নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্প্রতি মারা গেছেন প্রবাদ প্রতিম সফল ব্যক্তিত্ব, ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রতি এ পি জে আবদুল কালাম। তার বিখ্যাত আত্মজীবনী গ্রন্থ উইংস অব ফায়ার থেকে কিছু উদ্বৃতি মেনে চলতে পারলে বদলে যেতে আমাদের জীবন।

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

ভারতের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম সম্প্রতি ইহলোক ত্যাগ করেছেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ বাংলায় অনূদিত তার লেখা জীবনী গ্রন্থ থেকে কিছু উদ্বৃতি পাঠকদের উদ্দেশ্য এখানে তুলে ধরলাম। কারণ একটাই। বইটা পড়ে আমার মনে হয়েছে জীবনের গভীরতম উপলব্ধিই এই মানুষটাকে তার অভীষ্ঠ সাফল্যে পৌঁছে দিয়েছে।

নামাজের সময়ে নিজের শরীরকে অতিক্রম করে মানুষ বিশ্বজগতের সঙ্গে এক হয়ে যায়, যেখানে ধনী-দরিদ্রের, বয়সের, জাতির, ধর্মের কোন ভেদ নেই।

প্রত্যেকটি মানুষ তার নিজের কালে নিজের স্থানে যা হয়েছে, যে অবস্থায় পৌঁছেছে, তাতে সে সমগ্র ঐশ্বরিক সত্তার এক বিশিষ্ট অংশ। তাই বাধা-বিঘ্ন, দুঃখ-কষ্ট, সমস্যা এলে ভয় পাবে কেন ? দুঃখ-কষ্ট এলে তোমার দুঃখ-কষ্টের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে চেষ্টা কর। দুঃসময় এলেই সুযোগ আসে আত্মসমীক্ষার।

প্রত্যেকটি শিশু উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কিছু কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে এক বিশেষ আর্থ-সামাজিক এবং মানসিক পরিবেশের মধ্যে জন্মায় এবং যেমন যেমন বড় হয়, গুরুজনস্থানীয় ব্যক্তিদের দ্বারা বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হয়।

তোমার সন্তানেরা তোমার সন্তান নয়, জীবনের যে আকাংখা তার নিজেরই জন্য, তোমার সন্তানেরা তারই সন্তান। তোমার মধ্য দিয়ে তারা আসে, তোমার কাছ থেকে নয়। তোমার ভালবাসা তাদেরকে দিবে, তোমার ভাবনা-চিন্তা নয়। কারণ, তাদের নিজেদেরই ভাবনা-চিন্তা আছে।

জীবনে কৃতকার্য হতে গেলে, ফল লাভ করতে গেলে, তিনটি প্রবল শক্তিকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে আনতে হবে - আকাঙ্খা, বিশ্বাস ও প্রত্যাশা। বিশ্বাস থাকলে তুমি নিজেও নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে।

অন্যদেরকে যে জানে সে পন্ডিত, কিন্তু জ্ঞানী হলো সেই যে নিজকে জানে। জ্ঞান না থাকলে বিদ্যায়ও কোন কাজ হয়না।

সত্যকে জানো, সত্য তোমাকে মুক্তি দিবে।

যে রুটি ভালবাসা বিনা প্রস্তুত, তা বিস্বাদ। তাতে ক্ষুধা অর্ধেক মাত্র মিটে (খলিল জিব্রানের লেখা থেকে তিনি উদ্বৃতি দিয়েছেন তার বইতে)।



কাজের বেলাভূমিতে
যদি পদচিহ্ন রেখে যেতে চাও,
দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাও।

জ্ঞান একটি অবিসম্বাদিত সম্পদ, নিজের কাজে প্রায়ই যার গুরুত্ব অপরিসীম। জ্ঞান যত আধুনিক হবে, তত স্বাধীনতা পাওয়া যাবে। জ্ঞান কেউ অপহরণ করতে পারে না, একথ মাত্র কাল ছাড়া। কালক্রমে জ্ঞান তার যুগোপযোগীতা হারাতে পারে।


নেতৃত্ব দেওয়া মানে এক হিসেবে নিজকে ক্রমাগত শিক্ষিত করে তোলা।

সাফল্য যখন নতুন মাত্রা লাভ করে, নতুন সৃষ্টির পথ তখন খোলে যায়। ব্যক্তি বিশেষের কর্মকুশলতা ও জ্ঞানকে তখন তা অতিক্রম করে যায়।


নিজকে কোন কাজে সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ করা মানে শুধু হাড়ভাঙা খাটুনি নয়। বরং নিজকে সম্পূর্ণ নিবেদিত করে তোলা। অনেকে আছে যারা সারা জীবন পাথর দিয়ে প্রাচীর গাঁথে। মৃত্যুর সময় তারা রেখে যায় মাইলের পর মাইল পাথরের প্রাচীর, তারা কত কঠিন পরিশ্রম করেছিল তার মূক সাক্ষী।

তোমার যে সাফল্য সেটিই তোমার সুন্দর পোশাক।

বিচারককে বুঝতে গেলে তুলাদন্ডের ধাঁধাঁটা বুঝতে হবে। তার এক দিকে উঁচু হয়ে থাকে প্রত্যাশা আরেক দিকে চাপানো থাকে আশংকা। আশংকার দিকটা ভারী হলে সমুজ্জল আশা রূপান্তরিত হয় নির্বাক আতঙ্কে।

আমরা জীবনকে যত ব্যবচ্ছেদ করি তত তার মোকাবেলা করিনা।

চলার পথে আলো থাকবে।

আজকের দুনিয়ায় প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা মানে দাসত্ব।

মানুষের অন্তরে নিহিত শক্তি যদি মানুষ ব্যবহার করে, তাই দিয়ে নিজের জীবনকে, নিজের কল্পনাকে সমৃদ্ধ করে, তাতে সাফল্য আসে।

তোমার ধনসম্পদ, তোমার সন্তানসন্ততি, এ সবই প্রলোভন ছাড়া কিছুই নয়। আল্লাহর কাছেই আছে অনন্ত পুরস্কার।

যত কৌশল, যত উচ্চাকাঙ্খা, যত বিদ্বেষ
নিমজ্জিত হোক যুক্তির দিনবসানে,
যখন দুর্বলতা হবে শক্তি , যা ছিল অন্ধকার
তা আলোকিত হবে, যা মন্দ তা ভাল হয়ে উঠবে।
(লুইস ক্যারল থেকে উদ্বৃত)।

তোমার স্বপ্ন যে সত্যি হবে, তার আগে তোমাকে স্বপ্ন দেখতে হবে। অনেকে আছে যারা জীবনের লক্ষ্যের দিকে জোর কদমে এগিয়ে যায়। অন্যেরা পা উঠায় নামায় কিন্তও চলা যেন শুরু করতে চায় না। কারণ, তারা কি চায় তারা নিজেরাই জানেনা এবং কি করে তা পাবে তাও জানে না।

তুমি কোথায় যাচ্ছ সেটা জানো। কোথায় তুমি আছ, সেটা জানার চেয়ে অনেব কড় জিনিস হলো কোনদিকে চলেছ সেটা জানা।

আপনারা যত ভাল কাজই করুন না কেন, সম্পূর্ণ সন্তোষ যেন আপনাদের কখনই না আসে, সব সময় আপনাদের চেষ্টা করা উচিত, আরও ভালভাবে কি করে কাজ করতে পারেন।

ভাল লোক মন্দ লোক পাশাপাশি থাকে কাপড়ে যেমন কালো সূতা সাদা সূতা বোনা হয়। সাদা কিংবা কালো সূতা যদি ছিঁড়ে যায়, তাঁতি সমস্ত কাপড়টিই ভাল করে দেখে, আর তাঁতটাও দেখে।

ঈশ্বর অনেক বড় বড় কাজ করতে পারেন তাদের হাত দিয়ে, যারা সে কাজের কৃতিত্ব কে পেল তা নিয়ে মাথা ঘামায় না। ঈশ্বর সাফল্য দিয়ে তোমায় যে পুরুস্কৃত করবেন, তার আগে তোমাকে প্রমাণ করতে হবে যে, অতবড় পুরস্কার ঠিকভাবে গ্রহণ করবার মতো নম্রতা তোমার আছে।

ঈশ্বর এমন কথা দেননি
যে আকাশ সর্বদা নীর হবে,
সারা জীবনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ হবে।
ঈশ্বর কথা দেননি সর্বদা রোদ থাকবে
বৃষ্টি কখনও পড়বে না।

তবে ঈশ্বর কথা দিয়েছেন দিনের কাজের জন্য শক্তি থাকবে।
পরিশ্রমের পর বিশ্রাম থাকবে,
চলার পথে আলো থাকবে।


সর্বশেষ 'আমার মা' শিরোনামে লেখা তার বিখ্যাত কবিতা

সমুদ্রের ঢেউ, সোনালী বালুকা, তীর্থযাতত্রীর বিশ্বাস,
রামেশ্বরম মসজিদের রাস্তা, সব একাকার,
আমার মা।
তুমি আমার কাছে এসেছিলে স্বর্গের দুটি আদরের হাতের মতো্।
যুদ্ধর আগের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে
যখন জীবন ছিল কষ্টের, পরীক্ষার -
সূর্যোদয়ের আগে হেঁটে যেতে হতো মাইলের পর মাইল
মন্দিরের কাছে আমার সাধু প্রকৃতির গুরুর কাছে পাঠ নেবার জন্যে।
বালির পাহাড় পার হয়ে রেলওয়ে স্টেশন রোডের পথে
মন্দির শহর আধিবাসীদের জন্য সংবাদপত্র সংগ্রহ এবং বিলোতে বিলোতে
মাইল পথ পেরিয়ে আরবি শেখার স্কুলে পেঁছানো,
সূর্যোদয়ের কয়েক ঘন্টা পরে।
সন্ধ্যাবেলার কাজ, তারপর রাত্রে পড়া।
ছোট ছেলেটির বড় কষ্ট
মা, সর্বশকিক্তিমানের আশীর্বাদের জন্য
পাঁচবার নতজানু হয়ে মাথা নত করে
সন্তানেরা শক্তি সঞ্চয় করত
তোমার পূণ্যের শক্তি থেকে।
তোমার যা কিছু শ্রেষ্ট, যাদের সবচেয়ে প্রয়োজন তাদের দিতে।
ঈশ্বরের ইপর বিশ্বাস রেখেই তুমি দিতে।
মনে পড়ে দশ বছর বয়সে তোমার কোলে শুয়ে আছি
দাদা-দিদিরা হিংসে করছে
সেদিন পূর্ণিমা, আমি কেবল জানতাম তোমাকে মা, মা আমার।
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে দেখি চোখের জলে হাঁটু ভিজে গেছে
মা, তুমি জানতে তোমার সন্তানের ব্যথা।
তোমার দুটি হাতের যত্ন আমার ব্যথা মুছে দিত ধীরে ধীরে
তোমার ভালবাসা, তোমার যত্ন এবং বিশ্বাস আমাকে শক্তি দিত
সে সর্বশক্তিমানের শক্তিতে নির্ভয়ে জগতের মুখোমুখি হতো।
শেষ কেয়ামতের দিন আবার আমাদের দেখা হবে, আমার মা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার শেয়ার । ++

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৬

সুফিয়া বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সব সময়।

২| ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:০৫

নীল জোসনা বলেছেন: ভাললাগা রইল পোস্টে + +

১২ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.