নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুজায়েত শামীম

শামীম সুজায়েত

ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার হাতেখড়ি।শুরু করা শখের বসে। একসময় তা নেশা থেকে পেশা।ব্যবস্থাপনায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে পছন্দের এ পেশায় কেটে গেলো অনেকটা সময়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা পড়েছে পেশাগত জীবনে চলার পথে পাওয়া নানা অসঙ্গতির চিত্র।এখন লেখালেখি করি নিজের আনন্দে, ক্লান্তিহীন ভাবে যা ভালো লাগে।আমার জন্ম ১৯৭৭ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি যশোর উপশহর আবাসিক এলাকায়। আমার শৈশব ও কলেজ জীবন কেটেছে এখানেই।জীবন জীবিকার তাগিদে এখন গঙ্গাবুড়ির আলোঝলমল শহরে্ কাটছে সারাবেলা। যোগাযোগ:ই মেইল : [email protected]হটলাইন : +ফেসবুক : https://www.facebook.com/sumon.sujayet জন্মদিন : 02.02.1977

শামীম সুজায়েত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ESCAPE FROM CAMP-14 : উত্তর কোরিয়ায় বন্দি নির্যাতন

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮

গল্পটা উত্তর কোরিয়ার যুবক শিন ডং হুকের। তার চোখে দেখা ও নিজের শরীরে সহ্য করা অমানবিক নির্যাতনের নানা কাহিনী লিপিবদ্ধ হয়েছে তারই লেখা এসকেপ ফ্রম ক্যাম্প ১৪ বইটিতে। এখানে উত্তর কোরিয়ার একনায়ক শাসক কিম জং ইলের সময়কালে তার বিরোধীতাকারীদের ওপর চলা শাস্তি ও নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে। সম্প্রতি কিমসহ তিরিশ জন জেল পালানো বন্দি জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের কাছে ওই সময়কার নির্যাতনের বীভৎসতার বর্ণনা দিয়েছেন।

তাদের বর্ণনা ও কিমের লেখা বই অবলম্বনে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা " নাৎসি নৃশংসতার স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে উত্তর কোরিয়ার জেল" শিরোনামে প্রকাশ করেছে একটি প্রতিবেদন। সেটির অংশ বিশেষ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন।





১৯৪৮ সালে কিম পরিবারের শাসন শুরু। কিন্তু একনায়ক কিম জং ইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার হাজার হাজার মানুষ। শাস্তিস্বরূপ যাঁদের রাজনৈতিক বন্দি করে রেখে দেওয়া হয় বিভিন্ন কলোনিতে। ক্যাম্প-১৪ ও তেমনিই একটি কলোনি। যেখানে কোনও পরিবারের এক জন সদস্য কিমের বিরোধিতা করায় তিন প্রজন্ম ধরে সেই শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে।

১৯৮২ সালে শিনের জন্ম হয়েছিল ক্যাম্প-১৪য়। তাই ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই ‘অপরাধী’র তকমা লেগে গিয়েছে তাঁর গায়ে। শিনের দুই কাকা ষাটের দশকে পালাতে চেষ্টা করেছিলেন। শিনের বাবা-মায়ের বিয়েও হয় ক্যাম্পে। চোখের সামনে শিন মরতে দেখেছেন নিজের মা আর ভাইকে। শৈশব-স্মৃতিতে সেটাই টাটকা। যাঁরা পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়তেন, দ্রুত মেরে ফেলা হত তাঁদের। পালিয়ে যেতে পারলে সেই বন্দির পরিবারের বাকি সদস্যদের হেনস্থা করা হত নানা ভাবে।

কী ভাবে মারা হত? ক্যাম্পের কম্যান্ড্যান্টের মর্জির উপরে সেটা নির্ভর করে। প্রাক্তন বন্দি কাং চোল-হাওয়ান তাঁর লেখা বইয়ে জানিয়েছেন সে কথা “বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কাউকে মারার আগে তার মুখে ভর্তি করে দেওয়া হত পাথর। যাতে সে আর চিৎকার করতে না পারে। চোখ, বুক এবং কোমরে বাঁধা হত দড়ি। তার পরে প্রথমে সরাসরি মাথায় গুলি। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু। তার পরে বুকে। যার জেরে দেহটা একটু ঝুঁকে পড়ে। একেবারে শেষে কোমরে। এ বার সামনে খুঁড়ে রাখা গর্তে দেহটা পড়ে যায়। কবর দেওয়ার কাজটা সহজ হয়ে যায়! আর অন্য বন্দিদের বলা হয়, ওই দেহ লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে। যত ক্ষণ না লাশের চামড়া উঠে আসে।” কাং লিখছেন, “এক দিন একটা মাঠে বুলডোজার ঠেলে জমি সমান করা হচ্ছিল। দেখলাম উঠে আসছে হাত, পা, পায়ের পাতা। কোনওটায় তখনও মোজা পরানো। গা গুলিয়ে উঠেছিল। আবর্জনার স্তূপে সেই সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তুলে ফেলতে বলা হয়েছিল আমায়।”



এ রকম বিভিন্ন কাজ করানো হত বন্দিদের দিয়ে। অকারণে যখন তখন শাস্তি দেওয়া হত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু মুড়ে বসিয়ে রাখা অথবা একটা বাক্সে টানা ১৫ দিন গুটিসুটি মেরে বসে থাকতে হত বন্দিদের। জুটত না খাবার। উপোসী মানুষগুলো বাধ্য হয়ে ইঁদুর, ব্যাঙ, সাপ, পোকামাকড় যা পেত, খেত। এ সব খেত শিশুরাও। কাংয়ের কথায়, মাটিতে যা হেঁটে যেত, বাচ্চাগুলো তাই খুঁটে খেত। মজুত করা খাবার চুরি করলে বাচ্চাদের মারাত্মক শাস্তি দেওয়া হত। ছ’বছরের একটি মেয়ের জামার পকেটে এক রক্ষী খুঁজে পান ভুট্টার পাঁচটা দানা। সেই অপরাধে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে লাঠি দিয়ে বারবার তার মাথায় মারা হয়। নাক থেকে রক্ত ঝরছে। বাকি শিশুদের বাধ্য করা হচ্ছে সে দৃশ্য দেখতে। মেয়েটি সেই সন্ধ্যাতেই মারা যায়।

শিউরে ওঠার মতো গল্প শোনালেন আর এক জেল পালানো বন্দি জি হিওন-আ। সন্তানকে নিজের হাতে জলের তলায় ডুবিয়ে মেরে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছিল এক মাকে। জি বলছেন, “হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ওই মা বার বার রক্ষীর কাছে অনুনয় করছিলেন। রক্ষী কিন্তু তাঁকে মেরেই যাচ্ছিল। শেষমেশ কাঁপা হাতে মা নিজের শিশুকে শুইয়ে দিলেন জলের তলায়। একটু পরেই বাচ্চাটার কান্না থেমে গেল।”





এ দেশের বর্তমান শাসকের নাম কিম জং-উন। তিনি তার পিতা কিম জং ইলের উত্তোরসুরি। ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যাওয়ার পর পুত্র কিম জং উনকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ সুত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক শাখার এক সভায় কিম জং উনকে দেশটির সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। দেশটির ১২ লাখ সেনা সদস্যের এই শক্তিশালী বাহিনীর প্রধান এখন তিনি।



অ্যাডল্ফ হিটলার নয়, উত্তর কোরিয়ার শাসক এখন কিম জং উন, যিনি জেগে জেগে অনেক স্বপ্ন দেখেন। যেমন এখন ভাবছেন, একটা স্কি-রিসর্ট বানাবেন দেশের মানুষের জন্য!



জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হবে কি?

অপেক্ষায় উত্তর কোরিয়া।



আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদনের লিঙ্ক http://www.anandabazar.com/24bdesh1.html









মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.