই খেলায় অংশ নিত। শুকনো ক্ষেতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে দর্শক জড়ো করে এই খেলা শুরু হতো। খেলা থেকে খেলোয়ারদের আয়-উপার্জন খুব সামান্যই হত। তবে বিনোদনের বিষয়টাই ছিল মুল লক্ষ্য। খেলার আগে ঢোল পিটিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রচার করা হতো লাঠিখেলার কথা। দেখা যেত খেলার দিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে শত শত মানুষ এসে জড়ো হতো খেলা দেখার জন্য। আমরা ছোটরা গেলেও নারী দর্শকদের উপস্থিতি খুব একটা দেখা যেতনা তখন।





কাবাডি



২) হা-ডু-ডু/কাবাডি -- এটাও গ্রাম বাংলার একটি অতি পরিচিত খেলা। বলা যায় গ্রাম বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় লোকজ খেলা এটি। আমাদের ময়মনসিংহ জেলায় এখনও এই খেলার প্রচলন রয়েছে। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি স্কুলের মাঠে কিংবা শুকনো মৌসুমে ধানের খেতে (ধান কেটে নেয়ার পর) একটি নির্দিষ্ট জায়গাজুড়ে এই খেলাটি অনুষ্ঠিত হতো। খেলায় প্রতি দলে ৭ জন করে ১৪ জন যুবক বয়সী ছেলে বা মেয়ে অংশগ্রহণ করে থাকে। সাধারণত ৩০ ফুট দৈর্ঘ ও ১৫ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট জায়গার মাঝখানে দাগ কেটে সমান দু’ভাগ করা হয় এবং দুই দলে এই দুই ভাগে অবস্থান নেয়। এক পক্ষের এক খেলোয়ার বুকে দম নিয়ে বিপক্ষের অংশে হানা দিয়ে যে কয়জনকে ছুঁয়ে নিজের অংশে ফিরে আসতে পারলে সেই কয়জনকে মরা বলে চিহ্নিত করা হয়। ওরা আর খেলায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনা। আবার যে দম নিয়ে যায় তাকে যদি ওপক্ষের খেলোয়ারা ধরে ফেলে এবং সে যদি সেখানে দম ছেড়ে দেয় তাহলে সে মরা হয়ে যায়। কিন্তু সে যদি দম নিয়ে ওদের বন্ধন থেকে ছুটে বেরিয়ে নিজের জায়গায় চলে আসতে পারে তাহলে যারা তাকে ধরেছিল সবাই মরা হয়ে যাবে। আজকাল বিভিন্ন সমিতি বা সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিযোগিতামূলকভিত্তিতে হা-ডু-ডু বা কাবাডি খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।



৩) পলাগুঞ্জি বা লুকোচুরি - এটা সাধারণত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের খেলা। ছোটবেলা এটা ছিল আমাদের অতি প্রিয় একটি খেলা। এই খেলার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক শিশুর প্রয়োজন হতনা। আমরা কয়েকজন একত্রিত হলেই এই খেলায় মেতে উঠতাম। খেলায় দুঠো দল থাকত। একদলের একজন লুকালে অন্য দলের সদস্যরা তাকে খুঁজে বের করত। যে লুকাতে সে এক জায়গায় লুকিয়ে ’ঠুক’ বলে একটা আওয়াজ দিতে। সেই আওয়াজ লক্ষ্য করে প্রতিপক্ষের ওরা ওকে খুঁজে বের করত। এরপর ওপক্ষের একজন লুকাত এবং একইভাবে ওকে খুঁজে বের করা হতো। এভাবে দুই দলের প্রত্যেকে এক এক করে লুকালে এবং তাদেরকে খুঁজে বের করা শেষ হলে খেলাও শেষ হয়ে যেত। আমরা সাধারণত প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করা জন্য এক জায়গা থেকে ’ঠুক’ শব্দ করে অন্য জায়গায় গিয়ে লুকোতাম। আমাদের গ্রামের ভাষায় এই খেলাটাকে ’ঠুক্কুরো’ খেলাও বলা হতো।





৪) দাড়িয়াবান্দা - কাবাডি বা হা-ডু-ডু খেলার মতই এটা প্রধানত কিশোর-যুবকদের –যুবতীদের খেলা। তবে আমরা ছোটকালে ছেলেদেরকেই এই খেলা বেশি খেলতে দেখেছি। স্কুল-মাদ্রাসার মাঠে কিংবা শুকনো জমিতে দাগ কেটে কোট বানিয়ে এই খেলার ঘর তৈরি করা হতো। এখনও কোথাও কোথাও চালু আছে এই খেলা। চারজন বা পাঁচজন করে দুটো দল থ কে এই খেলায়। তবে প্রতি দলে সমান সংখ্যক সদস্য থাকতে হয়। খেলার নিয়ম হলো - একটি দল কোটগুলো পার হবার চেষ্টা করে এবং অন্য দল তাদেরকে বাঁধা দিবে। যে দলের কোন একজন খেলোয়ার কোটগুলো অতিক্রম করে নিজের কোটে ফিরে আসতে পারলে সেই দল জয়ী হয়।





দাড়িয়াবান্দা





৫) গোল্লাছুট - ময়মনসিংহ অঞ্চলের আরও একটি জনপ্রিয় খেলা। ছেলেমেয়ে একসাথে মিলে এই খেলা কত যে খেলেছি ! আমাদের বড় পুকুর পাড়টা ছিল আমাদের গোল্লাছুট খেলার উত্তম জায়গা। এখনও গ্রামে গেলে দেখি ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা গোল্লাছুট খেলছে। এই খেলায় অনেক ছেলেমেয়ে একসাথে অংশ নিতে পারে। একজন সদস্য প্রধান হিসেবে থাকে, তার নাম গোল্লা। সে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় থাকে। প্রতিপক্ষেরও আর একটা নির্দিষ্ট জায়গা তাকে। গোল্লার তার দায়িত্ব হলো তার নির্দিষ্ট সীমানা পার হয়ে প্রতিপক্ষের সীমানায় গিয়ে উপস্থিত হওয়া। খেলার মজা হলো নিজের সীমানা থেকে বের হলেই প্রতিপক্ষের খেলোয়াররা তাকে বাঁধা দেয় আর তার দলের খেলোয়ারা তাকে যেতে সাহায্য করে। কিন্তু প্রতিপক্ষের কেউ তার দলের কাউকে ছুঁয়ে দিলে সে মরা বলে গণ্য হয় এবং আর খেলায় থাকতে পারেনা। এভাবে যদি সবাই মরে যায় এবং গোল্লা ঐ সীমানায় পৌঁছার আগে মরে যায় তাহলে বিরোধীপক্ষ খেলায় জয়লাভ করে।



৬) কানামাছি - এই খেলাটার সাথে অনেকেই পরিচিত। বাংলাদেশের সব অঞ্চলের ছোট ছোট ছেলেমেয়রা একত্রে এই খেলায় মেতে উঠে। শৈশবের এই খেলাটার কথা মনে হলে আজও মনে হয় ছুটে যাই সেই বন্ধুদের কাছে, মেতে উঠি কানামাছি খেলায়। কি মজার খেলা একটা ! অনেকজন অংশ নিলেও একদলে একজন আর অন্যদলে থাকে বাকীরা। এই একজনের চোখ মোটা কাপড় দিয়ে খাব ভাল করে বেঁধে দেয়া হয়। তারপর ওকে বলা হয় সবাইকে ছোঁতে। যাদেরকে ছোঁতে যায় তারা এদিক-সেদিক দৌড়ায় আর মুখে বলে ’কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যারে পাস ছোঁ।’ সে এদিক-ওদিক হাতড়িয়ে যাকে ছোঁতে পারে এরপর ওর চোখ বেঁধে দেয়া হয়। সত্যি আরেকটাবার যদি সেই বন্ধুদের নিয়ে এই খেলাটা খেলতে পারতাম।





কানামাছি



৭) ষাঁড়ের লড়াই Ñ সাধারণত বিশেষ উৎসবের দিনে বিশেষ করে বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখের দিনে এই খেলা অনুষ্ঠিত হতো। অনুষ্ঠানের আগে হাটে-বাজারে মাইকে ঘোষণা করা হতো খেলার তারিখ ও সময়। নির্দিষ্ট দিনে ঢাক-ঢোল-করতাল বাজিয়ে শুরু হতো ষাঁড়ের লড়াই। গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে শত শত লোক এসে জড়ো হতো লড়াই দেখার জন্য। খেলার চারপাশ ঘিরে মেলার মতো আয়োজন বসে যেত। চা-পান-বিস্কুট-চানাচুর-জিলিপি-বাতাসা-রসগজা নিয়ে দোকানীরা বসত। ছোটদের জন্য নানারকম খেলনাপাতিও থাকত। লাল-হলুদ কাপড়ে সাজিয়ে ষাঁড়কে নিয়ে আসত মালিকেরা। খেলাশেষে জয়ী মালিককে পুরস্কার প্রদান করা হতো। গ্রামের বাড়ি বাড়ি চাঁদা তোলে এই পুরস্কারের টাকা সংগ্রহ করা হতো। জেতার পর সেই ষাঁড় নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরত মালিক, সাথে অসংখ্য লোকজন। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ধান-চাল-টাকা-পয়সা দিত বিজয়ী ষাঁড়ের উদ্দেশ্যে। অন্যদিকে পরাজিত ষাঁড়টাকে জবাই করে এর মাংস বিক্রি বা বন্টন করে দেয়া হতো। আমরা দেখেছি যারা ষাঁড়ের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করত তারা ষাঁড়টাকে আলাদাভাবে যতœ করে প্রতিপালিত করত প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার উপযোগী করে।





ডাংগুলি



৮) নৌকাবাইচ - এক সময় মনে করতাম যে এটা শুধু গ্রামাঞ্চলের খেলা। কিন্তু আজকাল সর্বত্র এই খেলাটা অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায় এবং এখন পর্যন্ত এই খেলাটা বেশ জনপ্রিয়। তাই আমি এই খেলাটাকে এখন শুধু লোকজক্রীড়ার অংশ হিসেবে দেখতে চাইনা। তবে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে নৌকাবাইচের মূল শেকড় বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে। আমরা শৈশবে স্বচক্ষে নৌকাবাইচ দেখতে পারিনি। কারণ, আমাদের এলাকায় কোন নদী নেই। বাহাইল বিল নামের একটা বিল ছিল যেটাতে প্রতি বছর বর্ষায় একবার নৌকাবাইচ হতো। বাড়ির ছোটবড় পুরুষেরা দলে দলে যেত নৌকাবাইচ দেখতে। তারা ফিরে আসলে তাদের মুখে কত কি গল্প শুনতাম এই নৌকাবাইচ নিয়ে ! বেশ কয়েকদিন ধরে সুখের জাবরকাটার মতো গ্রামের আনাচে-কানাচে পুরুষদের মুখে রমরমা গল্প চলত এই নৌকাবাইচের।





মার্বেল বা গুলতি



আরও কত খেলা যে খেলেছি আমরা শৈশবে। কুতকুত খেলা ছিল কেবল মেয়ে শিশুদের জন্য। মার্বেল বা গুলতি খেলা ছেলেদের মনে করা হলেও সেটাও খেলতাম মাঝেমধ্যে। তারপর আছে ডাংগুলি খেলা। আমাদের গ্রামদেশে এটাকেও ছেলেদের খেলা হিসেবেই দেখা হতো। অথচ আমি ছেলেদের সাথে মিলে এই খেলাটাও খেলেছি। বিভিন্ন বাড়িতে প্রায়ই মোরগের লড়াই হতো। এটাও ছিল আমার কাছে আর একটা বিনোদনের উৎস। ছোটরা দলবেঁধে গোল দাঁড়িয়ে এই খেলা দেখতাম। তাছাড়া ঘুড়ি উড়ানোতেও কম যেতামনা আমি। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে গ্রামের বয়স্ক পুরুষেরা ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগীতা করত। প্রায় সারাদিন চলত এই প্রতিযোগীতা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সেখানে পড়ে থাকতাম সারাদিন। কি যে আনন্দ হতো !





কুতকুত



আসলে আজকালকার দিনের মতো তখন বিনোদনের এত উপকরণ ছিলনা, গ্রামদেশে তো না-ই। তাছাড়া এখনকার মতো পড়াশুনার এত চাপও ছিলনা তখন আমাদের মাথায়। তাই মুক্ত বিহঙ্গের মতো হেসে-খেলে-দস্যিপণায় মেতে দিনগুলো কেটে যেত বেশ। আজ পেছন ফিরে তাকালে মনে হয় সেই দিনগুলো সত্যিই ছিল বড় মধুর ! জীবনের স্বর্ণালী সময় বলতে আমি আজও আমার শৈশবের সময়টাকেই বুঝি।



ছবি - নেট থেকে।



মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৭

সুমন কর বলেছেন: কাবাডি আর কুতকুত খেলা হয়নি।

ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। চমৎকার শেয়ার।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।

২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৪১

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
প্রিয় ব্লগার সুফিয়াঃ আপনার পোষ্টটি পড়ে আজ আমি আবার আমার হারানো দিনের সময় ফিরে পেয়েছিলাম । আমি বৃহত্ত্রর ফরিদ পুর জিলার নেটিব, আপনাদের দেশের এ খেলাগুলোর প্রত্যেকটিই আমাদের দেশে ছট্ট কালে আমরা খেলতাম ।

এ পোষ্টে সূচনায় গ্রাম বাংলার যে বরননা আপনি দিয়েছেন, তা যেন আমাদের দেশের আমার বাল্য স্মৃতি । আমিও উচ্চ মাধ্যমিক পরযন্ত গ্রাম বাংলায় মানুষ হয়েছি ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:২৯

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে রেজাউ করিম। ভাল লাগছে যে আপনার উপলব্ধিটুকু শেয়ার করেছেন এখানে।

ভার থাকুন আপনি সব সময়।

৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: এখানে অল্প কয়েকটা মাত্র তুলে ধরা হয়েছে।
যা সবারি কম বেশী পরিচিত।

বিংশ শতাব্দীর আগে যারা প্রাইমারীতে ভর্তি হয়েছেন আশা রাখি সবাই এই খেলা গুলি খেলেছেন।
আমিও খেলেছি। এগুলো ছাড়াও কত শত রকমের খেলা ।
ছেলে মেয়েরা এক সাথে মিলে মিশেই খেলতাম।
তখন ছেলে মেয়ের অবাধ মেলা মেশায় অভিভাবকের কোন সন্ধেহ বা নিষেধাজ্ঞা ছিলনা।

হয়তো কিছুজন বলবে গ্রামের ছেলে মেয়েরাই এই খেলা গুলি খেলেছেন শহরের ছেলে মেয়েরা নয়।
আমিও কিন্তু জন্মকাল থেকে শহুরে, আমি তো ঠিকিই খেলেছি।
তাই বলে আমি একা নই,আর একা তো এগুলি খেলাও সম্ভবনা।
দল বা গোষ্টি বদ্ধ হয়েই এই খেলা গুলি খেলতে হয়।
হা যারা বলেন গ্রামের ছেলে মেয়েরাই এই খেলা গুলি খেলেছেন
উনারা হয় তো বিরাট পয়াসা ওয়ালা এবং উচ্চ বংশের ঘরে জন্মেছেন।
তাই আমাদের মতো খোলা আকাশে ডানা উড়তে পারেননি স্বাধীন ভাবে।
চার দেয়ালের প্রাচীরের মাঝেই আবদ্ধ ছিলেন পয়াসা ওয়ালা এবং উচ্চ বংশের বন্দীশালায়।
যাদের শৈশব বলতে বোজায় স্মৃত্বিবিহীন পয়াসা ওয়ালা এবং উচ্চ বংশের বন্দীশালা।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আমার লেখাটা পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।

এটা ঠিক যে শুধু আমার দেখা বা উপভোগ করা খেলাগুলোই সব নয়। এলাকাভেদে বিভিন্ন ধরনের খেলা এক সময় আমাদের গ্রাম বাংলায় প্রচলিত ছিল, এখনও আছে। আমরা সবাই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ নিয়ে লিখি তাহলে গ্রামবাংলার প্রাচীন ও বর্তমান লোকজক্রীড়ার একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র উঠে আসতে পারে।

৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:০০

অর্বাচীন পথিক বলেছেন: মোরগ লড়াই খেলা টা কখনো দেখা হয়নি। আমার শিশুকালে আমি ওটা পায়নি।

আপনি অনেক খেলার নাম দিয়েছেন। সেই খেলা গুলো আমি ও খেলেছি। তবে কাবাডি আর ডাংগুলি বাদে।
আমরা আর ও খেলতাম। রুমাল চুরি, চূড়ি ভাংগা, সাত চাড়া, বরফ-পানি,ইচিং-বিচিং।

কি মজার না ছিল সেই দিন গুলো

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য ও সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। আমি চাই আপনিও লিখুন আপনার ঐসব খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে।

ভাল থাকুন আপনি।

৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:৩২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমি প্রচুর খেলেছি। এখন অবশ্য ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু খেলা হয়না। তবে আমি পূর্ণ অনেক খেলার শ্রান্তি নিয়ে

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ রাখাল আপনাকে আমার লেখাটা পড়ার জন্য ও মন্তব্যকরার জন্য। ভাল থাকুন আপনি।

৬| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:১০

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: মার্বেল খেলি নি। বাকি গুলো খেলেছি। আপনার পোস্ট টা খুব ভালো লাগল। ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:২৬

সুফিয়া বলেছেন: সত্যি ভাল লাগছে যে আমার এই পোস্টটা আপনাদের মনে একটু হলেও দাগ কেটেছে।

ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।

৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: দারুন পোস্ট আপু ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:২৬

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ মনিরা। ভাল থাকুন আপনি।

৮| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০০

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: নষ্টালজিক পোস্ট, সবগুলো খেলাই খেলা হয়েছে তবে আরো একটি খেলা ছিল যার নাম বরফ-পানি বা ছোঁয়া-ছুয়ি

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:২৮

সুফিয়া বলেছেন: বরফ-পানি বা ছোঁয়া-ছুঁছয় খেলাটা সম্পর্কে আমার জানা নেই। খেলিনি কখনও। আপনি এ সম্পর্কে একটু লিখলে জানতে পারতাম।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:০৩

কলমের কালি শেষ বলেছেন: বেশ নস্টালজিক পোস্ট । ছোটবেলা মনে করিয়ে দিলো । আসলেই আমরা সৌভাগ্যবান ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:২৯

সুফিয়া বলেছেন: শৈশবের স্মৃতি মানেই তো নস্টালজিক। তার উপর সেই শৈশব যদি কাটে গ্রামে। আপনি যেমন বলেছেন আসলেই আমরা ভাগ্যবান।তাই জীবনের এই পর্যায়ে এসে একটি স্বর্ণালী সময়েল জাবর কাটার সুযোগ পেয়েছি।

ধন্যবাদ আপনাকে।

১০| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:২৮

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: @ সুফিয়া

খেলার নিয়মটা আমারও তেমন মনে নেই, তবে সম্ভবত একজন নির্বাচিত থাকত যাকে চোর বলে সম্বোধন করা হত , সে যাকে ছোবে সে বরফ/স্থির হয়ে দাড়িয়ে থাকবে আর অন্যান্য সদস্যদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট সেই ব্যক্তিকে ছুয়ে দিল সে পানি/স্থিরতা মুক্ত হয়ে যাবে। অঞ্চল ভেদে এর আরেকটা নাম জল-কুমির খেলা।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ইমতিয়াজ। এখন মনে হচ্ছে এরকম একটা খেলা আমরাও খেলেছি। সেটার নাম ছিল চোর-পুলিশ খেলা।

১১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার পোস্টে +++++

এই বিষয়ে আরও দুটি পুরানো পোস্ট লিংক দিয়ে গেলাম, আর্কাইভ হিসেবে এই ব্লগে থাকুক লিঙ্কাকারে। :)

শৈশবে আমার প্রিয় গ্রাম্য খেলাগুলো!!! লিখেছেন ব্লগার এম মশিউর

ডানপিটে ছেলেদের হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলো... লিখেছেন বোকা মানুষ বলতে চায়

শুভকামনা জানবেন, ভালো থাকুন সবসময়।

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

সুফিয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য, মন্তব্য করার জন্য এবং এ সম্পর্কিত লিঙ্ক দেয়ার জন্য।

ভাল থাকুন আপনি।

১২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০

ঢাকাবাসী বলেছেন: চমৎকার একটা নস্টালজিক পোস্ট, খুব ভাল লাগল্ । এসব খেলা দেশ থেকে হারিয়েই গেছে বলা যায়। কংক্রীটের জংগলে ব্যাস্ত কঠিন নাগরিক জীবনে কম্পিউটার আর মোবাইলের এপসের কাছে এসব হয়ত মরে গেছে। এসব খেলা থাকা সম্ভব না। ধন্যবাদ।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

সুফিয়া বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন।

কংক্রীটের জংগলে ব্যাস্ত কঠিন নাগরিক জীবনে কম্পিউটার আর মোবাইলের এপসের কাছে এসব হয়ত মরে গেছে।

আর এজন্যই মাঝে মাঝে আমাদের স্মৃতির কুঠরী থেকে এগুলোকে বের করে আনতে হবে যাতে আজকের প্রজন্ম এই খেলাগুলো সম্পর্কে অন্তত জানতে পারে।

ধন্যবাদ আপনাকে ঢাকাবাসী পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।

ভাল থাকুন আপনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.